২৯. ভালভ
সেদিন মিংসেন কমিউনিটিতে জিয়া জুনের দ্বিতীয় দিন। ছিয়াঁ ঝি ফোনে জানালেন জিয়া জুনকে যে সে কাজে ফিরিতে পারে। তার পুরোনো কাজে নয়, তবে একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিকের সহায়কের কাজে, সমাজ নিয়ে খবর করে যে বিভাগ, সেই বিভাগে। জিয়া জুন মনের খুশিতে কাজে গেলো।
কাজ থেকে ফিরে জিয়া জুন জানালো যে ছিয়াঁ ঝি তাকে খুব যত্ন করেছে আর বলেছে যে অভিজ্ঞ সাংবাদিকের সঙ্গে কাজ করে সমাজের নানান খবর বার করতে। আসলে অভিজ্ঞ সাংবাদিকটি এর মধ্যেই অবসর নিয়েছেন কাজের থেকে, তাঁর বাচ্চারা সবাই বিদেশে। তাঁর স্বাস্থ্য ভালো আর আলস্যে তিনি অভ্যস্ত নন। তাঁকে অনেক বেশি মাইনে দিয়ে ছিয়াঁ ঝি বহাল করেছে কাজে। তিনি শুরুতেই জিয়া জুনকে শিখিয়েছেন নিজে নিজে শিখতে, নিজে নিজে উপদেশ দিতে, উদাহরণ দিতে, প্রত্যেক প্রশ্নের উত্তর নিজেই খুঁজে বার করতে।
সাংবাদিকদের শিফটে নিয়ম করে অফিসে বসতেই হবে এমন কোনো বাধা ধরা নিয়ম নেই। জিয়া জুনের অভ্যেস ভোর ভোর ঘুম থেকে ওঠা আর তাড়াতাড়ি শুতে যাওয়া। এদিকে মিন হুয়ে নিশাচর। তাই জিয়া জুনের কাঁধে দায়িত্ব চাপলো সকালে সু ছনকে কিন্ডারগার্টেনে পৌঁছে দেবার।
রাতে খাবার সময়ে, মিন হুয়ে যদি কোনোদিন সময় মতো কাজ থেকে ফেরে সন্ধেবেলা, তবে তিনজনে একসাথে খেতে বসে। যা হোক, জিয়া জুন গরীব ঘরের সন্তান। মাত্র চার হাজার য়ুআঁ মাস মাইনেতে সে খুব সাধারণ জীবন যাপণ করে। মাইনের থেকে তিন হাজার য়ুআঁ আবার দিয়ে দেয় মিন হুয়েকে ঘর ভাড়া বলে, বাকি টাকায় সে সস্তাতম খাবার আর জামাকাপড়ের বন্দোবস্ত দেখে রোজ। মিন হুয়ের খারাপ লাগে, সাংবাদিক বলে কথা, সারাদিন জিয়া জুন অনেক গুরুত্বপূর্ণ লোকের সাথে কথা বলে কাজের প্রয়োজনে, তার জামাকাপড় খুব সস্তা হলে চলে না। তাই মিন হুয়ে কয়েক গোছা ভালো জামা কিনে দিয়েছে জিয়া জুনকে। তবে সেগুলো পরতে জিয়া জুন খুব উৎসাহী নয়। বরং সেই জামাগুলো ও ক্লোসেটে টাঙিয়ে রাখতেই পছন্দ করে।
মিন হুয়ের মনে পড়ে গেলো ঝৌ রু জি ছবি তুলতে উৎসাহী। আর অনেকগুলো ফোটোগ্রাফি ক্লাবেও তার যাতায়াত ছিলো। মিন হুয়ে তাই জিয়া জুনের সাথে ঝৌ রু জির আলাপ করিয়ে দিলো। উদার হাতে ঝৌ রু জি দুটো খুব দামী লেন্স দিয়ে দিলো জিয়া জুনকে, তাকে ক্লাবগুলোতে নিয়ে যেতে লাগলো, আর জিয়া জুনের সামাজিক বৃত্তটা ছড়াতে লাগলো, চার জনে বেশ মিলে মিশে যায়।
তবুও মিন হুয়ে বলে নি জিয়া জুনকে যে সু ছন আসলে শিন ছির ছেলে। যেহেতু সু ছন পছন্দ করে ঝৌ রু জিকে, মনে করে ঝৌ রু জিই ওর আপন বাবা, মিন হুয়ে ভয় পায় যে জিয়া জুন হয়তো উল্টোপাল্টা কিছু বলে বসবে যদি ও জানতে পারে।
বাবা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে, মামা এসেছে বাড়িতে, সু ছন পাশে পেলো আরেকটা বাবার মতো মানুষ, শিশুর স্মৃতি নেই, ধীরে ধীরে সু ছন আর জিয়া জুন ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠলো।
জিয়া জুন রোজ সকালে একটা ক্যামেরা কাঁধে বেরিয়ে যায় দেখে, বিকেলে ফিরে খুব আনন্দ করে দিনের সাক্ষাতকারগুলোর গল্প করে দেখে, কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে - এমন ব্যস্ত যে বাধা সময়ের গন্ডি পার করে, মাঝরাত পেরিয়ে কাজ করে - সেটা দেখে মিন হুয়ে বুঝতে পারে যে কাজটা জিয়া জুনের খুব পছন্দের আর কাজের এই সুযোগটাকে সে খুব যত্নে লালন করে। যদিও শুরুটা খুবই নিচু মানের, কিন্তু প্রত্যেক দিনের উন্নতিতে মিন হুয়ে আনন্দ পায়।
জিয়া জুন দ্বিতীয় মাসের মাইনে পাবার ঠিক পরে পরেই, অপ্রত্যাশিতভাবে ছিয়াঁ ঝি ফোন করলেন মিন হুয়েকে দিনের বেলায় কাজের সময়ে, “আমি ভাবছি চেন জিয়া জুনকে বিনোদন বিভাগেই ফিরিয়ে আনবো বদলি করে, আপনার কোনো আপত্তি আছে?”
