৬৪. রুপোলি মাছ
আরো এক সপ্তাহ পরে, ধীরে ধীরে কমে গেলো খরিদ্দারদের থেকে ফোন কল আসা তংগুয়াং প্ল্যাটফর্ম নিয়ে অভিযোগ ইত্যাদি। মিন হুয়ে সমস্ত খরিদ্দারের অ্যাপ্লিকেশন সারিয়ে ফেললো। শেষ কাজটার পরে একটা ট্রেনে চড়ে বিনচেং-এ ফিরলো মিন হুয়ে।
ততো দিনে বিনচং-এ হেমন্ত শেষ হয়ে এসেছে প্রায়।
মিন হুয়ে কাজে এতো ব্যস্ত ছিলো যে শিন ছি একাই বাচ্চার দেখাশোনা করছিলো।
একটা প্রায় ঘোরের মধ্যে মিন হুয়ের মনে হচ্ছিলো যে ও জীবনের সেই সময়টাতে ফিরে গেছে আবার যখন ও একদম একলা ছিলো। যদিও কাজের জন্য এতো ঘুরে বেড়ানোটা খুব পরিশ্রমের, কিন্তু এভাবে দিঁ য়িফঁ আর চেং ছিরাং-কে এড়াতে পারাটা তিক্ততার মধ্যেও খুব আনন্দ এনে দিলো।
হেমন্তের হাওয়া বইছে ধীরে ধীরে, সঙ্গে নিয়ে আসছে অনিবার্য শৈত্য। স্টেশনের বাইরে পা রেখেই মিন হুয়ে টের পেলো যে ওর গায়ে যথেষ্ট গরম জামা নেই। তাই তাড়াহুড়ো করে পিঠের ব্যাগ থেকে একটা উড়নি বার করে জড়িয়ে নিলো গলায়।
সন্ধে সাতটায় সব আলো জ্বলে উঠতে বিনচেং বরাবরের মতো প্রাণোচ্ছল হয়ে উঠলো।
চেনঝঁ বিল্ডিং-এর পাশ দিয়ে যাবার সময় মিন হুয়ের মনে হলো যে কয়েকটা কাগজপত্র নেবে অফিস থেকে। তাই ট্যাক্সি থামিয়ে নেমে পড়লো।
চলতি মাসে আর অ্যান্ড ডি ডিপার্টমেন্টের তিনটে জরুরী ডেডলাইন আছে। তবে মিন হুয়ের টিম ঐ ডেডলাইনের দলে নেই।
দিঁ য়িফঁ জানিয়ে ছিলো যে কাজগুলো তোলার জন্য লোক কম পড়েছে। তাই ওদেরকে সাহায্য করার জন্য মিন হুয়ে ডেকে ছিলো ঝ্যাং শও হান আর তাং শিন নিংকে।
বিল্ডিং-এ ঢোকার আগেই মিন হুয়ে ওপরের দিকে মুখ তুলে দেখলো যে দশতলায় যেখানে আর অ্যান্ড ডি ডিপার্টমেন্ট বসে সে জায়গাটা আলোয় ঝলমল করছে।
“মিন হুয়ে জিয়ে, আপনি ফিরলেন বুঝি?”
ঝ্যাং শও হানের কিউবিক্ল এলিভেটরের সব চেয়ে কাছে। যেই ও মিন হুয়েকে দেখলো অমনি ও চট করে উঠে দাঁড়িয়ে মিন হুয়ের সাথে কুশল বিনিময় করলো।
“এই ট্রেন থেকে নামলাম।”
ওর টেবিলে তিনটে বিয়ারের বোতল, যার দুটো এর মধ্যেই খালি হয়ে গেছে, ব্যাপার দেখে মিন হুয়ের ভ্রূ কুঁচকে উঠলো, জিজ্ঞেস না করে পারলো না, “তুমি মদ খাচ্ছো?”
