৫৬. ঘোড়ার চাল
মাত্র দু দিন লাগলো মিন হুয়ের সমস্ত তথ্য নানান নথিতে ভরে নানান বিভাগে সেগুলোকে ভাগ করে কোম্পানির সব কর্মীর ভাগের জ্ঞান পরিচালন ক্ষেত্র, যার নাম কনফ্লুয়েন্স, সেখানে আপলোড করতে। হে হাই শিয়াং-কে একটা ই-মেল করে দিলো যে হাত বদলের কাজটা সারা হয়ে গেছে।
তিন মিনিটের মধ্যে হে হাই শিয়াং নিজে দৌড়ে এলো মিন হুয়ের অফিসে, মিন হুয়েকে ধরতে, মুখোমুখি হতে মিন হুয়ের সঙ্গে। নিজের কড়া হালচাল বদলে বললো, “মিন হুয়ে, কোনো তাড়া নেই হাত বদলের। বরং একটা খুশির খবর আছে। আমি তোমাকে জানাতে চাই, কোম্পানির নেতৃত্ব অনেক গবেষণা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আজকে থেকে তুমি এক মাসের সবেতন ছুটি পাবে। তার সঙ্গে তোমাকে কুড়ি মাসের বেতন একসঙ্গে দেওয়া হবে পুরস্কার হিসেবে যেহেতু তুমি জিএস১.০ সম্পূর্ণ তৈরি করতে সফল হয়েছো।”
মিন হুয়ে চমকে উঠলো। এতোদিন পরে ও আশা করে নি যে হে হাই শিয়াং এতোটা দরাজ হবে, “তাহলে - বাকিদের কী হবে? ঝ্যাং শও হান আর ওয়াং ছিং য়ুআঁ - ওরাও কী পুরস্কার পাবে?”
“না, আমি সেসব বছরের শেষে দেবো।”
“কিন্তু -”
“তুমিও জানো যে মেডিক্যাল এআই বাজারে চালু করে ব্যবসা করে পয়সা করা কী দুরুহ। আর কোম্পানি যে অনেক ব্যবসা করেছে, অনেক টাকা করেছে এমনও নয়।”
হে হাই শিয়াং জানতো যে মিন হুয়ে কী বলতে যাচ্ছে। দুম করে কথা কেড়ে নিলো, “এটা শুধু তোমাকে কোম্পানিতে ধরে রাখার জন্য। গত মাসে তুমি খুব খেটেছো, প্রচুর ওভারটাইম করেছো জিএস১.০-র জন্য। এ মাসে, তুমি খুব ভালো করে বিশ্রাম নাও। সুন্দর পাহাড় আর নদী আছে এমন একটা জায়গা খুঁজে বার করে ছুটি কাটিয়ে এসো। তুমি যদি চংগুয়োতেই থাকো তাহলে তুমি নিজের পছন্দ মতো জায়গা বেছে নিতে পারো। এরোপ্লেনে চড়ে তোমার যাতায়াতের খরচ আর তোমার থাকার খরচ কোম্পানি তোমাকে পরে দিয়ে দেবে। এখন কাজ ছেড়ে দেবার কথা ভুলে যাও।”
“শিয়া শিয়া হে জঁ। কিন্তু আমি আগেই বলেছি যে আমি কিছুতেই কাজ করবো না -”
“আমি জানি, আমি জানি, তুমি গুয়ান ছাওতে কাজ করতে যেতে চাও না, তাই তো? সত্যি কথা, একদম সত্যি বললে, গুয়ান ছাও খুবই ভালো কোম্পানি। তুমি যদি নিজের কথা নাও ভাবো, তাহলে অন্তত তুমি বাচ্চাটার কথা ভাবো। তোমার ছেলেটা এতো অসুস্থ, আর গুয়ান ছাও-এর মাইনে, চিকিৎসার খরচ আর হাসপাতালের সুযোগ সুবিধে সবই বেশ ভালো। তোমার কতো দুশ্চিন্তা কমে যাবে বলো তো? চেং জঁও তোমার ব্যাপারে খুব গুরুত্ব দেন, আমাকে অনেক বার ফোন করেছেন, বার বার বলেছেন যে তোমাকে ধরে রাখতেই হবে, যেভাবেই হোক।”
মিন হুয়ে ভাবলেশহীন মুখে তাকিয়ে রইলো হে হাই শিয়াং-এর দিকে।
“আমি জানি, তোমার আর চেং জঁ-এর পরস্পরের সঙ্গে কিছু তেতো অভিজ্ঞতা আছে, কিন্তু উনি তো সেসব বাদ দিয়েছেন, তোমারও উচিৎ সে সব ভুলে যাওয়া। গুয়ান ছাও ইন্টারন্যাশন্যাল আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে সামনের সারিতে আছে। তুমি যদি বিদেশে না গিয়ে মেডিক্যাল এআইতে কাজ করতে চাও, তাহলে সেরা উপায় হচ্ছে গুয়ান ছাওতে কাজ করা। আমি তোমাকে এক মাস দেবো ভাবার জন্য, তাড়াহুড়ো করে না বোলো না, বাচ্চার কথা ভাবো, ভবিষ্যতের কথা ভাবো। একমাস পরেও যদি তুমি ছেড়ে দেবার কথাই ভাবো, তখন না হয় কথা বলা যাবে, ওকে?”
