২২. কাঁচি
মিন হুয়ে যেনো ঘোরের মধ্যে ছিলো। হঠাৎ করে জেগে উঠললো বুঝি। দোকানের কর্মীকে ডেকে জানতে চাইলো, “ফুইয়াঁ, দ্যুইবুচি, আপনাদের এখানে কাঁচি আছে?”
“কয়েক ইঞ্চি লম্বা একটা হবে।” জানালেন কর্মীটি, “দ্যুইবুচি, ছোটো একটা ছিলো বটে। তবে আমি মনে করতে পারছি কিছুতেই … সেটা যে কোথায় রেখেছি। এটা দিয়ে কাপড় কাটা হয়। সাবধান, কিন্তু। এটা খুবই ধারালো।”
“শিয়া শিয়া।” টেনে সেই কর্মীর হাত থেকে কাঁচিটা মিন হুয়ে নিয়ে নিলো। পাকড়ে ধরলো কাঁচিটা দু হাত দিয়ে। তারপর ছুটে বেরিয়ে গেলো দোকান থেকে, দৌড় দিলো নিচের তলার দিকে।
তখন প্রায় রাত দশটা বাজে। মল বন্ধ হবার সময় হয়ে এসেছে। সময়টা সপ্তাহান্ত। মলের ভেতরে মুভি থিয়েটার আছে। তাই তখনও কিছু লোক ভিড় করেছে।
তা সত্ত্বেও, ধূসর উইন্ডব্রেকারে মানুষটা আর সবার থেকে আলাদা হয়ে নজর কাড়েন, তাঁর লম্বা চেহারা আর ব্যক্তিত্বের আভার জন্য। তাঁর হাতে একটা শপিং ব্যাগ ধরা ছিলো। এলিভেটরের দিকে হাঁটছিলেন, করিডর দিয়ে, তবে তাড়াহুড়ো ছিলো না তাঁর চলনে।
মিন হুয়ের স্বভাব যেমন, এই মূহুর্তে সে দৌড়ে যেতে চায় লোকটার কাছে। কিন্তু মাঝে অনেক বাধা। ধাক্কাধাক্কি লেগে যাবার ভয় ছিলো মিন হুয়ের। তাই না দৌড়ে, মিন হুয়ে হাঁটতে লাগলো যতো জোরে হাঁটা যায় ততো জোরে।
উইন্ডব্রেকার পরনে লোকটার একদম পিছন পিছন হাঁটছে মিন হুয়ে এটা মিন হুয়ে টের পেলো যখন, তখন লোকটা ওর হাতার মধ্যে। অমনি ও হঠাৎ করে বড়ো বড়ো পা ফেলে এগিয়ে গেলো। যেই মূহুর্তে কাঁচিটা বার করতে যাবে, অমনি ওকে হঠাৎ পিছন থেকে টেনে, জাপটে ধরে, কানে ফিসফিস করে কেউ বললো, “একদম না। মাথা গরম করবে না।”
বাজল কানে হুঙ্কারের মতো।
মিন হুয়ের ঘাড় ঘুরিয়ে দেখার দরকার ছিলো না যে ওকে ধরে আছে ঝৌ রু জি।
“ছাড়ো আমাকে, যেতে দাও।” মিন হুয়ে শরীরকে বাঁকিয়ে চুরিয়ে ভীষণ জোর দিয়ে হাত দুটোর বাঁধন ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো। কিন্তু ঝৌ রু জির হাত যেনো লোহার গরাদ, কিছুতেই ভেঙে বেরোনো গেলো না।
কয়েকটা ছাত্র, যাদের দেখে ছাত্রই মনে হচ্ছিলো, তারা ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে পড়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে লাগলো ওদের দুজনকে।
ঝৌ রু জি নিজের দু হাতের মধ্যে জড়িয়ে ধরলো মিন হুয়েকে। মুখে চুমু খেলো। হেসে বললো, “বেবি, রেগে যেও না। আমি কিনে দেবো তোমাকে।”
প্রেমিক প্রেমিকার ঝগড়া - দেখে হাসতে হাসতে ছাত্ররা চলে গেলো।
ঝৌ রু জি টানতে টানতে মিন হুয়েকে নিয়ে গেলো একটা ফাঁকা কোণে। মিন হুয়ের শ্বাসের ছন্দ স্বাভাবিক হতে আরো মিনিট পাঁচেক লাগলো। তবে ঝৌ রু জি সাহস করে বললো, “আমাকে কাঁচিটা দাও।”
দাঁত কিড়মিড় করে উঠলো মিন হুয়ে। ঝৌ রু জিকে পাত্তাই দিলো না।
“দাও কাঁচিটা।” তখনও ঝৌ রু জির গলার স্বর শান্ত। কিন্তু আগের থেকে একটু বেশি জোরালো।
শেষে বুকের ভেতর থেকে কাঁচিটা টেনে বার করলো মিন হুয়ে। দিয়ে দিলো ঝৌ রু জিকে।
“তোমার অসীম সাহস। জেলে যাবার ভয় নেই?” ঝৌ রু জি দেখতে লাগলো মিন হুয়েকে, একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো, “তোমার পেটে একটা বাচ্চা আছে। তোমার রাগ দেখে মনে হচ্ছে বাচ্চাটা ঐ লোকটার, তাই না?”
