২. বাধ ফেরতা স্রোতের খাঁড়ি
কে জানে কতোক্ষণ নদীর বুকে দাপাদাপি করে, মিন হুয়ে শেষে সাঁতার দিয়ে পাড়ে ফিরে গেলো। তারপর পাড়ে উঠেও পড়লো। তার সারা শরীর অবশ হয়ে ছিলো, তাও সে দৌড়ে রাস্তায় গেলো। একটা গাড়ি দাঁড় করালো আর গাড়ির ড্রাইভারকে অনুরোধ করলো পুলিশ ডাকার জন্য।
পরিস্থিতি জানা মাত্রই পুলিশ খোঁজাখুজি আর উদ্ধারের কাজ শুরু করে দিলো। ফায়ার ব্রিগেডও পৌঁছে গেলো। তারা দুটো দলে ভাগ হয়ে গেলো। একদল করবে কার্পেট অনুসন্ধান, নদীর পাড় ধরে। আরেক দল একটা স্পিডবোটে করে নদীর বুকে অনেক বার অনেক কিলোমিটার দূর অবধি যাতায়াত করে অনুসন্ধান করে চললো। পঞ্চাশজনের বেশি লোক দু ঘন্টারও বেশি সময় ধরে খুঁজে চললো লি চুন মিয়াওকে। কিন্তু লি চুন মিয়াও-এর দেখা নেই। ভোরের আলো ফোটার পরে খোঁজার এলাকা আর উদ্ধারের চেষ্টা আরো জোরদার করা হলো, আরো অনেক লোককে কাজে নিয়ে। ফ্রগমেন আর পেশাদার উদ্ধারের দলও যোগ দিয়ে ছিলো খোঁজে। কিন্তু লি চুন মিয়াও-এর হদিশ পাওয়া গেলো না। বন্যার সময়ে জলের গতি সেকেন্ডে তিন মিটার। অমন জলের তোড়ে কারুর পক্ষেই বেঁচে থাকা সম্ভব নয়, যদি না খুব ভালো সাঁতার জানা থাকে।
পুলিশ বললো যে লি চুন মিয়াও জলে ঝাঁপ দেবার সাহস যখন করেছে, তখন তার সাঁতার দেবার ক্ষমতা সম্পর্কে সে নিশ্চয়ই নিশ্চিত ছিলো এবং সেই কারণেই সে হয়তো এখনো বেঁচে আছে। সে হয়তো অন্য কোনো জায়গায় পাড়ে উঠেছে, তার পরে সে ঘরে ফেরার কোনো একটা উপায় ঠাউরাবে নিশ্চয়ই। মিন হুয়ে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে থাকলো।
উদ্ধারকারী দলের লোকেরা জানালো যে মুশুই নদীর জলের ঝোঁকটা ঝামেলার। নদীটা অগুণতি গ্রামের ভিতর দিয়ে বয়ে শেষে গিয়ে মেশে দাজিয়াং নদীতে। তারপর গিয়ে পড়ে পূর্ব চিন সাগরে। জলে পড়ার পর কেউ যদি মরে যায়, তাহলে বলা মুশকিল যে সে ঠিক কোথায় গিয়ে উঠবে। দেহ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন ব্যাপার। এরকম ঘটনা প্রত্যেক বছরই ঘটে থাকে। এখন শেষকৃত্যের যোগাড় করাই উচিৎ।
পরের তিনদিনে পুলিশ উদ্ধারের চেষ্টা আরো জোরদার করলো। নদীর অধোগতি পথে খোঁজাখুঁজি আরো তীব্র হলো। কিন্তু কিছুই পাওয়া গেলো না। মিন হুয়েকে পুলিশ স্টেশনে ডাকা হলো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। এই পুলিশ স্টেশনেই মিন হুয়ে যোগাযোগ করে ছিলো। শুরুতে পুলিশ একটা ক্রিমিনাল কেস শুরু করার কথাও ভেবেছে যেহেতু তাদের অনেক সন্দেহ আছে। আর এটাই সত্যিই যে মিন হুয়েই শেষ ব্যক্তি যে লি চুন মিয়াওকে জীবন্ত দেখেছে। কেউ জানে না তাদের দুজনের ভেতরে কী হয়ে ছিলো। হতে পারে যে একজনকে বাঁচাতে গিয়ে অন্যজন মারা গেছে, কিংবা টাকার জন্য একজন অন্যজনকে খুন করেছে।
তবে হোটেলের ক্যামেরায় ধরা পড়ে ছিলো যে একটার পরে একটা মেয়ে লবি পেরিয়ে কেমন করে বাইরে বেরিয়ে গিয়ে ছিলো। ফ্রন্টডেস্ক ক্লার্ক জানালো যে চুন মিয়াও তাকে জিজ্ঞেস করে ছিলো যে মিন হুয়ে কোন দিকে গিয়েছে সে দেখেছে কিনা। ব্রিজের ওপরের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে চুন মিয়াও-এর নদীতে ঝাঁপ দেবার আগের মূহুর্তটাও। দেখা গেছে যে সে ভিউয়িং প্ল্যাটফর্ম থেকে কেমন করে লাইফবয় নিয়েছে। এটাও দেখা গেছে যে চুন মিয়াও-এর নেওয়া লাইফবয়টায় মিন হুয়ের গায়ে পড়া ছিলো যখন সে জল থেকে উঠে আসে। সব মিলিয়ে লি চুন মিয়াও-এর বানের জলে ভেসে যাবার ঘটনাটা একটা “উদ্ধারের দূর্ঘটনা” বলে নথিবদ্ধ করা হয়। লি চুন মিয়াও-কে বর্ণনা করা হয় দূর্ঘটনায় হারিয়ে যাওয়া ব্যাক্তি হিসেবে। কোনো ভাবেই মিন হুয়েকে দায়ী করা হই নি।