“ব্যাপারটা কী?”
ছিয়াঁ ঝি দীর্ঘশ্বাস ফেললেন, “সামাজিক খবরের সাংবাদিকদের খুব তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণমূলক দৃষ্টিভঙ্গী আর সমাজকে প্রভাবিত করার মতো লেখার ক্ষমতা থাকাটা জরুরী। চেন জিয়া জুনের ভিতটা বড্ডো কাঁচা। ও জানেই না কিভাবে লিখতে হয়, এমনকি ও টাইপোগুলোও ঠিক করতে পারে না। আর কয়েকটা বাক্য পড়ে মনে হয় যে ও ব্যকরণও বোঝে না। ও যাঁর সাথে কাজ করছে তিনি মনে করছেন যে জিয়া জুনের পান্ডুলিপি পড়ে তাঁর রক্তচাপ বেড়ে যাবে। উনি আর জিয়া জুনের সাথে কাজ করতে চাইছেন না। আমার মনে হয় যে জিয়া জুনের এখনো -”
“তাহলে অন্য কোনো সাংবাদিকের সঙ্গে কাজ করতে দিন জিয়া জুনকে।” বললো মিন হুয়ে।
“মিন শওজিয়ে, আমি বুঝতে পারছি আপনি কতোটা যত্ন করে চেষ্টা করছেন জিয়া জুনের জীবনকে নতুন খাতে নিয়ে যাবার। অন্যকে সাহায্য করার কাজটা খুবই সঠিক কাজ, কিন্তু কখনো কখনো আপনাকে বাস্তব পরিস্থিতিটাও মেনে নিতে হবে। বাস্তবটা হলো এই যে চেন জিয়া জুন সত্যিই সাংবাদিক নয়। আমার মনে হয় বডিগার্ড হওয়াই ভালো। সাংবাদিক হওয়া কঠিন। ওর জন্য ব্যাপারটা খুব বিব্রতকর …”
“আমি জানি। সেই জন্যই আমি পঞ্চাশ হাজার য়ুআঁ দিয়েছি ওর প্রশিক্ষণের জন্য। আপনি তো টাকাটা নিয়েও নিয়েছেন। আমি তিন বছরের ইন্টার্নশিপের মাইনেও দিয়েছি। এমনকি আপনি নিজেও বলেছেন, সব ঠিক চললে হয়তো -”
“মিন শওজিয়ে, শুনুন আমার কথা -”
“আমরা চুক্তিবদ্ধ।” মিন হুয়ে বললো কড়া সুরে, “দয়া করে অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখান। আমার একটা মিটিং আছে, সব ঠিক থাকলে, আমি এখন রাখব।”
“দাঁড়ান” ছিয়াঁ ঝি কোনো উপায় নেই দেখে মেনে নিতে বাধ্য হলেন, “অন্তত ওঁর জন্য একটা টিউটর রাখুন, ওর চোঙ্গুয়েনটার কিছু উন্নতি হোক?”
