লেখক পরিচিতিঃ শি দিঁ রৌ
উহান, হুবেই খুব পরিচিত নাম এখন আমাদের সকলের। কারণটা করোনা। চিনের এই শহর থেকেই ছড়িয়ে ছিলো মহামারী আর তার আতঙ্ক। কিন্তু হুবেই প্রদেশের উহান শহর পরিচিত লেখক শি দিঁ রৌ-এর জন্মস্থল বলে এবং অভিনেতা ওয়াং ইউয়েনের শহর বলেও। এঁদের দু জনেই জড়িয়ে আছেন ‘নি গেই ও দে শিহুয়াঁ’ উপন্যাস আর ড্রামা সিরিজের জন্য। শি দিঁ রৌ উপন্যাসটির লেখক এবং ওয়াং ইউয়েন ড্রামা সিরিজের প্রধান চরিত্র মিন হুয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।
আমি এঁদের দুজনেরই প্রতিভার সঙ্গে পরিচিত হবার সুযোগ পেয়েছি ইন্টারনেটের জন্য আর ইন্টারনেট প্রযুক্তি যে যুক্তিতে ব্যবসা করে সেই যুক্তির জন্য। শুধু ইন্টারনেট প্রযুক্তির ব্যবসার যুক্তি নয়, ইন্টারনেট প্রযুক্তি জীবন যাপণকে সহজতর করে দেবার জন্য নানান উপায় দেয় তার জন্যও। সেই সব উপায়ের একটা হলো যান্ত্রিক অনুবাদের ব্যবস্থা।
যে কোনো ভাষার বই, সেটা যদি ইন্টারনেট ব্রাউজার অ্যাপ্লিকেসনে পড়া যায়, ব্রাউজার অ্যাপ্লিকেসনটায় যদি যান্ত্রিক অনুবাদক যোগ করা যায়, তাহলেই বইটা পড়া যাবে পাঠক যে ভাষায় পড়তে চান সেই ভাষাতে। আবার কোনো কোনো মানুষ বই পড়ে ভালো লাগলে সেটা ওয়াটপ্যাডের মতো ওয়েবসাইটে যদি পোস্ট করেন, তাহলে অচেনা ভাষা থেকে চেনা ভাষাতে অনুবাদ করে নেবার সময়টাও লাগে না।
২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এতো রকম প্রযুক্তিগত সুযোগের ব্যবহার করতে করতে আমি দেখে ফেলি ‘নি গেই ও দে শিহুয়াঁ’ ড্রামা সিরিজ আর পাগলের মতো খুঁজতে শুরু করি ‘নি গেই ও দে শিহুয়াঁ’ উপন্যাসের একটা অনুবাদ। মূল বইটা পাওয়া গেলেও, তাও সেটা মলাটবদ্ধ কাগজের বই, অনুবাদের সন্ধান পেলাম না। শেষে ‘যা পাবো তাই পড়বো’র অন্বেষণে আবিষ্কার Phew Pwaint (উচ্চারণ করতে পারবো না বলে এই দরদী মানুষটির নাম বাংলায় লিখতে পারলাম না) -এর ওয়াটপ্যাড অ্যাকাউন্ট আর ‘নি গেই ও দে শিহুয়াঁ’-র গুগল ট্রান্সলেটারের করা ইংরেজি অনুবাদ।
বইটা পড়তে পড়তে মনে হয়েছে, এই বইটা আরো অনেককে পড়াতে হবে। কিন্তু বইটার লিঙ্কটা ভালো বেসে উপহার দিলেও অনেকেই খুলবে না সন্দেহ করে, লিঙ্ক তো, খুললে না জানি কোন গোপণ কথা ইন্টারনেটে চাউর হয়ে যাবে, সন্দেহটা অকারণও নয়। আবার গুগল ট্রান্সলেটার থেকে কপি পেস্ট করে পড়াতে গেলে ভীষণ গালি খাবো। যেমন কিনা চল্লিশ নম্বর অধ্যায় ‘ভালুক ছানা’-তে যে বাক্যটাতে হোঁচট খেয়ে খেয়ে অস্থির হয়েছি, সেটার বাংলা হলো, “আমার ছেলের জন্ম অক্টোবরে, তুই দশ হাজার ডায়াপার বদলালে তবে ছেলের বাপ হবি।”
