Showing posts with label Workplace Gender Equity. Show all posts
Showing posts with label Workplace Gender Equity. Show all posts

Monday, October 21, 2024

List of all the Chapters of Nǐ gěi wǒ de xǐhuān


 Here I have listed all the chapters of যে প্রেম দিলে আমায় [你给 我的喜欢] [Nǐ gěi wǒ de xǐhuān] [নি গেই ও দে শিহুয়াঁ] 

১. বাস https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/07/acknowledgement.html

২. বাধ ফেরতা স্রোতের খাঁড়ি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/07/jpda-chapter-02.html

৩. নীল সোনা প্রমোদভবন https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/07/jpda-chapter-03.html

৪. সু তিয়াঁর ডায়েরি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/07/jpda-chapter-04.html

৫. শিক্ষক হান https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/07/jpda-chapter-05.html

৬. শিন ছি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-06.html

৭. ভিলা হোটেল https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-07.html

৮. দাবা খেলা https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-08.html

৯. বিস্ময় নাকি বিভীষিকা https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-09.html

১০. ভাই https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-10.html

১১. প্ল্যান-বি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-11.html

১২. তাড়া করা এবং পালানো https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-12.html

১৩. স্বীকারোক্তি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-13.html

১৪. হে শিয়ান গু https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-14.html

১৫. উপত্যকা ফুল মাছ https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-15.html

১৬. দেঁ চেন https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-16.html

১৭. সত্য https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-17.html

১৮. সাক্ষাৎকার https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-18.html

১৯. ঝৌ রু জি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-19.html

২০. সামিল https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-20.html

২১. নাগর আমার https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-21.html

২২. কাঁচি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-22.html

২৩. সাদা লাল জামা https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-23.html

২৪. বেগুনি পুঁতি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-24.html

২৫. সু ছনের চোখের জল https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-25.html

২৬. হিমেল চাঁদনিতে একটা দিন https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-26.html

২৭. চেন জিয়া জুন https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-27.html

২৮. জেলের বাইরে https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-28.html

২৯. ভালভ https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-29.html

৩০. অনুভূতি আর সংবেদনশীলতা https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-30.html

৩১. সম্বর্ধনা https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-31.html

৩২. দেবদূত ও দানব https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-32.html

৩৩. পুত্র https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-33.html

৩৪. পিতা https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-34.html

৩৫. গরু https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-35.html

৩৬. নীল পাখি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-36.html

৩৭. বাতাসের শব্দ https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-37.html

৩৮. বরাহের বুদ্ধি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-38.html

৩৯. ঘড়ি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-39.html

৪০. ভালুক ছানা https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-40.html

৪১. য়িন শু https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-41.html

৪২. ছ কোনা ভ্রু আঁকা পেন্সিল https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-42.html

৪৩. য়ে শিয়াও ঝেন https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-43.html

৪৪. দারুচিনি কেক https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-44.html

৪৫. ভীমরুল https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-45.html

৪৬. ধার করো https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-46.html

৪৭. বেচা কেনা https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-47.html

৪৮. মিটিং-এর আগে https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-48.html

৪৯. মিটিং https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-49.html

৫০. প্রতিবেদন https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-50.html

৫১. রাতের আলো https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-51.html

৫২. কে ও https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-52.html

৫৩. হাস্কি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-53.html

৫৪. অ্যাকুইজিসন https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-54.html

৫৫. ঝাও মু খেলাধুলোর সরঞ্জাম https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-55.html

৫৬. ঘোড়ার চাল https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-56.html

৫৭. পদত্যাগ https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-57.html

৫৮. ইঁট   https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-58.html

৫৯. ফুটি https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-59.html

৬০. ইয়ালু নদী https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-60.html

৬১. এরোপ্লেনে https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-61.html

৬২. জিতং শু-এর তলায় https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-62.html

৬৩. দুঃখী বাহিনী https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-63.html

৬৪. রুপোলি মাছ https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-64.html

৬৫. শু জিয়া ঝুয়াং https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-65.html

৬৬. মুখর https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-66.html

৬৭. সামনে উঁচু পাহাড় https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-67.html

৬৮. নির্লিপ্ত একাকীত্ব https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-68.html

৬৯. লাভের খোঁজ https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-69.html

৭০. পাল্টা হাওয়া https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-70.html

৭১. নোনা মাছ https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-71.html

৭২. আইভি গার্ডেন https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-72.html

৭৩. হাওয়া https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-73.html

Saturday, October 19, 2024

Download and Read The Whole Book

 The Book:

Step 1: 

Click on the Link:

https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96

Step 2: 

Choose any one of the options

  1.  এখানে বই পাবেন
  2. Start Reading on your browser





Step 3:

    If clicked on the option 1 "এখানে বই পাবেন", then chose "Read in Browser" option





Step 4:

Same for any of the choices you have made at Step 2.

Start Reading






Step 5:

Might be asked to create an account with BookFunnel or might be asked to log in.