মিন হুয়ে জানে না কী ভীষণ নিন্দেমন্দ সহ্য করতে হয় চেন জিয়া জুনকে প্রতিদিন। ও তার কিছুই প্রকাশ করে নি। প্রত্যেকদিন হাসি মুখে খেতে এসেছে। বরাবর ছবিটা যেনো অনায়াস কাজের দিনের।
বিনচেং-এ অনেক ইউনিভার্সিটি। এক ঘন্টার কম সময়ে মিন হুয়ে বেশ কয়েকজন টিউটরের খোঁজ পেয়ে গেলো ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসগুলোর যোগসূত্রে। মিন হুয়ে ছ জনকে বেছে নিলো - তিন জন চোঙ্গুয়েন বিভাগ থেকে আর তিন জন সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে। য়ে শও ঝেন নামের একটা মেয়ে, সাংবাদিকতা বিভাগে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, জিয়া জুনকে সপ্তাহে তিন দিন বিনচেং ইউনিভার্সিটির পড়ার ঘরে খবর লেখার তালিম দিতে লাগলো। সাবধান হতে গিয়ে মিন হুয়ে নিজে গিয়ে আগে য়ে শও ঝেনের সাথে আলাপ করে জেনে এসেছে যে মেয়েটা গ্রামের মেয়ে, সাদামাঠা সাজগোজ, গুছিয়ে কথা বলতে পারে। মেয়েটা সিভিতে লিখে রেখেছে প্রচুর পুরস্কার পেয়েছে বলে। দেখে শুনে কাজের বলেই মনে হলো মিন হুয়ের।
সে রাতে যখন সে বাড়ি পৌঁছোলো মেয়েটির সাথে জিয়া জুনের আলাপ করিয়ে দেবার জন্য, দেখা গেলো যে জিয়া জুন খুব খুশিই হয়েছে। ও টিউশনের খরচটার দায়িত্ব নিতে চাইলো।
“আমি টাকা দিয়ে দিয়েছি। অনেক টাকাও নয়।” বললো মিন হুয়ে নুডল রাঁধতে রাঁধতে, “তুই যখন পান্ডুলিপির জন্য টাকা পাবি, তখন আমাকে ভালো করে খাইয়ে দিস।”
“শিয়া শিয়া নি, জিয়েজিয়ে।” বললো জিয়া জুন।
মিন হুয়ের সব কিছু টক লাগতে লাগলো, প্রায় কেঁদেই ফেললো, “তুই …, কী বলে ডাকলি আমাকে এক্ষুণি?”
“জিয়েজিয়ে,” চেন জিয়া জুনের মুখময় রক্তিমা ছড়িয়ে গেলো, “তুমি আমার থেকে দু বছরের বড়ো। আমি কী তোমাকে ঠিক ডাকে ডাকছি?”
“আমাকে মাশরুম দিয়ে ডিম ভাজা করতে দাও।” চেন জিয়া জুন রেফ্রিজেরেটর খুললো আর হঠাৎ করে সু ছন মাথা গলিয়ে দিলো, “শুশু, হংদৌ বিং।”
হংদৌ বিং (পপসিক্ল Red Bean Ice) |
“এই যে।” জিয়া জুন একটা পপসিক্ল দিলো, কিন্তু মিন হুয়ে কেড়ে নিলো, “রাতের খাবারের আগে মিষ্টি খেও না, যত্ন না নিলে দাঁত খারাপ হয়ে যাবে, বড়ো হলে সু ছন পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেখতে পুরুষ হবে যার দাঁতগুলো ধবধবে সাদা, তাই না ছন ছন?”
“মা, আমার খুবই তেষ্টা পেয়েছে, আমি কী এক কামড় খেতে পারি?”
মিন হুয়ে গ্লাসে জল ঢেলে হাঁটু মুড়ে বসলো সু ছনের সামনে, “তেষ্টা পেয়েছে যখন তখন জল খাও।”
“জিয়েজিয়ে, তুমি না ভীষণ কড়া।” চেন জিয়া জুন হাসতে হাসতে বললো। যবে থেকে ছেলেটা মিন হুয়ের ফ্ল্যাটের উল্টোদিকের ফ্ল্যাটটায় থাকতে শুরু করেছে, তবে থেকে ও মিন হুয়েকে ‘মিন হুয়ে’ বলেই ডাকতো। এই প্রথমবার ও মিন হুয়েকে ‘জিয়েজিয়ে’ বলে ডাকল।
মিন হুয়ের বুকের মধ্যে যেনো খানিকটা ওম টলটল করতে লাগলো। কিছুতেই না ভেবে পারলো না যে যদি সু তিয়াঁ বেঁচে থাকতো, তবে এমন বিচক্ষণ ভাইকে দেখে সে নিশ্চয়ই খুব খুশি হতো।
“ওহ, যা হোক” চেন জিয়া জুন পকেট থেকে একটা ব্যাঙ্ক কার্ড বার করে খাবার টেবিলে রাখলো, ডিম ফ্যাটাতে ফ্যাটাতে, “আমি দু লাখ য়ুআঁ ফেরত পেয়েছি, যেটা তুমি সেদিন দিয়েছিলে।”
মিন হুয়ে ছেলেকে জল খাওয়াচ্ছিলো। এক মূহুর্তের জন্য ওর মুখে হাসি থমকে গেলো, “কোন দু লাখ য়ুআঁ?”