এখন ‘অক্টোবর’ আর ‘দশ হাজার ডায়াপার’-এর তো তুলনা করার মতো যৌক্তিক যোগাযোগই নেই। অগত্যা আঙুল ঠুকে নিজেকেই অনুবাদ করে নিতে হলো। অক্টোবর মানে বছরের দশম মাস আর সন্তান ধারণের দশম মাসে বাচ্চার জন্ম হয়। চোংগুয়েন (zhongwen, simplified Chinese, ম্যান্ডারিন কিনা জানি না) থেকে ইংরেজি করলে ‘অক্টোবর’ আর ‘দশম মাস’ দুটোই ‘শিই ইউয়ে’, দশটা মাস ‘শিই গ য়ুএ’, [গ য়ুএ মানে মাস (বহুবচনে)]। উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদের চল্লিশ নম্বর অধ্যায়ের যে বাক্যের যে অংশে ‘অক্টোবর’ আছে সেই অংশটাকে [গুগল্ ট্রান্সলেটর দিয়ে] চোংগুয়েন করলে দাঁড়ায় ‘হাইজি শি শিই ইউয়ে ছুশাং দ’ অর্থাৎ ‘বাচ্চার জন্ম হয় দশম মাসে’। তাহলে মানেটা দাঁড়ালো ‘বাচ্চার জন্ম হতে দশ-দশটা মাস লাগে, যদি তুই দশ হাজার ডায়াপারও বদলাস, … …’।
বার বার বলা হয় লেখকদের যে দূর্বোধ্যতা চায় না পাঠক, পাঠক বিনোদন চায়, সহজ ঝরঝরে বিনোদন, বিনা পরিশ্রমে। তাহলে যান্ত্রিক অনুবাদের গিঁট খুলতে যে খাটনি খাটতে হবে সেটা পাঠকের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। আবার না খাটলে বিনোদনের রস উবে যাবে, সেই বঞ্চনাও দেওয়া যায় না পাঠককে। যান্ত্রিক অনুবাদকের অনুবাদ পড়তে দিলে পাঠককে ভালো লাগার ভাগ তো দিলাম না, যন্ত্রণার ভাগ দিলাম। যন্ত্রণা দিলে, গালি খেতেই হবে।
যন্ত্রণা পেলে পাঠকের ধৈর্যই থাকবে না শি দিঁ রৌ যে বরফের চূড়ো আর ধান খেতের জলে ডোবা আলপথের ছবি এঁকেছেন সে সব অনুভব করার বা উপভোগ করার। কিংবা কী দারুণ মুন্সিয়ানায় লেখক বুনেছেন দেশটার উত্তরের, দক্ষিণের, মাঝের অনগ্রসর গ্রাম্যজীবন আর সেটাকে ছিন্নভিন্ন করে জেগে ওঠা আধুনিকতম নাগরিক জটিল জীবনের একটা প্রাণবন্ত নকশা। লেখক অনায়াস ভূখন্ড ও সময় ভ্রমণে গত তিন দশকের যাপণকে বর্ণনা করেছেন এই দীর্ঘ উপন্যাসের ছত্রে ছত্রে।
লেখক শি দিঁ রৌ ১৯৭০ সালে জন্মে ছিলেন চিন দেশের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে। তিনি ছদ্মনাম শুআঁ য়িন নামেও সমান পরিচিত। সমকালীন শহুরে উপন্যাস, আর্বান ফ্যান্টাসি আর চিনে মার্শাল আর্ট উপন্যাস এই তিন ধরণের সাহিত্য ধারাতেই মূলতঃ লিখে থাকেন শ্রীমতী শি (শি জিয়ে, শি শওজিয়ে কিংবা শি জঁ)। পেশায় লেখক এবং চিত্রনাট্যকার।