Then click on the circled stack symbol on the top bar of the page. The content menu will be displayed. Choose the chapter you want to read.





Alternative, Step 4:

Choose format of your choice from BookFunnel, Kindle, Kobo, Nook, Playbooks, or as listed at he bottom in line, Email (the book to yourself), EPUB, PDF or just "Save" by bookmark.





Friday, October 18, 2024

JPDA - Chapter 73

 ৭৩. হাওয়া



দু মাস পরে গুয়ান ছাও একটা নতুন বোর্ড অফ ডিরেক্টর্স নির্বাচন করলো, নতুন এগারোজন ডিরেক্টর দিলো।

শিন ছি নির্বাচিত হলো চেয়ারম্যান অ্যান্ড সিইও সংখ্যাগুরুর ভোটে।


শিন ছি নির্বাচিত হলো চেয়ারম্যান অ্যান্ড সিইও


একই সঙ্গে চেং ছিরাং চুপচাপ পদত্যাগ করলো। তিন দিন পরে ঝেং য়িতিং সারা পৃথিবীকে জানিয়ে দিলো চেং ছিরাং-এর সঙ্গে ওর বিয়ে ভেঙে যাওয়ার কথা।

শিন ছি কাজ শুরু করার পরে, ওর পরামর্শে, গুয়ান ছাও অনেক জন অসামান্য মহিলাকে ম্যানেজমেন্ট টিমে সামিল করলো, তার মধ্যে সাও মু পেলো কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্টের পদ, মিন হুয়ে হলো চিফ টেকনোলজি অফিসার।

এইচআর-এর তদন্তের পরে, কোম্পানির মহিলাদের থেকে তেইশটা অভিযোগ জমা পড়লো আর দিঁ য়িফঁ, ওয়াং তং য়ুআঁ সমেত তিনজন কার্যনির্বাহী অধিকর্তা বরখাস্ত হলো।

অগুণতি মহিলা কর্মী, মিন হুয়ের নেতৃত্বে চেং ছিরাং-এর বিরুদ্ধে মামলা করলো যৌণ হেনস্থা আর যৌন লাঞ্ছনার, ব্যক্তিগত অধিকারের সীমা লঙ্ঘনের। এমনকি ফৌজদারি মামলাও রুজু হলো। যদিও আইনজীবিরা তৈরি হতে বললেন একটা লম্বা যুদ্ধের জন্য, কিন্তু একটা সাহসী আরম্ভ তো হলো।

গুয়ান ছাওতে কোম্পানি পরিচালনার নতুন ব্যবস্থা লেখা হলো, চালু হলো। তাতে স্পষ্ট করে যৌন হেনস্থা ও লিঙ্গ বৈষম্যের ওপরে নিষেধ জারি করা হলো। এইচআর নতুন করে প্রচার করতে শুরু করলো অভিযোগ দায়ের করার, তদন্তের আর কাজ করার নতুন ব্যবস্থাগুলো। একটা ব্যবস্থা নিলো যাতে কাজের জায়গায় যৌন হেনস্থা আর অন্যান্য যৌন অপরাধের প্রবণতা বাধা পায়। কর্মীদের জন্য একটা আচরণবিধি তৈরি করলো। কোন কোন আচরণে যৌন হেনস্থা বা যৌন অপরাধ ঘটে তার একটা বিশদ ফর্দ বানিয়ে সেটা কর্মরত সবার মধ্যে প্রচার যেমন করলো তেমন এই সবই নতুন কাজ করতে শুরু করবে এরকম কর্মীদের প্রশিক্ষণের অংশ করে দেওয়া হলো।

এসবের কোনো কিছুই মিন হুয়ের ওপরে খুব প্রভাব ফেলতে পারলো না।

যে মূহুর্তে চেং ছিরাং পদত্যাগ করলো সেই মূহূর্তটাতেও ওর মনে হলো না যে প্রতিশোধ চরিতার্থ করা হলো।

ও বার বার নিজের সমস্ত অনুভব বিশ্লেষণ করে দেখেছে। শেষে এই সিদ্ধান্তেই পৌঁছেছে যে সব থেকে কঠিন আর ভয়াবহ সময়টা কেটে গেছে আর ভেসে গেছে মুশুই নদীর বাণে।

ও যখন আবার বিনচেং-এ ফিরলো তখন একটা নতুন মেয়ে।

সু তিয়াঁ ওকে জীবন দিয়েছে, শিন ছি ওকে প্রেম দিয়েছে।

দুজন অপরিচিত মানুষ যারা ওর জীবনে হঠাৎ করে এসে ছিলো তারা ওকে পুনর্জন্ম দিয়েছে, নতুন করে বেঁচে থাকার ক্ষমতা দিয়েছে।