মিন হুয়ের টিমের পাঁচ সদস্যের মধ্যে ঝ্যাং শও হানের মদ খেয়ে হজম করার ক্ষমতা সব চেয়ে কম। ও আর সোজা দাঁড়াতেও পারছে না, “গত পাঁচদিন ধর প্রত্যেক দিন আমি ওভারটাইম করছি। প্রত্যক দিন রাত কাটিয়ে ভোর একটা বা দুটোয় বাড়ি পৌঁছোচ্ছি। দিঁ জঁ বলেছেন যে সব্বার কঠিন পরিশ্রমের তো আর আলাদা পুরস্কার হয় না, তাই খাবার আর মদ পাওয়া যাবে যতো চাই ততো।”
মিন হুয়ে মাথা তুলে দেখলো। যেমন ভেবে ছিলো তেমন, সবটাই প্রায় ভর্তি, প্রত্যেক ডেস্কেই অনেকগুলো করে মদের বোতল। সবাই মদ খেতে খেতেই কোড লিখছে। কেউ মাথা ঝাড়া দিচ্ছে, কেউ আপনমনে বিড়বিড় করে বকছে, প্রত্যেকে ডুবে আছে আপন আপন জগতে, আর কখনো জোরে, কখনো দ্রুত, কখনো ধীরে, কখনো আস্তে ভেসে আসছে কীবোর্ডে আঙুল ঠোকার শব্দ।
কয়েকটা মেয়ে প্রোগ্রামারও আছে। ঠাসাঠাসি করে বসানো ছেলেদের মধ্যে। ওরা কেউ মদ খাইনি দেখা যাচ্ছে। ওরা সবাই স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আছে মন দিয়ে।
“এটা খারাপ না? তুমি কী ভুলে গেছো যে গত মাসেই সেলস্ ডিপার্টমেন্টের শও দং দুম করে মারা গেছে হার্ট অ্যাটাকে, বেশি মদ খাওয়ার জন্যই। ভুলে গেছো?”
মিন হুয়ে বোঝানোর চেষ্টা করলো। ও শুনে ছিলো যে রাতের শিফ্টে যারা কাজ করে তাদের মধ্যে ডেস্কে বসেই মদ খাওয়ার চল আছে। কিন্তু ও আশা করে নিযে ব্যাপারটা এরকম মেলার মতো হবে।
“কিসের গন্ডগোল?”
প্রশ্নটা ভেসে এলো একপাশ থেকে। মাথা ঘুরিয়ে মিন হুয়ে দেখলো দিঁ য়িফঁকে। একটা গাঢ় ধূসর রঙের স্যুট পরে আছে। গলার থেকে ঝুলে আছে গিঁট খোলা টাই, “আমাদের ডিপার্টমেন্টের কাজটা সৃজনশীল কাজ। মদ খেয়ে আর কী প্রেরণা পাবে তুমি? যদি তুমি প্রেরণা নাই পেলে তবে অবসাদ কাটানো ভালো - এটা আর অ্যান্ড ডিতে কাজ করার একচেটে সুবিধে।”
কথা বলতে বলতে এগিয় এলো মিন হুয়ের দিকে। মিন হিয়ে দু পা পিছিয়ে গেলো দিঁ য়িফঁ-এর মুখ থেকে মদের গন্ধ বেরোচ্ছে বলে।
“এখানে শুধু ছেলেরা কাজ করছে না। মেয়েরাও কাজ করছে।”
মিন হুয়ে আন্তরিকতা দিয়েই বললো, “তুমি সকলকে যতো খুশি ততো মদ খেতে বলেছো, কী হবে যদি কেউ মাতাল হয়ে গিয়ে ঝামেলা পাকায়?”
“হতেই পারে না!”
“ঠিক আছে তোমরা মদ খাও। কিন্তু সব কটা মেয়ে এখনই কাজ বন্ধ করে এখান থেকে চলে যাবে।" জোর দিয়ে বললো মিন হুয়ে, “আমরা লুকিয়ে থাকতে পারি, যদি আমাদের ওস্কানো না হয়। নেতৃস্থানীয় কর্তৃ হিসেবে তোমার খেয়াল রাখা উচিৎ এখানে যে মেয়েরা কাজ করছে তারা নিরাপদ কিনা।”
আর অ্যান্ড ডিতে যে অনেক মেয়ে প্রোগ্রামার কাজ করে তেমন নয়। সব মিলিয়ে কুড়ি জনও হবে না। আজকের রাতে প্রজেক্টে পাঁচ থেকে ছ জন আছে।
মিন হুয়ে চোখের কোণ দিয়ে দেখে নিলো মেয়েগুলোকে। ওরা চলে যায় নি। বাকি সকলের সঙ্গে রয়ে গেছে, ওভারটাইম করছে।
“তুমি নিজেকে কী মনে করো? এখনো আমাকে আদেশ করছো?”
