৫৭. পদত্যাগ
দুপুরে খাবার সময় হয়ে গেছে। শিন ছি যাতে আর কোনো গন্ডগোল পাকাতে না পারে, সেই জন্য মিন হুয়ে ওকে নিয়ে চার তলায় একটা বারবিকিউ রেস্টুরেন্টে গেলো।
“আজকাল এখানকার মশলা দেওয়া তি প্যাঁ ভালো লাগছে আমার। আমি জানি না কেনো আমার এমন ঝোঁক হয়েছে। রোজ দুপুরে আমি এখানে আসি।”
জানলার ধারে একটা বসার জায়গা দেখে মিন হুয়ে বসে পড়লো। হাতে মেনুটা নিয়ে বললো শিন ছিকে, “এখানে সেলেরি লিলিও বেশ ভালো। যদ্দুর মনে পড়ছে, তোর সেলেরি লিলি ভালো লেগে ছিলো। চল, আমরা শুয়োরের পায়ের পাতা আর সেলেরি লিলি দিতে বলি। তার সাথে দোকান দেবে শুকনো চিংড়ি দিয়ে রাঁধা ছাঁচিকুমড়োর ঝোল।”
শুয়োরের পায়ের পাতা |
কথা বলতে বলতেই মিন হুয়ে একটা বল পয়েন্ট পেন দিয়ে মেনুতে দাগ দিচ্ছিলো।
“খুবই স্বাভাবিক, জুতো বেচে যারা, তারা পায়ের ব্যাপারে উৎসুক।”
শিন ছি পিছনের দিকে সামান্য হেলে বসলো, চোখ কুঁচকে দেখতে লাগলো মিন হুয়েকে, “এতে আর অবাক হবার কী আছে?”
মিন হুয়ে খালি চোখে তাকালো শিন ছির দিকে।
দোকানের সাজগোজটা ছোটো খামারবাড়ির উঠোনের মতো। চেয়ারগুলো একটু বেশি নিচু, শিন ছি যে খুব আরামে বসেছে তা নয়। দেখে মনে হচ্ছে যে এমন জায়গায় স্যুট আর চামড়ার জুতো পরে ওর আসা উচিৎ হয় নি।
“অতিথিকে খাওয়ানো বেশ কঠিন কাজ।” বলে উঠলো শিন ছি হালকা চালে, “তুই আমাকে ভালো কিছু খাওয়াতে পারিস না?”
“দ্যুইবুচি, সবে সবে আমার কাজটা চলে গেছে।”
শিন ছির হাসিতে উস্কানি, পায়ে কাঁচি মেরে বসে বললো, “তুই ঠিক গরীব বলতে যা বোঝায় তেমনটা নস। ঝৌ রু জি, ও তোকে দশ লাখ দিয়েছে না?”
“আমি ওকে শোধ দিয়ে দিয়েছি।”
যে রাতে গুয়ান ছাও প্রকাশ করলো যে ওরা বা’অ্যান কিনে নিয়েছে, সেই রাতেই মিন হুয়ে যে টাকাটা ধার নিয়ে ছিলো ঝৌ রু জির থেকে, সেটা ফেরত দিয়ে দেয়, সঙ্গে দেয় আরো দশ হাজার। সুদের সমতুল। ঝৌ রু জি একটা টেক্সট মেসেজে জবাব দিয়ে ছিলো যে অতো উতলা হবার কিছু নেই। মিন হুয়ে ভেবে ছিলো যে ঝি ঝুয়ের গভীর অসুখ আর ওর জন্য বেশ কিছুদিন ধরে হংকং-এর জন্য বানানো ওষুধ ব্যবহার করছে, ওগুলোর একেক পিসের দাম কুড়ি হাজার য়ুআঁ, তাছাড়াও আরো অনেক কিছুর জন্য টাকার দরকার। তবে ও দেঁ চেনের টাকাটা এখনো সরায় নি, কারণটা ওটা বিনিয়োগ, ওটা আগে ফেরত দেওয়াটা খারাপ হবে।
নিশ্চিত যে কিছু পাত্রের ঢাকা খোলা হয়েছে কিছু পাত্র তুলে সরানোও হয় নি। শিন ছি বললো, “দেঁ চেনও তো তোকে দশ লাখ ধার দিয়েছে।”
“তুই জানলি কী করে?”
“তুই টাকাটা নিয়ে ছিলি এমবিওর জন্য। এমবিও তো হলোই না। তা হলে দশ লাখ কী এখন অকেজো নয়?”