পুলিশ বিভাগের যে কর্মী বিষয়টা দেখছিলেন, তাঁর পদবী চেন, দক্ষিন-পূর্ব চিন দেশের মানুষ, একজন গুয়াংতং হুয়া (ক্যান্টোনিজ)। তাঁকে সবাই চেন শিয়েংশঁ বলে ডাকে। চেন শিয়েংশঁ মিন হুয়েকে আশ্বস্ত করলেন যে পুলিশ লি চুন মিয়াও-এর খোঁজ জারি রাখবে আর কিছু জানা গেলেই মিন হুয়েকে জানাবে। তারপরেও তিনি মিন হুয়েকে মানসিক প্রস্তুতি নিতে বললেন কারণ উদ্ধারের সোনালী অবকাশটা পার হয়ে গেছে।
গত কয়েক দিনে মিন হুয়ে রাতে প্রায় ঘুমোতেই পারে নি। দিনের বেলা সে খোঁজকারী দলের সাথে খুঁজে বেরিয়েছে। রাতে তাকিয়ে থেকেছে মোবাইল ফোনের পর্দায়, পুলিশের থেকে টাটকা খবর পাবার আশায়। সে বার বার মনে করেছে সে রাতে কি ঘটে ছিলো। চুন মিয়াও জলে ঝাঁপ দিয়ে ছিলো আত্মবিশ্বাস নিয়ে। মিন হুয়েকে খুঁজে পেতে তার মোটেই দেরি হয় নি। তারপর সে বার দুয়েক মিন হুয়েকে টেনে জলের ওপরে তুলে এনে ছিলো। অবশ্যই জলে ডুবছে এমন লোককে বাঁচানোর অভিজ্ঞতা তার ছিলো। তার মানে চুন মিয়াও-এর অসম্ভব বিপদের সাথে লড়ার মানসিকতা ছিলো। এই মূহুর্তে চেন শিয়েংশঁর মতে লি চুন মিয়াও-এর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
মিন হুয়ের ভারি মন আরো সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লো।
চেন শিয়েংশঁ বলেছেন যে পরের কাজ হলো লি চুন মিয়াও-এর পরিচয় প্রতিষ্ঠা করে তার বাড়ির লোককে খবর দেওয়া। মিন হুয়ে পুলিশের সাথে হাত মিলিয়ে ছিলো চুন মিয়াও-এর মালপত্র ঘেঁটে দেখে নথিপত্র বার করেতে যাতে তার পরিচয় প্রতিষ্ঠা করা যায়। লি চুন মিয়াও-এর মালপত্র খুবই অল্প। কয়েকটা জামাকাপড় আর বাড়ির বাইরে থাকার জন্য যা যা লাগে, সেই সব। ফুলে থাকা ছোট্টো থলিটাতে ছিলো এক প্যাকেট সুপুরি আর সাজগোজের জিনিসপত্র। পয়সার ব্যাগ আর মোবাইল ফোন ছিলো না।
মিন হুয়ে হোটেলে ঘর নিয়ে ছিলো নিজের পরিচয়পত্র দিয়ে। যদিও ঘরে তারা দুজনে ছিলো, তবুও হোটেলের কর্তৃপক্ষ বিশেষ প্রশ্ন কিছু করে নি। এই কথাটা মিন হুয়ের মনে আছে কারণ চুন মিয়াও ঘর ভাড়ার অর্ধেক দেবে বলে ছিলো। সে তার পয়সার ব্যাগটা একবার ব্যবহার করে ছিলো। ব্যাগটা নিশ্চয়ই হলুদ জ্যাকেটের পকেটে আছে। মোবাইল ফোনটা চুন মিয়াও ব্যবহার করে ছিলো ঘুমোতে যাবার আগে আর বলে ছিলো যে সে মিন হুয়েকে উই চ্যাটে যোগ করবে। তারপর ফোনটা বিছানার পাশের টুলে রেখে ছিলো চার্জ দেবার জন্য।
মিন হুয়ে যখন পরের দিন নদীর থেকে ফিরে ছিলো, তখন সে চুন মিয়াও-এর ফোনটা দেখতে পায় নি, কিন্তু চার্জিং কেবলটা তখনও দেওয়ালের প্লাগে লাগানো ছিলো। ফোনটা সে নিশ্চয়ই সঙ্গে নিয়ে ছিলো ঘর থেকে বেরোনোর সময়। তার মানে এখন ফোনটা জলে ভিজে ফুলে উঠেছে।
মিন হুয়ের অনুতাপ হতে লাগলো লি চুন মিয়াওকে উইচ্যাটে যোগ করে নি বলে। লি চুন মিয়াও যেমন আলাপী মেয়ে তার মোমেন্টস-এ তার জীবনের অনেক আভাস থাকতো নিশ্চয়ই। তাই না?