আর ওরা দুজনেই ভয়ঙ্কর দাম দিয়েছে তার জন্য।

শিন ছির যত্নে মিন হুয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলো।

ও যখন ফের মাটিতে পা দিয়ে দাঁড়াতে পারলো, তখন সময় ঘনিয়ে এসেছে, বিবিজি আর গুয়ান ছাও-এর যুদ্ধ চলেছে পুরো দমে।

শিন ছির কাজে যাতে ব্যাঘাত না হয়, সেই জন্য ও ছ্যুনতাং গার্ডেন ছেড়ে চলে এলো মিংসেন কমিউনিটিতে। সু ছনের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করলো, ফিরে গেলো নিজের পুরোনো জীবনের ছন্দে।

নিঃশব্দে সময় কেটে গেলো।

সিটিও হবার পরে মিন হুয়ে নিজের মধ্যে প্রচুর উদ্যম ফিরে পেলো, কাজেও খুব ব্যস্ত হয়ে পড়লো।

তবুও সময় বার করে প্রত্যেক সপ্তাহান্তে গেলো তিয়াঁয়িং পাহাড়ের নিচে প্যারাগ্লাইডিং অভ্যেস করতে।

প্রায়ই হান য়ি থাকে না। ছিন রুই ওর প্রধান প্রশিক্ষক হয়ে উঠলো। ও খুব শিগগির বি-লেভেল সার্টিফিকেট পাশ করে গেলো।

ছিশি উৎসবের এক সপ্তাহ আগে মিন হুয়ে শিন ছিকে ফোন করে বললো, “আমি সঙ্গে দু জনকে নিয়ে ওড়ার সার্টিফিকেট পেয়ে গেছি। এই শনিবারে, আবহাওয়ার পুর্বাভাস ভালো। তুই কী আকাশে উড়তে চাস?”


ছিশি উৎসব


উল্টো দিকে শিন ছি চমকে উঠলো, “তুই – কী করে পাশ করলি রে পরীক্ষাটা? এতো শিগগির?”

“এমন কিছু তাড়াতাড়ি হয় নি। আমি তো বছর শেষ হবার আগে থেকেই অভ্যেস করছিলাম। আমি হান য়ির সঙ্গে অনেক বার আকাশে উড়েছি। ও বলেছে যে আমি ভালোই উড়তে পারি। একটা বেশ ভয়ের সময় ছিলো যখন আমি মেঘ আর কুয়াশায় পড়ে ছিলাম। মেঘে প্রায় গিলেই নিচ্ছিলো আমাকে। কিন্তু কপাল জোরে আমি চটপট ব্যবস্থা নিয়েছি, চটপট একটা ক্ষেতে নেমে পড়েছি, গিয়ে সোজা বসেছি গোবরের গাদার ওপরে।”

উল্টো দিকে শিন ছি হাসলো, “তুই আমাকে আগেই নিয়ে যেতে পারতিস। চল, উড়ি।”

“আমার ভয় তুই যদি হাওয়ার মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়িস, তাই আমি তোকে নেমতন্ন করলাম অনেক ভালো করে অভ্যেস করার পরে। আমার উড়ানগুলো সুস্থির হবার পরে।”

“তাহলে, এখনই সময়?”

“হ্যাঁ, তুই যেতে চাস?”

“যাবো। তুই যদি সাহস করে নিয়ে যাস, তাহলে আমি যাবো না কেনো?”

শনিবার সকালে শিন ছি গাড়ি চালিয়ে গেলো তিয়াঁয়িং শান বেস-এর উত্তর দিকের ঢালে যেখান থেকে উড়ান শুরু হয়। পরনে জিনস্‌, অ্যাভিয়েটর রোদ চশমা, পুরো পাঙ্ক ধাঁচ।


অ্যাভিয়েটর রোদ চশমা


মিন হুয়ে জানে না আলোর জন্য নাকি শিন ছির স্বাস্থ্যের কারণে ওকে বেশ ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে, যেনো এই মাত্র জেল থেকে ছাড়া পেলো তাই অনেক দিন সূর্যের আলো পায় নি।

প্রথমে মিন হুয়ের আত্মবিশ্বাস ছিলো তুঙ্গে, কিন্তু যখন শিন ছির চেহারা দেখে মনে হলো যে কিছু একটা যেনো ঠিক নেই, ও একটু ঘাবড়ে না গিয়ে পারলো না, “শিন ছি, তুই কী নিশ্চিত যে তুই উড়বি?”

“নিশ্চিত।”

ওর মেজাজ যে থেকে থেকে বিগড়ে যাচ্ছে তেমনও নয়।

“তোর মুখটা ফ্যাকাসে লাগছে। তোর কী … কোনো ওষুধপত্র লাগবে?”

“দরকার নেই।”

“আজকে আবহাওয়া খুব ভালো, কোনো মেঘ নেই আকাশে, হাওয়ার গতিও সুস্থির। মাটির থেকে ওপরের দিকে হাওয়ার চলনে জোর খুব। আমরা অনেক উঁচুতে উড়তে পারবো।”

“ব্যাপক!”