দিঁ য়িফঁ নিজের নাকের দিকে তাক করে বললো, “আমি ল্বব্যাঁ, আমার কথাই শেষ কথা। কাজ এখনো শেষ হয় নি। আমি সায় দি নি, আর কেউ যেতেও চায় না। তোমার জন্যও একই কথা খাটে, ফিরে এসো তুমি কাজে, তোমার জন্য অনেক কিছু অপেক্ষা করে আছে। তংগুয়াং-এর খরিদ্দারদের ঝামেলা মিটে গেছে? জিএস২.০-এর অবস্থা কী? আমার অফিসে এসো, আমি বিশদে রিপোর্ট চাই।”
মিন হুয়ে উপহাস করলো নিজের স্যুটকেস দেখিয়ে, “কাজ কতোদূর এগিয়েছে, সে ব্যাপারে আমি তো রোজ রিপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি ইমেল করে। ইমেল খুললেই রিপোর্ট পেয়ে যাবে। যে কাজটা দিয়ে ছিলে, সেটা শেষ করে ফেলেছি। আমি সবে ট্রেন থেলে নেমেছি, আমি খুব ক্লান্ত। আমার বাড়ি যাওয়া দরকার, বিশ্রামের দরকার।”
কথা শেষ করে মিন হুয়ে হাঁটা দিলো নিজের অফিসের দিকে। ড্রয়ার থেকে কাগজগুলো নিলো আর ঠুসে দিলো ব্যাগে। মুখ তুলে দেখলো যেই ওর চোখে পড়লো যে দিঁ য়িফঁ ওর পিছন পিছন এসেছে নিঃশব্দে। ওর পাশে দাঁড়িয়ে একটা আধখানা হাসি দিয়ে বললো, “আমার ইমেল পড়ার সময় নেই। আমি তোমার মুখ থেকে রিপোর্ট শুনতে চাই। তুমি একটা মেয়েছেলে, নরম করে কথা বলতে পারো না? খ্যাঁকখ্যাঁক করতে শুরু কোরো না যেনো, সবাই সহকর্মী, কেউ শত্রু নয়, কেউ তোমার ক্ষতি করতে চায় না।”
মিন হুয়ে হতবাক হয়ে দেখতে লাগলো।
“মেয়েদের খুব কাজ করার দরকার নেই। প্রোমোশন চাইলে তোমার লিডারকে খুশি করলেই হবে -”
মিন হুয়ে কোনো তর্ক করছে না দেখে, দিঁ য়িফঁ হাত রাখলো মিন হুয়ের কাঁধে, চাপড় মারলো যেনো মিন হুয়ের জন্য ওর প্রচুর সমবেদনা। মিন হুয়ের শরীর স্থির দাঁড়িয়ে আছে দেখে, দিঁ য়িফঁ খাবলে ধরতে লাগলো মিন হুয়ের হাত, আর মিন হুয়ে হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে একটা ঝটকা দিলো!
“ক্র্যাক!”
দিঁ য়িফঁ-এর গালে লাগালো এক চড়, তক্ষুণি দিঁ য়িফঁ-এর মুখের রং বদলে গেলো। ও ফেটে পড়তে যাচ্ছিলো, কিন্তু দরজার বাইরে থেকে একটা চিৎকার ভেসে এলো -
“বাঁচাও! এখানে নোংরা লোক আছে।”
শুনেই মিন হুয়ে দৌড়ে দরজায় গেলো। ওর দিকে একটা কেউ দৌড়ে এলো বাথরুমের দিক থেকে, চোখে মুখে তার আতঙ্কের ছাপ, আর পালালো এলিভেটরের দিকে -
মিন হুয়ে চেপে ধরলো তাকে আর বলে উঠলো, “শিন নিং?”
“... একটা লোক, মেঝেতে শুয়ে আছে আর উঁকি দিচ্ছে!”
একদল লোক যারা কোড লেখায় ব্যস্ত ছিলো, তারা সবাই মুখ তুলে তাকালো একসাথে, দুটো ছেলে তখনই উঠে এলো আর বললো, “ভয় পেয়ো না। আমরা ওকে এক্ষুণি ধরে আনছি, পালাতে পারবে না ও!”
মিন হুয়ে জড়িয়ে ধরলো তাং শিন নিং-কে। ওর ওপর নজর রাখলো। নরম সুরে ওকে স্বান্তনা দিতে লাগলো। মোবাইল ফোন বার করে বললো, “আমি পুলিশ ডাকছি।”
“দাঁড়াও!”