ওর চোখ কিছুতেই সরছে না টেবিলের ওপরে লেগে থাকা তেলের দাগের ওপর থেকে। কিছুতেই ও চোখ সরালো না ওটার ওপর থেকে অনেক ক্ষণ।
ব্যাপার দেখে, মিন হুয়ের আর কোনো উপায় রইলো না, ও ব্যাগ থেকে একটা পেপার টাওয়েল নিয়ে দাগটাকে ঘষে ঘষে তুলে দিলো, এমন করে তুলে দিলো দাগ যে এক ছিটেও দাগ রইলো না।
তবে শিন ছির দৃষ্টি ফিরে এলো মিন হুয়ের মুখের ওপরে।
“ঐ দশ লাখ আমি নিয়েছি এক বছরের জন্য। আমি ওকে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছি দশ শতাংশ সুদ দেবার। এক বছর এখনো হয় নি।”
মিন হুয়ে জানতে চাইলো, “কেন, দেঁ চেন কী তোকে বলেছে আমাকে বলার জন্য যে আমি যেনো ওর টাকাটা ওকে ফিরিয়ে দি?”
“না। ও আমার থেকে কিছু ধার করে ছিলো। তাই ও তোকে দেওয়া ধারটা আমার কাছে বাঁধা রেখেছে।”
মনমরা চোখে শিন ছি তাকালো মিন হুয়ের দিকে।
“ওকে।” কাঁধ ঝাঁকালো মিন হুয়ে, “টাকাটা এখনো অ্যাকাউন্টেই আছে। তুই যদি চাস তো আমি কাল তোকে পাঠিয়ে দেবো। কিন্তু - আমি দশ শতাংশ সুদ দেবো না।”
“চিন্তা করিস না।” বললো শিন ছি, “আমাকে এক বছর পরে দিলেও হবে, কিন্তু আমি দশ শতাংশ সুদ চাই।”
"কেনো তোর মাথাব্যাথা নেই টাকাটা নিয়ে?”
“আমি শুধু তোকে জানাতে চাইছি যে তোর পাওনাদার বদলে গেছে।”
শিন ছি পা নাচাতে লাগলো। মিন হুয়ের চোখে লাগলো উঁচিয়ে থাকা জুতোর ডগাটা, “ভবিষ্যতে পাওনাদারের সাথে কথা বলার সময় আরেকটু বিনয়ের সঙ্গে কথা বলবি। যেমন, আমি এখানে অনেক ক্ষণ বসে আছি। একটা চায়ের পাত্রও আছে সামনে। কিন্তু আমি দেখলাম না যে তুই আমাকে এক কাপ চা বানিয়ে দিলি।”
মিন হুয়ের কোনো উপায়ই রইলো না ওকে এক কাপ চা বানিয়ে দেওয়া ছাড়া, “ছিং।”
“শিয়া শিয়া।”
যখন খাবার আর ঝোল পরিবেশন করে দিয়ে গেলো রেস্টুরেন্টের পরিবেশক, কোনো সৌজন্য না করেই মিন হুয়ে খুবলে খুবলে শুয়োরের পায়ের পাতা খেতে লাগলো, নিজের আঙুলও চুষতে লাগলো, “তাহলে তুই আমার কাছে এসেছিস টাকার জন্য, নাকি আর কিছু দরকার আছে?”
“তাছাড়া আর কী হতে পারে?”
শিন ছি তাকিয়ে রইলো মিন হুয়ের দিকে অপলক, চোখ বড়ো বড়ো করে।
মিন হুয়ে হাসলো, “হয়তো তোর ইচ্ছে হয়েছে এসে আমাকে দেখার।”
মুখের সমস্ত পেশি টান টান করে বললো শিন ছি, “আমি শুধু জানতে চাই যে তোর ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী।”
“পরিকল্পনা? তোর কিছু যায় আসে আমার পরিকল্পনায়?”
“তুই আমার ছেলের মা। কী ধরনের কাজ করে তুই রোজগার করছিস, তোর রোজগার কতো, তোর মনমেজাজ শান্ত কিনা … এ সবেরই তীব্র প্রভাব আছে সু ছনের বেড়ে ওঠার ওপরে।”
“তাহলে, তুই আমার দিকে মন দিয়েছিস তোর ছেলের কথা ভেবে?”
“তাছাড়া আর কী কারণ হতে পারে?”