খুশিতে শিস দিয়ে উঠলো শিন ছি।

ছাতাগুলো বিছিয়ে নেওয়ার পরে, মিন হুয়ে খুব সজাগ সচেতন হয়ে শিন ছিকে সাহায্য করলো হেলমেট পড়তে আর স্ট্র্যাপ লাগাতে।

পুরো শরীরটা মাথা থেকে পা পর্যন্ত অনেকবার দেখে নিয়ে, বললো, “জুম্বে হলা মা?”

শিন ছি ঘাড় নেড়ে জানালো যে ও তৈরি।

“আমি ই, আর, সান বললেই আমরা একসঙ্গে সামনে দৌড়োতে শুরু করবো। ই, আর, সান – –”

দুজনে খুব জোর দিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে রইলো, দশ পা মতো জোরে দৌড়ে চলার পরে, প্যারাগ্লাইডার ফুলে উঠলো আর উড়ে গেলো হাওয়ায়।

হাওয়া বইছে বলে প্যারাশুটটা দুলছে, ওপরে উঠে উপত্যকার দিকে সরে যেতে যেতে। মিন হুয়ে নিয়ন্ত্রণের চাকাটা দু হাতে ধরে আছে, কেবল উঁচুর থেকে আরো উঁচুতে উড়ে চলেছে শিন ছির সঙ্গে।

একটা দমকা ঠান্ডা হাওয়ায় কিছু ক্ষণ কাঁপতে লাগলো ও। হাওয়ার বেগ যেমনটা ভাবা গিয়ে ছিলো তার থেকে অনেক বেশি জোরালো। হাওয়া যেনো মিন হুয়ের কানের পাশ দিয়ে শন শন করে বয়ে যেতে লাগলো।

সোনালি বসন্তে, চারিদিকে পাহাড় আর উপত্যকা সবই সবুজ হয়ে আছে, বাঁয়ে একটা বড়ো হ্রদ, আর উঁচু চূড়াগুলো সব ডানদিকে। মাটির কাছ দিয়ে ভেসে যাচ্ছে মেঘ আর ছায়া, বনে পাখিরা কিচির মিচির করছে, আর পাহাড়ের গায়ের ঝর্ণা নিচ্ছে বাঁক। উঁচুতে টাঙানো তারা আঁকা চাষীদের সমবায় সংস্থার পতাকাখানা যেনো আশ্রমিক সন্ন্যাসির আলখাল্লার মতো বিছিয়া রাখা আছে চোখের সামনে।


“তোর কী ঠান্ডা লাগছে?" জানতে চাইলো মিন হুয়ে।

“না, লাগছে না। তোর লাগছে?”

“একটু ঠান্ডা লাগছে বটে, তবে ঠিক আছে।”

ও গলা থেকে রুমালটা খুলে, হাত বাড়িয়ে, ঘুরে, রুমালটা জড়িয়ে দিলো মিন হুয়ের গলায়।

রুমালটা উষ্ণ, তার থেকে লেবুর গন্ধ আসছে।

“ওদিকে দ্যাখ - একটা বড়ো পাখি!”

পুবদিকে একটা ঘন কালো ছায়ার দিকে আঙুল দেখিয়ে চীৎকার করলো মিন হুয়ে।

কালো ছায়াটা উড়তে উড়তে কাছাকাছি চলে এলো, ওটাকে স্পষ্ট করে মিন হুয়ে দেখার আগেই ধাক্কা দিলো ওদেরকে প্যারাশুটের ওপর দিয়ে।

“একটা ইগল।" বললো শিন ছি।

“সত্যি?”

শিন ছি উঁচু করে ধরলো ওর গো-প্রোটা। 

“আমি ছবি নিয়েছি। ইগল্‌ খুব ভয়য়ঙ্কর জানোয়ার।”

ঘাবড়ে গিয়ে একটা শ্বাস নিলো মিন হুয়ে, “ভাগ্য ভালো আমাদের আক্রমণ করে নি।”

“মনে হচ্ছে আমরা নিচে নামার জায়গাটা পেরিয়ে উড়ে এসেছি।”

বললো শিন ছি মাটির দিকে তাকিয়ে।

“হ্যাঁ। আমি আরো কয়েক পাক উড়বো যাতে তুই আরো বেশিক্ষণ হাওয়াতে থাকতে পারিস।”

“শিয়া শিয়া।”

প্যারাগ্লাইডার নিঃশব্দে ভেসে যাচ্ছে হাওয়ায় আর মিন হুয়ে দক্ষ হাতে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।

যাই হোক, সঙ্গের লোকটা হৃদরোগি। হাওয়ার গতি যেনো সামান্য এলোমেলো হয়ে গেছে।

অনেক বার অভ্যেস করা সত্ত্বেও মিন হুয়ে এখনো সামান্য ঘাবড়ে যাচ্ছে, ওর হাতের তালু আর পিঠ কেমন ঘেমে উঠছে।

পরের দশ মিনিট প্যারাগ্লাইডারের নিয়ন্ত্রণে ও এমন গভীর মনোযোগ দিলো যে কোনো কথাই বললো না।

খানিক ক্ষণ পরে উড়ানের স্থিতি ফিরে এলো। মিন হুয়ে বললো, “আমি তোকে বলতে ভুলে গেছি যে আসছে মাসের শেষের দিকে সাও মু আর য়িন শু আবার বিয়ে করবে। ওরা একটা রেস্টুরেন্ট ভাড়া করেছে, আমাদের নেমতন্ন করেছে রাতে খাবার জন্য। তোর সময় হবে যাবার?”