মিন হুয়ে আর চেন শিয়েংশঁ মিলে অনেকক্ষণ ধরে লি চুন মিয়াও-এর মালপত্র ঘেঁটে দেখলো। শুধু একটা টিকিট পাওয়া গেলো, বাসের। চুন মিয়াও বাসে চড়ে ছিলো ইয়ুখং স্টেশন থেকে। টিকিটে তার পরিচয়ের কোনো আভাস নেই।
মিন হুয়ে জানতে চাইলো, “যদি বাড়ির লোকের কোনো খবর পাওয়া না যায়, তাহলে এই মালপত্র নিয়ে আমরা কি করব?”
চেন শিয়েংশঁ পরামর্শ দিলেন, “হোটেলকেই রাখতে দেওয়া যাক কদিনের জন্য। বাড়ির লোকেদের খোঁজ পাওয়া গেলে দিয়ে দেওয়া যাবে না হয়।”
তারপর খুব দুঃখের সাথে মিন হুয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে চেন শিয়েংশঁ জানতে চাইলেন, “তুমি কী করবে? কবে যাচ্ছো এখান থেকে?”
মিন হুয়ে চমকে উঠলো। সে মোটেই ভাবি নি কিছু এ ব্যাপারে। সে বললো, “আমি কিছুতেই হাল ছাড়তে পারছি না। আমি ওর বাড়ির লোকেদের সাথে দেখা করতে চাই।”
চেন শিয়েংশঁ-এর চোখ জুড়ে বিস্ময় জেগে উঠলো, “তুমি নিশ্চিত এ ব্যাপারে?”
মিন হুয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলো, “সেটা করাটা কি ঠিক হবে না?”
চেন শিয়েংশঁ রাখঢাক না করেই বললেন, “এই মূহুর্তে বাড়ির লোকেদের আবেগ খুব তীব্র থাকে। তারা একটা মানুষ খুঁজে নেয় রাগ দেখাবার জন্য -”
মিন হুয়ে কেঁদে ফেললো, “তাহলে আমার ওপরেই রাগ দেখাক। কারণ এসবের মূলে আমি। যদি একটা ভালো মানুষের ক্ষতি হয় তাহলে অপরাধী পালাতে পারে না। তাই না?”
চেন শিয়েংশঁ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, “তোমরা দুজনেই ভালো মেয়ে। সে নিজের থেকে মানুষের প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে ছিলো। তুমি মোটেই অপরাধী নও। তবে তুমি যখন যেতে চাও না, তখন আরো কয়েক দিন থেকে যাও। আমি এখন যাবো।”
চেন শিয়েংশঁ যাবার আগে মিন হুয়ের মনে পড়ে গেলো যে এখনো বাথরুমে লি চুন মিয়াও-এর একটা কোট ঝুলছে। তাই সে বাথরুমে গেলো আর কোটের সব পকেটগুলো হাতড়ে দেখতে লাগলো। একটা কালো কার্ড বেরিয়ে এলো। মিন হুয়ে জিজ্ঞেস করলো, “এটা কী কাজে লাগতে পারে?”
কার্ডটা XX স্টুডিওর মেম্বারশিপ কার্ড। কার্ডের ওপর চুন মিয়াও-এর নাম আর কার্ড নম্বর ছাপা আছে।
চেন শিয়েংশেঁর দু চোখ ঝলমলিয়ে উঠলো, “হ্যাঁ, এটা কাজে লাগবে বটে। এই ধরনের কার্ড সাধারণত মোবাইল নম্বরের সাথে জোড়া থাকে। আমি ফিরে গিয়ে দেখছি খতিয়ে।”
পরের দিন সকালে মিন হুয়ে জাগলো আরেকটা ঘোরের মধ্যে। হোটেলের ব্রেকফাস্টের সময় পেরিয়ে গেছে তখন। তাই সে দোতলায় গেলো। একটা মাফিন আর এক কাপ কফি অর্ডার দিলো। পরিবেশক মহিলার বয়স চল্লিশ পেরিয়েছে। সে মিন হুয়ের কথা জেনে তার সাথেই কথা বলতে এলো, “এই মেয়ে, কাউকে পাওয়া গেলো?”