“না।”
“কাপুরুষ কোথাকার। তুমি যদি একটা মেয়েকে পছন্দই করে থাকো, তবে তাকে খোলাখুলি বিয়ে করো, ওর যা ক্ষমতা তাতে ও যদি গুয়ান ছাও ছেড়েও দেয়, ছেড়েও দেয় ওর বউকে, তাহলেও ও গরীব হয়ে যাবে না। এ সব করার দরকার কী? ও জানে না তুমি প্রেগন্যান্ট -”
“ঝৌ রু জি, আমার আবার বলছি তোমাকে, বাচ্চা এঁর নয়।”
“ওকে ওকে, না না।”
নিচু খোশামুদে স্বরে বলে যেতে লাগলো ঝৌ রু জি, “মন খারাপ করবে না। এমন দুঃসাহসী লোকের ওপরে রাগ করার মানেই হয় না, তো তাকে ছুরি মারা বা কাঁচি মারা। চলো ফিরে যাই। তাকোয়াকির দরকার নেই। খাবারটা গরম বাড়ায়। যতো খাবে, রাগ ততো বেড়ে যাবে। সামনে ফোটানো চায়ের দোকান আছে। তোমাকে এক কাপ কিনে দিচ্ছি। মাথা ঠান্ডা করো।”
মিন হুয়ে টের পেলো না কখন ঝিরঝির করে বৃষ্টি শুরু হলো। রঙীন নিয়ন আলোর নিচে, পপকর্নের গন্ধমাখা, বিনচেং-এর রাত যে এতো আনন্দময় আর উৎসব মুখর হতে পারে, সে কথা মিন হুয়ে জানতো না। তবুও ওর বুকের মধ্যে কুড়ে কুড়ে খেতে লাগলো একটাই অনুভব - এসবের সঙ্গে ওর কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক নেই ওর শহরটার সাথেও। আবার মাথার ওপরে জ্বলতে থাকা সাদা রুপোলি আলোর ছটা মেখে মনে হতে লাগলো ও যেনো মঞ্চের ওপরে আর অগুণতি চোখের সোজা দৃষ্টি ওকে বিঁধছে মেশিন গানের মতো। আর পাশে থাকা পুরুষটা, যাকে সে বিয়ে করতে চলেছে, সে একটাও বুলেট আটকাতে ওকে সাহায্য করবে কিনা সেটা ওর কাছে স্পষ্ট নয়।
যেদিন থেকে ও শিন ছিকে ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে, সেদিন থেকে ওর সিদ্ধান্ত ছিলো একলা চলার। সারা শরীর বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে গেলেও।
গাড়িতে ওঠার পরে মিন হুয়ে চুপচাপ চুমুক লাগালো হাতের দুধ-চায়ে। টের পেলো চা-টাতে আনারসের গন্ধ দেওয়া আছে। কতকগুলো কিউ-বোমের বল দাঁতের নিচে আটকে গেলো। চালের গুঁড়ো দিয়ে বানানো নরম গুলিগুলোকে কিছুতেই চিবোতে পারছিলো না মিন হুয়ে।
পুরো রাস্তায় কোনো কথা হলো না।
হঠাৎ করে চেং ছিরাং-এর উদয় দুজনকেই আচ্ছন্ন করেছে বিব্রত হবার একটা অদৃশ্য অনুভবে।
ঘন্টা খানেক চুপচাপ কেটে যাবার পরে, মিন হুয়ে চায়ে শেষ চুমুকটা দিয়ে মুখ খুললো, “যখন আমি গুয়ান ছাওতে ইনটার্ন ছিলাম, তখন চেং ছিরাং আমার বস ছিলো মাত্র। কোনো দিনই আমি ওকে পছন্দ করি নি।”
যাই হোক, আমরা স্বামী-স্ত্রী হতে চলেছি কয়েকদিনের মধ্যে, পরস্পরের প্রতি আন্তরিক হওয়াই ভালো। ঝৌ রু জিও নিশ্চয়ই খবরাখবর করেছে কিছু।
“হুম্” ঝৌ রু জি স্টিয়ারিং হুইলটা ঘুরিয়ে সোজাসুজি জানতে চাইলো, “ও কী তোমাকে পছন্দ করে?”