“সে যে শও গ্য আমাদের ভয় দেখিয়ে যে দু লাখ য়ুআঁ আদায় করে ছিলো।” বললো, চেন জিয়া জুন।
“হেই, তুই আবার অদের সাথে মারপিট করতে যাচ্ছিস না। তাই তো?”
মিন হুয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলো আর তাড়াহুড়ো করে উঠে দাঁড়ালো, “ঐ দু লাখ য়ুআঁ ওরা নিশ্চয়ই সৎ কোনো উপায়ে তোকে ফেরত দেয় নি।”
চেন জিয়া জুন ঘুরে দাঁড়ালো আর কলের জলে মাশরুমগুলো ধুতে গেলো, “দেখো আমি তোমাকে আগে বলতে চাই নি। কিন্তু তুমি কী জানো যে গত সপ্তাহে শও গ্য আবার এসে ছিলো আমার কাছে এই জন্য যে দু লাখ যথেষ্ট নয়, ওর আরো দু লাখ চাই।”
“...”
সেদিন টাকাটা দেবার সময়ে মিন হুয়ের সামান্য অনুতাপ হয়ে ছিলো বই কী। সামান্য যদিও। কিন্তু হয়ে ছিলো। এই জন্য অনুতাপ হয় নি যে টাকার পরিমাণটা বড্ডো বেশি। বরং অনুতাপ এই জন্য হয়ে ছিলো যে ও যেনো বড্ডো সোজাসুজি ওদেরকে জানিয়ে দিয়ে ছিলো যে “টাকার অবস্থা খারাপ নয়, ভালোই”। শুরুতেই আগে সম্মত হবার দরকার ছিলো, আর তারপরে টাকাটাও দেওয়া উচিৎ ছিলো খেপে খেপে, একাধিক কিস্তিতে, প্রত্যেকবার দেবার সময়ে প্রচুর নাকে কান্না কাঁদা উচিৎ ছিলো। তাতে হয়তো ঐ সব লোকে ঘুরে ঝামেলা করতে আর আসতো না।
“এই লোকটা পাগল। আন্ডারওয়ার্ল্ড এরকম করে কাজ করে না। ওকে একটা শিক্ষা দেবার দরকার ছিলো।”
চেন জিয়া জুনের মত আলাদা, “ও আমাকে রফা করতে বলে ছিলো ছুরির আগায়। আমি ওকে ভীষণ পিটিয়েছি। বাধ্য করেছি ওকে ওখানেই দাঁড়িয়ে টাকাটা ফেরত দেওয়াতে।”
“তোর কী মনে হয়, এতে সমস্যা মিটে যাবে?”
“নিশ্চয়ই।”
“জিয়া জুন – -”
পরের কুড়ি মিনিট ধরে মিন হুয়ে সমানে বোঝাতে লাগলো চেন জিয়া জুনকে, যার মর্মার্থ হলো, “হিংসার পথ নিও না।”
“কিন্তু ওকেও তো আর সুযোগ দেওয়া যায় না যাতে ও আমাদের সারাজীবন ব্ল্যাকমেল করে।”
“ও কোনো ভাবেই ছাড়বে না।”
মিন হুয়ে যতো ভাবতে লাগলো ব্যাপারটা ততো অস্থির হয়ে উঠলো, “কেমন হয় যদি আমি তোর বাড়িতে থাকি, আর তুই আমার বাড়িতে থাক, কিছু দিনের জন্য?”
