Sunday, December 8, 2024

Chapter 4 - নতুন দেশ

 


একদিন সন্ধেবেলা খেলাধূলো থামার পরে নাটালি আর অ্যাশলি বসেছিল দোতলায় ওঠার সিঁড়িটার ওপর। এডউইন একটা অনাথ বেড়ালকে বাড়িতে থাকতে দিয়েছিল। সেই বেড়ালটা বাড়িটা নোংরা করে দিয়ে পালিয়ে গেছে। ফলে সারা বাড়ির জিনিসপত্র ঠেলে সরিয়ে উল্টেপাল্টে এডউইন বাড়ি পরিষ্কার করছে।

নাটালি অ্যাশলিকে বলছিল তাদের ইয়োসিমিটি ন্যাশনাল পার্ক দেখার গল্প। সে যখন খুব ছোটো, প্রায় অ্যাশলির মতো তখন শেষবার বাবা, মা, মাসি, দিদি আর দাদার সাথে নাটালি গিয়েছিল ইয়োসিমিটিতে। প্রত্যেক গ্রীষ্মে জুন মাস থেকে অগাস্ট মাস যখন ইস্কুল বন্ধ থাকে সে সময় তারা ভাইবোনেরা বেড়াতে যেত, আরভিতে চেপে।

অ্যাশলি কখনও কোনো আরভি চড়ে নি। দেখেছে, দিদিমার বাড়িতে পার্ক করা অবস্থায়, আর ছবিতে, তার বাবা-মায়ের যে আরভি ছিল সেইটা। নাটালি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করছিল যে আরভি ঠিক কী, “আরভি মানে রেসিডেন্সিয়াল ভেহিক্ল, যাতে থাকা, খাওয়া বা শোওয়া যায়।" 

কোনো কোনো গ্রীষ্মে দিদিমার আর বাবা-মায়ের দুটো আরভি নিয়ে সবাই মিলে যেতেন ইয়োসেমিটি ন্যাশনাল পার্কে কিংবা লেক পাওয়েল ন্যাচারাল প্রিসার্ভে। নয়তো দুটো দলে ভাগ হয়ে লেক মিইড-হুভার ড্যাম কিংবা স্যালটন সি যাওয়া হতো।

কিন্তু অ্যাশলির কোত্থাও যাওয়া হয় নি। ওকে নিয়ে বাড়ির থেকে অনেক দূরে যাওয়া যায়, ক্যাম্প করে থাকা যায়, ওর তেমন বয়স হতে হতে মিগেইলের সাথে সরকারের মোকদ্দমা শুরু হয়ে গেল। তবে ওকে নিয়ে টেরেসা গিয়েছিলেন রোস বোওলে, ফোর্থ অফ জুলাই, ইউনাইটেড স্টেটসের স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপণের আতসবাজির উৎসবে। 

সেদিন নানান শহরে আতসবাজির উৎসব হয়। রোস বোওল বা হলিউড বোওলে আতসবাজির উৎসব দেখতে হয় টিকিট কেটে। টিকিটের অনেক দাম।

টেরেসা কোনো একটা অনুষ্ঠানে ভলান্টিয়ারি করে দুটো টিকিট পেয়েছিলেন। প্রিসিলা, এডউইন, নাটালি সব্বাই চেয়েছিল অ্যাশলি যাক। আর তারা বসে বসে গল্প করেছিল তিন বছর আগে বাবার সাথে অ্যারক্যানসয়ের বেন্টনভিলে কী দারুণ আতসবাজির উৎসব দেখেছিল তারা তাই নিয়ে।

সেখানে মিগেইল গিয়েছিলেন তাঁর এক বন্ধুর নিমন্ত্রণে। অ্যাশলি ছোটো সে যায় নি, তাকে নিয়ে ভেরোনিকা ছিলেন পোমোনাতে।

বেন্টনভিলের আতসবাজির উৎসব দেখতে টিকিট লাগে না। খোলা মাঠে সব্বাই নিজের নিজের কম্বল আর চেয়ার পেতে বসে অর্কেস্ট্রা শোনেন। তারপর রাত আটটায় শুরু হয় আতসবাজির উৎসব।

সেখানে যেমন চোখ ধাঁধানো আতসবাজির খেলা দেখেছিল তিন ভাইবোন তার সঙ্গে তুলনা চলে কেবলমাত্র রোস বোওল আর হলিউড বোওলের। স্যান দিয়েগোর ওয়াটার ফ্রন্টেও তারা দেখেছে আতসবাজির উৎসব। তাই তারা অকপটে তুলনা করছিল নানান শহরে ফোর্থ অফ জুলাই পালনের উৎসবের জাঁকজমক কেমন তাই নিয়ে।

বেন্টনভিলের উৎসবের কথায় প্রিসিলা বলেছিল, আমি নায়াগ্রাতেও অমন সুন্দর ফোর্থ অফ জুলাইয়ের উৎসব দেখিনি!