“আমি মনে করি যে শ্রমের বিভাজন হয় মাত্র। কাজের কোনো উঁচু নিচু হয় না। যতোক্ষণ আমি আমার সবর্স্ব উজাড় করে আমার বাচ্চাকে ভালোবাসছি, যত্ন করছি, সবই ঠিক থাকবে।”
এই সময়ে মিন হুয়ে আলোচনার বিষয় বদলে ফেললো, “যেহেতু তুই ‘মন মেজাজের শান্তি’ নিয়ে ভাবছিস, তাই আমি তোকে জানাচ্ছি, নিজের মনমেজাজ শান্ত রাখার প্রতি তোর খানিক মনোযোগ দেওয়া দরকার। তোর প্রয়োজন তোর বাচ্চার জন্য একজন মায়ের, আর আমারও দরকার আছে আমার ছেলের জন্য একজন বাবার। সেই প্রয়োজনে নিরিখে আমরা সমান।”
“এতে উঁচু-নিচুর কিছুই নেই। তুই সফ্টওয়্যার ডিসাইনের কাজ করিস, যদি কাজ ছেড়ে নতুন কাজ নেবার ব্যাপারে কোনো চুক্তিও থাকে, সেই চুক্তি তো সীমাবদ্ধ কেবল মাত্র কয়েকটা শিল্পক্ষেত্রের কয়েকটা কোম্পানির জন্য। গুয়ান ছাও তোর কাজ করার অধিকার তোর থেকে কেড়ে নিতে পারে না। তুই তো আরো পড়াশোনা করার জন্য কোনো একটা ইউনিভার্সিটিতেও যেতে পারিস। আরেকটা ডিগ্রি করতে পারিস, কিংবা একটা বিদেশী কোম্পানিতে কাজ নিতে পারিস। জুতোর দোকানে সময় নষ্ট করছিস কেনো? তোর আইকিউ নিয়ে তোর এমন কোনো কাজ করা উচিৎ যেটা তোর বুদ্ধিকে আরেকটু জটিল সমস্যার মুখে ফেলবে, তাই না?”
ওর চোখ মুখ থেকে অসন্তোষ ফুটে বেরোচ্ছে।
“আমি ক্লান্ত। একটু ছুটকারা চাইছি। এই কাজটা করা সহজ, আর কখনো কখনো মন বদলানো ভালোও।”
“মিন হুয়ে -”
“আমি খালি আছি বলেই , তুই আমাকে ভর্তি করে ফেলতে পারিস না, শিন ছি।”
মিন হুয়ে এক টুকরো নরম হাড় ফেললো মুখ থেকে, কড়া সুরে বললো, “আমি কিছু বিপদে পড়েছি, আমি পতিত হয়েছি, আমি মরিয়া হয়েছি, আমি হালও ছেড়ে দিয়েছি - কিন্তু এখন আমি ঘুরে দাঁড়িয়েছি আর আমি ভীষণ খুশি মনে এগিয়ে চলেছি। যদিও আমি হোঁচট খাচ্ছি, কিন্তু তাতে এটাই দেখা যাচ্ছে যে আমি এই পৃথিবীতে এখনো বেঁচে আছি।”
মিন হুয়ে মুখ তুলে চোখ রাখলো শিন ছির চোখে, “কিন্তু তোর ব্যাপারটা কী? তুই তোর স্মৃতির মধ্যে বেঁচে আছিস, দেওয়াল ঘেরা, হৃদস্পন্দন নেই, শ্বাসপ্রশ্বাস নেই, সব কিছু ঠান্ডা। আমাদের যখন দেখা হয়ে ছিলো প্রথম বার, তখন তুই তো একদম অন্য মানুষ। তখন, তুই -”
শিন ছির মুখ নীল হয়ে গেলো, ফেটে পড়ার মতো রাগ ফুঁসে উঠলো নিজে নিজেই, একটা বিদ্রুপ দিয়ে বাধা দিলো মিন হুয়েকে, “তোর মনে হয় না যে আমার বদলে যাওয়াটায় তোর হাত আছে? যা ছিলো আমার সব তুই ধ্বংস করে দিয়েছিস, জানিস না?”
“আমি জানি। আমি ক্ষতিপূরণও করতে চাই। আমি নিজেকে তোর কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই সু তিয়াঁ হয়ে, আমি তোর দাসী হতে চাই, আমি তোর দাসত্ব নিতে চাই, আমি তোর সমস্ত মেজাজ আর ত্রুটি মেনে নিতে চাই, শিন ছি, এর থেকে বেশি তুই কী চাস আমার থেকে? আমি শুধু এটুকুই করতে পারি, আমি শুধু এটুকুই দিতে পারি।”
“সু তিয়াঁ আমার দাসী নয়, আমার দাসানুদাস নয়, তুই বুঝিসও না আমার জীবনে ও থাকার কী মানে।”
রাগ করলে শিন ছিকে খুব মনোযোগী দেখায়, যেনো একটা জন্তু, যে কোনো সময়ে,আক্রমণের জন্য প্রস্তুত।
মিন হুয়ের রাগও পাকিয়ে উঠছিলো, এই শীতোষ্ণ সম্পর্কের শেষ কবে হবে ভেবে। মিন হুয়েও দাঁতমুখ খিঁচিয়ে উত্তর দিলো, “তাহলে দয়া করে মন দে সু তিয়াঁকে খুঁজে বার করার কাজে। তুই যদি ওকে খুঁজে পাস, তবে তুই আর আমি - আমরা দুজনেই নিস্তার পাই।”
“আমি ওকে খুঁজছি, খুঁজে চলেছি, কখনো খোঁজ থামে নি। যে সব লোককে আমি লাগিয়েছি, তারা আমাকে রোজ খবর দেয়। কিন্তু, এখন, মিন হুয়ে, আমি আমার ছেলের সঙ্গে একলা থাকতে চাই কিছু দিন। আমি রোজ ওর কাছে আসতে চাই না, আমি চাই ও একলা থাকুক, আমার সাথে। আমার পাশে, যাতে আমি রোজ চোখ খুললেই ওকে দেখতে পাই।”
“আমাদের অ্যাপার্টমেন্টে একটা খালি ঘর তো আছেই, গেস্টরুম।”
“কিন্তু আমি তোকে দেখতে চাই না।”
“...”