দিঁ য়িফঁ চটপট বাধা দিলো মিন হুয়েকে, “আগে ব্যাপারটা বুঝে দেখা দরকার।”
অনেকগুলো প্রজেক্ট বাকি পড়ে আছে দেখে ও ডিরেক্টর হিসেবে ব্যস্তই ছিলো। এই সময়ে পুলিশ এলে কাজ কিছুতেই শেষ করা যাবে না।
কিছুক্ষণ পরে দুটো ছেলে বাথরুম থেকে টানতে টানতে একটা মাতাল লোককে নিয়ে এলো। মিন হুয়ে দেখলো যে লোকটা আর কেউ না ওয়াং তং য়ুআঁ, ওর চার বছর আগেকার শত্রু। মিন হুয়ে বুঝে উঠতে পারছিলো না যে ও ইচ্ছে করে মাতাল হবার ভান করছিলো নাকি ও সত্যিই মাতাল হয়ে গিয়ে ছিলো। ও মেঝেতে শুয়ে ছিলো মাতাল হয়েই ভুল বকে চলে ছিলো আর মদ খেয়ে চলে ছিলো।
গুয়ান ছাও থেকে মিন হুয়েকে তাড়িয়ে দেবার পরে চেং ছিরাং ব্ল্যাক ডট প্রজেক্টের কর্ণাধার করে ফিরিয়ে এনে ছিলো ওয়াং তং য়ুআঁকে। ওয়াং তং য়ুআঁর বয়স পঁয়ত্রিশ আর এখনো অবিবাহিত। বলা হয় যে ওর স্বভাব একটুও বদলায় নি, সমস্ত মহিলা সহকর্মীদের প্রতি ওর ছোঁক ছোঁক করা অভ্যেস, বিশেষ করে যারা কাজের জায়গায় নতুন, সবে কাজে যোগ দিয়েছে, ইনটার্ন। এতো বছর পরেও, কারুর সঙ্গে ওর বনিবনা হয় নি।
প্রথম যেদিন তাং শিন নিং কাজে এসে ছিলো, সেদিন ওর পিছু নিয়ে ছিলো ওয়াং তং য়ুআঁ। আর নতুন করে প্রেম জানাতে শুরু করে। নরম মেজাজের তাং শিন নিং-এরও অসহ্য লাগতে শুরু করে, ওর মুখের ওপরে আপত্তি জানানো কঠিন লাগে, তাই ও বাধ্য হয়ে ওয়াং তং য়ুআঁর সাথে বার দুয়েক খেতে গেছে। ব্যাপারটা ভালো, তাই ওয়াং তং য়ুআঁ তক্ষুণি মোমেন্টস্-এ ছবি পোস্ট করে দেয়। তাং শিন নিং নাকি ওর বান্ধবী এমন ইঙ্গিত দিতে কিছুই বাকি রাখে না।
এটা জানা মাত্র মিন হুয়ে খুব বিরক্ত হয়ে ছিলো। তাং শিন নিংকে ডেকে সাবধান করে দিয়ে ছিলো। অমনি তাং শিন নিং সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ওয়াং তং য়ুআঁর সাথে, এমন কি এইচ আরের কাছেও গিয়ে ছিলো ওয়াং তং য়ুআঁর নামে নালিশ করতে, তাতে আবার ওয়াং তং য়ুআঁ খুব বিরক্ত হয়।
ঝ্যাং শও হান এক ঘুঁষি মারলো ওয়াং তং য়ুআঁর মুখে। অনেকগুলো ছেলে তখনই দৌড়ে গেলো ওকে মারতে। ছোটো কাজের জায়গাটা মূহুর্তে একটা মারপিটের আখড়া হয়ে উঠলো যেনো, দিঁ য়িফঁ বার বার মারপিট থামাতে গেলো, কিন্তু ওর কথা কেউ শুনলোই না।
ওয়াং তং য়ুআঁ নিজেও সহকর্মীদের চক্ষুশূল। অধস্তনদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। ভীষণ প্রতিশোধ নেয় ওর ইচ্ছে পূরণ না করলেই। কয়েকটা ছেলে তো ওকে মারলো শুধু নিজেদের গায়ের জ্বালা মেটাতে। ওয়াং তং য়ুআঁর মুখটা এতো জনের মার খেয়ে রক্তে ভেসে যাচ্ছে দেখে সিকিউরিটি গার্ড দৌড়ে এসে সকলকে ঠেলে সরিয়ে দিলো।
হয়তো নেশা ছুটে গিয়ে ছিলো মারের চোটে, তাই ওয়াং তং য়ুআঁ অভিযোগ করতে লাগলো, “আমি কিছুই করি নি! আমি ভুল জায়গায় চলে গিয়ে ছিলাম, মদের ঘোরে, বেশি মদ খেয়ে ফেলে ছিলাম!”
“যতো বাজে কথা! আমি যখন কিউবিক্ল-এ ছিলাম আমি বাইরে নড়াচড়ার শব্দ শুনতে পাই, নিচু হয়ে দেখার চেষ্টা করি আর দেখতে পাই যে ও মেঝেতে শুয়ে প্রস্রাব করছে আর মাথাটা তার মধ্যেই কিউবিক্ল-এর মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমি এতো ভয় পেয়েছি যে আমার আত্মা উড়ে গেছে! নির্লজ্জ চোর!”