মিন হুয়ে তার দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়লো। মহিলা বললেন, “পুলিশ কোনো কম্মের নয়। যখন বাড়ির লোক এসে কাঁদবে, চেঁচামেচি করবে, তখন দেখবো পুলিশ কী উত্তর দেয়।”
বুজে আসা গলার স্বরে মিন হুয়ে বললো, “তারা তাদের সাধ্যমতো সেরা চেষ্টাটাই করেছে।”
কথাটা বলতে বলতে তার দুগাল বেয়ে জলের ধারা নেমে এলো।
মহিলা মিন হুয়ের হাতে একটা টিস্যু দিতে দিতে বললেন, “কাঁদিস না রে। দ্যাখ দেখি কেঁদে কেঁদে তোর চোখ ফুলে উঠেছে।”
তারপরে বললেন, “কী ভাবে বলি? আমার বেঁচে থাকতে জ্যান্ত লোকেদের দেখি আর মরে গেলে মড়া দেখি। কিছু না দেখা গেলে খানিক আশার ঝলক থাকে।”
আশা, আছে নাকি? উত্তেজনাটা দেখতে পাওয়া খুব বড়ো ব্যাপার নয়। কিন্তু মিন হুয়ে আবার মুষড়ে পড়তে লাগলো। তার সাড়া মন জুড়ে একটাই আর্তি, “আইয়ে, একটু চুপ করবে?”
মহিলা টেবিল মুছতে লাগলো গম্ভীর মুখে। তারপর হঠাৎ জিজ্ঞেস করলো, “মেয়েটা কী মোটা ছিলো?”
মিন হুয়ে অন্যমনস্ক সাড়া দিলো, “হুহ্?”
মহিলা আবার জানতে চাইলো, “সেই মেয়েটা, মোটা ছিলো কী?”
মিন হুয়ে উত্তর দিলো, “না। মোটা নয়।”
মহিলা গল্প শোনাতে শুরু করলো, “তোকে একটা কথা বলি, একটা মোটা মেয়েমানুষ ছিলো। মেয়েমানুষটা জলে পড়ে গিয়ে ছিলো। পড়েই ভয়ের চোটে অজ্ঞান হয়ে গিয়ে ছিলো। প্রায় কিলোমিটারটাক স্রোতে ভেসে গিয়ে ছিলো। আর তারপরেই তার জ্ঞান ফিরে আসে। মাঝরাতে পাড়ে পৌঁছোয় সাঁতার দিয়ে। দৌড়ে দৌড়ে যখন বাড়ি পৌঁছোয় তখন তার জামা কাপড় জবজবে ভিজে আর তার থেকে টপটপ করে জল পড়ছে। দরজায় টোকা দিতে তার বর তো ভয়েই আধমরা।”
গল্পটার দৃশ্যময়তা বেশ জোরালো। মিন হুয়ে কফি খেতে খেতে বিষম খেলো। একটা একই রকম দৃশ্য তার মনে পড়ে গেলো। মনে একটু আশার ঝিলিক খেলে গেলো।
তাই যদি হবে, তবে সে ভয় পাবে না আর, তবে খুশিতে কাঁদবেও না।
তবে এটাও সত্যি যে ঘটনাটা ঘটে চারদিন কেটে গেছে। এমন সময়ে, এমন আবহাওয়ায়, কয়েক দিনের মধ্যে, আশঙ্কা হয় যে, হাড় কখানাও পাওয়া যাবে না।
সেসব সাতপাঁচ ভেবে মিন হুয়ে জিজ্ঞেস করলো, “আইয়ে, তুমি কাউকে চেনো যে এরকম পাড়ের ওপরের উদ্ধারের কাজ করে?”
উদ্ধারের দল কাজ বন্ধ করার পরে, মিন হুয়ে নিজের থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছে। এখনো ও আশা করছে যে উদ্ধারের কাজটা চালিয়ে যাওয়া হবে। খরচটা ও নিজেই বইবে ভাবছে। উদ্ধারকারীদের দলের কর্তা জানিয়ে ছিলো যে মিন হুয়েকে সাহায্য করতে তার কোনো অনিচ্ছে নেই, কিন্তু চলতে থাকা বন্যা পরিস্থিতিটা ভয়াবহ, ডুবে যাবার আর নৌকা উল্টে ভেসে যাবার ঘটনা অনেক জায়গাতেই ঘটে চলছে বলে তারা কাজের চাপে পর্যুদস্ত।
খানিক ভেবে মাসি বললো, “কতকগুলো জেলে থাকে কাছেই। এ ধরনের কাজ কেউই করতে চায় না। তারা মনে করে যে এসব কাজ দূর্ভাগ্য ডেকে আনে। তারা বলে মড়া মানুষের ঝোল।”
তারপর বললো, “তুই ছিয়ানশুই ওয়ানে যাবার কথা ভেবেছিস?”
