ক্যালিফর্নিয়ার মজুমদার গলি – ধুলোচাপা ইতিহাসের পথ
কথিত এই যে অক্ষয় কুমার মজুমদার তাঁর প্রথম শিষ্যকে মন্টানার জঙ্গল থেকে ওয়াশিংটনের স্পোক্যান শহরে টেনে এনেছিলেন। জঙ্গলের রেঞ্জারি করতে করতে দৈববাণী শুনেছিলেন র্যালফ মরিয়ার্টি ডিবিট, “জঙ্গল থেকে বেরোও তুমি। বেরিয়ে শহরে যাও। তোমার কাজ শুরু করো।” শহরে তাঁকে গুরু অক্ষয় কুমার মজুমদার স্বয়ং খুঁজে নেন হাজার শ্রোতার ভিড়ে।
অক্ষয় কুমার মজুমদারের গুরু আরুমডা তাঁকে বলেছিলেন যে এক শিষ্য উন্মুখ হয়ে অক্ষয় কুমারের প্রতীক্ষায় আছে, আমেরিকায়। সেই শিষ্যের সন্ধানেই অক্ষয় কুমার আমেরিকা পৌঁছেছিলেন, ১৯০৩ সালে। স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতার এক দশক পরে।
মার্কিন মুলুকে হিন্দু ধর্মপ্রচারক শুনে স্বামী বিবেকানন্দের কথা মনে পড়বেই। অক্ষয় কুমার মজুমদার স্বামীজীর চেয়ে বয়সে বছর দেড়েক নবীনতর ছিলেন। তিনি স্বামীজীর অনুপ্রেরণায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ওয়াশিংটনের সিয়াটেলে পৌঁছেছিলেন কিনা জানা যায় না। লিখিত পঞ্জী যা আছে অক্ষয় কুমার মজুমদারের সম্বন্ধে তা তাঁর শিষ্যদের মুগ্ধভাষ। গুরুর নিজের কথাকেই বেদজ্ঞানে শিষ্যরা লিখে রেখেছেন বলে জানানো হয়েছে। তার কোথাও গুরু মজুমদার স্বামী বিবেকানন্দের নামোল্লেখ করেছেন বলে চোখে পড়ে নি।
আইনজীবি পিতার আট সন্তানের মধ্যে কনিষ্ঠতম অক্ষয় কুমার। জুলাই ১৫, ১৮৬৪ সালে জন্মেছিলেন। কলকাতার থেকে প্রায় বত্রিশ কিলোমিটার (কুড়ি মাইল) উত্তরের এক গ্রামে। জায়গাটা আজকের দিনের উত্তর চব্বিশপরগণার টোণা কিংবা আমডাঙা হতে পারে, উত্তর-উত্তর-পূর্ব সীমায়। আবার জায়গাটা কলকাতা থেকে সিধে উত্তরে উত্তর চব্বিশপরগণারই ভাটপাড়া অথবা হুগলি জেলার চন্দননগরও হতে পারে। হতে পারে হুগলি জেলার আরেক এলাকা সিঙ্গুর, যদি উত্তর-উত্তর-পশ্চিমে ঝোঁকা যায়। সেই ঝোঁকে অক্ষয় কুমারের জন্মস্থল আজকের হাওড়া জেলার জগৎবল্লভপুর বা শঙ্করহাটিও হতে পারে।