“আমি কয়েক দিন ধরে চুলচেরা বিচার করেছি। আমি তোকে বলি শেষ পর্যন্ত এটা কী ধরনের সম্পর্ক, আর এই সম্পর্কটা রাখার কী কোনো মানে হয় যদিও তুই আমার ছেলের মা।”
মিন হুয়ে চমকে উঠলো, ওর মুখের সব রং উবে গেলো।
“এখন আমি অবশেষে বুঝেছি, আমি তোকে ঘেন্না করি। কারণ তুই আমার ছেলের জন্ম দিয়েছিস, আমি সব সময়ে তোকে পছন্দ করতে চেয়েছি ওর জন্য, কিন্তু এটা আমি কিছুতেই কুরতে পারবো না। আমি আর ভানও করতে চাই না। কদিন হলো আমার শরীর ভালো নেই, আমি সু ছনের সঙ্গে আরো সময় কাটাতে চাই। এর আগে ও তো শুধু তোর সঙ্গে থাকতো, এখন কিছু দিন ও শুধু আমার সঙ্গে থাকলে সেটা একদম সঙ্গত হবে।”
“আমাকে ছাড়া?”
“তোকে ছাড়া।”
খানিক চুপ করে থেকে,তারপরে বললো, “অবশ্যই তুই যে কোনো সময়ে আসতে পারিস, ওর সাথে দেখা করার জন্য। আমরা দেখা করার সময়ও স্থির করে নেবো।”
“শিন ছি, তুই জেনে রাখ যে কোথাও কোনো নথি নেই যাতে লেখা আছে যে তুই সু ছনের জনক। আমার অনুমোদন ছাড়া ওকে আমার থেকে নিয়ে নেওয়াটা বেআইনি।”
“এর থেকে আমার মনে পড়লো যে আমি সব সময়ে একটা পিতৃত্ব যাচাই-এর পরীক্ষা করাতে চেয়েছি সু ছনের সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্কটা নিশ্চিত করে জানার জন্য। আশা করি তুই রাজি হবি।”
“শিন ছি, তুই অনেক কিছু দাবি করছিস।”
“আমি জানি।”
মিন হুয়ের দিকে তাকিয়ে প্রত্যেকটা শব্দ কেটে কেটে বললো, “কিন্তু আমার আশা যে তুই রাজি হবি। তুই ঠিক বলেছিস। সু তিয়াঁকে ছেড়ে যাবার পরে, আমি সত্যিই এই পৃথিবীতে বেঁচে ছিলাম না। আমি এখানেই ছিলাম, আমার স্মৃতির মধ্যে, সব দিক দেওয়ালে ঘেরা। তুই আমার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস, হৃদস্পন্দন সব ছিনিয়ে নিয়েছিস। এবং এখন তুই আমাকে ফিরিয়ে দিতে চাইছিস আমার শ্বাসপ্রশ্বাস আর হৃদস্পন্দন।”
মিন হুয়ের গলাটা ব্যথা করছে, ওখানে কী যেনো পাকিয়ে উঠেছে। সমস্ত টক স্বাদ যেনো ওর চোখে ঝাঁপিয়ে পড়ছে, চোখের সামনের মানুষজন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। সমস্ত টক স্বাদ গিলে ফেলার যথাসাধ্য চেষ্টা করলো, একটু ক্ষণ ভাবলো, শেষে তিক্ততা নিয়েই ঘাড় নাড়লো, “ঠিক আছে। আমি তোকে সব ফিরিয়ে দেবো।”
শিন ছি চমকে উঠলো এক মূহুর্তের জন্য। ও তো ভাবেই নি যে মিন হুয়ে রাজি হবে।
“তুই অ্যাপার্টমেন্টটা ভাড়া করেছিস যাহোক, তাই তোকে হোটলে থাকতে হবে না। আমি চলে যাবো।" বললো মিন হুয়ে।
“তাহলে আমি তোর জন্য আরেকটা ভাড়া করে দেব?”
“দরকার নেই।”
হালকা চালে মাথা নেড়ে আরো বললো, “আশা করবো যে আমি যে জুতোর দোকানে কাজ করি, সেখানে তুই কখনো আসবি না। আমি শান্তিতে কাজ করতে চাই।”
“ঠিক আছে।" মাথা নাড়লো শিন ছি।
“আমি তোর সমস্ত যোগাযোগ মুছে দেবো আমার ফোন থেকে, উইচ্যাট, টেক্সট মেসেজ আর ফোন কন্ট্যাক্টও।”
শিন ছি একটু অবাক হলো, “কী হবে যদি তোকে আমার দরকার পড়ে তো?”