মিন হুয়ে জানতে চাইলো, “সেটা কোথায়?”
মাসি বললো, “মুশুইহে ব্রিজের দক্ষিণে, তিন কিলোমিটারটাক দূরে নদীতে একটা বাঁক আছে। ওপর থেকে ভেসে আসা মড়া ওখানে জমা হতে দেখা যায় মাঝে মধ্যেই। ওখানে গিয়ে অপেক্ষা কর। আমার এক আত্মীয়ের ছেলে গত বছরে নদীতে পড়ে গিয়ে ছিলো। সারা বাড়ির লোকের পাগল পাগল দশা হয়ে ছিলো আর কি। খাওয়া নেই, জল খাওয়া নেই, তিন দিন তিন রাত একটানা তারা খুঁজে ছিলো।
ছিয়ানশুই ওয়ানে পৌঁছে মিন হুয়ে দেখলো যে জায়গাটা স্থানীয় লোকেদের মধ্যে বেশ পরিচিত। ড্রাইভার যে ছিয়ানশুই ওয়ান শব্দটা শুনলো, অমনি জানতে চাইলো, “তুমি কী কাউকে খুঁজছ?”
মিন হুয়ের মুখ জুড়ে ছড়িয়ে গেলো একটা ম্লান হাসির আভাস।
ড্রাইভার আবার বললো, “একলা যেও না।”
মিন হুয়ের বুকের দিকে তাকালো আর মুখে একটা আধলা হাসি নিয়ে বলে চললো, “তুমি ভয় পেয়ে যাবে। আমি তোমার সঙ্গে গেলে কেমন হয়?”
মিন হুয়ে হিংস্র চোখে তাকিয়ে ধমকে উঠলো, “না।”
ভাড়াটা ছুঁড়ে দিয়ে সে গাড়ির থেকে নেমে গেলো রাগ দেখিয়ে।
অদ্ভুত একটা ভঙ্গিমায় ড্রাইভার চেঁচিয়ে উঠলো পেছন থেকে, “কী জঘন্য মেজাজ!, ভুত যেনো।”
মিন হুয়ে মোবাইল ফোনটা বার করে চেঁচিয়ে উঠলো, “আরেকটা বাজে কথা বললে, আমি পুলিশ ডাকবো, কিন্তু।”
ড্রাইভার ঝটপট কেটে পড়লো।
ছিয়ানশুই ওয়ান মুশুই নদীতে একটা শান্ত বাঁক। নদীর জল বাঁক পেরিয়েই বাধা পড়ে পাথরে আর দপ করে পড়ে যায় নদীর জলের স্রোতের গতি, তৈরি হয় জমা জলের একটা ডোবা মতো। তার মধ্যে জমতে থাকা, ঘূর্ণিতে ঘনিয়ে ওঠা নদীর জল বেশ নোংরা। প্রচুর আবর্জনা আর হাবিজাবি ভেসে এসেছে আরো ওপরের এলাকা থেকে।
নদীর ধারে একটা তাঁবু। খোঁচাখোঁচা দাড়ি মুখে নিয়ে একটা লোক নদীর ধারে উবু হয়ে বসে দাঁত মেজে চলছে। তার কাঁধে একটা তোয়ালে। দেখে মনে হলো যে লোকটার বয়স সবে পঞ্চাশ পেরিয়েছে। মিন হুয়ে জানে না যে লোকটা ওখানে কী করছে। লোকটাকে একটা “সুপ্রভাত” জানিয়ে সে একলা নদীর বাঁক পেরিয়ে চললো। চলার সময় তার দু চোখ খুঁজে চলেছে।
কিছুই না পেয়ে সে আবার তাঁবুর কাছে ফিরে এলো। লোকটা একটা পাথরের ওপরে বসে সিগারেট ফুঁকছে। তাকে ফিরে আসতে দেখে, লোকটা হঠাৎ জিজ্ঞেস করলো, “পেলে?”
মিন হুয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো একটা। তারপর ঘাড় নাড়লো। তারপর মলিন মুখে লোকটা আর মিন হুয়ে পরস্পরের দিকে তাকিয়ে রইলো। মিন হুয়ে জানতে চাইলো, “শুশু, আপনি কতো দিন ধরে এখানে অপেক্ষা করছেন?”