মিন হুয়ে বুঝলো যে হে হাই শিয়াং-এর দেরি করানোর ছল। বেশ অগোছালো ভাবনা, ভাবছে টাকা দিয়ে সব সমাধান করে ফেলবে। কিন্তু ভাবাই যায় না যে হে হাই শিয়াং অতো লম্বা একটা ছুটি দিয়েছে। তাই মিন হুয়ে আর তর্ক করলো না, ব্যাখ্যাও করলো না। হালকা হেসে বললো, “ওকে।”
হে হাই শিয়াং ভাবলো যে যুক্তি দিয়ে মিন হুয়েকে বোঝানোর কাজটাতে সে উৎরে গেছে। দ্রুত, ছোটো ছোটো পদক্ষেপে মহানন্দে চলে গেলো সে।
***
বসে থাকলে অলস হয়ে যাবে ভেবে, মিন হুয়ে একদিনও নষ্ট করলো না, পরদিন সকালেই গেলো রুইদ্য কমার্শিয়াল বিল্ডিং-এ।
সকাল নটায় খোলে ‘ঝাও মু স্পোর্টস’। কর্মীদের হাজিরার সময় সাড়ে আটটা। যখন মিন হুয়ে পৌঁছোলো, তখন য়িন শু গুদাম থেকে মাল এনে দোকানে সাজাচ্ছে, একটা সুন্দর দেখতে মেয়ে ওর পিছু পিছু ঘুরছে, দুজনে সব ফর্দ ধরে মাল মেলাচ্ছে এক এক করে। য়িন শু একটা সাদা নাইকি হুডি পরে আছে, সঙ্গে কালো বাস্কেট বল শর্টস, আর ট্রেনিং লেগিংস, প্রাণবন্ত আর সুদর্শন দেখাচ্ছে ওকে।
“তোমার মূল কাজ হলো ই-কমার্স। তোমাকে আমার দরকার একটা অনলাইন সেলস্ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার জন্য। তুমি কাজটা বাড়িতে বসেও করতে পারো। তোমাকে রোজ এখানে কাউন্টারে আসতে হবে না। আমাদের তো পুরো সময়ের কর্মী নেই বললেই চলে। সাধারণত কলেজের ছাত্ররাই এখানে কাজ করে। সাধারণত কয়েক মাস কাজ করে চলে যায়। যদি আমার এখানে যথেষ্ট লোক না থাকে, তোমাকে যদি কাজে লাগে তবে আমি তোমাকে ফোন করবো।" বললো য়িন শু।
“আমি বরং রোজ আসবো। ওখানে একটা টেবিল আছে। আমি ওখানে বসবো, বসে বসে কাজটা করবো, তোমার দোকানের ওয়েবপেজের ডিসাইন আর ডেভেলপমেন্ট। তুমি যে কোনো সময়ে আমাকে বলতেও পারবে যে তুমি পেজটাতে ঠিক কী কী চাইছো। যখন দোকানে খুব ভিড় হয় যাবে, তখন আমি তোমাকে কাউন্টারেও সাহায্য করবো।”
“সে ঠিক আছে।” বললো য়িন শু, “সময়টা বাধা ধরা নয়। তুমি কী করবে সেটা নির্ভর করবে কাজটাতে তুমি অভ্যস্ত কিনা তার ওপরে, তাই নিজের সঙ্গে জোরাজুরি কোরো না। জুতো বেচার জন্য বিশেষ দক্ষতা লাগে না, যতক্ষণ তুমি মিষ্টি কথা বলে খদ্দেরকে সম্ভাষণ করতে পারছো।”
এসব বলা স্বত্তেও মিন হুয়ে ওর কাজে একশো ভাগ ডুবে গেলো। দু সপ্তাহ লাগলো ওর একটা সম্পূর্ণ অনলাইন দোকান বানাতে, জুম হোভার টেকনোলজি দিয়ে সব জুতোর ছবি অনলাইন রাখতে। ছবির হাই রেজোলিউশন টের পাওয়া যায় যখনই কেউ পেজটা ব্যবহার করার সময়ে মাউসটা নাড়ায় বা ক্লিক করে।
“ওয়াও, এটা তো দুর্দান্ত হয়েছে!” য়িন শু প্রশংসা না করে পারলো না মিন হুয়ের, যখন মিন হুয়ের বানানো ওয়েবপেজটা ও দেখলো, “এটা শিগগির ব্যবহার করা যাবে?”