এডউইন আর নাটালি ভেঙচি কেটে বলেছিল, আমরাও দেখব, তখন তোমাকে সঙ্গে নিয়ে যাব না।

তারপর অবশ্য কবে কী করে নায়াগ্রা যাবে দুজন সেই পথে আলোচনা গড়িয়ে গিয়েছিল। 

গল্প করতে করতে অ্যাশলি একসময় ঘরে ঢুকে পড়েছে। ভেরোনিকার কাছে বসে পড়তে শুরু করেছে। নাটালি সিঁড়িতেই বসেছিল নিজের স্মৃতির অথই সমুদ্রে ডুবে। এমন সময় তার নজরে এলো উল্টোদিকের সিঁড়িতে বসে আছে ইয়ারা আর রায়ান।

রায়ান পাড়াতেই থাকে। ইয়ারার বয়সী প্রায়। মাঝে মাঝে সে খেলতে আসে ইয়ারার সাথে। এমন সময় ইয়ারাদের অ্যাপার্টমেন্টের ঠিক ওপরতলার অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা গোল ভুঁড়িওয়ালা ভদ্রলোক পিঠে ল্যাপটপ ব্যাগ নিয়ে হাজির হলেন সিঁড়ির সামনে। তাঁর ল্যাপটপ ব্যাগটা দেখাচ্ছে একটা বোঝার মতো।

তিনি কিছু বলার আগেই রায়ান জিজ্ঞেস করল, তুমি কী স্যান্টা ক্লস?

ভদ্রলোক ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে আমতা আমতা করছিলেন। তখন ইয়ারা জিজ্ঞেস করল, তুমি আমাদের জন্য কী গিফ্‌টস এনেছো?

ভদ্রলোক ততক্ষণে সামলে নিয়েছেন। একগাল হেসে বললেন, এ ভেরি গুড ইভনিং।

রায়ান সে উত্তরে খুব খুশি হলো আর বলল, ধন্যবাদ।

ইয়ারাও বলল, ধন্যবাদ।

তারপর ওরা ভদ্রলোককে রাস্তা ছেড়ে দিল।

কিন্তু এই ভিনদেশি অপরিচিত ভদ্রলোকের সাথে এত মস্করা করার ফল ভাল হয় নি। ইয়ারাকে তার মা প্রবল বকুনি দিলেন, প্রবল জেরা করলেন যে সে কী কী বলেছে ভদ্রলোককে, আর পই পই করে মানা করলেন যে ইয়ারা যেন কোনো অচেনা লোকের সাথে কথা না বলে।

ইয়ারা শুধু মিন মিন করে বলার চেষ্টা করল যে, কথা তো রায়ান বলছিল, আমি তো সঙ্গে ছিলাম।

ততক্ষণে রায়ান গায়েব হয়ে গেছে ইয়ারার পাশ থেকে। অ্যান্থনি এসে ইয়ারাকে মায়ের বকুনি থেকে বাঁচাল। বলল, তুমিই তো নিনাকে পাঠিয়েছিলে ভদ্রলোকের বাড়িতে, ওঁর স্ত্রীকে বই দিতে। অপরিচিত কোথায়? তোমার পরিচিত তো!

তাতে অবশ্য মা ধমকে উঠেছিলেন, অ্যান্থনি! 