ঝ্যাং শও হান দৌড়ে এলো রাগে আগুন হয়ে। ও আবার মারতে চাই ছিলো ওয়াং তং য়ুআঁকে। কিন্তু দিঁ য়িফঁ ওকে চেপে ধরে রাখলো, “বাদ দাও, ও বেশি মদ খেয়ে ফেলেছে, এই আর কি। তাং শিন নিং তুমি ঘাবড়ে গেছো। তুমি কাজ বন্ধ করে চলে যাও শিগগির, ফিরে যাও, ভালো করে বিশ্রাম নাও। কাল শুক্রবার, আমি তোমাকে একটা ছুটি দিলাম।”
এটা শুনে মিন হুয়ে আবার রেগে গেলো, “দিঁ য়িফঁ, এ ব্যাপারটা এতো সহজে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। ওয়াং তং য়ুআঁ একটা মেয়ের সম্ভ্রম কেড়ে নিতে গিয়ে ছিলো।”
“কিছুতেই না।”
দিঁ য়িফঁ চোখ রাঙালো মিন হুয়েকে, “তুমি দেখতে পাচ্ছো না? ও আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না, আঙুলের একটা ছোঁয়া দিলেই ও উল্টে পড়ে যাবে, ওর কি আর গায়ের জোর আছে যে অন্য কাউকে কিছু করবে ও? তবে লাইন পেরোনোও ঠিক না! তুমি যদি অনেক মদ খেয়ে থাকো আর ভুল জায়গায় চলে যাও নেশার ঘোরে, তাহলে ঠিকই আছে! আমি ওকে বকাঝকা করবো, শিক্ষা দেবো। না হয় তোমরা দুজনে চলে যাও এখন, তুমি সবে ট্রেন থেকে নেমেছো, তোমার বিশ্রামের দরকার, তোমরা দুজনেই যাও!”
দিঁ য়িফঁ-এর লক্ষ্য একটাই, সকলকে শান্ত করা আর সবাই যেমন কাজ কর ছিলো তেমনই যেনো কাজ চালিয়ে যায়।
“আমি এখানে যতো মেয়ে আছে সবাইকে বলবো আমার সঙ্গে নিজের নিজের বাড়ি চলে যেতে।” মিন হুয়ে শান্ত চোখে তাকালো দিঁ য়িফঁ-এর দিকে, “সবাই প্রচুর মদ খেয়েছে। কোনো ভরসা নেই যে কোনো দূর্ঘটনা আবার ঘটবে না আজ রাতে।”
“আজকে রাতের মধ্যে অনেকগুলো প্রজেক্ট ডিবাগ করতে হবে। সবাই মূলো আর গর্ত, মানে সব্বার নিজের নিজের কাজ আছে। কেউ যেতে পারবে না।”
“তাহলে আমিও যাবো না। এখানেই থাকবো আর পুলিশ ডাকবো। যখন পুলিশ আসবে তখন তদন্তে সহযোগিতা কোরো।" বললো মিন হুয়ে।
“পুলিশ আসলে হবেটা কী?” ঘড়ি দেখলো দিঁ য়িফঁ রাগ দেখিয়ে, “তাং শিন নিং কী প্রমাণটা দিতে পারবে?”
“কোনো প্রমাণ নেই। পুলিশ যখন আসবে তখন তদন্ত করবে, প্রমাণ সংগ্রহ করবে। এ ব্যাপারে জানতে পারে এমন সব লোকেদের একে একে খুঁজে খুঁজে বার করে প্রশ্ন করবে একে একে।”
মিন হুয়ে নিজের কোমরের ওপর হাত রেখে সোজা তাকিয়ে রইলো। বললো, “যাই হোক আজকের পরিশ্রম গুণতিতে আসবে না। কিছুতেই ডেডলাইনের আগে কাজ শেষ করে দেওয়া যাবে না।”
দিঁ য়িফঁ দাঁত কিড়মিড় করতে লাগলো, কিন্তু কিছু বললো না। মনে মনে হিসেব কষতে লাগলো, শেষে গ ঝিজিয়াঁকে বললো, “মহিলা সহযোদ্ধারা সবাই এখন কাজ বন্ধ রেখে চলে যেতে পারেন।”
****
তাং শিন নিং-কে ওর নিজের বাসায় পৌঁছে দিয়ে মিন হুয়ে ফিরে গেলো নিজের অ্যাপার্টমেন্টে। মালপত্র রেখে দিয়ে, চটপট স্নান করে নিতে।
সু ছনের সাথে দেখা করতে যাবে বলে যেই জামা কাপড় বদলাতে গেলো, দেখতে পেলো যে শিন ছির বার দুয়েক ফোন করে ছিলো ওকে। আজকাল বার বার বেজিং-এ যাতায়াত করছে ও।
মিন হুয়ে জানতো যে ও নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছে। ওকে আর বিরক্ত করতে চায় নি। শেষ কাজের জায়গা ছেড়ে বেরোনোর আগে মিন হুয়ে ওকে শুধু বলে ছিলো যে সপ্তাহান্তে মিন হুয়ে বিনচেং-এ ফিরবে, তবে নির্দিষ্ট সময় কিছুই জানায় নি।
ও চটপট শিন ছির ফোনের জবাবে ফোন করলো, “শিন ছি, তুই কী আমাকে খুঁজছিস?”