“হ্যাঁ।”

শিন ছি ঘার নাড়লো।

“জিয়া জুন আর শও লু - ওরা দুজনেও বিয়ে করবে বলে তৈরি হচ্ছে। আশা করা যায় যে ব্যাপারটা খুব শিগগিরই ঘটবে।”

“হ্যাঁ, ও বলেছে আমাকে।”

“তোর খবর কী? তুই কবে বিয়ে করছিস?”

জানতে চাইলো শিন ছি।

ছিন রুই-এর সঙ্গে ব্লাইন্ড ডেট ভেস্তে যাবার পরে সাও মু, য়িন শু আর ঝৌ রু জি পর পর মিন হুয়ের সঙ্গে অনেক লোকের আলাপ করিয়ে দিয়েছে।

মিন হুয়ে সবার সঙ্গে দেখা করেছে। কারুর কারুর সঙ্গে এক বারের বেশিই দেখা করেছে কয়েক দিন ধরে, কিন্তু ছেড়ে দিতে হয়েছে।

“আমি জানি না। আমার তো কোনো সঙ্গীই নেই।”

শ্বাস ফেললো মিন হুয়ে, “মনে হচ্ছে এ জীবন একলাই কাটাতে হবে - সেটাই ভবিতব্য।”

“একলা থাকবি?”

ও বুঝতে পারলো না, “কী বলতে চাইছিস?”

“অল্প কথায় – সিঁদুরে ঢাকের বাদ্যি। … এটা ঠিক নয়, ‘আমি একলাই মরবো’, কী দুঃখের কথা।”


সিঁদুরে ঢাকের বাদ্যি প্রবচন



চিনে সংস্কৃতিতে সিঁদুরের তাৎপর্য


“কোনো অনুশোচনা নেই। আমার জীবনের অভিজ্ঞতাও প্রচুর। প্রেম, বিয়ে, বাচ্চার জন্ম, বিয়েভাঙা, নানান রকম, একবার প্রায় মরেই যাচ্ছিলাম। আমি তো … সত্যিই সব কিছুর মধ্যে দিয়ে গেছি।”

“আমাকে বিয়ে করবি?" শান্ত ভাবে প্রশ্ন করলো শিন ছি।

“অ্যাই! তুই আমাকে নিয়ে মজা করছিস আবার।" মিন হুয়ে একটা চাপড় মারলো, “তোর মগজে কখনো কী তাজা হাওয়ার অভাব হয় না?”

“আমি মজা করছি না। সত্যি জানতে চাইছি।”

“বাজে কথা রাখ।”

মিন হুয়ে বললো, “তুই যদি একটুও গুরুত্ব দিতিস, তাহলে কী আর তুই আমাকে অন্য কারুর সঙ্গে আলাপ করাতিস? আমি যদি সত্যিই ছিন রুইকে পছন্দ করতাম?”

“কিছু লোকের আত্মবিশ্বাস খুব বেশি হয়।”

“কী বললি?”

“আমি জানি, যাই হোক না কেনো, যতো লোকের সঙ্গেই তোকে আলাপ করিয়ে দিই না কেনো, যাকে তুই বিয়ে করতে চাইছিস সে লোকটা সব সময়ে আমিই।”

মিন হুয়ের সামনে একটা বাক্স তুলে ধরলো, “আমি একটা আঙটিও এনেছি।”

যখন বাক্সটা খুললো তখন একটা ছোটো স্বচ্ছ রঙহীন পাথর উজ্জ্বল সুর্যের আলোতে ঝকঝক করে উঠলো, মিন হুয়ের চোখ কুঁচকে গেলো।

মিন হুয়ে চমকে গেলো, শূণ্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো শিন ছির দিকে, বেশ খানিক ক্ষণ পরে প্রশ্ন করলো, “সত্যিই? তুই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছিস?”

“হ্যাঁ।”

“তাহলে আমি সেই তিনটে শব্দ শুনতে চাই।”

“কোন তিনটে শব্দ?”

“ওয়া আই নি।”

“আমি বলতে পারবো না।”

আকাশের দিকে দেখিয়ে বললো, “একজন আমাদের দুজনকে দেখছে।”

মিন হুয়ে চোখ পাকালো, “তুই বলতে চাস কী?”

