Showing posts with label Chinese Language Novel Shi Ding Rou Zhejiang Literature and Art Publishing House. Show all posts
Showing posts with label Chinese Language Novel Shi Ding Rou Zhejiang Literature and Art Publishing House. Show all posts

Saturday, October 19, 2024

Download and Read The Whole Book

 The Book:

Step 1: 

Click on the Link:

https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96

Step 2: 

Choose any one of the options

  1.  এখানে বই পাবেন
  2. Start Reading on your browser





Step 3:

    If clicked on the option 1 "এখানে বই পাবেন", then chose "Read in Browser" option





Step 4:

Same for any of the choices you have made at Step 2.

Start Reading






Step 5:

Might be asked to create an account with BookFunnel or might be asked to log in.

Then click on the circled stack symbol on the top bar of the page. The content menu will be displayed. Choose the chapter you want to read.





Alternative, Step 4:

Choose format of your choice from BookFunnel, Kindle, Kobo, Nook, Playbooks, or as listed at he bottom in line, Email (the book to yourself), EPUB, PDF or just "Save" by bookmark.





Saturday, September 7, 2024

JPDA - Chapter 32

 ৩২. দেবদূত ও দানব



আশীর্বাদ চট করে আসে না, দূর্ভাগ্য কখনো একলা আসে না।

বলা অসম্ভব যে মিন হুয়ে গত চার বছরে শিন ছিকে ভুলে গেছে। কিন্তু ও চেষ্টা করেছে ভুলে যাবার, নানা উপায়ে। যার মধ্যে সবচেয়ে জোরালো আর সর্বগ্রাসী উপায় হলো আরেকটা লোককে বিয়ে করে ফেলা, বিদ্যুৎ বেগে।

ও কোনো দিনও ভুলবে না শিন ছির বলা দুটো কথা-

“এই মূহুর্ত থেকে তোর আর আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি তোকে জানি না, তুই আমাকে চিনিস না।”

“আমি তোকে আর কোনো দিনও দেখতে চাই না। তার দায়টাও তোর।”

প্রথমে মিন হুয়ে ভেবে ছিলো এসব নেহাত রাগের কথা। শিন ছির তো মাথা গরম, সেই বাচ্চা বয়স থেকেই, সে কথা সু তিয়াঁও বার বার লিখেছে ওর ডায়েরিতে।

কিন্তু যখন মিন হুয়ের সাথে শিন ছির দেখা হয়ে ছিলো, তখন শিন ছি প্রাপ্তবয়স্ক, ইউনাইটেড স্টেটসে থাকে, ভালো পারিবারিক পরিবেশে আর সুশিক্ষিত। এমন নয় যে ভদ্রলোকে কখনো আবেগতাড়িত হয় না বা রাগ দেখায় না। সব কিছুর মাত্রা থাকে, কিন্তু শিন ছির রাগ বাড়াবাড়ি রকমের।

মিন হুয়ে ভেবে ছিলো ও তেমন বড়ো দোষ কিছু করে নি, ও একটা কারণে মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে ছিলো, মনে কারো ক্ষতি করার কোনো ইচ্ছে তো ছিলো না। যেদিন সত্যিটা প্রকাশ হলো, মিন হুয়ে ধরেই নিয়ে ছিলো শিন ছি পাগল হয়ে যাবে। কিন্তু ও কখনো কল্পনাও করতে পারে নি যে শিন ছি অমন হৃদয়হীন।

বাসে বসে, মিন হিয়ে একটা লম্বা চিঠি লিখে ছিলো শিন ছিকে, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়ে ছিলো, যেটাকে একটা পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা আর পূর্ণ স্বীকারোক্তি বলা যায়।

ফোন স্ক্রিনের হিসেবে পাঁচটা পাতা ধরে লেখা। কিন্তু ততক্ষণে শিন ছি ব্লক লিস্টে পাঠিয়ে দিয়েছে মিন হুয়েকে। তাড়াতে এতো অধৈর্য যেনো মিন হুয়ে কোনো জঘন্য অপরাধ করেছে।

ওরা দুজনে যখন একসঙ্গে ছিলো তখন তো ওরা সুখী ছিলো, ছিলো না?

সেই সব হাত ধরে থাকা, চুমু আর প্রেমে ভরপুর দিন আর রাতগুলো …

সত্যিই কী ওর মনে কোনো তোলপাড় হয় নি? ও কী এক মূহুর্তের জন্যও মিন হুয়েকে ভালো বাসে নি?

মিন হুয়ের প্রথম প্রেম শিন ছি। আঘাতটা তাই ভীষণ গভীর।

ওর আর চেং ছিরাং-এর মধ্যেকার ব্যাপারটা এতো বড়ো যে দেঁ চেন নিশ্চয়ই সেটা খতিয়ে দেখেছে, হয়তো শিন ছিকে কিছু বলে ছিলো, তাই কী?

ইন্টারনেটের অকম্মার ঢেঁকিরা, ট্রোল আর ট্রোল, নিশ্চয়ই ওদের অনেক রসালো গল্প জুটিয়ে ছিলো …

এ সবের কারণে শিন ছিও নিশ্চয়ই আর সকলের মতোই সহজ সিদ্ধান্তে পৌঁছে গিয়ে ছিলো।

যখন যুক্তি এই পর্যায়ে পৌঁছোলো তখন মিন হুয়ের হৃদয় হিম ঠান্ডা হয়ে গেলো এক লহমায়, আর যুক্তি তর্কে কোনো উৎসাহ পেলো না।

যদি ওর লড়াই করার ইচ্ছেটা থাকতো, তাহলে কখনো মরতে যেতো না।

ও কিছুতেই ফিরে যেতে চায় না সেই সময়ের সেই ভাঙাচোরা অবস্থাটায়। ও বরং অন্য একটা মানুষ হয়ে উঠতে চায়। সব কিছু ভুলে যেতে চায়। ভালোভাবে বাঁচতে চায়।

এ ভাবে ব্যাপারটাকে ভাবার পরে ওর মনে হলো শিন ছি অন্য সবার থেকে কিছু মাত্র আলাদা নয় যারা ওকে ভুল বুঝেছে আর অন্যদের অনুসরণ করেছে।

ওরা দুজনে একসাথে ছিলো, যদি সু তিয়াঁ নাও থাকতো তাহলেও ওর আর চেং ছিরাং-এর মধ্যেকার ব্যাপারটা ওর জন্য যথেষ্ট হতো সম্পর্কটা অস্বীকার করার জন্য। অল্প কথায়, ব্যাপারটা ভালো হতো না কিছুতেই।

সামনে উষ্ণতা দেখিয়ে, আর পিঠপিছে জমাট শৈত্যের সম্পর্কের থেকে ভালো আলাদা হয়ে গিয়ে একে অপরের সুখে সামিল হওয়া।

***

যেরকম ও জানতো না সু তিয়াঁ কখন বাসে চড়েছে, সে রকমই ও জানে না যে শিন ছি কখন ঝিনজি ক্লাবে এসেছে। শিন ছি যে ঝিনজি ক্লাবে আসতে পারে সে কথা ও ঘুণাক্ষরেও ভাবে নি। তারওপর আবার অমন একটা লজ্জাজনক দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে থাকবে।