“তুই কোথায়?”
ফোনের অন্য প্রান্তে শিন ছির স্বর কেমন নিষ্প্রাণ শোনালো, যেনো খুব মন খারাপ।
“আমি ফিরেছি, সবে বাড়িতে ঢুকেছি।”
“তুই কী আমার অ্যাপার্টমেন্টে আসতে পারবি? তোর সাথে কিছু কথা ছিলো।" জানতে চাইলো শিন ছি।
“ব্যাপারটা কী এমন যে ফোনে বলা যাবে না?” - মনে মনে ভাবলো মিন হুয়ে। ওর প্রথম প্রতিক্রিয়া হলো, “ছন ছন কোথায়?”
“ও ভালোই আছে। ঘুমিয়ে পড়েছে।”
শিন ছির গলার স্বর এর আগে কখনো এতো গম্ভীর শোনায় নি। মিন হুয়ের আবছা অনুভূতি হলো যেনো ভয়ানক খারাপ কিছু একটা হতে চলেছে, “কী হয়েছে?”
ফোনের অন্য পাড়ে শিন ছি কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো, বললো, “আমরা হয়তো সু তিয়াঁকে খুঁজে পেয়েছি।”
“তুই শিগগির এখানে আয়।”
ফোনটা রেখেই মিন হুয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো দরজা দিয়ে, জুতো বদলানোর কথাটা ওর মনেও এলো না।
ছ্যুনতাং গার্ডেন মিংসেন কমিউনিটির কাছেই। বাড়ির থেকে দৌড়ে বেরিয়ে মিন হুয়ে রাস্তা পেরোলো, একটা চড়াই ভাঙলো, শিন ছির অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে গেলো, দরজার ঘন্টি বাজালো - দশ মিনিটও লাগলো না।
দরজা খুললো দেঁ চেন।
বসার ঘরে পা ফেলে মিন হুয়ে দেখতে পেলো যে চেন জিয়া জুনও ওখানে আছে, সোফায় বসে, হাঁটুজোড়া জড়িয়ে ধরে।
মধ্যিখানের কার্পেটে শিন ছি পায়চারি করছে, অস্থিরতা স্পষ্ট ওর চলাফেরায়।
দৌড়ে আসার কারণে মিন হুয়ে তখনো হাঁপাচ্ছিলো। ওকে দেখে চেন জিয়া জুন ওর হাতে এক কাপ চা তুলে দিলো।
মিন হুয়ের চা কেনো জল খাবার কথাও মাথায় নেই। হুড়মুড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো, “অবস্থাটা কী? সু তিয়াঁ কোথায়?”
শিন ছি ওর খুব কাছে এসে দাঁড়ালো, ফিসফিসিয়ে বললো, “একজন দাবি করছে যে চার বছর আগে আটাশে জুন, মানে সু তিয়াঁর দূর্ঘটনাটা ঘটার দু দিন পরে, ওর শরীরটা পাওয়া যায় একটা নদীর কিনারায়, মুশুইহে ব্রিজ থেকে পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে।”
“নদীর কিনারায়? কোন নদীর কিনারায়?”
মিন হুয়ে মাথা নাড়তে লাগলো জোর দিয়ে, “এরকম হওয়া প্রায় অসম্ভব। আমি তো সমস্ত নদীর কিনারা ধরে খুঁজেছি, সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিমের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে। শিন ছি, আমার কথা বিশ্বাস করতে হবে না তোকে, কিন্তু মনে হচ্ছে তুই কোনো ঠগের পাল্লায় পড়েছিস।”
“এটা সত্যি।”