“বলবো না।”

“তুই যদি না বলিস,” হিংস্র স্বরে বললো মিন হুয়ে, “তাহলে আমি মাটিতে নামবো না।”

“ঝামেলা পাকাস না। মানুষের প্রাণের ঝুঁকি জড়িয়ে আছে।”

“বেশ তো, আমরা তাহলে এক সাথে মরবো। আমাদের কবরের জায়গা তো কেনা হয়ে আছে।”

হঠাৎ শিন ছি হাসলো, জোরে হেসে উঠলো।

হাসির আওয়াজ কেবল বাড়তে লাগলো, যেনো ভীষণ মজার কিছু ঘটেছে।

“হাসছিস কিসের জন্য?”

“আমিও প্যারাগ্লাইডার চালাতে পারি। যতোগুলো সার্টিফিকেসন করা যায় তার সব কটা আমার করা আছে।” বললো শিন ছি।

“তুই যদি নামতে না চাস, আমি তোকে নিয়ে মাটিতে নেমে যাবো। যদি মূল প্যারাশুট কাজ না করে, তাহলে সেকেন্ডারি প্যারাশুট ব্যবহার করে নেমে যাবো।”

“শিন ছি! তুই মহা অসভ্য! তুই আবার আমার সঙ্গে ছল করে প্যাঁচ কষে মজা নিচ্ছিস!”

হাওয়ার মধ্যেই চেঁচিয়ে উঠলো মিন হুয়ে রাগ করে।

“আমি একলাই উড়তে পারি। কিন্তু কখনো কাউকে সঙ্গে নিই নি। এই জন্য নয় যে আমার সাহসে কুলোয় নি, এই জন্যও নয় যে আমি যন্ত্রপাতি ভালো বুঝি না, কিন্তু এই জন্য যে আমার চিন্তা হয় যে যদি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ি আর প্যারাশুট নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, তাহলে আমার সঙ্গে সঙ্গে বাকিদেরও জীবন সংশয় হবে।”

“...”

“তাই আমাকে বলতে হলো হান য়িকে তোকে শেখানোর জন্য। যদি কিছু হয়, তাহলে অন্তত তুই নিরাপদে মাটিতে পৌঁছোতে পারবি।”

মিন হুয়ে দাঁতে দাঁত চেপে রইলো। উপেক্ষা করতে লাগলো শিন ছিকে।

“মিন হুয়ে? মিন হুয়ে? তুই আমাকে বিয়ে করবি না? করবি না?”

“তুই যদি ঐ তিনটে শব্দ না বলতে পারিস, তাহলে বিয়ে করবো না!”

“তাহলে তোকে জিজ্ঞেস করি, কখনো কাউকে বলে ছিলি, ‘কোনো দিন ভবিষ্যতে, যে কোনো সময়ে, যতোক্ষণ তোর আমাকে দরকার’ তুই সব ছেড়ে দিবি, এমনকি তোর জীবনও, যাতে এসে আমার কাজে লাগতে পারিস?”

“...”

“এখন আমি তোর কাছে স্পষ্ট করে দিচ্ছি যে আমার তোকে প্রয়োজন আমাকে বিয়ে করার জন্য, আমাকে বিয়ে করবি?”

“...”

“মিন হুয়ে, আমাকে বিয়ে করতে পারবি?”

“কিছুই বলতে পারছিস না যে সেটা কিছু না! তুই একবার আমাকে মিথ্যে বলেছিস, আর এখন তুই আমার কথার পিঠে তর্ক করছিস?”

মিন হুয়ে এতো রেগে গেলো যে শিন ছিকে লাথি মারা ছাড়া ওর কোনো উপায় রইলো না।

“উহ্‌”

“তুই যদি বিয়ে করিস তো বিয়ে কর না! তোকে বিয়ে করা মানে একটা জন্তুকে বিয়ে করা।”

“এটা একটা জন্তু নয়। এটাই জন্তু।”

শিন ছি হেসে উঠলো, বললো, “হেলমেট খোল, তোকে চুমু খেতে দে।”

“আমি তোকে চুমু খেতে দেবো না।”

“মিন হুয়ে তুই বলে ছিলি না একদিন ভবিষ্যতে, যে কোনো সময়ে, যতোক্ষণ আমার তোকে দরকার -”

“তোকে এতো নির্লজ্জ মনে হয় নি কখনো।”

“দূর্ভাগ্য বেরিয়ে এসেছে তোর মুখ থেকে, তুই জানিস, জানিস না? দেখবো এর পরে তুই আর কখনো বাজে কথা বলিস কিনা?”