যাহোক, মিন হুয়ে তোয়াক্কাই করে না শিন ছি কী মনে করলো, ওর চোখে মিন হুয়ে তো কবেই খারাপ হয়ে গেছে।

ওর একটাই অনুতাপ যে অন্যের গল্পে ভাঁড়ের ভূমিকা নিয়ে ও লোক হাসিয়েছে, আবারও। তবে নিজের পেটের ছেলের জীবনের চেয়ে সম্মান বেশি দামী নয়, কোনোভাবেই নয়।

মিন হুয়ে খেয়ালই করে নি শিন ছিকে কারণ শিন ছি এবার একটা ঘন ধূসর রঙের স্যুট পরে আছে, সাথে কালো টাই, আর একটা রুমাল ভাঁজ করে রাখা আছে পকেটে। মাথার চুল ছোটো করে কাটা, চওড়া নির্বিকার কপাল। একটা ছোট্টো কিন্তু ত্রিকোণ মুখমন্ডল জুড়ে ছড়িয়ে আছে ব্যক্তিত্বের আভা।

মিন হুয়ের মনে আছে আরামদায়ক ঢোলা জামা জামা পরা শিন ছিকে, যে গুলো সাধারণ দেখতে হলেও, সাদামাটা নয়। ওর জামার রং, কোনটার সঙ্গে কোনটা পরবে, আর জামার কাপড় থেকে বোঝা যায় ওর জামাকাপড়ে একটা বিশেষ রুচির ছাপ আছে। অন্ধের মতো নিত্য নতুন হালের জামাকাপড় কিংবা ভয়ানক দামী জামাকাপড় পরে তা নয়, আবার একদম হাতের সামনে যা পেলো কিচ্ছু না ভেবে তাই পরল তাও নয়।

ওর মাথার চুল এখনকার মতো এতো ছোটো করে ছাঁটা ছিলো না। কিন্তু এখনো খানিকটা ওর কপালের ওপরে ঝুলে আছে। ঘুমোনোর সময়ে মিন হুয়ের খুব ভালো লাগতো পাঁচ আঙুলের চিরুণি দিয়ে ওর কপালের ওপরে, ভ্রুর হাড়ের ওপর থেকে চুলগুলোকে ঠেলে মাথার ওপরে পাঠিয়ে দিতে, যেনো একটা বেড়ালের গায়ে আঙুল বুলিয়ে দিচ্ছে।

শিন ছি খুব পছন্দ করতো মিন হুয়ে যখন আঙুল দিয়ে চুল ঠেলে সরিয়ে দিতো কপাল থেকে ও ভাবে। ও খুব শিগগির ঘুমিয়ে পড়তো।

ও শিন ছিকে দেখেছে পড়াশোনার ভক্ত হিসেবে, খেলাধূলোর ভক্ত হিসেবে, আর সাদামাটা যাপণের ভক্ত হিসেবে। এখন ওর সামনে ও যে শিন ছিকে দেখছে সে ব্যবসার অনুগামী, যার মাথার চুল কপাল থেকে সরিয়ে মাথার ওপরে তুলে দিলে ওয়াল স্ট্রিটের ব্যাঙ্কার হয়ে যায়।

টেবিলটাতে বারো জন বসে ছিলো। সবাই চেং ছিরাং-এর সমকক্ষ কর্তা নানান কোম্পানিতে। তাঁদের কেউ কেউ মহিলা সঙ্গী এনেছেন। চেং ছিরাং আর ঝেং য়ি তিং ছাড়া আর দুজনকে মিন হুয়ে চেনে, তবে তেমন আলাপ পরিচয় নেই তাঁদের সাথে।

সবাই গাঢ় রঙের স্যুট পরে আছে। মিন হুয়ের মাতাল চোখে তারা সবাই ক্ষুধার্ত। তার ওপরে, আলোটাও কম, আবছায়া বেশি, মিন হুয়ের কোনো প্রস্তুতি ছিলো না। ও যখন টের পেলো যে ওটা শিন ছি, তখন ও মর্মাহত হয়ে পড়লো, কিন্তু ওর মুখে কোনো ছাপ পড়লো না।

কারণ ওর মনে ছিলো শিন ছির কাছে নেওয়া শপথ, “আমি তোকে জানি না। তুইও আমাকে চিনিস না।”

তাই মিন হুয়ে ভান করলো যে ও শিন ছিকে চেনে না।

মিন হুয়েকে সংযম হারাতে দেখে টেবিলের সবাই, শিন ছিও ওর দিকে তাকিয় ছিলো হতবাক হয়ে।

যেনো কিছুই হয় নি এমন ভান করে মিন হুয়ে টেবিল থেকে একটা ন্যাপকিন তুলে নিয়ে নিজের মুখটা মুছে নিলো, নিচের দিকে তাকালো, ফিসফিস করে বললো, “ভালো না।”

জমিয়ে “নাটুকে” ভাব আনার জন্য ও আই শ্যাডো মেখে ছিলো, সঙ্গে ছিলো আই লাইনার, আর মাসকারার পুরু স্তর। কাগজ দিয়ে মোছার পরে সব কালো হয়ে গেলো। আয়না না দেখেও ও টের পাচ্ছিলো যে ওকে একটা ডাইনির মতো দেখাচ্ছে।

ক্ষণিকের নৈশব্দকে কাটিয়ে আবার হলে জেগে উঠলো নিরন্তর হালকা গুঞ্জন।

মিন হুয়ের প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিলো ছুটে পালানো কিংবা মাটিতে একটা গর্ত খুঁড়ে তাতে ঢুকে পড়া, কিন্তু ও জানতো যে এই প্রদর্শনীটা ওর একার নয়, আর প্রদর্শনী এখনো শেষ হয়ে যায় নি - ভাবতে না ভাবতেই কানে এলো চেং ছিরাং-এর হতাশ অবজ্ঞা মাখা স্বর, “মিন হুয়ে, তুমি বড়ো বেশি পান করেছো।”

মিন হুয়ে ওর জামার কলার ধরে ওর মুখটা নিজে কাছে টেনে এনে জিজ্ঞেস করলো, “কি ভাবে?”

‘ঠাস!’ মিন হুয়ে কথা বলা শেষ করার আগেই ওর মুখে এসে পড়লো একটা জোরালো থাপ্পড়। ঝেং য়িতিং চেঁচিয়ে ডাকলেন আনাজ পরিবেশন করছিলেন যিনি সেই পরিবেশককে, “সিকিউরিটি গার্ড কোথায়? আপনি যান আর একজন সিকিউরিটি গার্ডকে ডেকে আনুন আর এই মহিলাকে, যিনি মাতাল হয়ে পাগলামি করছেন এখানে, ওঁকে এখান থেকে টানতে টানতে বার করে দিন।”

টেবিলে সবাই বিব্রত বোধ করছেন, কেউ কোনো কথা বলছেন না।

এই মূহুর্তে শোনা গেলো একটা স্বর শান্ত ভাবে বললো, “আমার পাশে বোস, মিন হুয়ে। এখানে একটা বসার জায়গা খালি আছে।”

