৪২. ছ কোনা ভ্রু আঁকা পেন্সিল
মিন হুয়ের প্রাণমন উশখুশ করছিলো য়িন শুয়ের নোংরামির কথাটা ঝৌ রু জিকে বলার জন্য। মানুষের সাথে ব্যাক্তিগত সম্পর্কের বিষয়ে ঝৌ রু জি অনেক বেশি পরিণত মিন হুয়ের তুলনায়। ও হয়তো মিন হুয়েকে কিছু পরামর্শও দিতে পারবে। উল্টেপাল্টে ভেবে মিন হুয়ে স্থির করলো যে কিছুই বলবে না। ঝৌ রু জি বেশ করিৎকর্মা লোক। ওর সাথে য়িন শুয়ের সম্পর্কটা ভালোই। মিন হুয়ের এটাই ভয় যে ঝৌ রু জি কিছুতেই ব্যাপারটা গোপণ রাখতে পারবে না।
রাত নটার সময় মিন হুয়ে সে দিনের মতো কাজ শেষ করে বেরোলো অফিস থেকে। য়িন শু পৌঁছে দিয়ে গেলো সু ছনকে মিংসেন কমিউনিটিতে।
“বাচ্চা মানুষটার আজ খুবই খিদে পেয়ে ছিলো। তিনজনে ভালোই খেয়েছে, স্বাদেও আনন্দ পেয়েছে।”
য়িন শু পায়ে পায়ে হাঁটছিলো বাচ্চাকে কোলে নিয়ে, “ও পথেই ঘুমিয়ে গেছে। সোফাতে শোয়াবো নাকি বিছানায়?”
“আমাকে দিন, আমি শুইয়ে দিচ্ছি।”
সু ছনকে নিয়ে শোবার ঘরে নিয়ে গেলো মিন হুয়ে, লেপ দিয়ে ঢেকে দিলো, দরজা বন্ধ করে দিলো, ফিরে এলো বসার ঘরে।
চায়ের পাত্রটা তুলেই নিলো, একটু দ্বিধা নিয়ে বললো, “কি খাবে? চা নাকি কফি?”
“না, আমার কাজ আছে বাড়িতে, আমাকে শিগগির ফিরতে হবে।”
ও ফিরে দরজার দিকে গেলো, দু পা, দাঁড়িয়ে পড়লো, “মিন হুয়ে -”
“হুহ্?”
“আজ, পার্কিং লটে -”
মিন হুয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো, অনেক ক্ষণ কথা বললো না।
“আমি একজনকে দেখেছি, বাচ্চা কোলে নিয়ে, কাচের দরজার অপর পাড়ে। তখন আমি জানতাম না যে ওটা তুমি।” বললো য়িন শু, “পরে সাও মু ফোন করলো আর বললো যে তুমি আসছো আমার কাছে ছেলেকে দিতে, তাই আমি অনুমান করলাম -”
“ওটা আমিই ছিলাম।” মিন হুয়ে ঘাড় নাড়লো, শান্ত স্বরে জানতে চাইলো, “তোমার কী কিছু বলার আছে?”
ওর মুখ লাল হয়ে উঠলো, “নিশ্চয়ই।” অনেক ক্ষণ সময় লাগলো দ্বিধা কাটাতে, মাথা নিচু করলো, “আমার দোষ, এটা আমারই দোষ। আমি হালে … জানি না ভুলটা কী … এক কথায় … সাও মুকে বোলো না, প্লিজ? অনুরোধ করছি?”
মিন হুয়ের দীর্ঘশ্বাস পড়লো, কিন্তু ঠান্ডা, “কিছু ঠিক করেছো? ভেবেছো কিছু?”
ওর দু চোখে ফাঁকা দৃষ্টি, মিন হুয়ের একটা কথাও যেনো বুঝতে পারছে না। বুঝিয়ে বললো মিন হুয়ে, “এই দুটো মেয়েমানুষের কোন জনের সঙ্গে থাকবে তুমি?”
“অবশ্যই সাও মুয়ের সাথে।” উৎসাহ নিয়ে বললো য়িন শু, “আমি তো শও ঝেনকে খুব বেশি দিন জানি না … আমি দুম করে কাজটা করে ফেলেছি …”
মিন হুয়ের বুকের মধ্যেটা কেঁপে উঠলো, “তাহলে ব্যাপারটা তুমি শুরু করেছো?”
“না, ও বলে ছিলো যে ও টেনিস শিখতে চায়, ও আমাকে শেখাতে বলে ছিলো। এমন কী গুরুত্ব দিতে ও একটা র্যাকেট, জার্সি, জুতো সব কিনেওছে - সাও মুয়ের একটা মেম্বারশিপ কার্ড আছে। ঐ কার্ডটার ফি বাবদ বছরে অনেক টাকা লাগে। সাও মু কার্ডটা ব্যবহার করে না। তাই ও কার্ডটা শও ঝেনকে দিয়ে ছিলো। ও প্রত্যেক দিন খেলতে আসে। আমিও থাকি ওখানে। তাই আমি ওকে শেখাই, যখন সময় পাই। আর কয়েকবার দেখা হবার পরে জানা শোনা হলো।”
“তাহলে - ও খেলতে আসে আর সে কথা সাও মু জানে?”