একবার শিন ছি পুরস্কার ঘোষণা করে ছিলো দশ লাখের দেঁ চেনের কোম্পানির সাহায্যে সু তিয়াঁর খোঁজখবর পাবার জন্য। গত চার বছর ধরে মানুষের ঢল দেঁ চেনকে সুত্র দিয়ে চলেছে। যেহেতু একটা হলুদ জ্যাকেটের কথা বলা হয়ে ছিলো নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া মানুষটার বিবরণে, এমনকি জ্যাকেটটা কেমন দেখতে তাও বলা হয়ে ছিলো, সেহেতু পুরস্কার পাবার জন্য অনেকেই দেঁ চেনের কাছে এসে হলুদ জ্যাকেট নিয়ে, দাবি করেছে যে তারা জানে সু তিয়াঁ কোথায় আছে, যাতে দেঁ চেনকে ঠকিয়ে পুরস্কার নিয়ে যাওয়া যায়। ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে যে সু তিয়াঁর জ্যাকেটের মতো জ্যাকেট আর একটাও পড়ে নেই তাওবাও-তে, সব বিক্রি হয়ে গেছে। ঘটনা হলো যে হাজার হাজার যে সূত্র দেঁ চেন পেয়ে ছিলেন তার কোনোটাই নির্ভরযোগ্য নয়।
কেউই সু তিয়াঁকে পায় নি। কোনো স্পষ্ট প্রমাণ কেউ দিতে পারে নি।
এই কারণেই মিন হুয়ে আর শিন ছি দু জনেই ভাব ছিলো যে সু তিয়াঁ হয়তো বেঁচে আছে এখনো।
“যে লোকটা ওকে খুঁজে পেয়েছে তার নাম শু ঝি হুয়া। লোকটার বয়স পঁয়ত্রিশ বছর, থাকে শু জিয়া ঝুয়াং-এ, মুশুই নদীর দক্ষিণে। ওদের গ্রামটা মুশুই নদীর পাশে। ও বলছে যে ও মাছ ধরতে নদীর কিনারায় গিয়ে ছিলো ঐ দিন দুপুরে। একটা ভেসে আসা মরদেহ পায়, একটা জোয়ান মেয়ে, মারা গেছে খুব বেশি দিন আগে নয়, ধরা পড়ার ভয়ে ও চুপচাপ একটা জায়গা দেখে মেয়েটার দেহটা মাটির তলায় সমাধি দেয়।”
বললো দেঁ চেন।
“লোকটা মরদেহটার কথা প্রশাসনকে জানায় নি কেনো?”
মিন হুয়ে জানতে চাইলো, “ওর প্রথমে পুলিশ স্টেশনে যাওয়া উচিৎ ছিলো নাকি এক্ষেত্রে?”
“ও সাহস করে নি। লোকটার একটা অপরাধের খতিয়ান আছে। ও প্রথমে দেহটা উদ্ধার করতে চায় নি। পরে ওর মনে হয়ে ছিলো যে মরদেহে দামী কিছু থাকতে পারে। সেই লোভে ও দেহটা বঁড়শিতে গেঁথে তোলে কিনারে। খুঁজেও কিছু পায় নি ও। তাতে ও ঘাবড়ে যায় যে এর থেকে ওকে এই মেয়েটার মৃত্যুর সঙ্গে হয়তো জড়ানো হবে। তাই ও গোপণে দেহটা মাটিতে পুঁতে দেয়।পরের দিনই কাজ করতে চলে যায় গুয়াংঝুতে, সেই থেকে ও নিজের গ্রামে আর ফেরেই নি আর পুরস্কারের কথাও জানতে পারে নি। এ মাসে কোনো একটা কাজে ও গ্রামে গিয়ে ছিলো। কোনো এক আত্মীয়ের মুখে শোনে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া মানুষ সম্পর্কে আমাদের বিজ্ঞাপণের কথা। হিসেব করে দেখে যে সময়টা প্রায় মিলে যাচ্ছে। তা বাদে মৃতের লিঙ্গপরিচয় আর বয়সও মিলে যাচ্ছে প্রায়। তাই আমাদের সাথে যোগাযোগ করে।”
দেঁ চেন থামলেন, ফের বললেন, “কিন্তু মরদেহে কোনো হলুদ জ্যাকেট ছিলো না, হয়তো বানের জলে ভেসে গেছে।”
সব শুনে মিন হুয়ের সন্দেহ আরো গাঢ় হলো, “তাহলে ওর কাছে প্রমাণ কী আছে যে ঐ দেহটা সু তিয়াঁরই ছিলো? মুশুই নদীতে অগুণতি মরদেহ ভাসছিলো তখন। আমি নিজেই একটা দেখেছি।”
“মরদেহে একটা রুপোর ব্রেসলেট ছিলো, মাছের নকশা ছিলো তাতে, যেটা ও মরদেহের কব্জি থেকে খুলে নিয়ে ছিলো। একটা মোবাইলে ঐ মরদেহের একটা ছবিও তুলে ছিলো, দেহটা মাটিতে পুঁতে দেওয়ার আগে। তবে ও বলেছে যে ছবিটা বেশ ভয়ানক তাই ওটা পাঠানো অসুবিধেজনক। ও ব্রেসলেটটার একটা ছবি দিয়েছে। একবার দেখো, এটাই কী তুমি ওকে দিয়ে ছিলে?”