কোনো বসার জায়গা খালি ছিলো না।

শিন ছির বাঁদিকে ওয়াইনের মতো লাল রঙের স্যুট পরে একটি অল্প বয়স্ক ছেলে বসে ছিলো। সে ব্যাপার দেখে উঠে দাঁড়ালো, “ওহ্‌, আমার কাজ আছে। আমি আসবো এবার। সবাই ধীরে ধীরে পদগুলো উপভোগ করুন।”

দুম করে শিন ছি উঠে দাঁড়ালো, বুঝি মিন হুয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাবে, তাড়াতাড়ি মিন হুয়ের পাশে এলো, নিজের স্যুট খুলে পরিয়ে দিলো মিন হুয়েকে, নিয়ে গেলো ওকে নিজের বসার জায়গায়।

মিন হুয়ে দৌড়ে পালাতেই চাইছিলো। কিন্তু শিন ছির ডান হাত লোহার বেড়ির মতো শক্তভাবে জড়িয়ে আছে ওর হাতে।

অপ্রত্যাশিতভাবে, ব্যাঙ্কোয়েতে একটা “অপরিকল্পিত” অনুষ্ঠান হয়ে গেলো। চেং ছিরাং চোখ সরু করে দুবার তাকালো শিন ছি আর মিন হুয়ের দিকে, হাসলো, “হেহ!" প্লেটের ওপরে থাকা স্টিকটাকে কেটে একটা টুকরো মুখে দিলো এবং জমিয়ে চিবোতে চিবোতে বললো, “ইথান, তুমি সত্যিই জানো নায়করা কিভাবে সুন্দরীদের উদ্ধার করে।”

“উল্লেখ নিষ্প্রয়োজন।” শিন ছি মেরুদন্ড খাড়া করে বসলো, আর বললো, “আমি মিন হুয়েকে জানি। এই আর কি।”

“প্রথমত, এটা একটা তুচ্ছ ব্যাপার, উল্লেখের দরকার নেই, সবার রুচি নষ্ট করার জন্য।”

চেং ছিরাং দরাজ হেসে উত্তর দিলো, “সবাই খেয়ে চলেছে, কথা বলে চলেছে …”

মিন হুয়ের সামনে এক প্লেট চিংড়ি ছিলো। মিন হুয়ে একটা গভীর শ্বাস নিলো আর সিদ্ধান্ত নিলো যে খাওয়াতে মন দেবে। তাই একটা কাঁটা দিয়ে একটা চিংড়ি তুলে মুখে পুরে দিলো। কিন্তু শিন ছি কেড়ে নিলো, “এরকম করে চিংড়ি খায় কেউ, মিন হুয়ে?”

ওর স্বর নরম, মধুমাখা, “চিংড়ির খোলাটা এতো বড়ো, এটা তোর গলায় আটকে যাবে। আমি ছাড়িয়ে দিচ্ছি।”

ও ছুরি নামিয়ে রাখলো। নিজের হাতের আঙুল দিয়ে চিংড়ির খোসা ছাড়িয়ে, মাংসল অংশটা রাখলো মিন হুয়ের প্লেটে।

মিন হুয়ে খুব হতাশ হয়ে ছিলো, যেনো ফেটে পড়বে এবার, ও চাইছিলো চিংড়ি খেয়ে যেতে যেনো কিছুই হয় নি এমন একটা ভান করে।

ওর পাশে বসে শিন ছি চিংড়ির খোলা ছাড়াচ্ছে আর টেবিলে বসে থাকা অন্য মানুষদের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছে।

সব্বাই ভান করলো যেনো কিছুই ঘটে নি।

ব্যাঙ্কোয়ে শেষ হওয়া পর্যন্ত দুজনের মধ্যে কোনো কথাই হলো না শুধু চিংড়ি ছাড়ানো আর চিংড়ি খাওয়া ছাড়া।



সবাই যখন দেখলো শিন ছি আর মিন হুয়ে খুবই ঘনিষ্ঠ তখন উপস্থিত সবাই মিন হুয়ের জন্য মোটেই দুঃখ বোধ করলো না। এমনকি চেং ছিরাং আর ঝেং য়ি তিং-ও।

ব্যাঙ্কোয়ে শেষ হতে, শিন ছি বাইরে এলো মিন হুয়েকে সঙ্গে নিয়ে আর সোজাসুজি বলে দিলো, “তুই সত্যিই জানিস কিভাবে তোর প্রেম জানানোর উপযুক্ত জায়গা খোঁজা যায়, মিন হুয়ে।”

“...”

“যেহেতু তুই চেং ছিরাং-কে এতো ভালোই বাসিস, তাহলে ওর বৌ যখন তোকে মারলো, তোরও ওকে ঘুরে মারা উচিৎ ছিলো। তুই ওর থেকে মাথাতেও বেশি লম্বা আর গায়েও ওর থেকে তোর জোর বেশি, তুই নিশ্চয়ই জিতে যেতিস মারপিটটাতে। আমি তো দশ য়ুআঁ বাজি ধরতেও রাজি আছি।”

“...”

“এমন মাতাল। আমি তো তোকে বাড়ি পাঠাতেও ভরসা পাচ্ছি না। রাতটা অন্ধকার আর ঠান্ডা। রাস্তায় একটা মহিলা গুন্ডা, তাই আইন শৃঙ্খলার অবস্থা খারাপ।”

“যথেষ্ট বলেছিস, শিন ছি!”

“না তো। আমি তো তোকে এক কথায় স্বান্তনা দেবার চেষ্টা করছিলাম।”

ওর শরীর থেকে একটা লেবু লেবু গন্ধ বেরোচ্ছিলো, মিন হুয়ের মনে হচ্ছিলো যে ও যেনো ঘোরের মধ্যে একটা কমলা লেবুর ঝোপে এসে পড়েছে, “মর্যাদার ক্ষতি হওয়াটা খুব ভ্রান্ত কিছু নয়। রেহ্‌ট একবার বলে ছিলো যে তুমি বুঝতেও পারবে না মর্যাদা কী যতক্ষণ না তুমি তার পুরোটাই খোয়াচ্ছো। যে ধরনের বোঝাই হোক, সেটা থাকলে তুমি জানবেও না স্বাধীনতার অস্তিত্ব কী জিনিস।”

“রেহ্‌ট আবার কে?”

“দেখিস নি ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’ সিনেমাটা?” ও হ্যাঁ, তুই তো দেখিস নি। সু তিয়াঁ আর আমি - আমরা একবার দেখে ছিলাম।”

কথা বলার সময় ও আসলে মিন হুয়েকে ঠেকা দিয়ে রেখে ছিলো, ভয় পাচ্ছিলো হাই হিল পরে মিন হুয়ে হয়তো পড়ে যাবে।

“...”

মিন হুয়ে চুপ করে আছে দেখে ওর কিছু বলার ছিলো না, “দেঁ চেন বলেছে তুই নাকি সু তিয়াঁর ভাইকে খুঁজে বার করেছিস?”

