ক্যালিফর্নিয়ার মজুমদার গলি – ধুলোচাপা ইতিহাসের পথ
পরে ১৯৪৬ সালে আইন পরিবর্তন হলে, অক্ষয় কুমার আবার আদালতে নাগরিকত্বের আবেদন জানানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই আইন ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষদের ককেশয়েড বলে মেনে নিলেও পুব ভারতের বাঙালিকে ককেশয়েড বলে মানে নি। ফলে এবারেও অক্ষয় কুমার মার্কিন নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত ছিলেন। পরে ১৯৫০ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব আইন আরও শিথিল হতে, বন্ধুদের সাহায্য ও তৎপরতায় অবশেষে অক্ষয় কুমার মজুমদার মার্কিন নাগরিকত্ব অর্জন করেন।
লস এঞ্জেলসের পাশে স্যান বার্নার্দিনোতে ঘাঁটি হওয়ার পর ফার্স্ট সোসাইটি অফ ক্রিশ্চিয়ান ইয়োগা সত্যিই ব্যাপক বিস্তৃতি পায়। ১৯১৬ সালে ডিবিট নিজে বসবাস ও ধর্মপ্রচার করতে শুরু করেন নিউ ইয়র্কে। অক্ষয় কুমারের ধর্মমন্ডলীর নানান কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে স্যান দিয়েগো, সিয়াটেল, টেকোমা, পোর্টল্যান্ড, ওকল্যান্ড, মিলওয়াকি, ওয়াশিংটন ডিসি এবং নিউ ইয়র্ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৯১৬ সালের ধর্মসংগঠন সুমারির প্রতিবেদনে ফার্স্ট সোসাইটি অফ ক্রিশ্চিয়ান ইয়োগা স্থাণ ও উল্লেখ পেয়েছিল।
অক্ষয় কুমার মজুমদারের জীবনাবসান হয়েছিল স্যান দিয়েগোতে, ১৯৫৩ সালের ৯ই মার্চ। তিনি সমাধিস্থ হয়েছেন লস এঞ্জেলসের পাশের শহর গ্লেনডেলে। অক্ষয় কুমার কিছুদিন অরেগনেও ছিলেন। এখনও ফার্স্ট সোসাইটি অফ ক্রিশ্চিয়ান ইয়োগা অরেগনেই সবচেয়ে সক্রিয়।
ওয়াশিংটনের স্পোক্যানের ইতিহাস নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন তাঁদের বক্তব্য হলো এই যে খ্রীষ্টধর্মের নিউ থট মুভমেন্টের অগ্রণী হিসেবে অক্ষয় কুমার মজুমদারকে যতো গুরুত্ব দেওয়া হয়, তাঁর মার্কিন নাগরিকত্ব অর্জনের ঘটনা বহুল অধ্যায়টিকে মার্কিন অভিবাসন ও নাগরিকত্বের ইতিহাসে ততো গুরুত্ব দেওয়া হয় না। হয়তো অভিবাসন ও নাগরিকত্বের ইতিহাসে জাতিভেদ আর বর্ণবিদ্বেষের ভূমিকা প্রকট হয়ে পড়বে সেই জন্য। অথবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত পরাধীন জাতির স্বহায় ছিল না এমন কথাও উঠতে পারে, তাই।
(চলবে)
~~~~~~~~~~~~
আগের পোস্ট : https://projectionofnaught.blogspot.com/2025/01/akshay-kumar-mozumdar-first-indian_01606019516.html
পরের পোস্ট : https://projectionofnaught.blogspot.com/2025/01/akshay-kumar-mozumdar-first-indian_0835112172.html