“তুই আমাকে জুতোর দোকানে ফোন করতে পারিস, আর মুখোমুখি দেখা করে নিতে পারিস যখন আমি বাচ্চার সঙ্গে দেখা করতে যাবো।”
“এতে অসুবিধে হবে না?”
“শিন ছি, তুই আর আমি - আমরা দুজনেই জীবনে মৃত্যুর মুখ দেখেছি অন্তত এক বার, তোকে রেখে ঢেকে কথা বলতে হবে না।”
মিন হুয়ে উঠে দাঁড়ালো, টাকার ব্যাগ থেকে পঞ্চাশ য়ুঁআ বার করে রাখলো টেবিলে, “যেহেতু তুই আমাকে ঘেন্না করিস, আমাদের যোগাযোগ করার দরকার নেই, শুধু বাচ্চার ভালো বাপ-মা হবার চেষ্টা করলেই হবে। আমি আজ রাতেই ছ্যুনতাং গার্ডেনের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বেরিয়ে যাবো।”
মিন হুয়ে কথা রেখে ছিলো। একটা ফোন করতেই ও জেনে গেলো যে মিংসেন কমিউনিটিতে যে অ্যাপার্টমেন্টটাতে ও থাকতো, সেটা খালিই পড়ে আছে। তাই একটা বাক্সে নিজের সব জামাকাপড় ভরে নিলো সেই রাতে, আর ছ্যুনতাং গার্ডেনের ব্লক এ ছেড়ে চলে গেলো।
সেই থেকে প্রতি সোমবার, বুধবার আর শুক্রবার রাতে ও বাচ্চার সঙ্গে দেখা করতে পারে। আর রবিবারের সারা দিনের বেলাটাতে। আর অন্য সময়ে দেখা করার ব্যবস্থা করা যাবে যদি ও হাতে সময় নিয়ে জানাতে পারে।
এই ব্যবস্থায় শিন ছির কোনো সমস্যা নেই। বরং যতোবার মিন হুয়ের হাতে ছন ছনকে দিয়েছে শিন ছি, প্রত্যেকবার যেনো আগের বারের চেয়েও বেশি বিনয়ী, বেশি নম্র আচরণ করেছে। দুজনেই কথোপকথন এড়িয়ে গেছে, কথা বললেও বাচ্চার ব্যাপারে ছাড়া অন্য কোনো ব্যাপারে কথা বলে নি।
কেমন চলছে এই সময়ে কাজের জায়গায়, জীবনের কোথাও কোনো অদলবদল ঘটেছে কিনা তাই নিয়ে দুজনের কেউই কোনো খোঁজ নেয় না। ওদের জীবনটা সবে সবে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়া দম্পতির মতো।
মিন হুয়ের সব থেকে বেশি দুঃখ হয়েছে যে ব্যাপারটাতে সেটা হলো এই যে সু ছন খুব চটপট এই বদলের সঙ্গে মানিয়ে নিলো। সু ছন প্রত্যেক দিন শিন ছির সঙ্গে থাকতে পেরে খুব খুশি, কখনোই মনে হয় না যে ওর খুব মন কেমন করেছে মিন হুয়ের জন্য।
রাতে যে “দুধে হাত রাখার’ অভ্যেস ছিলো, সেটা খুব তাড়াতাড়ি কেটে গেলো। দু সপ্তাহের মধ্যে একটু একটু করে সু ছন যেনো শিন ছির একটা জ্যান্ত ছবি হয়ে গেলো। ও যখন কথা বলে, তখন ওকে ওর বাবার মতো দেখায়, হাসলে কিংবা ভ্রূ কোঁচকালেও।
এমন কি কথা বলার সময়ে বেশি ইংরেজি শব্দ বলে। তবে শিন ছি যে খুব আদরে বাঁদর করেছে ছেলেকে তা নয়। ও ছেলেকে সাধারণ ঘরের কাজ করতে দেয় একটা আধটা।
মিন হুয়ে দেখে অবাক হয় যে শিন ছির শিক্ষায় ছেলেটা যেনো আরো বেশি বুঝদার হয়ে উঠছে দিনে দিনে।
***
এক মাসের ছুটি কেটে গেলো খুব তাড়াতাড়ি। ছুটির শেষ দিনে মিন হুয়ে বা’অ্যানে গেলো কাজ ছেড়ে দেবার পদ্ধতিটা সম্পূর্ণ করার জন্য। গিয়ে দেখলো বা’অ্যান আর শিয়াংহে বিল্ডিং-এ নেই, চলে গেছে চেনঝঁ বিল্ডিং-এ যেখানে গুয়ান ছাও-এর হেডকোয়ার্টার্স, যেখানে কয়েক বছর আগে মিন হুয়ে কাজ করতো।
এক মাস ধরে এক কোম্পানির লোকজনকে আরেকটাতে মেশানোর পরে, বা’অ্যানের কর্মীরা অকল্পনীয় অশান্তিতে পড়েছে।
প্রথমত, একশোরও বেশি কর্মীকে ছাঁটাই করে বা’অ্যানের কর্মীর সংখ্যা অর্দ্ধেক করে ফেলা হয়েছে। সমস্ত প্রশাসনিক কাজের কর্মীদের ছেঁটে ফেলা হয়েছে। তাদের মধ্যে কর্মীদের দেখাশোনা করার শীর্ষকর্তা মা শিনও আছে।
কেবল মাত্র ইয়াং বেই বেই রয়ে গেছে। ওর থাকার ইচ্ছে ছিলো না, কারণ রটেছে যে ও পারিবারিক যোগাযোগ ব্যবহার করে আছে।