“হ্যাঁ।”

“আমি ওকে দেখতে চাই।”

“আমার কাছে ওর মোবাইল নাম্বার আছে। তোরা নিজেরা ঠিক করে নে কোথায় কখন দেখা করবি।”

“আমি ওকে এখন দেখতে চাই।”

“ও …” মিন হুয়ে একটু দ্বিধায় পড়ে গেলো, তারপর স্থির করে নিলো যে সত্যিটা বলেই দেবে, “ও আমার ছেলের কাছে হাসপাতালে আছে এখন।”

“তাহলে চল, একসাথে হাসপাতালে যাই।”

“হ্যাঁ।”

“দাঁড়া এখানে একটু। আমার ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে আসবে।”

অ্যালকোহলের অনুভূতি ঝাঁপিয়ে আসছে। মিন হুয়ের মাথা কেবল ভোঁ ভোঁ করছে। মিন হুয়ে একটু টলমল করছিলো। তাই ও দেওয়ালে ঠেস দিয়ে দাঁড়ালো।

“তাহলে, তুই বিয়ে করেছিস?” বলে মিন হুয়ের দিকে তাকিয়ে চুপ করে গেলো শিন ছি।

“ঠিক।”

“গংশি নিয়া” শিন ছি ভ্রু কোঁচকালো, “তোর বিয়ের আংটি নেই কেনো?”

“বিয়ে ভেঙে গেছে।”

“ওহ্‌, গংশি নিয়া।”

“বিয়ে ভেঙে যাওয়াতে অভিনন্দন জানানোর কি আছে?”

“অভিনন্দন তোর প্রাক্তন বরকে। কী সৌভাগ্য এর থেকে পালানোর। এ তো একটা দূর্যোগ! এ তো আমার মতো নয়, যাকে তুই বোকা বানিয়েছিস। কিন্তু -”

ও প্রসঙ্গ বদলালো, “এতো বছর পরে, তোর অভিনয়ের দক্ষতা কমে গেছে কেনো?”

মিন হুয়ে আর শুনতে চায় না শিন ছির ব্যাঙ্গে ভরা কথাগুলো, তাই ও ফোন বার করে ক্লিক করলো “দিদি” লেখার ওপরে, “এই যে - তোর উচিৎ চেন জিয়া জুনের সাথে নিজে কথা বলা। আমি তোদের দুজনের মধ্যেকার ব্যাপারে আমাকে জড়াতে চাই না। বাচ্চাটা অসুস্থ। আমাকে শিগগির হাসপাতালে যেতে হবে।”

মিন হুয়ে এক ঝলকে রাস্তার ধারে চলে গেলো, কিন্তু শিন ছি ওকে দমকা হাওয়ার মতো টেনে নিয়ে পুরে দিলো গাড়িতে। 

গাড়িটা খুব তীব্র গতিতে চলছে। মিন হুয়ের পেট গোলাতে লাগলো, ও আর সামলাতে পারলো না। ও বমি করতে চাইছে। ওর কেবল মনে হচ্ছে যেনো ওর বুকে কিছু আটকে গেছে।

“আমি কখনো ভাবি নি যে তুই এরকম মা হবি। বাচ্চা যখন অসুস্থ তোকে তখনও রিসেপসনে যেতে হবে, তোকে তোর পুরোনো প্রেমিকের কাছে প্রেম স্বীকার করতে হবে, নিজেকে ইন্ডাস্ট্রির লোকেদের কাছে হাস্যকর করে তুলতে হবে - মিন হুয়ে, তোকে বাঁচিয়ে সু তিয়াঁ ওর জীবনে কী লাভ করলো বা নাকি তোকে আহত করে ছিলো বাঁচিয়ে? ভাগ্য, কেবল তোর সাথে এ জীবনে দেখা হয়ে যাওয়া? এমন কি আমি অবধি ভুগবো? সিট বেল্ট বাঁধ, তুই আমার সিট বেল্টটা ধরে পরার চেষ্টা করছিস।”

“বলে ফেল, বলতে থাক, কেবল বল … আমি ভাবছিলাম তুই এসব পেরিয়ে গেছিস।” মিন হুয়ে গর্জন করলো নিচু স্বরে।

শিন ছি সত্যি বলে গেলো যা মুখে এলো তাই। সব রকমের রাগ উগরে দিলো। এক মূহুর্ত থামলো না সারা পথে।

এই প্রথম মিন হুয়ে বুঝতে পারলো যে শিন ছি এতো গুছিয়ে কথা বলতে পারে। ও এতে মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। ওর বুঝতে অনেক ক্ষণ লাগলো যে শিন ছি থেকেই থেকেই গালি দিচ্ছিলো।

গাড়ি থেকে নেমে ইনপেশেন্ট ওয়ার্ডের প্রথম তলে পৌঁছে, শিন ছি হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লো এলিভেটরের সামনে, “আমি নিচেই অপেক্ষা করবো। ওকে বল নিচে এসে আমার সাথে দেখা করতে।”

মিন হুয়ে হতচকিত হয়ে গেলো, "কেনো? তুই আমার ছেলেকে দেখতে চাস না।”

“তোর ছেলে?” শিন ছি নাক দিয়ে একটা আওয়াজ করলো হিম ঝরিয়ে, “আমি তোর ছেলেকে কেনো দেখবো? আমি শুধু সু তিয়াঁর দিদিকে দেখতে চাই।”