ইয়ারা জড়িয়ে ধরেছিল অ্যান্থনিকে।

অ্যান্থনি মায়ের ধমক খেতে অভ্যস্ত। বিশেষত ইয়ারা আর জেকবের ভাগের বকুনি সে সব সময়েই যেচে নিজের ওপর নেয়। এ জন্যও তাকে অনেক বকুনি খেতে হয় দাদা হেক্টরের থেকে।

আবার অ্যান্থনির বকুনি নিজের দিকে টেনে নেয় হেক্টর। কিন্তু নিনা কিংবা হেক্টর কখনওই বকুনি খায় না। ওরা যেচে মায়ের লন্ড্রি করে দেয়। হেক্টর ভাজ করা ঠেলা গাড়ি করে জামা কাপড় লন্ড্রিঘর অবধি পৌঁছে দেয়, নিনা বয়ে দেয় সাবান, স্কেট বোর্ডে চড়ে। ওরা দুজনেই কাচা কাপড় ড্রায়ারে দিয়ে দেয়। শুকনো কাপড় ড্রায়ার থেকে বের করে নিয়ে আসে।

আসলে কাপড় কাচার দিনে আর কোনো কাজ করা যায় না। সারাদিন দফায় দফায় সারা বাড়ির সব্বার কাপড় কাচা চলে। সব্বাই মানে মা মারিয়া, হেক্টর, অ্যান্থনি, নিনা, জেকব আর ইয়ারা।

তবে অ্যান্থনিও বাড়ির কাজ করে দেয় অনেক। যেমন তার মা মারিয়া আর মামি মার্সেলা মিলে যেসব খাবার বানান সেগুলোর ডেলিভারি করে অ্যান্থনি, অ্যাপার্টমেন্ট পাড়ার মধ্যেই। তাছাড়া মামা কার্লোস যে সব রিসাইক্লেবেল জিনিস জড়ো করেন সেগুলো বাছাইয়ের কাজও করে সে হেক্টরের সাথে।

অ্যান্থনির মামা-মামী একই পাড়ার অন্য একটা অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন। বছর তিনেক আগে মামা এসেছিলেন ইউনাইটেড স্টেটসে ইমারতী কাজের মজুর হয়ে, মেক্সিকো থেকে। তখন মেক্সিকোর তিহুয়ানা আর ইউনাইটেড স্টেটসের স্যান দিয়েগো শহর মিলে পাল্লা দিয়েছিল অলিম্পক গেমসের আয়োজক হওয়ার দৌড়ে।

অলিম্পিক গেমসের উপযুক্ত স্টেডিয়াম, অ্যারেনা, বানানোর জন্য প্রচুর ইমারতী কাজ হচ্ছিল দুই শহরে। অলিম্পিক্সের জন্য শহরে জড়ো হওয়া মানুষদের থাকার জন্য হোটেল, ঘর, বাড়ি, রাস্তা, সেতু, পার্ক এইসবও তৈরি হচ্ছিল। সারা ইউনাইটেড স্টেটস্‌ থেকে ইমারতীর মজুর আনা হয়েছিল স্যান দিয়েগোতে। আনা হয়েছিল মেক্সিকো থেকেও।

পরের বছর এসেছিলেন অ্যান্থনির বাবা রেনালদো। কিন্তু ততদিনে কার্লোস কাজ পেয়েছিলেন খনিতে, স্যান দিয়েগো থেকে উত্তরে, লস এঞ্জেলসের উত্তর-পুর্বে কিছু সোনার খনি আছে, সেখানে।

স্যান দিয়েগোতে আসার আগে কার্লোস, রেনালদো দুজনেই চাষের কাজ করতেন মেক্সিকোর সোনোরাতে। চাষের থেকে যা আয় হতো তাতে পরিবারের সব্বার খাবার, পোশাক বা তাঁদের ছেলেমেয়েদের খাতাবই-এর মতো রোজকার সাংসারিক প্রয়োজন মিটত না কিছুতেই। তারওপর কারুর কোনো বড়ো অসুখ করলে নিরুপায় মৃত্যু মেনে নিতে হতো। তাই স্বাচ্ছল্যের খোঁজে কার্লোস আর রেনালদো এসেছিলেন স্যান দিয়েগোতে। রেনালদো আসার সময় সঙ্গে আনেন হেক্টরকে। 

হেক্টরের মামি, কার্লোসের স্ত্রী, মার্সেলা আর তাঁদের মেয়ে ভ্যানেসা আর ছেলে ওয়াকিন ইউনাইটেড স্টেটসে পৌঁছেছিলেন চার্চের অতিথি হিসেবে, কয়েকদিনের জন্যকিন্তু তাঁরা কেউই ফিরে যান নি আর। আসলে আর কোনোভাবে কার্লোসের পরিবার কার্লোসের সাথে যোগ দিতে পারতেন না। 