“কিউআর কোড হোক। ওটা স্ক্যান করে খদ্দের রেজিস্টার করতে পারবে, তবে তো কিনবে অনলাইন।”
“ব্যাপক।" বললো য়িন শু, “এভাবে আমাদের জমা করে রাখা মালের পরিমাণ অনেকটা কমবে।”
“এতে পছন্দের ব্যাপ্তিটাও বাড়বে। যাই হোক, তোমার চার দেওয়ালের দোকানের দেখানোর জায়গা সীমিত। তাতে সব ধরনের সব মাল, সব রঙের মাল দেখানো অসম্ভব। তার ওপরে এটা কোন খদ্দের কী ধরনের মাল কেনে সেই সব তথ্য ধরে রাখবে। পরে খদ্দেরের উৎসাহ আর পছন্দ অনুসারে, তাদের কেনাকাটার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী যে ধরনের মাল আগে খদ্দের নিয়েছে, কিনেছে, সেই ধরনের কোনো নতুন মাল এলে বাজারে সেই সব মাল খদ্দেরের কাছে সুপারিশও করতে পারবে।”
হড়বড় করে বলে গেলো মিন হুয়ে, “তোমার এই চার দেওয়ালের দোকানের সাথে যোগাযোগ রেখে কিছু প্রচারের ব্যবস্থা আর ছাড়ের কুপনও দেওয়া যেতে পারে।”
য়িন শু মন দিয়ে শুনলো সব, মনে হলো যে ও যেনো মুগ্ধ হয়ে গেছে।
য়িন শুয়ের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ মিন হুয়ে টের পেলো যে কেনো ওকে সাও মু পছন্দ করে। ওর রূপ ছাড়াও য়িন শুয়ের সঙ্গে মেশা খুব সহজ, খুব কথা বলে আর সাহায্যও করে প্রচুর। ওর সৌন্দর্য উচ্ছল, প্রাণবন্ত কিন্তু বিনয়ী, আর ও জোর করে সুন্দর দেখানোর জন্য কোনো ভঙ্গিমা নেয় না।
লোকটা সহজ আর খোশমেজাজে থাকে বেশির ভাগ সময়েই, চটপট ভাবে অথচ কোনো অহঙ্কার নেই। যেই ওর সঙ্গে থাকুক না কেনো, তার প্রতি ওর আচরণ আন্তরিক আর সঙ্গের মানুষটার ওপর ওর ব্যক্তিত্ব কোনো চাপ সৃষ্টি করে না।
ও আবার খেলাধুলোতেই ভালো। সব ধরনের খেলাই ভালো খেলে। সব ধরনের বল খেলা ভালো পারে।
যখন মিন হুয়ে অনলাইন স্টোরের শেষ ফাংশনালিটিটা বুঝিয়ে বলে দিলো য়িন শুকে, য়িন শু খুব গম্ভীর মুখে বললো, “তাই গাঁইশিয়ালা।”
মিন হুয়ে রসিকতা করলো, “কিভাবে দেবে ধন্যবাদ?”
য়িন শু দুম করে অন্যদিকে কাজ করতে থাকা একটা মেয়েকে ডেকে বললো, “শও লিন, বাজনাটা চালু করুন।”
তারপর মিন হুয়েকে বললো, “আমাকে তোমার জন্য নাচার অনুমতি দাও।”
“উহ্?”
“তুমি জানো না?” একটা মেয়ে মিন হুয়েকে আলতো খোঁচা দিলো, “ল্বব্যাঁ, ব্রেক ডান্স করতে পারে।”
“সত্যি?”
“উনি তো নানান প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জিতেওছেন। মাইকেল জ্যাকসনকে নকল করার অনুষ্ঠানেও অংশ নিয়েছেন। আর উনি নাচেনও খুব ভালো।”
মেয়েটি দেখতে দেখতে বললো, “যতো বার উনি নেচেছেন, ততো বারই প্রচুর খদ্দের ভিড় করেছে, ঝটপট জুতো বিক্রি হয়ে গেছে।”
“ছেলেদের না মেয়েদের জুতো?”