“চিন্তা কোরো না। দরজায় একটা সারভেইল্যান্স ক্যামেরা আছে, যদি ও আমাকে খুঁজেও বার করে, ও এই কমিউনিটিতে আসবে না।”
***মিন হুয়ে ঠিকই ভেবে ছিলো। এটা ওরই সমস্যা।
এক সপ্তাহ পরে মিন হুয়ে সু ছনকে আনতে গেলো কিন্ডারগার্টেন থেকে, কাজ থেকে ফেরার পথে, ই-ডঙ্কিটা ভেঙে গেছে, দুজনে হাত ধরে হাঁটছে, রাস্তার একটা নির্জন কোণ পেরোচ্ছিলো যখন তখন তিনটে গুন্ডা হঠাৎ ওদের রাস্তা আটকালো। গুন্ডাদের নেতা শও গ্য।
ই-ডঙ্কি |
মিন হুয়ে কিছু বলতে পারার আগেই শও গ্য সু ছনকে ছিনিয়ে নিয়ে নিজের হাতের মধ্যে খামচে ধরে রাখলো সু ছনের হাত। সু ছন এতো ভয় পেয়ে ছিলো যে ও কাঁদতে শুরু করলো, ছটফট করতে লাগলো, হাওয়ায় লাথি কষাতে লাগলো জোরে জোরে, শও গ্যর সারা শরীর আঁচরে দিলো তার ছোট্টো দুটো হাত দিয়ে।
“মা! কিছু করো” চেঁচিয়ে উঠলো সু ছন, ওর মুখটা তখনই বেগুনি হয়ে গেছে, “মা, আমার ভয় করছে। মা, মা –”
বাচ্চাটা চেঁচাচ্ছে দেখে শও গ্য একটা থাপ্পড় কষালো সু ছনের গালে। আর কষিয়েই ভয় পেলো যে ছেলেটা বুঝি মরেই গেলো।
মিন হুয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে বা ফোন করতে সাহস করলো না। বেশ খানিক ক্ষণ বিভ্রান্ত হয়ে রইলো সেই জন্যই হাঁটু মুড়ে বসে দয়া ভিক্ষা করতে লাগলো, “শও গ্য! শও গ্য! যদি আপনার কিছু বলার থাকে, আপনি কী দু লাখ য়ুআঁ চান আবার? আমার কাছে আছে, আছে আমার কাছে! আমি এখনই দিতে পারবো! মোবাইল ট্রান্সফার করতে পারবো! দয়া করে আমার ছেলেটাকে মারবেন না!”
“নিকুচি করেছে! শেষবারে চেন জিয়া জুন আমাকে গলা টিপে মেরেই ফেলছিলো আরকি, আর তুই চাস সেটা দু লাখে রফা হয়ে যাবে? কিছুতেই না! পকেটে হাত দিস না, ফোন খুলিস না, তুই ঝামেলা করতে চাস তো, বিশ্বাস কর, আমি ওকে মেরেই ফেলবো!”
শও গ্য মুঠোয় ধরে ভয়ানক ঝাঁকাতে লাগলো সু ছনকে, “আমি খবর নিয়েছি, তুই কোম্পানির ডিরেক্টর। আর তোর ছেলের হার্টের ব্যামো আছে।”
ঝাঁকানির চোটে সম্ভবত সু ছনের জ্ঞান ফিরে এসে ছিলো, তখনই কেঁদে উঠলো ছেলেটা। উদ্বেগে কাঁপতে লাগলো মিন হুয়ে। কাঁপা স্বরেই বললো, “আমি নড়বো না, আমি মোটেই নড়বো না! যা বলবে তাই করতে রাজি আছি।”
“ফোনটা ছুঁড়ে দাও এদিকে।”
মিন হুয়ে ফোনটা বার করে ছুঁড়ে দিলো।
“পাওয়ার-অন পাসোয়ার্ড?”
“এক ছয় সাত নয়।”
“আমার দশ লাখ য়ুআঁ চাই। তুই বল, আমি কাজ করছি।”
শও দাদা ছুঁড়ে দিলো সু ছনকে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সঙ্গীর দিকে। মিন হুয়ের ফোনটা নিয়ে বেশ দক্ষতার সঙ্গেই ফোনটা চালু করলো।
“শও গ্য, দু লাখ য়ুআঁ অবধিই দেওয়া যায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। আমি বাকি টাকাটা কালকে দেবো। কথার খেলাপ হবে না। নিশ্চিত থাকুন টাকা আপনার হাতে যাবেই -”
ভয়ে, উদ্বেগে মিন হুয়ের চোখ ছাপিয়ে চোখের জলের ধারা গড়িয়ে পড়লো গালে।
যদিও মিন হুয়ের রোজগার কম নয়, যদিও ওর রোজকার খরচ খুবই কম, তবুও ওর কাছে দশ লাখ য়ুআঁ নেই, কারণ ও মাত্র কয়েকবছর কাজ করছে। একবার ওর মনে হলো যে ও ধার করতে পারবে সাও মু বা ঝৌ রু জির থেকে, -
“তাহলে এখন দু লাখই দে। আমাকে পেমেন্ট পাসওয়ার্ডটা বল।”
মিন হুয়ে মুখ খুলতেই যাচ্ছিলো, এমন সময়ে শুনতে পেলো একটা মোটর সাইকেলের গর্জন আসছে ওর পিছন থেকে, ও ঘুরে তাকালো, দেখতে পেলো চেন জিয়া জুন একটা ই-ডঙ্কিতে চড়ে পূর্ণগতিতে ধেয়ে আসছে শও দাদার দিকে।
জিয়া জুনের চোখগুলো লাল, আর মুখে একটা মরিয়া অভিব্যক্তি।
গুন্ডা শও দেখে ছিলো যে জিয়া জুন তেড়ে আসছে ওরই দিকে। অন্যদিকে দুজন পথচারী যাঁরা এদিককার আওয়াজ পেয়েছেন, তাঁরাও এসে হাজির হলেন। শও দা ভয়ে পেয়ে গেলো যে এই বুঝি কেউ তার ছবি তুলে নেবে, তাই সে একটা সিটি দিলো। তার সহকারী সু ছনকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দিলো, ঘুরে দাঁড়িয়ে দৌড় লাগালো পালিয়ে যাবে বলে। একটু পরে, দলটার আর কোনো চিহ্ন রইলো না।
“ছন ছন!”