উপন্যাস প্রকাশ করতে শুরু করেন ২০০৪ সাল থেকে। মূলত ইন্টারনেট মাধ্যমে। শুরু মার্শাল আর্ট উপন্যাস “মি শিয়া জি” আর “মি শিং জি” দিয়ে, জিংজিয়াং লিটেরেচার সিটি ওয়েবসাইট থেকে। ২০০৮ থেকে শুরু করেন আধুনিক শহুরে প্রেমের গল্পের ধারাবাহিক “লিচুয়ান ওয়াং শি”। ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয়ে ছিলো তাঁর আর্বান ফ্যান্টাসি উপন্যাস “জিয়ে আই - য়ি কে ফেং হুয়াঁ”। এই উপন্যাস শ্রীমতী শিকে এনে দেয় রেনবো কাপ আর এক লাখ য়ুআঁ। একই বছরে মহিলা লেখকদের মৌলিক লেখার প্রতিযোগিতার ধারাবাহিক সাহিত্যের চ্যাম্পিয়নশিপ। আবার ২০১৭ সালেও “জিয়ে আই - য়ি কে ফেং হুয়াঁ” পুরস্কৃত হয়ে ছিলো এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড অফ সেকেন্ড অনলাইন লিটেরেচার বাইএনিয়াল অ্যাওয়ার্ড-এ।
২০১৬তে যখন “মিটিং ওয়াং লি চুয়ান” আধুনিক শহুরে প্রেমের ড্রামা সিরিজ তৈরি হয়, তখন চিত্রনাট্য লিখে ছিলেন শ্রীমতী শি। ২০১৮তে যখন “গুডবাই ওয়াং লিচুয়ান” ড্রামা সিরিজ হয়ে ছিলো তখনো শ্রীমতী শি চিত্রনাট্য লিখে ছিলেন। তবে চিত্রনাট্যকার হিসেবে তাঁর কাজের শুরু ২০১২-তে যখন “দ্য পাস্ট অফ লিচুয়ান”-এর ড্রামা সিরিজের চিত্রনাট্য লেখা শুরু হয়ে ছিলো তখন। একই বছরে তাঁর উপন্যাস “গ্র্যাভিটি অফ রেনবো”-র জন্যও তিনি চিত্রনাট্য লিখে ছিলেন।
এমন সমাদৃত লেখকের জন্ম কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারদের পরিবারে। তাঁর বাবা ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন পেশায়, প্রপিতামহ ছিলেন চিকিৎসক। তাঁর ভাই পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক। তিনি বিয়ে করেছেন এক ইঞ্জিনিয়ারকে। ২০০৫ সালে তিনি একমাত্র কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
স্নাতক স্তরের ডিগ্রি পান ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে। বহু বছর এক সংবাদ সংস্থাতে ‘গোপণীয়তা সচিব’ পদে কাজ করে ছিলেন। অনেক পরে স্নাতোকোত্তর পড়ার জন্য এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে ছিলেন। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন চোংগুয়েন-এ সেন্ট্রাল চায়না নর্ম্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে। আরো একটা স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি পেয়ে ছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ টরেন্টো থেকে, পরে ওখান থেকে ডক্টরেটও পেয়ে ছিলেন। দুটো ডিগ্রিরই বিষয় ছিলো ইস্ট এসিয়ান স্টাডিজ।