“তুই আমাকে উত্যক্ত করছিস, যুক্তির ফাঁক খুঁজে খুঁজে সুবিধে নিচ্ছিস আমাকে উত্যক্ত করার জন্য।”

“এটাই শেষবার।" নরম গলায় বললো শিন ছি, “কথা দিলাম।”

মিন হুয়ে খানিক ভাবলো, খুলে ফেললো হেলমেট, নিচু হলো, শিন ছি ঘুরলো, হাত দিয়ে মিন হুয়ের গলা জড়িয়ে ধরলো, চুমু গভীর হলো।

শুরুতে ও সোজাসুজি এগোলো, মিন হুয়েকে লজ্জা পেতে দেখে এক লহমায় ও খুব নরম করে নিলো।

আস্তে আস্তে মিন হুয়ে সাহস পেলো, শিন ছির মুখ না ধরে পারলো না, ফিরে চুমু দিলো শিন ছিকে প্রবল জোরে …

হালকা হাওয়ার ঝাপ্টা লাগলো, প্যারাগ্লাইডারটা ওপরে উঠতে লাগলো ধীরে ধীরে, ঝলমলে সুর্যের আলোতে মিন হুয়ের মনে হলো আকাশটা যেনো চড়কি পাক খাচ্ছে, আর পুরো পৃথিবীটা যেনো ওপরে উঠে এসেছে ওর সঙ্গে, আর ওদের সঙ্গে ভেসে চলেছে – নিরাপদে নামার পরে মিন হুয়ে দেখলো হান য়ি আসছে সু ছনকে সঙ্গে নিয়ে, দু জনেই খুব তাড়াতাড়ি ওদের দিকে দৌড়ে আসছে।

হান য়ি চোখ পিট পিট করে ইশারা করলো শিন ছিকে, শিন ছি ঘাড় নেড়ে উত্তর দিলো, আর ওকে চেপে জড়িয়ে ধরলো। সু ছন লাফাতে লাগলো হান য়ির হাত ধরে, “আমিও জড়িয়ে ধরবো, একটা বড়ো ভালুকের থাবার মতো বড়ো করে জড়িয়ে ধরবো।”

হান য়ি কোলে তুলে নিলো সু ছনকে, নিজের দু হাতে জড়িয়ে ধরলো, মিন হুয়ের দিকে তাকিয়ে হেসে বললো, “গংশি নিয়া।”

মিন হুয়ের হাতে চাপড় দিয়ে শিন ছি বললো, “আলাপ করিয়ে দি, ইনি হান য়ি।”

মিন হুয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো ব্যাখ্যার অপেক্ষায়, ভাবছে, হান য়ি তো ওর প্রশিক্ষক, আর মিন হুয়ে ওঁকে চেনে বছর ফুরোবার আগে থেকে, আর এখনো দুজনে পরিচিত। তাহলে আবার আলাপ করিয়ে দেবার কী আছে?

“ইংরেজি নামটা এরিক। আমার গ্যগ্য।”

মিন হুয়ে ওদের দুজনের দিকে তাকিয়ে রইলো বড়ো বড়ো চোখে, অবাক হয়ে।

“আমাদের এক রকম দেখতে নয়, কারণ আমাদের দু জনকেই দত্তক নিয়ে ছিলেন আমাদের মা-বাবা।" বললো হান য়ি।

“অ্যাকুইজিসনের সময়ে আমার গ্যগ্য ভয় পাচ্ছিলো যে আমি ঠিক করে কাজ করবো না, জোরাজুরি করবো বেশি, তাই ও এসে ছিলো আমাকে সামলাতে।”

বললো শিন ছি। ওর কথা শেষ হবার আগেই, মিন হুয়ে ওর হাতে একটা চিমটি দিলো, “শিন ছি, তুই কী ছকবাজ রে!”

*****

বিয়ের দিন শিন ছি কনের সাজেই মিন হুয়েকে নিয়ে এলো সু তিয়াঁর সমাধিতে। 

সু তিয়াঁর ছবির দিকে তাকিয়ে মিন হুয়ে বললো নরম সুরে, “তিয়াঁ তিয়াঁ, শিন ছি আর আমি আজ বিয়ে করেছি, তুমি আমাকে জীবন দিয়েছো, শিন ছি দিয়েছো, আমি তোমার জন্য ভালো করে খেয়াল রাখবো ওর, একে অপরের অবলম্বন হবো। … যদি জীবোনোত্তর কিছু থাকে, আমি নিশ্চয়ই ওকে ফের তোমার হাতে তুলে দেবো যাতে তোমরা এক হতে পারো, একে অপরকে খুব ভালো বাসতে পারো।”

মিন হুয়ের হাত ধরে শিন ছি ঘাড় নাড়লো সম্মতিতে, হাসলো, বললো, “তিয়াঁ তিয়াঁ, তুই আমার জীবনে স্বর্গীয় উপহার। দূর্ভাগ্য যে আমি উপহারে হাত দেবার আগেই তুই ফিরে গেলি স্বর্গে, এখন তুই আমাকে আবার একটা উপহার দিয়ে ছিস, আমি শক্ত হাতে ধরে রাখবো এই উপহার, আর ধীরে ধীরে সেই উপহারকে উপলব্ধি করবো, কখনো সহজে চলে যেতে দেবো না তাকে …”