মিন হুয়ে দৌড়ে গেলো সু ছনকে নিজের দুহাতে জড়িতে ধরার জন্য। ছেলেটার ঠোঁট আর আঙুলের ডগা কালো হয়ে গেছে। সারা শরীরের ত্বক যেনো পাঁশুটে রঙা, মুখের চামড়া স্বচ্ছ হয়ে উঠেছে, ত্বকের নিচে নীল রক্তবাহগুলো জেগে উঠেছে। ছেলেটা গুনগুন করে কিছু একটা বললো, শোনা গেলো না, হাত চাপা দিলো বুকে, বড়ো হাঁ করে দ্রুত শ্বাস নিলো কয়েকবার, তারপর হঠাৎ চোখ বন্ধ করে দিলো, চেতনা হারালো।
এমন দৃশ্য জিয়া জুন আগে কখনো দেখেনি। হতবাক হয়ে পড়লো।
“অ্যাম্বুলেন্স ডাক।” ছেলেকে কোলে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো মিন হুয়ে আর দৌড়োতে শুরু করলো।
“দেরি হয়ে গেছে।” জিয়া জুন মাটির থেকে তুলে নিলো ই-ডঙ্কিটাকে, “হাসপাতাল সামনেই, বসে পড়ো গাড়িতে, আমি তোমাকে নিয়ে যাবো।”
মিন হুয়ে সু ছনকে জড়িয়ে ধরলো, বসলো ই-ডঙ্কির পেছনের সিটে। মা আর ছেলেকে নিয়ে পূর্ণ গতিতে গাড়ি চালিয়ে জিয়া জুন চললো হাসপাতালে।
***
কপাল ভালো, ঝৌ রু জি তখনো কাজ করছিলো হাসপাতালে। দৌড়ে ওয়ার্ডে পৌঁছে জরুরি চিকিৎসার সমস্ত ব্যবস্থায় লেগে গেলো মিন হুয়ের টেক্সট মেসেজ পাওয়া মাত্র।
সু ছনের অসুখে পড়া এই প্রথম নয়। কিন্তু এই প্রথমবার অসুখ এতো ভয়াবহ যে সু ছন কোমায় চলে গেছে।
আগে, যখন ঝৌ রু জি সঙ্গে ছিলো, তখন বাচ্চার শরীরের যে কোনো লক্ষণ - যেমন হাঁপধরা, রাতে ঘামা, সায়ানোসিস, হৃৎস্পন্দনের বেড়ে যাওয়া - ঝৌ রু জিকে সতর্ক করে দিতো আর তখনই বাচ্চাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যেতো পরীক্ষা করানোর জন্য।
সু ছনের জন্মের পরে, প্রথম তিন বছর মিন হুয়ে সাহসই করে নি বাড়ির বাইরে গিয়ে কাজ করতে, যাতে সু ছনের প্রতি কোনো অবহেলা না হয়। ও বাড়িতে থেকেই কাজ করেছে। সু ছন শান্ত বাচ্চা। খেলতে বা মারপিট করতে পছন্দ করে না। কিন্ডারগার্টেনের টিচাররাও সু ছনের খুব যত্ন নেন। ওকে কোনো ভারি পরিশ্রমের অনুশীলনে নেন না। সেই জন্যই এতোগুলো বছর সু ছন যত্নে সুরক্ষিত ছিলো, যদিও ওর হার্টের অসুখ আছে, কিন্তু তাতে ওর স্বাভাবিক জীবনে কোনো বিঘ্ন ঘটে নি।
কিন্তু, মিট্রাল ভাল্ভ ম্যালফর্মেশন এর কারণে সামান্য গঠনগত পরিবর্তন ঘটলেই সু ছনের অবস্থা গুরুতর হয়ে দাঁড়াবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। হৃৎপিন্ডের সুস্থতার জন্য আর দুর্ঘটনা এড়াতে অস্ত্রোপচার করে সারাইয়ের চেষ্টা করতেই হবে একবার না একবার।