মিন হুয়ে উত্তর দিলো না।
“আমি শুনেছি যে ও তোমার বিরুদ্ধে মামলা করে ছিলো? মানহানির?”
মিন হুয়ে দাঁতের সারির ফাঁক দিয়ে কোনো মতে একটা শব্দ বার করে আনলো, “হ্যাঁ।”
“শেষে কতো খেসারত দিতে হয়ে ছিলো তোমাকে?”
“সত্তর হাজার য়ুআঁ।”
“তুমি সেই সবে কাজ শুরু করেছ। ইনটার্ন?”
“ছ মাসের কম। তখনও পাকা চাকুরে হই নি।”
“তাহলে খেসারতের অতোগুলো টাকা পেলে কোথায়?”
“আমার মা … টাকাটা তুলে ছিলো চিকিৎসার জন্য।” মিন হুয়ের গলা অল্প কেঁপে গেলো। “রোগ অবশ্য শেষ পর্যায়ে তখন।”
“ক্যান্সার?”
“লিভার ক্যান্সার। শেষ মাসটা এতো যন্ত্রণায় কেটেছে যে একদম শুতে পারে নি। আমি তখন কপর্দকহীন। যে ওষুধগুলো লাগে, সেগুলোর ব্যবস্থা করতে পারি নি।”
চোখের জল আটকাতে মিন হুয়ে দাঁতে দাঁত চেপে ধরলো, “আসলে আমার কলেজ পাশ করেই কাজ খোঁজা উচিৎ ছিলো। তাতে আমার তিন বছর কাজ করা হয়ে যেতো। কিছু জমানো পয়সা হয়তো থাকতো …”
“আরো ভালো হতো কলেজ পাশ করার পরে যদি আমার সাথে তোমার চেনাশোনা হয়ে যেতো।” ঝৌ রু জি খুব নরম করে বললো, বলার সুরে স্বান্তনা ছিলো, “যাই হোক, আমিও অনকোলজি নিয়েই কাজ করি। তোমাকে অন্য কাউকে বলতে হবে না তোমার মাকে দেখার জন্য।”
“সব শেষ হয়ে গেছে।” মিন হুয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
“ভালো দিন আসবে।” ঝৌ রু জি বললো, “দেখো, সাও মু তোমাকে পছন্দ করে।”
মিন হুয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো ঝৌ রু জিকে। গুরুগম্ভীর স্বরে বললো, “শিয়া শিয়া।”
“কিসের জন্য?”
“আমার বাচ্চার বাবা হবার জন্য।”
“সে তো খুব সম্মানের ব্যাপার। তোমার আইকিউ এতো বেশি। তোমার বাচ্চা খুব প্রতিভাবান হবে নিশ্চয়ই, হতে পারে পরবর্তী ইলন মাস্ক। আমি যখন বুড়ো হবো, হতে পারে তখনো আমি ওর নজরে থাকব। - আমার বাড়ি সামনেই, তুমি কী যেতে চাও? বসবে একটু?”
“বসব?”
মিন হুয়ে চোখ তুলে তাকালো আর চিনতে পারলো, “ছ্যুনতাং গার্ডেন”। বা'অ্যান টেকনোলজির খুব কাছের একটা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স, যেখানে মিন হুয়ে থাকে তার থেকে মাত্র দুটো স্টপ দূরে। মিন হুয়ে দেখে ছিলো ফ্ল্যাটগুলো যখন ও একটা বাড়ির খোঁজ করছিলো। ডেকরেশন, ডিসাইন ওর খুব পছন্দ হয়ে ছিলো। কিন্তু ওকে ছেড়ে দিতে হয়ে ছিলো। জায়গাটা বড্ডো খরচ সাপেক্ষ, বাড়ি ভাড়া ওর নাগালের বাইরে।
“এখানে বাড়ি ভাড়া তো খুব বেশি। তাই না?”