লোকটা জানালো, “পাঁচ দিন।”
মিন হুয়ে কৌতুহল চাপতে পারলো, “কার জন্য?”
লোকটা একটা শব্দে উত্তর দিলো, “আমার বৌ।”
লোকটার মুখ চোখের কষ্টকর অবস্থা দেখে মিন হুয়ে আর কথা বাড়ালোনা। ফের লোকটা জানতে চাইলো, “তোমার ব্যাপার কি? তুমি কার জন্য অপেক্ষা করছো?”
মিনু হুয়ে বেবাক হয়ে গেলো। একটাও উপযুক্ত শব্দ খুঁজে পেলো না লি চুন মিয়াও-এর সাথে তার সম্পর্কের ঠিকঠাক বিবরণ দেবার মতো। বন্ধু? সঙ্গী? পরিচিত? সহযাত্রী?
মিন হুয়ে বলে ফেললো, “আমার বোন।”
কাকু আর কথা বাড়ালো না। শুধু একটা “হুম” বলে সিগারেটে টান দিতে লাগলো।
মিন হুয়ে পরপর তিনদিন ছিয়ানশুই ওয়ানে পড়ে রইলো। তবে রাতের বেলাটা সে থাকতো না। তার হয়ে কাকু নজর রাখতো রাতে। চার দিনের দিন সকালে সে ছিয়ানশুই ওয়ানে পৌঁছে দেখলো যে কাকু তাঁবু গুটোচ্ছে। মিন হুয়ে না জিজ্ঞেস করে পারলো না, “কাকিমাকে পেলে?”
একটু কর্কশ স্বরেই উত্তর দিলো, “না।”
বিছিয়ে ফেলা তাঁবুটাকে ঝটপট ভাঁজ করে একটা বড়ো ব্যাগে ভরে নিলো কাকু। তারপর একটা ছোট্টো করে জ্বালানো চুল্লিতে কটা কাগুজে টাকা ফেলে দিলো। বিড়বিড় করে বললো, “আমি পাবো না খুঁজে। ঘরে দুটো বাচ্চা আছে। সব শেষ। এতোদিন হয়ে গেলো। সে নিশ্চয়ই ……… চলে গেছে।”
মিন হুয়ে চুপ করে তার দিকে তাকিয়ে রইলো স্বান্তনা দেবে এমন কোনো শব্দই তাও মাথায় এলো না।
কাকু জানালো, “আজ সকালে একটা মেয়ের দেহ নদীর অন্য পাড় থেকে এদিকে ভেসে এসেছে। চেহারা বদলে গেছে। জামাকাপড় দেখে বেশ অল্প বয়সী বলেই মনে হলো। আমি দেহটা একটা গাছের সাথে বেধে রেখেছি। তুমি কী যাবে দেখতে?”
মিন হুয়ে হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেলো। সে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো। তারপর দৌড় লাগালো গাছের দিকে। কাকু তাকে জাপটে ধরলো।
কাকু মাটির থেকে একটা একটা লম্বা লোহার শিক কুড়িয়ে নিয়ে বললো, “আমি তোমার সঙ্গে যাবো। যদি এটা তোমার বোনই হয়, তবে পাড়ে তোলা বেশ পরিশ্রমের কাজ হবে।”
দেহটা উবুড় হয়ে ভাসছিলো অজস্র আবর্জনার স্তূপের ওপরে। হাত-পা ছড়ানো। জামাটা গুটিয়ে ফ্যাকাসে সবজে ত্বক বেরিয়ে পড়েছে। শরীরের তলার দিকটা লালসাদা চেককাটা মিনি স্কার্টে ঢাকা। আর লম্বা চুল ভেসে আছে জলে।
মিন হুয়ে দেহটার দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারলো না। দেহটা ফুলে আছে। মিন হুয়ে মনে করার চেষ্টা করলো যে যে দেহটা যদি এক সাইজ ছোটো হতো তবে লি চুন মিয়াও-এর দেহের সমান মাপের হতে পারতো। গায়ের কোটটা কিন্তু হলুদ জ্যাকেট নয়। হয়তো হলুদ জ্যাকেটটা জলে ভেসে গেছে। মিন হুয়ে কিছুতেই মনে করতে পারলো না চুন মিয়াও ছোটো স্কার্ট পরে ছিলো কিনা। তবে সম্ভাবনাটা সে একেবারে বাতিলও করতে পারলো না। সাদা স্নিকার ……… এটা ঠিক যে মিন হুয়ে মোটেই নজর দেয় নি চুন মিয়াও-এর জুতোর দিকে। চুলটা একদমই অন্যরকম। মিন হুয়ের স্পষ্ট মনে আছে চুন মিয়াও-এর কোঁকড়া চুলের কথা। এমন কী হতে পারে যে এতো ক্ষণ ধরে জল শুষে চুলটা কোঁকড়া থেকে সিধে হয়ে গেছে?
