ক্যালিফর্নিয়ার মজুমদার গলি – ধুলোচাপা ইতিহাসের পথ
মার্কিন মুলুকে পৌঁছোনোর আগে, ১৯০২ এবং ১৯০৩ সালে অক্ষয় কুমার যথাক্রমে চীন ও জাপানে ছিলেন। এই পরিব্রাজনে তিনি আরও কৌতুহলী হয়ে পড়েছিলেন খ্রীষ্টাধর্ম সম্পর্কে। সেই কৌতুহল নিবৃত্তির উদ্দেশ্যে তিনি পাড়ি জমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তাছাড়া তাঁর গুরুর নির্দেশও ছিল তাঁর মার্কিনি শিষ্যকে খুঁজে বের করার।
একটা মালবাহী জাহাজে জায়গা করে নিয়ে, বন্দরে বন্দরে ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে ১৯০৩ সালেই অক্ষয় কুমার পৌঁছেছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে সিয়াটেলে। কপর্দকশূণ্য অবস্থায়। সামান্য ইংরেজি বলতে পারতেন । তাঁকে আশ্রয় দিয়েছিলেন এক স্যুইডিশ পরিবার।
পরবর্তী তিন বছর তিনি মন দেন ইংরেজি শেখায় আর নিউ টেস্টামেন্ট আত্মস্থ করায়। ১৯০৬ সালে অক্ষয় কুমার যখন স্পোক্যানে বসত নিয়ে ছিলেন তখন তাঁর ইংরেজি বলার এবং লেখার ক্ষমতার প্রচুর উন্নতি হয়েছিল। তবে ১৯০৫ সালেই সিয়াটেলের আধ্যাত্মিক সংবাদ প্রতিবেদনে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন।
অক্ষয় কুমার জটিল আধ্যাত্মিক বিষয়কে সহজ সত্যের আকারে পরিবেশন করতে পারতেন। সিয়াটেলে পা রাখার পর থেকেই স্থাণীয় ধর্মানুরাগীদের মনোযোগ পেয়েছিলেন তিনি। তাঁর ভক্তদের মতে মজুমদার ভারতবর্ষ থেকে আন্তরিক আধ্যাত্মিকতার গভীর অনুভব আর খ্রীষ্টান ধর্ম বিষয়ে একটি নতুন আকর্ষণীয় ধারণা নিয়ে আমেরিকায় পৌঁছেছিলেন।
অক্ষয় কুমার নিজে তাঁর লেখায় এবং বক্তৃতায় কতকটা এমন বক্তব্যই রেখে গিয়েছেন। তাঁর দীর্ঘ আমেরিকা অভিবাসে অগুণতি ধর্মালোচনার মধ্যে দিয়ে তিনি অনুভব করেছিলেন এই যে ভারতের কঠিন যোগভ্যাসের পথে আধ্যাত্মিক শান্তিলাভের পন্থাটি পাশ্চাত্যে মূল্যহীন। তিনি বুঝেছিলেন যে যিশু খ্রীষ্টের বাণীতেই নিহিত আছে মানুষের অন্তরস্থ ঈশ্বরের সন্ধান। তিনি তাঁর লেখা ও বক্তৃতার মধ্যে দিয়ে খ্রীষ্ট কথিত সেই অন্তরের পথকেই আলোকিত করে চলেছিলেন।