দ্বিতীয়ত, বা’অ্যানের নানান প্রজেক্টের টিম ভেঙে ফেলে টিমের সদস্যদের গুয়ান ছাও-এর নানান রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের টিমের সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বা’অ্যানের একেকটা টিমের সদস্যদের কাজের জায়গার মধ্যে চেনঝঁ বিল্ডিং-এর বেশ কয়েকটা তলার ব্যবধান তৈরি হয়েছে, আবার কয়েকজন কর্মীকে তো অন্য বিল্ডিং-এ অন্য পার্কে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে কারুর সঙ্গে কারুর চট করে দেখা না হয়।
মিন হুয়ের কেবল চিন্তা হচ্ছে ওর নিজের টিমের মূল পাঁচ সদস্যকে নিয়ে। সমস্ত শক্তি দিয়ে, মস্ত কসরত করে সাও মু শেষ পর্যন্ত ওদেরকে একসাথে রাখতে পেরেছে যাতে ওরা জিএস১,০র পরবর্তী ভার্সান জিএস২.০-এর জন্য কাজ চালিয়ে যেতে পারে।
“সহজ নয়,” পরে বলেছে সাও মু, “দিঁ য়িফঁ চাই ছিলো জিএস প্রজেক্ট নিয়ে নিতে আর সেটা ওর হাতের পুতুলদের হাতে তুলে দিতে। কিন্তু তুমি যে সব নথি লিখে রেখে গেছো ব্যাখ্যা করে, সে সব পড়ে ওরা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারে নি। তাই আমিও ভান করলাম যেনো আমারও মাথাটা মোটা, যখন ওরা আমাকে প্রশ্ন করছিলো ওই নথিগুলো নিয়ে। আমি ওদেরকে বলেছি যে ও যদি তোমাকে বলতে পারে এসে সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে যাবার জন্য। দিঁ য়িফঁ তোমার থেকে সাহায্য নিতে চায় না। তাই জিএস প্রজেক্ট ছেড়ে দিয়েছে এখনকার মতো।”
“যা হোক ওরা এখনো এক সাথেই আছে।” মিন হুয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, “আমি এখানে এসেছি কাজ ছেড়ে দেবার ব্যাপারটা মেটাতে।”
“হে হাই শিয়াং আমাকে বলেছে তোমাকে জানিয়ে দিতে যে তোমাকে এই ব্যাপারে সরাসরি কথা বলতে হবে চেং ছিরাং-এর সঙ্গে আর চেং ছিরাং যেনো অবশ্যই সম্মতি দেন তোমার কাজ ছাড়ার ব্যাপারে।”
মিন হুয়ে পা ঠুকলো, "কেনো?”
“আমার মনে হয় যে ও এখনো তোমাকে রেখে দিতে চায়।”
মিন হুয়ে উপহাস করলো, “আমার ভয় যে ওর ইচ্ছে পূরণ হবে না।”
বলেই ও ঘুরে দাঁড়িয়ে এলিভেটরের দিকে গেলো।
সকাল দশটা বাজে। বাড়িটা ভর্তি লোকজন থিকথিক করছে, কেউ আসছে, কেউ যাচ্ছে।
মিন হুয়ের এখনো মনে আছে যখন চেনঝঁ বিল্ডিং-এ প্রথমবার এসে ছিলো কাজে যোগ দিতে। ঐ দিন ও একটা সুন্দর জামা পরে ছিলো সচেতনভাবেই। ঘাড়ে চুলকানির কারণে মাথার ওপরে উঁচু করে একটা খোঁপা বেঁধে ছিলো।
একতলার লবিতে পা রেখে ওর নজর গেলো মাথার ওপরে ঝুলন্ত একটা বিশাল চৌকো কাচের ঝাড়বাতির দিকে। ঝাড়বাতিটা লম্বায় চওড়ায় দশ মিটার বা তেত্রিশ ফুট ছুঁই ছুঁই, আর ঝুলছে দু মিটার বা সাড়ে ছ ফুট উঁচু থেকে। হাজার হাজার স্ফটিকে ফুটে উঠেছে ঢেউয়ের অবয়ব, দুলছে বাতাসে আর আলোতে। অভিঘাতের আওয়াজটাও আছড়ে পড়া ঢেউয়ে যে জল ছেটানোর আওয়াজ হয়, ঠিক সেই রকম, একটা ঝকঝকে ছটা ঠিকরে বেরোচ্ছে।
আজও জমকালো ঝাড়বাতিটা আছে একই জায়গায় এক ভাবে, কিন্তু ঝাড়পোঁছ করা মুস্কিল বলে আগের মতো উজ্জ্বল আর নেই, এখানে সেখানে মাকড়সার জালও জমেছে, ধূসর আর ধ্বংসের ছাপ রেখেছে। সে দিনের বিশাল আর খালি বাড়িটা এখন ভাগ হয়ে গেছে ঘেঁষাঘেঁষি খুপরির জালে যার ভেতরে ঠাসাঠাসি কর্মচারী।
মিন হুয়ে বাড়িটার বিবরণ ভাবতে গিয়ে শব্দ হারালো। কী বলবে, বর্ধনশীল নাকি বিশৃঙ্খল?