কাকু লোহার শিক দিয়ে দেহটা পাড়ে টেনে আনতে আনতে জিজ্ঞেস করলেন, “এই কী সে?”
মিন হুয়ের সারা গা কেঁপে উঠলো। দাঁতে খটখটি লেগে গেলো। এতো ভীত চকিত হয়ে পড়লো মিন হুয়ে যে সে অনেকক্ষণ কিছুই বলতে পারলো না।
কাকু আবার জিজ্ঞেস করলেন, “নিশ্চিত হতে পারছ না?”
মিন হুয়ে ঘাড় নাড়লো। কাকু আরো একটু সাহায্য করলেন, “তুমি চাইলে আমি দেহটা উল্টে দিতে পারি। তুমি মুখটা দেখতে চাও?”
মিন হুয়ে নিজের দাঁত কিড়মিড়িয়ে নিলো। খুব জোরে জোরে ঘাড় নাড়তে লাগলো।
একটা মৃতদেহকে উল্টোনো খুব সহজ নয়। কাকু জলের যেখানে সেখানে লোহার শিকটা ফুঁড়ে ফুঁড়ে সমস্ত শক্তি দিয়ে দেহটাকে উল্টোনোর চেষ্টা করে যেতে লাগলেন। হঠাৎ মিন হুয়ে চেঁচিয়ে উঠলো, “ছেড়ে দিন। আর দেহটাকে ছুঁয়ে কাজ নেই।”
কাকু মিন হুয়ের দিকে ঘুরে তাকিয়ে বেশ বিদ্রুপের স্বরেই বললেন, “দেখে নাও। দেহটা এর মধ্যে উল্টিয়ে গেছে। ভস্ম ভস্মে মিলায়, ভস্ম ভস্মে মিলায়, তোমার বোনের হলে, এই দেহ খুব শিগগির মাটি নেবে আর আত্মা স্বর্গে যাবে।”
না দেখে আর উপায় ছিলো না মিন হুয়ের। জলের মধ্যে মুখটা ফুলে উঠেছে, যেনো হাওয়া ভরা একটা পুতুলের মুখ, এলোমেলো জায়গায় তুবড়ে যাওয়া, টোল খাওয়া। ভয়ে মিন হুয়ের দু পা অবশ হয়ে গেলো। তারও আগে থেকে তার পেটের ভেতরে যেনো ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি ভন ভন করছে। মিন হুয়ে পাড় ধরে উঠে গিয়ে, আবার নেমে এসে নদীর পাশে, ফুলে ফুলে বমি করতে লাগলো।
কাকু ফের একই প্রশ্ন করলেন, “এই কী সে?
মিন হুয়ে খালি গলায় বললো, “না।”
তারপর জোরে জোরে মাথা নাড়তে লাগলো। যা দেখেছে সেটা মনের থেকে তাড়াবার জন্য।
সে যাই হোক …… সেই ভয়ানক মুখ সে কোনো দিন ভুলতে পারবে না।
মিন হুয়ে একটা পরিচয়হীন লাশ দেখেছে জলে ভাসতে। তাই তাকে আবার পুলিশের সাথে যোগাযোগ করতে হলো ব্যাপারটা জানানোর জন্য। ওর ফোন পেয়ে চেন শিয়েংশঁ ওকে পুলিশ স্টেশনে দেখা করতে বললেন। তাঁর নাকি কিছু বলার আছে মিন হুয়েকে। মিন হুয়ের খুব অস্পষ্ট একটা ধারণা তৈরি হলো যে চুন মিয়াও-এর বাড়ির লোকেরা হয়তো খবর পেয়েছে।
তবে খবরটা মিন হুয়ে আরো বিভ্রান্ত করে দিলো। চেন শিয়েংশঁ জানালেন, “আমরা তার ঠিকানা আর আর কোন শহরে তার জন্ম তার হদিশ পেয়েছি।”
বিশদে বললেন, “মেয়েটা এই বছরে পঁচিশ বছর পার করেছে। খেটে খাওয়া মেয়ে। পায়ে মালিশ দেবার কাজ করতো। মেয়েটার বসত ভিটা গুয়াঁইশির পাহাড়ি এলাকায়, একটা দূর্গম জায়গায়।”
চেন শিয়েংশঁ দুটো ছাপানো কাগজ বার করে রাখলেন মিন হুয়ের সামনে। তারপর আরো জানালেন, “সে পায়ে মালিশ করার কাজটা করছে বছর দেড়েক। তার মালিকের দেওয়া বাসায় বাকি সহকর্মীদের সাথে থাকতো। এর আগে সে পা মালিশ করার অন্য দোকানেও কাজ করেছে। মালিকের কথা যদি ঠিক হয় তবে মেয়েটা কাজ করছে তার ষোলো বছর বয়স থেকে। অনেক রকম কাজ করেছে। রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ, জামাকাপড়ের কারখানায় কাজ, হোটেলে ঝাড়াপোঁছার কাজ, আরো নানা রকম।”
মিন হুয়ে জিজ্ঞেস করলো, “তার বাবা-মা কোথায়? ভাই? বোন? তারা সবাই বাড়িতে?”