অল্প বয়স থেকেই শি দিঁ রৌ ভক্ত ছিলেন মার্শাল আর্ট উপন্যাসের। তিনি বিশেষ ভক্ত ছিলেন গূ লং-এর। ২০০৪ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় ‘তিনটে রহস্য’ সিরিজের মার্শাল আর্ট উপন্যাসগুলো জিংজিয়াং লিটেরেচার সিটি ওয়েবসাইটে। এই উপন্যাসগুলো বেশ নাম করে, এদের ভাষা শৈলী আর নতুন আধ্যাত্মিক ধারণার জন্য। ২০১৩ সালে ঝেজিয়াং লিটেরাচার অ্যান্ড আর্ট পাবলিশিং হাউস পুরো ধারাবাহিক ত্রয়ী, “মি শিয়া জি” (দ্য স্টোরি অফ লস্ট হিরো), “মি শিং জি” (দ্য স্টোরি অফ লস্ট ট্রাভেলার), আর “মি শেন জি” (দ্য স্টোরি অফ লস্ট গড) প্রকাশ করে ছিলেন ছাপা বই হিসেবে। সঙ্গে প্রকাশ করেছিলেন “দ্য পাস্ট অফ ওয়াং লিচুয়ান”।
২০০৮-এ প্রাচীন মার্শাল আর্টের গল্পের আঙ্গিক ছেড়ে আধুনিক শহুরে প্রেমের গল্প প্রকাশ করতে শুরু করেন শি দিঁ রৌ, শুআঁ য়িন ছদ্মনামে, “দ্য পাস্ট অফ লিচুয়ান” দিয়ে। জিংজিয়াং লিটেরেচার সিটির ব্যবসা বিভাগ এই উপন্যাসটাকে রেখেছে প্রথম দশটা ক্যাম্পাসের যুবাদের মধ্যে জনপ্রিয় উপন্যাসগুলোর একটা হিসেবে।
২০০৯ সালে আর্বান লেজেন্ড/ আর্বান ফ্যান্টাসি উপন্যাস “লাভ নট : আ ফরেন গেস্টস্ জয়” [জিয়ে আই - য়ি কে ফেং হুয়াঁ] প্রকাশিত হয়। ওই বছরেই অগাস্ট মাসে বইটা রেনবো কাপ পুরস্কার পায়। পরে ২০১১ সালেও উপন্যাসটি ওয়েস্ট লেক জনরা লিটেরেচার বাইএনিয়াল অ্যাওয়ার্ডে কল্পবিজ্ঞান ও কল্পকথার এক অসামান্য বই হিসেবে চিহ্নিত হয়ে ছিলো। এই বইটা অডিও বুক হিসেবে ২০১৫ সালে চায়না ন্যাশনাল রেডিও-র বিনোদন বিভাগে সম্প্রচার করা হয়ে ছিলো।
২০১৫ সালেই অগাস্ট থেকে নভম্বরে চায়না ন্যাশনাল রেডিও-র বিনোদন বিভাগে সম্প্রচারিত হয়ে ছিলো “মি শিয়া জি” (দ্য স্টোরি অফ লস্ট হিরো), “মি শিং জি” (দ্য স্টোরি অফ লস্ট ট্রাভেলার), আর “মি শেন জি” (দ্য স্টোরি অফ লস্ট গড)। একই বছরে “দ্য পাস্ট অফ লিচুয়ান” সব চেয়ে বেশি শোনা হয়েছে এমন রোমান্টিক গল্পের মধ্যে শীর্ষস্থান পেয়ে ছিলো অন্য একটা অডিওবুক প্ল্যাটফর্মে। পরের বছরে চায়না ন্যাশনাল রেডিও-র বিনোদন বিভাগে সম্প্রচার করা হয়ে ছিলো “দ্য গ্র্যাভিটি অফ এ রেনবো”-র অডিও বুক সংস্করণ। ওই ২০১৬ সালের অগাস্ট মাসেই লি টিভি সম্প্রচার করে “লাভ নট : আ ফরেন গেস্টস্ জয়”। পরের মাসেই ঝেজিয়াং লিটেরাচার অ্যান্ড আর্ট পাবলিশিং হাউস পরিকল্পনা নেয় “মিটিং লিচুয়ান”-এর ওপরে ভিত্তি করে একটা বই প্রকাশ করবে।
২০১৭ সালেও “লাভ নট : আ ফরেন গেস্টস্ জয়” আর তার পরের পর্বের উপন্যাসগুলো পুরস্কার ক্ষেত্র আর অডিওবুক ক্ষেত্র জয় করে চলে ছিলো। ২০১৮-তে সম্পূর্ণ হয় এই সিরিজ। পরের রোমান্স ঘরানার উপন্যাস হলো “নি গেই ও দে শিহুয়াঁ” (দ্য লাভ ইউ গিভ মি)।