মিন হুয়ে তিন সেকেন্ড চুপ করে রইলো, তারপর বললো, “কারণ ও তোরও ছেলে। শিন ছি, তোর একটা ছেলে আছে।”




~~~~~~~~~~~~

সম্পূর্ণ বই বিনামূল্যে : https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96

Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-31.html

Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-33.html

Friday, September 6, 2024

JPDA - Chapter 31

 ৩১. সম্বর্ধনা



মিন হুয়ের পরের সপ্তাহটা কাটল এলোমেলো, টালমাটাল। ওর একটাই চিন্তা ছিলো সু ছনের সার্জারি। 

চেং ছিরাং-এর সঙ্গে দেখা করার পরের পরের দিন চেং গুয়াং য়ি এসে পৌঁছোলেন যেমন কথা ছিলো। তাঁর মাথার চুল ধূসর, গম্ভীর, অবসরের মুখোমুখি বয়স্ক একজন মানুষ। তাঁর অবদানের কথা ভেবে হাসপাতাল বিশেষভাবে তাঁর জন্য সিঙ্গাপুরে সময় কাটানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছে, ‘এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড স্টাডি ভিসিট’ নামে, আসলে এটা একটা সবেতন ছুটি ছিলো।

চার ঘন্টার অপরেসন খুব সার্থক হয়েছে। অপরেসনের পর তিন দিন সু ছন আইসিইউ-তে ছিলো। তারপরে ওকে জেনারেল ওয়ার্ডে দেওয়া হলো। বাচ্চাটা ব্যাথা পাবে বলে ভয় পেতো। যখন ছোটো ছিলো তখন ভীষণ কান্নাকাটি করতো যন্ত্রণায়। মিন হুয়ের ভয় ছিলো যে ছেলেটা সুস্থ হবে না ভালো করে তাই ও ছুটি নিয়ে ছিলো রাতদিন ছেলের দেখাশোনা করার জন্য। বুকের গহ্বরের ক্ষতটা খুব গভীর নয়, তবে ক্ষতটা হৃদপিন্ডের আবরনের ঠিক ওপরে। সেই জন্যই নজর রাখতে হবে যাতে ক্ষতটায় কোনো রকম সংক্রমণ না হয়। বিভ্রান্ত চোখে মিন হুয়ে দেখতে লাগলো ছেলেকে, মনের মধ্যে নানান ভয় আর ভয়। ও ভালো করে ঘুমোতেও পারলো না প্রায় এক সপ্তাহ। চেন জিয়া জুন খুব চাইছে সাহায্য করতে। ঝৌ রু জিও থেকে থেকে দেখে যাচ্ছে ওদের। কিন্তু মিন হুয়ে তার ধারণায় অনড় যে মাকেই খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চার। আর জিয়া জুনের বাচ্চা মানুষ করার অভিজ্ঞতা নেই, ও পারবে না সু ছনের খেয়াল রাখতে।

অপরেসনের চার দিন পরে যখন সু ছন জেনারেল ওয়ার্ডে এলো, তখন জিয়া জুন চিকেন স্যুপ বানিয়ে আনলো মিন হুয়ের জন্য। 

তখন মিন হুয়ের কিছু মনে পড়ে গেলো, “শাও গ্য কী এর মধ্যে আর উদয় হয়েছে?”

জিয়া জুন দাঁত বার করে হাসলো, মোটেই গম্ভীর হতে পারলো না, “আমি ওকে মেরে ভাগিয়েছি, দিনের বেলা আসতে সাহস করে নি, ও কেবল রাতে আমাদের জানলায় ইঁট ছুড়েছে। কাঁচ ভেঙেছে কিছু।”

বাচ্চার অসুস্থতার জন্য মিন হুয়ে অনেকগুলো কাজ বাদ দিয়ে দিয়েছে। আগে হলে মিন হুয়ে পুলিশে খবর দিতো বা কমিউনিটি সিকিউরিটিকে ডাকতো। কিন্তু ওর শক্তি ছিলো না এতো কিছু একসঙ্গে সামলানোর। সেই জন্য বললো, “চলো, শান্ত হই। আমি দু লাখ য়ুআঁ দিয়ে দেবো ওকে। না হলে, অপেক্ষা করো সু ছন হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ হওয়া অবধি। এখন বাড়িতে থাকাটাও খুব শান্তির নয়।”

জিয়া জুন আপত্তি জানিয়ে মাথা নাড়লো, “এইসব গ্যাংস্টারের সাথে রফা করার সময় কখনোই ওদের টাকা দেবে না। একবার যদি ওরা টাকার মিষ্টতা টের পায় তো ওরা মনে করবে যে এই ছুতোটা কাজে দেয়। তারপর রোজ আসবে তোমার কাছে টাকার দাবি নিয়ে।”

“তাহলে? কী করা যায়?”

“আসুক আমার কাছে, আবার মেরে ভাগাবো।”

“তুই কী আবার জেলে যেতে চাস? চেন জিয়া জুন, কতো বার বলব তোকে যে মারপিট করে সমস্যার সমাধান হবে না।”

“জিয়েজিয়ে, যাই হোক, তুমি আজকাল হাসপাতালে। ওরা তোমাকে ছুঁতে পারবে না। এটা তুমি ছাড়ো। আমি বুঝে নিচ্ছি।”

কথা বলা শেষ করে ছেলেটা একটা ভাত খাবার চামচ দিলো মিন হুয়েকে, “নাও, এখন চটপট স্যুপটা খেয়ে ফেলো।”

অল্প বয়সে যখন ওর থাকার জায়গা ছিলো না, রাস্তায় থাকতো, জিয়া জুন অনেক রকম কাজ করেছে, আবর্জনা তোলার কাজও করেছে, খাবার ডেলিভারির কাজ করেছে, ওয়্যারহাউস দেখাশোনার কাজ করেছে আর সিছুয়ান রেস্টুরেন্টে কাজ করেছে, সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করা ছাড়াও।

মিন হুয়ে চোখ দিয়ে ঝলসে দিলো ওকে। তারপর থার্মোস থেকে স্যুপটা ঢেলে নিলো লাঞ্চ বক্সে। এক চুমুক দিয়ে জানালো, “দারুণ স্বাদ!।”

“আরো খাও। আমি কাজে যাচ্ছি। জলদি গেলাম, রাতে আসব।”

মিন হুয়ে দেখলো চেন জিয়া জুনের চলে যাওয়া। আধ বাটি স্যুপ খাবার পর হঠাৎ ওর মনে পড়ে গেলো কারুর কথা, শিগগির বার করলো ফোনের অ্যাড্রেস বুক। ওর মনে পড়ে গেলো শিন ছির এক বন্ধু আছে যে একটা বডিগার্ড কোম্পানি চালায়, তখন ওকে একটা বিজনেস কার্ড দিয়ে ছিলো। সেই সময়ে ও বিজনেস কার্ডের একটা ছবি তুলে রেখে দিয়ে ছিলো। অনেক ক্ষণ খোঁজার পরে ও ছবিটা খুঁজে পেলো। লোকটার নাম ছিলো দেঁ চেন। কার্ডের ওপরে নাম ছিলো “সিলভার অ্যারো সিকিউরিটি সার্ভিস কো.”। তাতেই লেখা ছিলো যে কোম্পানির মূল ব্যবসা হলো গণ্যমান্য লোকেদের সিকিউরিটি দেওয়া, অল্পদিনের কাজ, স্টারদের গার্ড, কর্পোরেট প্রোটেকসন, ইভেন্ট প্রোটেকসন, ইক্যুইপমেন্ট রেন্টাল ইত্যাদি।