খনির কাজে কার্লোস সম্ভাবনা দেখেছিলেন যে আইনত তিনিও একদিন সপরিবারে ইউনাইটেড স্টেটসে থাকতে পারবেন ভবিষ্যতে। অথচ সেটা কবে যে ঘটবে তারও কোনো হদিশ ছিল না। সেটা না ঘটা পর্যন্ত তিনি মেহিকোতে পরিবারের কাছে গেলে তাঁর আবার ইউনাইটেড স্টেটসে কাজ করার আর থাকার রাস্তা বন্ধ হয়ে যেত। বন্ধ হয়ে যেত নিয়মিত রোজগারের উপায়। পুরো পরিবার মজে যেত দারিদ্র্য আর অনটনের অনিশ্চিত অন্ধকারে। তাই চার্চের আতিথেয়তা জুটতে কার্লোস ও মার্সেলা ইউনাইটেড স্টেটসে যাওয়ার আর সেখানে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেন নি।

মারিয়া তার পরের বছর ক্রিসমাসে আসেন ইউনাইটেড স্টেটসে অ্যান্থনি, নিনা, জেকব আর ইয়ারাকে সঙ্গে নিয়ে, আত্মীয়ের নিমন্ত্রণে। না, কাগজে কলমে সে আত্মীয় মোটেও তাঁর বড়োভাই কার্লোস ছিলেন না। গ্রামের এক প্রতিবেশীর দূরসম্পর্কীয়া আত্মীয়ার নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করেছিলেন তাঁরা।

বলার অপেক্ষা রাখে না যে মারিয়াও তারপর থেকে আর ফিরে যান নি সোনোরাতে। কারণ সেখানে সন্তানদের নিয়ে তিনি বড়ই অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। রেনালদোও ছিলেন না সাথে, ছিল না বড়ো ছেলে হেক্টরও।

সমস্ত কাজ একলা সামলে বড়ই নাজেহাল হয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তারওপর ছিল দিনে, রাতে যে কোনো সময়ে অপহরণকারীদের হানার ভয়, অ্যান্থনি কিংবা তার বোন নিনার অপহৃত হয়ে যাওয়ার ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকা। ইউনাইটেড স্টেটসে এসে অপহরণের আতঙ্কটা ছিল না আর। রোজকার খাওয়া-পরার ব্যবস্থা নিয়েও ভাবতে হয়  নি চার্চের কৃপায়।

যে বড়োদিনে মারিয়া ইউনাইটেড স্টেটসে পৌঁছেছিলেন, সেই বড়োদিনের আগের সন্ধ্যাতেই রেনালদোকে ফিরে যেতে হয় মেহিকোতে। কারণ বিশেষজ্ঞদের বিবেচনায় তিহুয়ানা আর স্যান দিয়েগো বাতিল হয়ে গিয়েছিল অলিম্পিকের আসর বসানোর দৌড় থেকে। আর তার ধাক্কায় নির্মাণের কাজে ভাটা পড়েছিল। সপ্তায় সপ্তায় ঝাঁকে ঝাঁকে শ্রমিকেরা ফিরে যাচ্ছিলেন  স্যান দিয়েগো থেকে নিজের নিজের শহরে আর গ্রামে।

কার্লোস চেষ্টায় লাগেন যাতে রেনালদোরও খনিতে একটা কাজ জুটে যায়। কিন্তু ছমাসের চেষ্টাতেও রেনালদোকে স্যান দিয়েগো থেকে নিজের কাছে আনতে পারেন নি তিনি। ফলে এটা ওটা কাজ করে রোজগার করতে করতে, কর্তৃপক্ষের নজরে পরে রেনালদো ফিরে যেতে বাধ্য হন মেহিকোতে।

কিন্তু তিনি জানতেন যে সোনোরা থেকে মারিয়া বেরিয়ে পড়েছেন ছেলেমেয়েদের নিয়ে কার্লোসের কাছে উঠবেন বলে।  এরপরে রেনালদো চেষ্টায় লাগেন তাঁদের সোনোরার বসত বাড়ি আর লাগোয়া জমিটুকু বেচে যে কটা পেসো পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা করতে।

আইনত কার্লোস, রেনালদো বা তাঁদের পরিবারের কারুরই ইউনাইটেড স্টেটসে থাকার কথা নয়, কাজ করার কথা তো নয়ই যতদিন না খনি বা চার্চ তাঁদের থাকার আইনী ব্যববস্থা করে দিচ্ছেন। ফলে তাঁরা ইউনাইটেড স্টেটসের প্রশাসনের চোখে অপরাধী।