এছাড়াও শি দিঁ রৌ প্রচুর ছোটো গল্প লিখেছেন। প্রাচীন মার্শাল আর্টকে নতুন করে ব্যাখ্য করে, আর সমকালীন প্রেমের গল্পের ধাঁচে। কিছু প্রকাশিত গদ্যও আছে, ছড়িয়ে ছিটিয়ে।
শি দিঁ রৌ-এর উপন্যাসের সবচেয়ে স্পষ্ট বৈশিষ্ট্য হলো ব্যক্তিত্বময়ী নারীরা। এই নারী চরিত্ররা সব সময়েই তাঁদের একক স্বাধীন পথে নিজের নিজের কাজের জীবনে নিজেদের জীবনের মূল্য বুঝে নেয় আর জীবনের উপলব্ধিতে পৌঁছোয়। তাঁর উপন্যাসের নারী চরিত্ররা নিজেদের প্রতিভায় আর দক্ষতায় পুরুষের ভিড়ে নিজেদের প্রবল প্রচন্ড ঘাঁটি তৈরি করে নেয়। পুরুষকারের অহংকারের প্রতি তীক্ষ্ণ বিদ্রুপও শ্রীমতী শিয়ের লেখার বিশেষ বৈশিষ্ট্য। তাঁর লেখার আপাতত সাধারণ বিবরণ, বিশ্লেষণ, আলাপের মধ্যেই ফুটে ওঠে বাঁকা বিদ্রুপগুলো।
তাঁর বিবরণে প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো সনাতন চিনে শৈলিতে জলরঙে আঁকা প্রকৃতির ছবির মতোই জীবন্ত। এই সব ছবির থেকে ছটা বেরোয় নম্র বিস্ময়ের। শান্ত স্নিগ্ধ ভঙ্গীতে গল্প বলতে শুরু করেন শি দিঁ রৌ, যেন একটা প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি, যাতে কালি ছিটিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে অলস মেঘের অবয়ব। সব গল্পই প্রেমের গল্প অর্থাৎ রোম্যান্স ঘরানার, কিন্তু গল্প শুরু হয় জীবনের অসংগতি দিয়ে, চলতে থাকে নিজের পূর্ণ সত্ত্বার খোঁজ পুরো উপন্যাস জুড়ে, এটাই চমক।
শি দিঁ রৌ-এর কলমের কেরামতি পাঠককে দেয় একটা অপার্থিব অভিজ্ঞতা, যেটা বাস্তব কিন্তু যেনো কোনো একটা শহরে নাগাড়ে চলতে থাকা অস্বাভাবিক ঘটনা সব। গল্পের পরিকল্পনায় অজস্র মোচড় আর আচমকা বাঁক। কৌতুকের অংশগুলোতে হাসতে হাসতে হাঁপ ধরে যাবে, আবার দুঃখের অংশগুলোতে চোখ উপছে গাল ধুয়ে বুক ভেসে যাবে জলে। কথোপকথন অংশগুলো চরিত্রগুলোকে স্পষ্ট করে তোলে আর পাঠক চরিত্রগুলোর মধ্যে খানিকটা নিজেকে খুঁজে পায় যেনো।
কেমন লেখেন শি দিঁ রৌ সে ব্যাপারে সিএনআর অনলাইন রিভিউ, বিনহাই টাইমস আর অভিনেতা জিয়াও জুনিয়াঁ যা বলেছেন বলে আমি পড়েছি https://baike.baidu.com/item/%E6%96%BD%E5%AE%9A%E6%9F%94 -তে তার সবটাই মেলে আমার পড়ার অভিজ্ঞতার সঙ্গে।
আগামীতে আরো দুর্দান্ত গল্প পড়ার প্রত্যাশা রেখে ‘নি গেই ও দে শিয়াঁ’-এর মূল লেখক শি দিঁ রৌ-এর লেখক জীবনের পরিচয় পর্বের ইতি টানলাম।
~~~~~~~~~~~~
Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/blurbs-and-book-trailer.html
Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/07/acknowledgement.html