যাই হোক জনপ্রিয়তা এখনো আছে।
প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বৈশিষ্ট্যই এই যে তাতে পুরুষের সংখ্যা বেশি। এলিভেটর অবধি হাঁটতে হাঁটতে একটাও মেয়ে মিন হুয়ের চোখে পড়লো না, কিন্তু পিছন থেকে একটা সিটির আওয়াজ শুনতে পেলো।
ঘুরে দাঁড়াতেই দেখলো এক ঝাঁক অল্প বয়সী ছেলে কথা বলছে, হাসছে, তাদের কয়েকজন মিন হুয়েকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখ ছিলো হাসতে হাসতে, ওরা হয়তো জানেও না যে সিটিটা কাকে মেরেছে।
হতাশায় মাথা ঘুরিয়ে নিয়ে মিন হুয়ে সোজা উঠে গেলো এলিভেটরে।
এলিভেটরে থেকে বেরিয়ে, অবচেতনেই ডান দিকে ঘুরল। আর শংসাই-এর অফিসের একজন সহায়ক ওকে অভ্যর্থনা করলো।
“আমার সঙ্গে আসুন চেং জঁ আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন।”
মিন হুয়ে সহায়কটির পিছু পিছু এগিয়ে গেলো, একটা দরজা খুলে গেলো, মিন হুয়ে ভেতরে গেলো, হঠাৎ করে হতবুদ্ধি হয়ে গেলো যেনো।
একটা কাচের দেওয়ালের মুখোমুখি ঝলসে আছে সূর্য, আর উল্টোদিকে দেখলো নিজের গাঢ় ছায়া, পড়ে আছে একটা তেল রঙে আঁকা ধূসর ছবিতে।
অবশ্যই ওর মনে আছে অফিসটা আর কী ঘটে ছিলো ওখানে।
তখন চেং ছিরাং ছিলো চিফ টেকনোলজি অফিসার। এখন যখন ও চিফ এক্সেকিইটিভ অফিসার হয়ে গেছে, তাহলে ওর ঝেং ল্যান, মানে গুয়ান ছাও-এর প্রতিষ্ঠাতা যিনি, তাঁর অফিসে উঠে যাওয়া উচিৎ নয় কী? ও কেনো এখনো এখানে কাজ করছে?
মিন হুয়েকে দেখে বিনয়ী ভঙ্গীতে উঠে দাঁড়ালো চেং ছিরাং, এগিয়ে এলো মিন হুয়ের কাছে, হালকা চালে বাড়িয়ে দিলো হাত, “মিন হুয়ে, তুমি কাজে যোগ দিচ্ছো জানাবার জন্য এখানে আসাতে আমি খুবই খুশি হয়েছি, অবশেষে আমরা আবার সহকর্মী।”
মিন হুয়ে করমর্দন করলো না চেং ছিরাং-এর, খুব কেজো স্বরে বললো, “আমি এখানে কাজে যোগ দিচ্ছি এমনটা জানাতে আসি নি, আমি এসেছি এইটা জানাতে যে আমি কাজ ছেড়ে দিচ্ছি। আমি এক মাস আগেই আমার রেসিগনেসন জমা করে দিয়েছি, আর কাজও সব হাতবদল হয়ে গেছে।”
“সত্যি?” চেং ছিরাং ভান করলো যেনো মহা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে।
“হে হাই শিয়াং বলেন নি আপনাকে?”
“না।”
“...”
“মিন হুয়ে, এই অফিসটা তোমার মনে পড়ে?” চুপ করে চেং ছিরাং দেখতে লাগলো মিন হুয়েকে।
মিন হুয়ে দাঁত কিড়িমিড়িয়ে উত্তর দিলো, “মনে পড়ে।”
“এটা সিটিও-র অফিস। যদি তুমি থাকো, তবে এই অফিসটা তোমার হয়ে যাবে।”
চেং ছিরাং পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলো সোফার কাছে, একধারে বসে পড়লো, “কিছু খাবে কী? অল্প কিছু। দু কাপ কফি বলি?”