***** 

সু ছনের যখন ছ বছর বয়স হলো, মিন হুয়ে আর শিন ছি গেলো বিনচেং অনাথাশ্রমে শেন হং নামে একটি মেয়েকে দত্তক নিতে। মেয়েটার বয়স দশ বছর, ওর মা-বাবা মৃত, ও অনাথ।

গুয়ান ছাও-এর একটা ট্রেড ইউনিয়নের আয়োজনে একটা সহমর্মিতার অনুষ্ঠানে গিয়ে ছিলো মিন হুয়ে আর শিন ছি। মেয়েটি সেই অনুষ্ঠানে মিন হুয়েকে ‘মা’ বলে ডাকে, যখনই মিন হুয়েকে দেখে ও।

যদিও শিন ছি বলেছে মিন হুয়েকে যে অনাথাশ্রমের বাচ্চারা মায়ের ভালোবাসা পায় না, আর যে মহিলাই ওদের সাথে দেখা করতে যায় তাদেরকে ওরা ‘মা’ বলে ডাকতে ভালো বাসে, তাও মিন হুয়ের কেবল মনে হতে থাকে যে ওর সাথে বাধা আছে যেনো শেন হং-এর নিয়তি। সু ছনও এই জিয়েজিয়েকে খুব পছন্দ করে।

দু জনে আলোচনা করে চটপট করে সেরে নিলো দত্তক নেবার পদ্ধতি।

যে দিন ও শেন হং-কে বাড়িতে নিয়ে এলো, শেন হং কাঁদতে লাগলো। মিন হুয়ের মনে হলো যে ও বোধ হয় অনাথাশ্রমের শিক্ষকদের ছেড়ে আসতে মন চায় নি। তাই মিন হুয়ে ওকে চটপট স্বান্তনা দিলো, “শও হং, কেঁদো না। আমরা তো অনাথশ্রম থেকে খুব দূরে থাকি না। তুমি যদি ওখানে ফের গিয়ে লাও শি আর ফঙিয়োর সাথে দেখা করতে চাও তো, আমরা ওখানে আবার যেতে পারি, অনেক বার যেতে পারি।”

কথাটা বুঝে শও হং চোখের জল মুছলো, ঘাড় নাড়লো। কিন্তু গেট পেরোনোর পরেও তিনবার পিছন ফিরে তাকালো।

গাড়িতে উঠতে হবে দেখে ও হঠাৎ বললো, “মা, একটা বাচ্চার সঙ্গে আমাকে কথা বলতে হবে, যাবো?”

“অবশ্যই, আমরা তোমার জন্য এখানে অপেক্ষা করবো।”

শও হং পিঠের ব্যাগ নামিয়ে রেখে উঠোনের মধ্যে দৌড়ে গেলো।

লোহার ফটকের মধ্যে দিয়ে মিন হুয়ে আর শিন ছি দেখলো একটা ছোটো রোগা ছেলে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে আসছে একটা পা টেনে টেনে।

বাচ্চা দুটো হাত ধরে নিচু স্বরে কথা বললো। ছেলেটা শান্ত স্বরে কিছু জানতে চাইলো, কিন্তু শও হং ঘাড় নাড়লো আর আর ওর চোখের জল মুছতে লাগলো।

ছেলেটা ধীরে ধীরে শও হংকে ফটকে পৌঁছে দিলো। অবিচল চোখে দেখলো ওর চলে যাওয়া। আর কিছুতেই পিছু ফিরতে চাইলো না অনেক ক্ষণ।

দু জনে গাড়িতে বসে দৃশ্যটা দেখে দু জনেই আবেগটা অনুভব না করে পারলো না।

কিছু সময় পরে, শ্বাস ফেলে শিন ছি বললো, “আমার আরেকজনকে দত্তক নিই না কেনো?”

মিন হুয়ে তৎক্ষণাৎ সায় দিল, “ওকে।”

শিন ছি হঠাৎ আলতো চুমু দিলো মিন হুয়ের গালে। 

“আমি ভাবলাম তুই হয়তো সেই তিনটে শব্দ বলবি।" বললো মিন হুয়ে।

“না, বলবো না।”

মিন হুয়ে চোখ ভরা রাগ নিয়ে তাকালো শিন ছির দিকে যেনো ওকে ঝলসে দেবে। অনেক ক্ষণ কথাও বললো না।

“রাগ হয়েছে?” জানতে চাইলো শিন ছি।

“রাগ করিস না।”

মিন হুয়ে হাসলো অল্প। ওর চোখে অন্ধকার।

আজ পর্যন্ত শিন ছি কখনো ‘ওয়া আই নি’ বলে নি মিন হুয়েকে।

কিন্তু মিন হুয়ে জানে যে ও বলেছে এর মধ্যেই, খুব অদ্ভুত এক উপায়ে।





~~~~~~~~~~~~

সম্পূর্ণ বই বিনামূল্যে : https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96

Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-72.html

Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/download-and-read-whole-book.html

Readers Loved