“দু রকমই, তবে মেয়েদের জুতো বেশি বিকিয়েছে।”
কথা বলতে বলতেই বাজনা বেজে উঠলো, য়িন শু শুরুতে একটা মুনওয়াক করলো, মিন হুয়ের চারপাশে লাফিয়ে লাফিয়ে ঘুরে নিলো, অনেক ক্ষণ মেঝের ওপরে একটা হাত রেখে ডানদিকে বাঁদিকে দুলল, বেশ কিছুক্ষণ ওকে একটা বড়ো মাকড়সার মতো দেখাচ্ছিলো, আবার কিছুক্ষণ ওকে রোবোটের মতোও দেখাচ্ছিলো, মেঝেতে মাথা রেখে উঁচুতে লাফিয়ে উঠছিলো, শরীরটাকে পুরো উল্টে দিয়ে … মিন হুয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলো, য়িন শু ধরলো মিন হুয়েকে। মিন হুয়ে খিল খিল করে হেসে উঠলো। ডিস্কো কেমন করে নাচতে হয় তা খানিক জানতো মিন হুয়ে, তাই ও য়িন শুয়ের সঙ্গে তাল মেলালো নাচে, হাতে তালি দিতে দিতে। এক্কেবারে থেমে যাবার আগে দু জনে নাচলো পাক্কা কুড়ি মিনিট।
আশেপাশের খদ্দেররা ভাবলো যে দোকানে বুঝি একটা অনুষ্ঠান চলছে। যতো কথাটা চাউর হলো, ততো বেশি লোক জড়ো হলো। দোকানে ভিড় বাড়লো।
দুটো লোকের প্রত্যেককে মিন হুয়ে একজোড়া করে বাস্কেটবল সু পরে দেখতে সাহায্য করলো। প্রত্যেকেই জুতো পরে খুব সন্তুষ্ট। দু জনেই তড়িঘড়ি কাউন্টারে গিয়ে রসিদ করিয়ে দাম মেটাতে গেলো।
বেশ অনেক ক্ষণ ধরে দোকানে খুব ভিড় হয়ে রইলো, তারপরে আস্তে আস্তে খালি হতে লাগলো। যাই হোক ব্র্যান্ড খেলার জুতোর দাম খুব বেশি। সাধারণ লোকে তো আর কিনতে পারে না।
খদ্দের যখন পয়সা দিয়ে যাচ্ছে, মিন হুয়ে জলে একটা চুমুক লাগালো আর সামনে দাঁড়ানো মানুষটার পিছনে নজরে এলো একটা চেনা চেহারা। ও এগিয়ে গিয়ে দেখলো, আর মানুষটার পিঠে হালকা চাপড় না দিয়ে পারলো না, “শিন ছি, তুই এখানে কী করছিস?”
“আমি এলাম -” ও খানিক ক্ষণ ভাবলো, তারপর বললো, “জুতো।’
“স্নিকারস্?”
“হ্যাঁ।”
“আমাদের কাছে প্রায় সব আমেরিকান ব্র্যান্ডই আছে। তুই প্রায়ই নিউ ইয়র্কে যাস না? ওখানে কোনো দোকানে কেনাই তো ভালো।”
“ভালো দর আছে?”
“নতুন জিনিস খুবই কম।”
“তাও ঠিক।” মিন হুয়ে একটা চেয়ার টেনে এনে বসতে দিলো শিন ছিকে, “বোস, ছিং।”
শিন ছি যেমন স্যুট পরে থাকে, তেমন স্যুট পরেই ছিলো, কিন্তু ওর মুখের হাবভাব একটু কেমন যেনো।
“কেমন জুতো কিনতে চাইছিস?”
“যা তোর ইচ্ছে।”
“শিন ছি" মিন হুয়ে গম্ভীর মুখের জানতে চাইলো, “তুই এখানে আমাকে জ্বালাতে আসিস নি, তাই তো?”
“তাও কী সম্ভব? এরকম করে বলার সাহস হলো কী করে তোর? — তোদের গলফ্ সু আছে। আছে না?”
“হ্যাঁ। কী রঙের চাস?”
“সাদা। যেটা প্রাণবন্ত দেখাবে।”
“হ্যাঁ, সাদাই ভালো।”
মিন হুয়ে কয়েক জোড়া নমুনা জুতো নিলো, শিন ছির কাছে গেলো, হাঁটু মুড়ে মেঝেতে বসলো, “তোর সাইজ তেতাল্লিশ, তাই না?”