“ঠিক আছে” ঝৌ রু জি মাটির তলার পার্কিং লটে ড্রাইভ করে যাচ্ছিলো, “আমি তো কেবল ঘুমোতে আসি।”
মিন হুয়ে চুপ করে আছে দেখে বললো, “পরে আমি যতো বেশি সম্ভব ততো বেশি বাড়িতে আসব, আমার পরিবারের দেখাশোনা করতে।”
“তার প্রয়োজন হবে না।” মিন হুয়ে হাসলো, “যদি তুমি সত্যিই বাড়িতে বেশিক্ষণ কাটাতে পারতে, তাহলে তোমার ডিভোর্স হতো না।”
***
ঝৌ রু জির ঘরের সাজসজ্জায় খুবই শৈল্পিক রুচির ছাপ। সব কটা দেওয়ালে অয়েল পেন্টিং টাঙানো। তাদের মাপ সব আলাদা আলাদা। কিন্তু সবের বিষয়বস্তু ব্যালেরিনা। মিন হুয়ে জানে না কোন শৈলীতে আঁকা ঐ সব ছবি। সে বিশেষ কিছু বুঝতে পারলো না। ঘরে খুব বেশি আসবাব নেই। যেটুকু আছে তার সবটাই সূক্ষ্ম সৌন্দর্যে ভরা। ক্যাবিনেটের মধ্যে পৃথিবীর নানান কোণ থেকে আনা হাতের কাজের নমুনা আছে। নর্ডিক আবরণের কাজ, আফ্রিকার ভাস্কর্য, জাপানের পুতুল … তা বাদে ঝিনুক আর পোর্সেলিন আছে - যেগুলো কোথা থেকে আনা হয়েছে বলা মুস্কিল।
মিন হুয়ে দেওয়াল ভরা ব্যালেরিনা দেখতে দেখতে জানতে চাইলো, “তুমি কী অয়েল পেন্টিং পছন্দ করো?”
“আমি ইম্প্রেশনিসম পছন্দ করি, বিশেষত দেগা। এগুলো সব কপি। আমার খালি সময়ে আমি কয়েক পোঁছ আঁচড় টানি। তবে খুব পেশাদারিত্ব নেই তাতে।”
“ছবিগুলো ভালো।” ঠোঁটে হাসি মেখে বললো মিন হুয়ে, “বিনয়ের দরকার নেই, ঝৌ রু জি।”
“তোমার নিশ্চয়ই মনে হয় না যে আমি অনেক সাহিত্য পড়ি?”
“যতক্ষণ তোমার না মনে হচ্ছে যে আমি অনেক পড়ি।”
ঘরে পা রেখেই মিন হুয়ের নজরে পড়ে ছিলো রান্নাঘরের বিশাল স্টেনলেস স্টিল কাউন্টরের দিকে আর তার ওপরে গুছিয়ে রাখা দু সারি ছুরিতে। মিন হুয়ে ভেবে ছিলো সে বুঝি কোনো হাসপাতালের অপেরাশন থিয়েটারে ঢুকে পড়েছে। আবার দেওয়ালে অয়েল পেন্টিং দেখে মনে হচ্ছিলো যে কোনো মিউজিয়ামে এসে পড়েছে বুঝি। সৌন্দর্য সুন্দরই লাগে, কিন্তু কোথায় যেনো আগুনের ফুলকির অভাব আছে।
“তাহলে তোমার খালি সময়ে তুমি কী করতে ভালোবাসো, দাবা আর তাস খেলা ছাড়া?” প্রশ্ন করলো ঝৌ রু জি।
“ডিসাইন করি খানিক। ও, আমি একটা মোবাইল ফোন সফ্টওয়্যার ডিসাইন করেছি, বেশ মজার। দেখবে নাকি?”
মিন হুয়ে মোবাইল ফোনটা বার করে আনলো, “আমি কী এর আগে স্কিন ক্যানসার শুরুতেই ধরার ব্যবস্থা করি নি? তিল থেকে ক্যান্সারের রিস্ক বিচার করার কাজ।”
“ওয়াও!” ঝৌ রু জির চোখ চকচক করে উঠলো, “আমি দেখতে পারি?”
“নিশ্চয়ই। নির্ভুল ফলাফল পাবার হারটা বেশ বেশিই।” মিন হুয়ে ঝৌ রু জির মুখের দিকে তাকালো, “তোমার মুখে কোনো তিল নেই।”
“আছে তো। পায়ে আর পাছায়।”
ফোনটা ধরে মিন হুয়ে হাসতে লাগলো বাকরুদ্ধ হয়ে।
সেই মূহুর্তে ঝৌ রু জি জামা কাপড় সব ছেড়ে ফেলে শুয়ে পড়লো সোফার ওপরে। “এসো, প্রত্যেকটাকে স্ক্যান করো। আমি একটু বেশি চিন্তিত এই তিলগুলো নিয়ে। কী হবে এগুলো যদি মেলানোমাস হয়?”
~~~~~~~~~~~~
সম্পূর্ণ বই বিনামূল্যে : https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96
Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-21.html
Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-23.html
No comments:
Post a Comment