মিন হুয়ে তাড়াহুড়ো করে ফোন করলো। কেউ একটা উত্তর দিলো, “ওয়ে …”

“আমি মিন হুয়ে, চিনতে পারছেন? চার বছর আগে শিন ছি আর আমি শিংশুই কাউন্টিতে ছিলাম? আমাদের পয়সার ব্যাগ হারিয়ে গিয়ে ছিলো, আর শিন ছি আপনাকে ডেকে ছিলো তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করার জন্য? ”

“চিনতে পারছি।” অন্য পাড় থেকে ভেসে এলো দেঁ চেন-এর শান্ত সমাহিত গলা, “মিন শওজিয়ে, আপনি কী বিপদে পড়েছেন?”

মিন হুয়ে একটা “আহ্‌” বলে শুরু করলো। তারপর শাও গ্যয়ের বৃত্তান্ত বললো আগাগোড়া। 

“আপনি এখন কোথায় থাকেন?”

“বিনচেং-এ আছি।”

“আচ্ছা, আমার একটা আপিস আছে বিনচেং-এ। দয়া করে আমাকে আপনার পুরো ঠিকানাটা দিন আর শও গ্যয়ের পুরো নাম। আমি আজই যোগাযোগ করবো আমার বিনচেং আপিসে। কেউ না কেউ ব্যাপারটা সামলে নেবে।”

“খুব ভালো। কতো খরচা পড়বে বলুন। আমি উইচ্যাট দিয়ে টাকাটা পাঠিয়ে দেবো।”

দেঁ চেন প্রশ্নটার উত্তর দিলেন না, প্রসঙ্গ বদলে ফেললেন, “তাহলে সু তিয়াঁর দিদি - হলো গিয়ে চেন জিয়া জুন, আপনি বললেন। খুঁজে পেয়েছেন?”

“হ্যাঁ।”

“আপনি নিশ্চিত?”

“হ্যাঁ। ডিএনএ তুলনা করে দেখা গেছে, ডিএনএ ডাটাবেসের তুলনার ফলাফল দেখে যোগাযোগ করেছি।”

অন্য পাশে দীর্ঘ নীরবতা ঘনালো। তারপর শোনা গেলো, “আপনি শিন ছিকে জানাচ্ছেন না কেনো? আপনি জানেন নিশ্চয়ই যে ও খুঁজছে একই লোককে।”

“তাহলে, শিন ছি … এখনো বেঁচে আছে?”

কোনো কারণে মিন হুয়ের চোখ লাল হয়ে উঠলো, “সার্জারি - ঠিকঠাক হয়ে ছিলো?”

“না, সার্জারি ভালো হয় নি। ও অনেক দিন ধরে ভুগেছে। বছর খানেক পড়াশোনাও বন্ধ করে দিতে হয় ওকে।”

“ও ছাত্র ছিলো?”

“তুমি জানতে না?”

“ও বলে নি তো।” আবার জিজ্ঞেস না করে পারলো না মিন হুয়ে, “ও এখন কেমন আছে?”

“খুব ভালো।”

“তাহলে তো ভালোই।’

মিন হুয়ে একটা স্বস্তির শ্বাস ফেললো আর একটা ঝলমলে মুখশ্রী জেগে উঠলো ওর মনে, “সেই ছাড়াছাড়ি হয়ে ইস্তক আমি শিন ছিকে আর কখনো দেখি নি। আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। ও আমার সাথে যোগাযোগ রাখতে চায় না।”

যখন মিন হুয়ে শিংশুই কাউন্টি ছেড়ে যাচ্ছিলো, তখন ও বাসে বসে একটা লম্বা মেসেজ লিখে ছিলো উইচ্যাটে, ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে, পুরো ব্যাপারটা পরিষ্কার করার চেষ্টায়। কিন্তু তার আগেই শিন ছি ওকে ব্লক করে দিয়ে ছিলো।

ও জানতো শিন ছি রাগলে দূর্বাসা মুনির থেকেও ভয়ানক। কিন্তু শিন ছি এতোটা নির্দয় সেটা ও ভাবে নি। এই কারণে ও অনেক দিন দুঃখও পেয়েছে।

“এটা তোমার আর ওর মধ্যেকার ব্যাপার নয়। এটা ওর আর সু তিয়াঁর ভাইয়ের ব্যাপার। আমার মনে হয় শিন ছিরও জানা উচিৎ।”

“আমি সেটা জিয়া জুনকে জানিয়েছি, জিজ্ঞেস করেছি যে ও শিন ছির সাথে যোগাযোগ করতে চায় কিনা। অনেক দূরত্ব, তাই জিয়া জুন রাজি হয় নি।”

ফোনের উল্টোপারে অনেকক্ষণ কোনো কথা বললেন না কেউ।

 “যদি আপনার সাথে শিন ছির যোগাযোগ থাকে এখনো, তাহলে আপনি না হয় ওকে বলে দেবেন চেন জিয়া জুনের কথা। ও যদি আসতে চায় চেন জিয়া জুনের সাথে দেখা করার জন্য, আমি আপত্তি করবো না।”

দেঁ চেন “হ্যাঁ”বললেন, কিন্তু ভরসা বিশেষ দিলেন না, “আমি এখন একটা কাজের মধ্যে আছি। পরে কথা বলব?”

“ঠিক আছে।” মিন হুয়ে ফোন রেখে দিলো, দেখলো সু ছন তখনো জেগে আছে। কম্পিউটারটা চালু করে, মিন হুয়ে কাজ করতে শুরু করলো। সন্ধে সাতটা নাগাদ দেঁ চেন উইচ্যাটে একটা মেসেজ করে জানালেন, “সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। ওরা আর কখনো তোমার কাছে আসবে না।”

কৌতুহলে কামড়ে মিন হুয়ে জানতে চাইলো, “কী করে সামলালেন?”

দেঁ চেনের উত্তরে মাত্র পাঁচটা শব্দ ছিলো, “তোমার সেকথা জানার দরকার নেই।”

***



যেমন মিন হুয়ে জানতো আগে থেকেই যে শনিবারে এআই শিল্পক্ষেত্র সম্বর্ধনা হবে।

সাও মু খুব অবাক হলো নিমন্ত্রণের উত্তরে সে যাবে এই কথাটা জানানোয় মিন হুয়ের তৎপরতা দেখে, “তুমি নিশ্চিত তো যে তোমার অসুবিধে হবে না? ওখানে চেং ছিরাং থাকবে কিন্তু -”

“আমিও তো কয়েকটা নেমন্তন্ন পাই। ভাবছি এবার এসবের ব্যাপারে অন্য কিছু করবো।”

“তোমার ভালো হোক।" তালি দিয়ে হেসে উঠলো সাও মু, “ব্যাপারটা অনেক আগেই এরকম হওয়া উচিৎ ছিলো। সবাই একই কাজের একই ব্যবসার বৃত্তে, যখন চোখ তুলে চাইবে, তখন আর ওকে দেখতে পাবে না, আর তুমি ওকে ভয়ও পাবে না, কেনো তুমি ওকে এড়িয়ে যাবে?”

“না।" দীর্ঘশ্বাস ফেলে জানতে চাইলো মিন হুয়ে, “আর কে যাচ্ছে আমাদের কোম্পানি থেকে?”

“আমি।”

“সাও জিয়ে, তোমার কী না গেলেই নয়?” চটপট মাথা নোয়ালো মিন হুয়ে, “আমি অনুরোধ করছি।”

“ব্যাপার কী?”

“কিছু না, শুধু আমি চাই না যে তুমি যাও।”