কথাটা বলেই দেঁ চেন ওর ফোন থেকে একটা ছবি বার করলো আর ফোনটা দিলো মিন হুয়ের হাতে যাতে ও ছবিটা দেখতে পারে।
ছবিটা দেখে ওর শরীরে কাঁপুনি লেগে গেলো হঠাৎ, ওর মুখ বিবর্ণ হয়ে গেলো।
শিন ছির দিকে তাকিয়ে দেখলো শিন ছিও ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।
প্রমাণ রক্ষার জন্য আর মিথ্যে দাবি কমানোর জন্য পুলিশ চুনো মাছের মূর্তি ঝোলানো ব্রেসলেটটার কথা ফাঁস করে নি তাদের নিখোঁজ মানুষ সম্পর্কিত বিবরণে।
ছবিতে বেসলেটটা নোংরা দেখাচ্ছে, লাল শিকলিটা কালো দেখাচ্ছে। বহু বছরের হাওয়ার ঝাপটায় জং ধরে সাদা চুনো মাছগুলোও কালো হয়ে গেছে। তবে তাদের আকার আকৃতি মাপ সবই অবিকল আছে।
মিন হুয়ে সম্পূর্ণ নিশ্চিত নয়, বিড়বিড় করে বললো, “এটা দেখতে প্রায় একই রকম। আমার ব্রেসলেটটা আমার বাবার নিজের হাতে বানানো ছিলো। প্রত্যেকটা চুনো মাছের লেজে একটা বিশেষ চিহ্ন ছিলো। আমি যদি খালি চোখে ব্রেসলেটটা দেখতে পাই, তবে হাতে নিয়ে পরখ করে বুঝতে পারবো যে জিনিসটা খাঁটি কিনা।”
“তোর বাবা এরকম ব্রেসলেট অনেকগুলো বানিয়ে ছিলেন না? আর প্রচুর বিক্রি করে ছিলেন না?”
শিন ছি প্রশ্ন করলো, “যদি কোনো ভাবে পুলিশের লোকে খবরটা চাউর করে দিয়ে থাকে, তাহলে তো যে কেউ একই রকম একটা ব্রেসলেট খুঁজে পেলেই হবে। অমন ব্রেসলেট খুঁজে পাওয়া কী দুরূহ, নাকি নয়?”
মিন হুয়ে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে ব্রেসলেটটা খাঁটি। আবার শিন ছির কথা শুনে দ্বিধায় পড়লো, “হ্যাঁ। সেটাও সম্ভব। আমাদের শহরে অনেক মেয়েই এরকম ব্রেসলেট পরেছে। আমার বাবার বানানো অন্যান্য রুপোর গয়নার সাথে, এই ব্রেসলেটটাও।”
“সু তিয়াঁ পরিবার খুঁজে বার করার ওয়েবসাইটে যে রক্তের নমুনা, ডিএনএ এসব দিয়ে ছিলো, সেই সবই আছে আমাদের কাছে। যদি দেহটা ওরই হয়, তবে বৈজ্ঞানিক উপয়ায়ে সেটা প্রমাণ করা সহজ।" বললেন দেঁ চেন।
“যাই হোক, আমাদের মুশুইহে-তে যেতেই হবে এই শু ঝি হুয়ার সঙ্গে দেখা করার জন্য।”
মিন হুয়ে বললো, “ওর কাছে মরদেহের যে ছবি আছে তার সাথে চেহারার তুলনাও করা যাবে।”
শিন ছির মুখের রঙ বদলে গেলো, একটা গভীর শ্বাস নিয়ে বললো, “আমি কাল খুব সকালে যাবো। চারটে টিকিট কেটেছি ট্রেনের।”
দেঁ চেন আর জিয়া জুন চলে যাবার পরে, মিন হুয়ে শোবার ঘরে গেলো ছেলেটাকে দেখার জন্য। ও দেখতে পেলো শিন ছি বারান্দায় চেয়ারে বসে দুরের তারাদের দিকে তাকিয়ে আছে, চুপচাপ, একটা ঘোরের মধ্যে।
ও একটা নরম শ্বাস ফেলে বসলো শিন ছির পাশে, একটা সিগারেট ধরিয়ে টানতে লাগলো।
“তোর কী মনে হয়, জলের ঐ মানুষটা সু তিয়াঁ?” প্রশ্ন করলো শিন ছি।
একটু ভেবে বললো মিন হুয়ে, “আমি প্রবৃত্তির তুলনায় বেশি ভরসা করি প্রমাণে। এখন আমি কিছুই বলতে পারবো না।”
“তাহলে, আমাকে তোর প্রবৃত্তির কথাটাই বল।”
কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থেকে মিন হুয়ে একটা সাদা ধোঁওয়ার দলা ছেড়ে বললো, “হ্যাঁ, ওটা সু তিয়াঁই।”
“চলে যা।”
শিন ছি উঠে দাঁড়িয়ে বারান্দার দরজা খুলে ধরলো, “আমি কিছুক্ষণ একলা থাকতে চাই।”
~~~~~~~~~~~~
সম্পূর্ণ বই বিনামূল্যে : https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96
Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-63.html
Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/10/jpda-chapter-65.html