মিন হুয়ে জানতো এ দিনটা একদিন আসবেই, আর ভাবতো যে সেই দিনটা অনেক দূরে নিশ্চয়ই।
যেহেতু ভালভের সার্জারি মানে থোরাকোটমি হবে মানে বুক অন্তত পঁচিশ সেন্টিমিটার মতো মানে প্রায় দশ ইঞ্চি লম্বা ক্ষত হবে বুকে। ডাক্তার বুকের মধ্যেকার পাঁজর জোড়ার ফলকের মতো হাড়টাকে চিড়ে ফেলবেন, কেটে ফেলবেন হৃদপিন্ডকে ঘিরে থাকা আবরণটা, থামিয়ে দেবেন হৃদপিন্ড, তা সত্ত্বেও যাতে শরীরের বাকি সব অঙ্গে রক্ত চলাচল না থামে তার জন্য শরীরের বাইরের যন্ত্র দিয়ে হৃদপিন্ড আর ফুসফুসের কারবারে যেভাবে রক্ত শুদ্ধ হয়ে যারা শরীরে ছড়িয়ে যায় আর সারা শরীর থেকে রক্ত ফিরে আসে শোধনের জন্য সেই ব্যবস্থাটা তৈরি করবেন, তবে সারাই হবে হৃদপিন্ড।
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এ যাতীয় অস্ত্রোপচারে জীবনের ঝুঁকি অনেক বেশি।
সেই জন্যই এই কটা বছর মিন হুয়ে সর্বান্তকরণে এই ভাবনাটাকে এড়িয়ে গেছে, অস্বীকার করেছে এই পরিস্থিতিটার কথা ভাবতে। মিন হুয়ে জানে না এই পরিস্থিতিটার মুখোমুখি হবে কিভাবে। ওর আরো দুশ্চিন্তা হলো এই যে সু ছন এই যাতীয় ভয়ঙ্কর অস্ত্রোপচারের ধকল সইতে পারবে কিনা।
সু ছনের অবস্থাটার থেকে নিস্তার পাবার কয়েকটা ব্যবস্থা দেবার পরে, কয়েকটা পরীক্ষা-নিরিক্ষা করার পরে, সু ছনকে আবার ওয়ার্ডে ফিরিয়ে দেওয়া হলো। যে ডাক্তার সু ছনকে দেখছিলেন তাঁর সঙ্গে কয়েকটা কথা বলার বলে ঝৌ রু জি মিন হুয়ের কাছে এসে জানালো, “এখনকার মতো সু ছন খানিক সামলে উঠেছে। কিন্তু ওর হৃদপিন্ড দুর্বল হয়ে আছে এখনো। হৃদপিন্ড বড়োও হতে শুরু করেছে। যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করতে হবে।”
মিন হুয়ের হৃদপিন্ড থমকে গেলো এক মূহুর্তের জন্য : দিনটা তাহলে এসেই গেলো। ঝৌ রু জির হাত শক্ত করে ধরলো মিন হুয়ে, অসহায় তাকালো ঝৌ রু জির দিকে, “ও তো এখনো খুব বাচ্চা। আর একটু অপেক্ষা করা যাবে না? আমার একটাই ভয় যদি আমার ছেলেটা এই অপরেসনের ধকল না নিতে পারে?”
“আমরা আর অপেক্ষা করতে পারবো না। ওর ভাল্ভটা সারাতেই হবে যতো শিগগির সম্ভব যাতে রক্তের ব্যাকফ্লো মানে রিগারজিটেশন মানে ভাল্ভ দিয়ে রক্ত লিক করা আটকানো যায়। আজকের ব্যাপারটাই একটা খুব কঠিন সংকটজনক লক্ষণ।”
ম্লান মুখে জিজ্ঞেস করলো মিন হুয়ে, “কী করবে এখন?”