“বেশ, বেশ, আমি তোমার মনের ইচ্ছে পূরণ করবো। আমার ছোটোটির সেদিন একটা ব্যালের অনুষ্ঠান আছে। আমি সেটাতে যাবার সুযোগ হারাতে চাই না। কিন্তু শুধু খাবারের দিকে মন দিও না, চারপাশে অনেক গুজগুজ ফুসফুস চলবে এই অনুষ্ঠানে, তাই সে সবের জন্যও কান খোলা রেখো। শুনে নিও তোমার প্রতিযোগীদের পেটে পেটে কী শয়তানি খেলছে।”

“অবশ্যই।”

রিসেপসনটা হবে ঝিজিন ক্লাবে, ঝংউয়াঁ রোডের ওপরে। বিনচেং-এর এআই গোষ্ঠী প্রায়ই এখানে জড়ো হয়। যেহেতু রিসেপসনটা একটু বেশি আনুষ্ঠানিক আয়োজন, সেহেতু পরে রাতে একটা খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনও আছে। নেমতন্নর চিঠিতেই বলা ছিলো নেমতন্ন রাখতে হলে নিমন্ত্রিতকে কেমন পোষাকে যেতে হবে। মিন হুয়ে একটা সাদা রঙের এককাঁধ খোলা জামা পরল। সঙ্গে রুপোলি হাই হিল, একটা লম্বা হালকা ধূসর রঙের কোট যাতে কোনো বোতাম নেই। চোখের তলার কালি ঢাকলো অনেক পোঁচ কন্সিলার দিয়ে। তারওপরে খুব জমকালো সন্ধের মেক-আপ মাখলো। বেশ আভা হয়তো বেরোল না ত্বক থেকে, তবে খানিক চমক নিশ্চয় জাগলো। খুব খারাপ হলে মেক-আপটাকে বলা যায়, “চোখে পড়ার মতো ঢঙীর সাজ।”



ও যখন ক্লাবে পৌঁছোলো, ততোক্ষণে রিসেপসন শুরু হয়ে গেছে। ভেতরে ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় সত্তর-আশি জন, সবাই নিচু গলায় কথা বলছে, আর অনেক জন পরিবেশক টাক্সিডো পরে পানীয় আর নানান ধরনের জলখাবার পরিবেশন করে চলেছে, ভিড়ের ভেতরে।

হয়তো গোপনীয়তা তৈরি করার জন্যই ক্লাব ঘরের ভেতরে আলোগুলো যেনো কেমন নিস্তেজ। বাঁদিকে একটা ব্যাঙ্কোয়ে হল। ওখানে আটটা গোল টেবিল পাতা আছে। কিছু লোকে এর মধ্যেই টেবিলে বসে পড়েছে, গালগল্প করছে।

মিন হুয়ে এক ঝলক দেখে নিলো। শতকরা আশিভাগ লোক পরস্পরের চেনা। নানান কোম্পানির সিইও, ভাইসপ্রেসিডেন্ট, সিটিও আর বিনিয়োগকারীরা এসে জড়ো হয়েছে।

যদি হে হাই শিয়াং একটা ব্যবসার কাজে বেজিং-এ না যেতো তাহলে নিশ্চয়ই এই জমায়েত সে ছাড়তো না। আইটি শিল্পক্ষেত্রে মেয়েদের সংখ্যা বেশ কম। উঁচু পদে কাজ করে এরকম মেয়ে হাতে গোণা। মিন হুয়ে টের পেলো পুরুষের নজর যেই না ও দরজা পেরোলো।

একজন পরিবেশক ওকে থামিয়ে জানতে চাইলো, “দাজিয়ে, আপনি কী পানীয় নেবেন কোনো?”

মিন হুয়ে একগ্লাস হুইস্কি তুলে নিলো আর ঢেলে দিলো গলায়।

পরিবেশক চলে যাচ্ছিলো, মিন হুয়ে বললো, “যাবেন না।”

মিন হুয়ে নিজের হাতের গ্লাসটাতে আরো দু গ্লাস হুইস্কি ঢেলে নিলো। পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলো সামনের ভিড়টাতে। সর্বত্র ওর চোখ চষে ফেলতে লাগলো। লক্ষ্য চেং ছিরাং।



হঠাৎ একটা কোঁকড়া চুলো, খাড়া নাকওলা লোক ওকে থামালো, “মিন হুয়ে!”

মিন হুয়ে চিনতে পারলো, শা শি কাই, শেন ল্যান টেকনোলজির সিটিও। শা শি কাই আগে য়ুআঁলাই-তেই কাজ করতো। পরে চাকরি বদল করে। ও-ও কাজ করে এআই মেডিক্যাল কেয়ারে। বা’অ্যানের মতোই শেন ল্যান টেকনোলজিরও অনেকগুলো সহযোগিতাভিত্তিক প্রজেক্ট আছে বিনচেং ইউনিভার্সিটির হাসপাতালের সঙ্গে। ফলে মিন হুয়ের সাথে শা শি কাই-এর প্রায়ই দেখা হয়ে যায় হাসপাতালে। শা শি কাই এর সাথে ঝৌ রু জিরও চেনাশোনা আছে। বলা যেতে পারে দুজনে দুজনের পরিচিত।

“আরে শি কাই যে!" চটপট বললো মিন হুয়ে।

“তুমি তো কখনো এ ধরনের মিটিং-এ আসো না। হঠাৎ আজ এলে যে?” বললো শি কাই।

“ল্বব্যাঁ গেছেন বিজনেস ট্রিপে, তাই আমাকে পাঠিয়েছেন এখানকার খবর নেবার জন্য।”

“তুমি ঠিক সময়ে এসে পৌঁছেছো। তোমার থেকে কিছু জানার আছে আমার।” শা শি কাই টেনে নিয়ে গেলো মিন হুয়েকে এক কোণে, আর ফিসফিস করে বললো, “হালে স্টকের দাম পড়েছে, দুম করে, অনেক উঁচু থেকে। আমি শুনেছি যে একটা অদল-বদল হতে চলেছে ওপর তলায়?”

মিন হুয়ে চমকে উঠলো, ঝটপট মাথা নাড়লো, “আমি জানি স্টকের দাম পড়েছে। কিন্তু অদল-বদল … শুনিনি কিছু এখনো। বদলটা কী হবে?”

“আমি কী ওদিক থেকে অনেক দিন চলে আসি নি? তবুও এখনো কিছু চেনাজানা আছে ওখানে। ওরা শুনেছে যা তাই বললো - কারবার খুব খারাপ। য়ুআঁলাই চেষ্টা করছে কয়েকটা সাবসিডিয়ারি কোম্পানি বিক্রি করে দিয়ে লোকসান ভরতে। তাতে … তাতে বা’অ্যান নেই, তাই তো?”

“বা’অ্যান? কিছুতেই না।” মিন হুয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বললো, “যদিও বা’অ্যান এখন, খরচ বেশি করে আর খুব একটা রোজগারও করে না, কিন্তু বা’অ্যানের তো অনেকগুলো প্রোডাক্ট আছে। অনেকগুলো সার্টিফিকেট আর পেটেন্টও আছে। এটাকে শিল্পক্ষেত্রের প্রথম সারির কোম্পানিগুলোর একটা বলে মনে করা হয়। দূর থেকে দেখলেও, বা’অ্যানকে তো আশার আলো বলেই মনে হয়। এটাকে বেচা অসম্ভব।”

“কখনো ভেবেছো কী বা’অ্যান এই জন্য বেচা হবে না যে বা’অ্যান এখনো খুব রোজগার করে না, কিন্তু বা’অ্যান এই জন্য বেচা হবে যে বা’অ্যানকে দেখে মূল্যবান বলে মনে হয়?”

শা শি কাই ঠোঁট কুঁচকোল, “তাছাড়া য়ুআঁলাই শুরুর থেকে একটা হার্ডওয়্যার কোম্পানি। ওদের কখনোই খুব মনোযোগ ছিলো না সফ্‌টওয়্যারে। এদিকে বাজারে প্রতিযোগিতা ভয়ানক, এদিকে এআই-এর হোমোজিনাইজেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি কেউ এতে প্রচুর টাকা খরচা করে, ঠিক তোমাকে নিঙড়ে অন্য কেউ টাকা নিয়ে চলে যাবে। তাহলে কেনো এটা ঝটপট বেচে পয়সা করে নাও না, আর তাই দিয়ে সব গর্ত বোজাও?”