সেক্রেটারি শুনে ঘাড় নেড়ে চলে গেলো।
“শও ছিয়ান বিনচেং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে পাশ করেছে। আমি ওকে কাজে নিয়েছি গত বছরের আগের বছর। খুবই চালাক চতুর, পরিস্থিতি বোঝেও ভালো।”
বলে চললো চেং ছিরাং, “ইংরেজি আর ফরাসী খুব ভালো জানে।”
“তার সঙ্গে আমার কী সম্পর্ক?”
“তুমি এখানে থাকলে শও ছিয়ান তোমার সহায়কের কাজ করবে।”
“উৎসাহ নেই আমার।”
“কি যে বলো, মিন হুয়ে, এই জায়গাটা তোমার অপছন্দ হতেই পারে, কিন্তু তুমি নিজে হাতে জিএস১.০ তৈরি করেছো, তুমি প্রত্যেক বছরে একটা করে নতুন ভার্সানের কথা ভাবছো, তাই তো? কেনো তুমি প্রজেক্ট ছেড়ে দিতে চাইছো?”
“আমি চাই না।”
“সততার খাতিরে বলছি।”
“আমার জন্য সব সময়ে এক নম্বর কাজ হলো আপনাকে ঘেন্না করা।”
“তোমার টিমের যে পাঁচজন তোমার কথায় কাজ করতো তাদের জন্য দুঃখ করতে ইচ্ছে হচ্ছে? কী যেনো নাম সব? তাং শিন নিং, ঝ্যাং শও হান, সাই দঁ ইয়াঁ, জিয়াং হেঁ, ওয়াং ছিং য়ুআঁ - তাই তো?”
নামগুলো সব হুবহু মনে আছে চেং ছিরাং-এর।
“আমি চেষ্টা করবো ওদের ওপর যারপরনাই অত্যাচার করার।”
মৃদু হেসে বললো, “ঝ্যাং শও হানকে তাড়িয়ে দেবো। ওর অবস্থা খুবই কঠিন, টাকার খুব দরকার এখন। ভাইটার বড্ডো অসুখ, কিন্তু গুয়ান ছাও-এর মেডিক্যাল ইন্স্যুরেন্স খুব ভালো। যদি কোনো মেডিক্যাল ইন্স্যুরেন্স না থাকে তাহলে ও নিশ্চয়ই আতঙ্কে কাটাবে, তাই না?
“...”
“সাই দঁ ইয়াঁর বউ অন্তঃস্বত্ত্বা। শুনেছি ওদের বিয়েটা নিকট সম্পর্কে ভাই-বোনের। বউ-এর শরীর ভালো না, বয়সও অনেক। যদি ওর কাঁধে একটা বোঝা চাপাই তাহলে ও নিশ্চয়ই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়বে।”
“...”
“তাং শিন নিং একটা অল্প বয়সী মেয়ে। ওকে শাস্তি দেবার তো অনেক রাস্তা আছে -”
“যথেষ্ট, আপনি নির্লজ্জ আর জঘন্য।” গর্জে উঠলো মিন হুয়ে।
“এখানে কাজ করো। না হলে এগুলো শুধু কথার কথাই থাকবে না।”
মিন হুয়ের সামনে এসে দাঁড়ালো, বাড়িয়ে দিলো হাত, “আমি জোর করছি না।”
ঘেন্না চোখে নিয়ে মিন হুয়ে তাকালো ওর দিকে, অনেক ক্ষণ কিছু বললো না।
“আমাদের মিন হুয়ে, বিস্ময় প্রতিভা মিন হুয়ে - কবে থেকে তুমি এতো অসুখী হয়ে উঠলে?”
উত্যক্ত করতে থাকলো চেং ছিরাং, “এতো দ্বিধা, যে সিটিও পদের কথা বলে ছিলাম, সেটা গেলো।”
“...”
“আর অ্যান্ড ডি ঝংজিয়ে, তাও গেলো।”
“...”
“তুমি কী টিম লিডারও হতে চাও না?”
মিন হুয়ে দাঁত কিড়মিড় করে বললো, “আমি থাকবো।”
“ঠিক আছে।”
“আমার টিমে সব্বাই থাকবে।”
“ঠিক আছে।”
“আমার কাজ দেখাশোনা করবে সাও মু। আর কেউ নয়।”
“দ্যুইবুচি, তোমার কাজ দেখাশোনা করবে দিঁ য়িফঁ।”
“তাহলে, ছিং, একটা পদ তৈরি করুন।”
চেং ছিরাং খানিক ভেবে বললো, “ঠিক আছে।”
মিন হুয়ে বেরিয়ে এলো একবারও পিছন ফিরে তাকালো না।
~~~~~~~~~~~~
সম্পূর্ণ বই বিনামূল্যে : https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96
Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-56.html
Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-58.html
No comments:
Post a Comment