“প্রথমে আমরা চেষ্টা করবো যাতে ভাল্ভটা সারাই করা যায়। যদি দেখা যায় যে ভাল্ভটার অবস্থা এতোই খারাপ যে ওটা সারানো যাবে না, তাহলে ওটা বদল করতে হবে। দু ধরণের কৃত্রিম ভাল্ভ হয়, মেকানিক্যাল আর বায়োলজিক্যাল।”
ঝৌ রু জি ব্যাখ্যা করতে লাগলো, “মেকানিক্যাল ভাল্ভ বেশি দিন টেকে। যদি জিনিসিটা মানানসই হয় তবে ওটা বদলানোর দরকার নাও হতে পারে পরের কয়েক দশক ধরে, কিন্তু এটা ব্যবহার করতে হবে সারা জীবন। আর অ্যান্টিকোয়াগুলান্টস। বাচ্চাদের বয়স সাধারণত সাত বা আট হওয়া অবধি অপেক্ষা করতে হয় এই ভাল্ভ তাদের শরীরে লাগানো অবধি। বায়োজিক্যাল ভাল্ভ সাধারণত শুয়োরের হৃদপিন্ড বা গবাদি পশুর হৃদপিন্ডের থেকে বানানো হয়। অ্যান্টিকোয়াগুলান্টস লাগে না। তবে এগুলো খুব শক্তপোক্ত হয় না। ওগুলোকে আবার বদলানোর দরকার হয় অনেক সময়ে।”
“বুকটা কাটা কী খুবই জরুরী?” মরিয়া হয়ে জানতে চাইলো মিন হুয়ে, “আমি শুনেছি অনেক সার্জারি আছে যাতে বড়ো করে বুক কাটার দরকার হয় না, এমন কী রোবোট দিয়েও সার্জারি হয়ে যায়।”
“ওগুলোর কোনোটাই এখনো খুব পরিণত নয়। রঙীন আল্ট্রাসাউন্ড থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ছনছনের অবস্থাটা বেশ জটিল। ওর অবস্থাটাতে চলতি ওপেন হার্ট সাজারিই বেশি নিরাপদ।”
নিচু স্বরে বললো ঝৌ রু জি, “তুমি একদম চিন্তা কোরো না। আজকাল এ জাতীয় অপরেসন অনেক বেশি হারে সফল হয়।”
“কিন্তু ওর তো এখন মাত্র তিন বছর বয়স!” মিন হুয়ে থাকতে পারলো না আর, ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো।
“হ্যাঁ, বাচ্চাদের এ জাতীয় অপেরশনের জন্য উচ্চমানের প্রযুক্তি লাগে।” ঝৌ রু জি ধীরে ধীরে মিন হুয়ের হাত ধরে ঝাঁকাতে লাগলো মিন হুয়েকে স্বান্তনা দেবার জন্য, “বাচ্চাদের হার্টগুলো ছোটো আর ওদের রক্তবাহগুলোও অনেক বেশি ঠুনকো।”
“বিনচেং-এ সেরা কে?”
“কার্ডিওলজিস্ট?”
“ওয়াং ইশ, যিনি এই মাত্র ছনছনের প্রাণ বাঁচালেন তিনিই সেরা আমাদের হাসপাতালে।”
“এঁর থেকেও ভালো কেউ আছেন?”
ঝৌ রু জি ঘাড় নেড়ে বললেন, “আঁ জি হাসপাতালের চেং গুয়াং য়ি বাচ্চাদের হৃদপিন্ডের অসুখের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সেরা। কিন্তু সহজে তাঁকে রাজি করানো যায় না। বিন চেং-এ তিনি সেরা, এমন কি বলা যায় সারা দেশে তিনিই সেরা। চিকিৎসা জগতে তাঁর ডাক নাম ‘চেরি’।”
“চেরি?”
“কখনো জন্মদিনের কেক খেয়েছো? সব থেকে ওপরে ক্রিমের স্তর থাকে একটা। তার ওপরে থাকে একটা চেরি। যদি সারা দেশের হার্ট সার্জারির এক্সপার্টদের কেকের সাথে তুলনা করা হয় তো চেং গুয়াং য়ি ক্রিমের ওপরের চেরি।”
“সে তো ভালো কথা।” হড়বড় করে বললো মিন হুয়ে, “আমরা তাহলে এখনই আঁ জিতে ট্রান্সফার করে দি ছনছনকে। আর চেং গুয়াং য়িকে অনুরোধ করি অপরেসন করার জন্য।”
“উনি এখন চোঙ্গুয়োতে নেই।”
“কী?”
“উনি এখন সিঙ্গাপুরে একটা অ্যাকাডেমিক এক্সচেঞ্জে গেছেন। আগামী তিন মাস আসবেন না।”
“তাহলে আমি কাল সিঙ্গাপুরে যাবো, ওঁর কাছে প্রার্থনা জানাবো ফিরে আসার জন্য।” বলে ফেললো মিন হুয়ে।
“আমার আশঙ্কা তুমি নিশ্চয়ই এসব করবে না।” ঝৌ রু জি দেখলো মিন হুয়ের দিকে, একটা লম্বা শ্বাস ফেললো, চুপ করে গেলো।
"কেনো? আমি জানি ওঁকে নিমন্ত্রণ করে আনা কঠিন। কিন্তু আমি সব কিছু করতে রাজি আছি, ওঁকে নিমন্ত্রণ করে আনার জন্য।”
“উনি চেং ছিরাং-এর বাবা। আর অসংখ্য লোক তাঁর কাছে প্রার্থনা করে চলেছে রাতদিন।” বললো ঝৌ রু জি, “শুধু তোমার ছেলের জন্য দেশে ফেরা চেং গুয়াং য়ির জন্য অসম্ভব।”
সেই মূহুর্তে মিন হুয়ের মনে হলো ওর মস্তিষ্ক যেনো রক্তশূণ্য হয়ে গেলো ঝৌ রু জি যা বললো তাতে।
~~~~~~~~~~~~
সম্পূর্ণ বই বিনামূল্যে : https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96
Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-28.html
Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-30.html
No comments:
Post a Comment