চেন শিয়েংশঁ উত্তর দিলেন, “মেয়েটা অনাথ। বাবা, মা - দুজনেই মারা গেছেন। একটা ভাই ছিলো বটে। সেই ভাইয়ের যখন বছর খানেক বয়স তখন ভাইটা হারিয়ে যায়। আর কখনো খুঁজে পাওয়া যায় না। যে শহরে মেয়েটার জন্ম সেখানে কিছু দূর সম্পর্কীয় আত্মীয়স্বজন আছে বটে। তবে তাদের সাথে সম্পর্ক খুব ঘনিষ্ঠ নয়। এখান থেকে অনেক দূরে তো। তাদের পক্ষে আসা মুস্কিল। আমাদেরই ব্যাপারটা দেখতে হবে।”
মিন হুয়ে চমকে উঠলো, “আমাদেরই দেখতে হবে ব্যাপারটা! কি ভাবে?”
চেন শিয়েংশঁ ব্যাখ্যা করলেন, “আইনি পদ্ধতি যা যা আছে সে সব মানতে হবে। আমরা নিখোঁজ লোকের বিজ্ঞাপণ দেবো। যদি কাউকে পাওয়া না যায়, তাহলে আমরা আদালতে আবেদন করতে পারি মৃত ঘোষণা করার জন্য।”
যদিও চুন মিয়াও-এর পরিবারের লোকেরদের সঙ্গে দেখা করতে হলো না, তাও মিন হুয়ের মন ভার হয়ে উঠলো। একটা মানুষ হারিয়ে গেছে, পৃথিবীর বুক থেকে। কেউ তার ব্যাপারে পরোয়া করে না। কেউ তার খোঁজ করে নি। কেউ তার জিনিসপত্রের দায়িত্ব নেবে না। ব্যাপারখানা যেনো এমন যে মেয়েটা কোনো দিনও এই পৃথিবীতে বাস করে নি।
চেন শিয়েংশঁ তখনও বলে চলে ছিলেন, “পা মালিশ করার দোকানের লোকেরা জানিয়েছে যে চুন মিয়াও কাজটা থেকে সাময়িক ছুটি নিয়ে ছিলো। তার কিছু জিনিসপত্র এখনো আছে বাসায়। কেউ যদি সে সব না চায়, তো তারা সে সব ফেলে দেবে।”
মিন হুয়ে শিউরে উঠলো, “কে বললো কেউ চায় না সেসব জিনিসপত্র?”
মিন হুয়ে ছাপানো কাগজ দুটোর ছবি তুলে নিতে নিতে বললো, “আমি চাই তার জিনিসপত্র।”
চেন শিয়েংশঁ জানতে চাইলেন, “তাহলে হোটেলে যে তার মালপত্র আছে, তুমি কী সেগুলোর দায়িত্বও নেবে?”
মিন হুয়ের সংক্ষিপ্ত সম্মতি, “ও কে।”
চেন শিয়েংশঁ ঘড়ি দেখে উঠে দাঁড়ালেন। তারপর বললেন, “তুমি বাড়ি যেতে পারো। এসো উইচ্যাটে যোগাযোগ রাখি। কোনো খবর পাওয়া গেলে জানাবো।”
মিন হুয়ে বললো, “ছিয়ানশুন ওয়ান -”
চেন শিয়েংশঁ নিশ্চিত করলেন, “আমরা অনেক আগেই খুঁজেছি ওখানে। এখানকার লোকজন যা বলে তার সব বিশ্বাস করতে যেও না।”
মিন হুয়ে উঠে দাঁড়ালো কিন্তু এক পাও নড়লো না। শুধু জানতে চাইলো, “জীবনের গল্পটা কী এরকমই?”
চেন শিয়েংশঁ স্বান্তনা দিলেন না। বরং সত্যি বললেন, “মানুষের জীবন কখনো নিয়তিকে অতিক্রম করতে পারে না।”
তার পর মিন হুয়ের কাঁধে চাপড় দিয়ে বললেন, “এই ব্যাপারটা এই খানেই শেষ হলো।”
~~~~~~~~~~~~
সম্পূর্ণ বই বিনামূল্যে : https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96
Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/07/jpda-chapter-01.html
Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/07/jpda-chapter-03.html