“হ্যাঁ, তাই।”
“এই জোড়াটা দ্যাখ। এগুলো হালকা, আর ঠোকাঠুকি হজম করে নেয়।”
মিন হুয়ে খুব দক্ষতার সঙ্গে বললো, “স্পাইকগুলো দ্যাখ, কার্বন ফাইবার দিয়ে তৈরি। বেশ শক্ত করে মাটি কামড়ে ধরতে পারে।”
শুরু করার আগে, শিন ছির পা থেকে চামড়ার জুতোটা খুলে নিলো মিন হুয়ে, এক হাত ওর পায়ের গোড়ালির নিচে রাখলো, আর অন্য হাতে ওকে সাহায্য করলো জুতোটা পায়ে গলাতে।
“মাপে হয়েছে?”
“একটু ছোটো লাগছে।”
“ছোটো নয়। তোর পায়ের পাতার বাঁকটা বেশি উঁচু।” মিন হুয়ে স্নিকারস্গুলো খুলে নিলো, আরেকটা জুতো পরালো, “এটা দ্যাখ।”
“আমি জুতো বাঁধতে পছন্দ করি না।” বললো শিন ছি, “ফিতে লাগবে না এরকম জুতো আছে তোদের কাছে?”
“হ্যাঁ। স্কেচার্সের দুটো আছে যেগুলোতে ফিতে লাগে না।”
“আমি কেবল নাইকি পছন্দ করি।”
“তাহলে আমি তোকে দুটো বাক্লস্ দেবো। তোকে বাঁধতে হবে না। বাক্ল আটকে নিবি।”
পাশের কৌটো থেকে দুটো কমলা রঙের বাক্ল বার করে নিলো মিন হুয়ে, “আজ একটা অনুষ্ঠান ছিলো। তাই এগুলোর কোনো দাম লাগবে না।”
“বিশ্রী।”
শিন ছি বাক্লগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিলো মুখ ভর্তি বিরক্তি নিয়ে।
“অতো উজ্জ্বল রং দানবদের জন্য, তাই না?”
মিন হুয়ে জোর করে হাসলো, “ওগুলো বাচ্চাদের জন্য।”
শিন ছি সমস্ত গলফ্ সু পরে দেখলো। মিন হুয়ে মেঝেতে উবু হয়ে বসে ওকে সঙ্গ দিয়ে গেলো চল্লিশ মিনিট ধরে, উবু হয়ে বসে থেকে থেকে মিন হুয়ের পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরে গেলো। শিন ছির কিছুই পছন্দ হলো না, কোনো জুতো জোড়াই সন্তোষজনক নয়।
“এইগুলোই আছে গলফ্ সুয়ের মধ্যে। তুই অন্য দোকানে দেখ না হয়। দোতলায় একটা দোকান আছে শুধু গলফ্-এর জিনিসপত্র বেচে ওরা। ওখানে অন্য আরো অনেক স্টাইল পেতে পারিস।" পরামর্শ দিলো মিন হুয়ে।
“গলফ্ সু বাদ দে। দৌড়োনোর জুতো দেখি।”
“ওকে, অনেক ধরনের দৌড়োনোর জুতো আছে। কী রঙের চাই তোর?”
“আমার সবই ভালো লাগে। তুই সব কটা দেখাতে পারবি আমাকে?” বললো শিন ছি, “আমার পছন্দের ব্যাপারটা গোলমেলে।”
“শিন ছি,” মিন হুয়ে আর হাসতে পারলো না, “তুই এখানে এসেছিস আমাকে উত্যক্ত করতে, তাই না?”
“যতো দিন তুই এখানে জুতো বেচবি, আমি এখানে থেকে থেকে আসবো জুতো কিনতে।" বললো শিন ছি, “আরো যত্ন নে ব্যবসার।”
“তোকে মারতে ইচ্ছে করছে।" রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে উঠে দাঁড়ালো মিন হুয়ে, অনেক ক্ষণ উবু হয়ে বসে ছিলো বলেই হয়তো ওর মাথা ঝিমঝিম করছিলো, প্রায় মেঝেতে পড়েই যাচ্ছিলো।
ঠিক সময়ে শিন ছি ওকে ধরে নিলো, “আমাকে মারার আগে, তুই তোর ঘোড়ায় চড়ে চলার ভঙ্গিটার যত্ন নিস।”
~~~~~~~~~~~~
সম্পূর্ণ বই বিনামূল্যে : https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96
Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-55.html
Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-57.html
No comments:
Post a Comment