মিন হুয়েরও মনে হলো কথাটার মানে আছে। কিছুতেই না জিজ্ঞের করে পারলো না, “এই হাওয়াটা এলো কোথা থেকে? এর ওপরে কী ভরসা করা যায়??”

“আমি তো তোমার থেকে জানতে চাইছি যে এটা ভরসা করা যায় কিনা।” শা শি কাই মাথা চুলকোল, “আমার কাছে এখনো কিছু স্টক আছে য়ুআঁলাইয়ের। হেডকোয়ার্টার্সের লোকেদের সঙ্গে তুমি অনেক ওঠাবসা করেছো। একটু সাহায্য করো না কেনো আমাকে, এটা সত্যি না মিথ্যে সেটা জানতে?”

“আরে আমাদের মতো একটা সাবসডিয়ারির মিড্‌ল ম্যানেজমেন্ট কিভাবে জানবে এটা? যদি জানতেও পারে খোলাখুলি, তাহলে সেটা আবার ইনসাইডার ট্রেডিং হয়ে যাবে না তো?”

মিন হুয়ের মনের মধ্যে উথাল পাথাল শুরু হলো। সবে সু ছনের সার্জারি হয়েছে। জিয়া জুন সবে বাড়ি এসেছে, আজকের “কালোকে সাদা করার কারবার” এখনো শুরুই হয় নি, আর ও জানেও না যে ফল কী হবে। এখনই ওর সব থেকে বেশি দরকার ছিলো টাকার আর স্থিতিশীলতার।

“যা হোক, তুমি চেং ছিরাং-কে দেখেছো?” মিন হুয়ে জানতে চাইলো।

“আসে নি এখনো।” শা শি কাই ভ্রূ কোঁচকালো, যেনো গুজবের গন্ধ পাচ্ছে, “তুমি কী ওঁকে খুঁজছো?”

মিন হুয়ে হালকা হাসি নিয়ে বললো, “আসলে আমার কারণ আছে ওঁকে খোঁজার।”

“সিলিকন ভ্যালি থেকে এসেছেন একজন। ওঁর সাথে এখনই কথা বলেছি , তাই আমি এখন ভীষণ উত্তেজিত। যাবে নাকি একবার কথা বলতে ওঁর সাথে?”

“ঠিক আছে।”

শেষে কথাবার্তা দাঁড়ালো আধঘন্টা। শেন ল্যানের ল্বব্যাঁ, ছিয়াঁ জিয়া য়ু-এর বয়স ষাট বছর। উনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতেন। উনি কথা বললেন খুব খোশ মেজাজে। কথা ছেড়ে যেতে মিন হুয়ের বিব্রতই লাগছিলো। যতোক্ষণ না রাতের খাওয়া-দাওয়া শুরু হলো, ততক্ষণ সবাই গল্পগুজব করতে লাগলো। তারপরে সবাই যে যার জায়গা মতো বসতেই, গল্প শেষ।

হলের মধ্যে একটু যেনো গুঞ্জন উঠলো। মিন হুয়ে একটা টেবিলে বসে ছিলো ছিয়াঁ জিয়া য়ু, শা শি কাই আর অন্যদের সাথে। মাথা ঘুরিয়ে বাঁদিকে দেখলো। চেং ছিরাং আর তার স্ত্রী ঝেং য়ি তিং খানিক আগে এসে পৌঁছেছেন। তাঁরা বাঁদিকের দ্বিতীয় টেবিলে বসে ছিলেন।

ব্যাঙ্কোয়ে শুরু হলো আয়োজকের বক্তৃ্তা দিয়ে আর একটা টোস্ট উৎসর্গ করে। অনেকগুলো পদ পরিবেশন করাও হয়ে গিয়ে ছিলো গড়িয়ে যাওয়া জলের মতো। কিছুক্ষণ খাবার পরে মিন হুয়ের মাথা ঝিমঝিম করতে লাগলো। একটু আগেই ও অনেকটা মদ খেয়েছে। সেটা খানিকটা ইচ্ছে করেই হয়তো, না হলে পরের কাজটা করতে ওর সাহসে কুলোবে না।

রিসেপসনের নিমন্ত্রিতরা নিজের নিজের জায়গা ছেড়ে উঠে একে অপরকে টোস্ট দিতে লাগলো। মিন হুয়ে দাঁতে দাঁত চিপে উঠে দাঁড়ালো। সাদা ওয়াইনের একটা গ্লাস তুলে নিলো হাতে। এগিয়ে গেলো চেং ছিরাং-এর টেবিলের দিকে। 

মাত্র দশ পা দূরত্ব। কিন্তু মিন হুয়ের মনে হতে লাগলো যেনো ও একটা পাহাড় ডিঙোচ্ছে। আট সেন্টিমিটার হাই হিল ওর কোমরে যেনো ভয়ানক প্যাঁচ কষছে। 

এই সময়ে যতো পুরুষ ছিলো চারপাশে, সবাই ওকেই দেখছিলো। হতে পারে থার্টি ফোর সি স্তন, একফুট ছয় ইঞ্চি কোমরের বেড়, লম্বা পা আর সুন্দর মুখের জন্য। 

হতে পারে এই জন্যই তাকে সব পুরুষ দেখছে কারণ ও চেং ছিরাং-এর দিকে এগিয়ে চলেছে। এই মূহুর্তে চেং ছিরাং পিছনে হেলে ছিলো আর একজন পরিবেশকের সাথে কথা বলছিলো, যেনো কোনো খাবারের অর্ডার দিচ্ছে।

ছিনালিপণা কী করে করতে হয় তা যেনো শেখার দরকার নেই। মিন হুয়ে হেঁটে গেলো চেং ছিরাং-এর কাছে অবধি, বসে পড়লো চেং ছিরাং-এর কোলে, জড়িয়ে ধরলো চেং ছিরাং-এর গলা আর হামলে পড়ে চুমু খেলো, তারপর অনুযোগের সুরে বললো, “ছিরাং, তোমার জন্য খুব মন কেমন করে। ও শিয়াং নিয়া।”

হঠাৎ পুরো হলে নৈশব্দ নেমে এলো। এতো চুপচাপ যে মিন হুয়ে শুনতে পাচ্ছিলো পিয়ানিস্ট ফ্রনট ডেস্কে বেঠোভেনের মুনলাইট সোনাটা বাজাচ্ছে। 

সবাই হতবাক।

মিন হুয়ে আধা হাসিতে তাকিয়ে দেখলো চেং ছিরাং-এর মুখের ওপরের শানেল রুজ কোকোর দাগটাকে যেটা ও এইমাত্র লেপে দিয়েছে, ওর মুখটা হঠাৎ হিম হয়ে গেলো, আর ওর পাশে বসে ঝেং য়ি তিং ওর মাথায় একগ্লাস ওয়াইন ঢেলে দিলো। 

একই সঙ্গে চেং ছিরাং-ও ওর শরীরটাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো নিজের কোল থেকে -

মিন হুয়ে প্রায় পড়েই গেলো, কিন্তু ও সময় মতো টেবিলটাকে ধরে নিলো। অসাবধানতাবশত মাথা তুলে সামনে তাকালো আর দেখতে পেলো সামনে শিন ছি।



ও বসে ছিলো টেবিলের উল্টোদিকে, চেং ছিরাং-এর মুখোমুখি।




~~~~~~~~~~~~

সম্পূর্ণ বই বিনামূল্যে : https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96

Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-30.html

Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-32.html

Readers Loved