তবু কাজের লোকের দরকার থাকায় কার্লোস লাগাতার কাজ করে চলেছেন খনিতে, কিন্তু যে কোনো দিন পুলিশের নজরে পড়ে গেলে সব ফেলে তাঁকে চলে যেতে হতে পারে মেহিকোতে, যেমন রেনালদোকে যেতে হয়েছিল। তাই পুলিশের নজর এড়িয়ে বাঁচার চেষ্টায় কারুর সাথে ঝগড়া বিবাদ করা তাঁদের চলে না। গাড়ি চালাতে হয় সতর্ক আর সাবধানী হয়ে। কোনো ভাবেই দুর্ঘটনায় জড়িয়ে পড়া চলে না। জড়িয়ে পড়লেই তাঁদের আইন ফাঁকি দিয়ে বিদেশের মাটিতে থেকে যাওয়ার কথা উঠবে।

এদিকে যে ঠিকাদার কার্লোসকে খনির কাজে নিয়োগ করেছেন তাঁরই ব্যবস্থায় কার্লোস তাঁর নিজের পরিবারের জন্য আর মারিয়া যাতে নিজের ছেলেমেয়েদের সাথে থাকতে পারেন সেইজন্য দুটো অ্যাপার্টমেন্ট পেয়েছেন। কিন্তু অ্যাপার্টমেন্ট দুটোই জেলের সামনে। ফলে জেলের আবাসিক আর পুলিশের যাতায়াত প্রায় নৈমিত্তিক তাঁদের পাড়ায়। তাই তাঁরা কোনো প্রতিবেশির সাথেই মেশেন না। বাচ্চাদেরও বারণ করা হয় কারুর সাথে, বিশেষত বয়স্কদের সাথে, কথা বলতে।

কিন্তু এইসব বিধিনিষেধ অ্যান্থনি আর তার ছোটো ভাই জেকব কিংবা সব থেকে ছোট্টো বোন ইয়ারার পক্ষে মানা সম্ভব হয় না। সাঁতারের পুলে কিংবা গলিপথে ফুটবল আর সকার খেলার সময় পাড়ার অন্য সব খেলুড়েদের সাথে কলকলিয়ে কথা না বলে তারা থাকতে পারে না। কোন দিকে বল যাবে, কালকের মুভের থেকে আজকের মুভের তফাৎ কী কিংবা বলটাকে নিয়ে আর কি কি ম্যাজিক করা যায় কিংবা কিভাবে কাকে পায়ের তলা টেনে পুলে চুবিয়ে দেওয়া যায় এই সব নানা উত্তেজনায় মত্ত থাকে তাদের বকর বকর।

ভাষাটাও তাদের আটকায় না। সোনোরায় থাকতেই অ্যান্থনি আর তার ভাইবোনেরা চার্চের পাদ্রির কাছে ইংরেজি শিখেছিল। বাড়িতে মারিয়া, মার্সেলা, কার্লোস অবশ্য কথা বলেন স্প্যানিশের সাথে তাঁদের মাতৃভাষা অওধাম মিশিয়ে। ভাইবোনেরা সব্বাই ইংরেজিতেই নিজেদের মধ্যে কথা বলে। তবে মায়ের সাথে মায়ের ভাষাতেই কথা বলে তারা। তাই তারা বাড়ির বাইরে স্প্যানিশ বলতে ভরসা পায় না। কারণ তারা আসলে স্প্যানিশ জানেই না।


~~~~~~~~~~~~

Read at your own pace. On Browser the whole book FREE OF COST from this link. সম্পূর্ণ বই নিজের গতিতে পড়ার জন্য ইন্টারনেট ব্রাউজারে বিনামূল্যে এই লিঙ্ক থেকে : https://read.bookfunnel.com/read/9cq7a4tl7h
Read at your own pace. On Browser or Download the whole book FREE OF COST from this link. সম্পূর্ণ বই নিজের গতিতে পড়ার জন্য ইন্টারনেট ব্রাউজারে বা ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে বিনামূল্যে এই লিঙ্ক থেকে : https://dl.bookfunnel.com/9cq7a4tl7h
~~~~~~~~~~~~~
Link to Previous Post আগের পোস্ট: https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/12/chapter-3.html
Link to Following Post পরের পোস্ট: https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/12/chapter-5.html

Readers Loved