“হ্যাঁ। মেম্বারশিপ কার্ডটা তো ঐ দিয়েছে।”
“সাও মু সত্যিই হৃদয়বতী।”
কোনো একটা কারণে, মিন হুয়ের মনে পড়ে গেলো, সু তিয়াঁর কথা। প্রথম পরিচয়েই ও নিজের ব্যাগটার ওপর নজর রাখতে বলে ছিলো মিন হুয়েকে, আর অপরিচিতদের থেকেও আড়াল করতো না কোনো কিছু।
“এটা আমার দোষ। আমি ওর বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পারি নি। আমার আর শও ঝেনের দেখা হয় কেবল মাত্র টেনিস কোর্টে। পড়ানোর সময়ে তো বাচ্চারা থাকে। যা তুমি দেখেছো, তা ছাড়া আমরা আর কিছুই করি নি। ”
নিচু স্বরে ব্যাখ্যা করলো য়িন শু।
“যা আমি দেখেছি সেটা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।”
“তুমি সাও মুয়ের মেজাজ, মর্জি জানো। ওকে বোলো না, কেমন? আমি য়ে শও ঝেনের সাথে সম্পর্কটা ভেঙে ফেলবো এখনই। আর ভবিষ্যতে কোনো দিন এমন করবোও না।”
ঠান্ডা ঘামে ভিজে যাচ্ছিলো য়িন শু, আর যতো কথা বলছে, ততো ওর তাগিদ স্পষ্ট হয়ে উঠতে লাগলো, “আমি আমার পরিবার হারাতে চাই না। হারাতে চাই না আমার বউকে, বাচ্চাদের হারাতে চাই না, আমি ব্যাপারটা সামলে নেবো, আমাকে বিশ্বাস করো।”
“য়িন শু” গভীর শ্বাস নিলো মিন হুয়ে, ফের কেটে কেটে বললো প্রত্যেকটা শব্দ, “তোমার আর সাও জিয়ের মধ্যে কী হয়েছে তাই নিয়ে আমি কোনো বিচারে যাবো না। কিন্তু সাও জিয়ে আমার ভীষণ ভালো বন্ধু, আর আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে পারবো না যে কেউ ওঁকে দিনের পর দিন ঠকাচ্ছে। দশ দিন সময় দেওয়া হলো তোমাকে, তার মধ্যে তুমি সাও জিয়েকে সব কথা জানাবে। তোমাকে মাপ করা যায় কিনে সেটা সাও জিয়ের ব্যাপার, সাও জিয়ে ঠিক করবে। কিন্তু যদি তুমি সময়ের মধ্যে বলতে না পারো ওঁকে, তাহলে আমি বলব।”
য়িন শুকে মরিয়া দেখাছে, লজ্জিতও। একটু চুপ করে থেকে ও বলতে গেলো, কিন্তু ওর গলা বুজে এলো, “এরকম কোরো না মিন হুয়ে। আমি সাও মুকে ভালো বাসি। ও ক্যারিয়র নিয়ে আছে, আমি ওর ঠেকনা, আর এভাবেই আমরা সব সময়ে খুব সুখী। শুধু গত এক বছর, ও যেনো কেমন … আমি কিছু বুঝতে পারি না। ওর জীবনের সব উৎসাহ যেনো নিভে গেছে শুধু কাজ ছাড়া। আমি প্রচুর চেষ্টা করে চলেছি যাতে ওকে বুঝতে পারি, যাতে সব রকমভাবে ওর সাথে থাকতে পারি, কিন্তু ওর যেনো আমার প্রতি সব আকর্ষণ হারিয়েছে … এমন কী ও আমাকে ক্লাস রিইউনিয়নে অবধি নিয়ে গেলো না। আমার মন খুব ভেঙে গেছে। কিন্তু আমি হাল ছাড়তে চাই না। আমাকে আরো বেশি চেষ্টা করতে হবে। ওকে বোলো না, আমার বিবাহিত জীবনটা নষ্ট করে দিও না!”
“তোমার বিবাহিত জীবন আর কেউ তো নষ্ট করে নি, তুমি নিজে করেছো।” শান্ত স্বরে বললো মিন হুয়ে, “আমি আশা করবো যে তুমি তোমার ভুল সব শুধরে নেবে। আর তোমার বউয়ের ক্ষমা অর্জন করবে। সাও জিয়ে খুবই দয়ালু মানুষ। তিনি কাজ আর পরিবারের বাইরে কিচ্ছু জানেন না। পরিস্থিতি হয়তো যতোটা ভালো মনে করছো, ততোটা ভালো নয়। সব থেকে খারাপ ব্যাপার হলো যে উনি তোমার চেষ্টাটাও দেখতে পান। প্রেমে সব থেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো শ্রদ্ধা, বিশ্বাস আর সততা। তোমাকে সত্যিটা স্বীকার করতেই হবে, অনুতাপ করতেই হবে। না হলে তুমি সাও জিয়ের কাছে অপরাধীই রয়ে যাবে।”
“তুমি জানো না সাও মুকে …”
বিড়বিড় করতে লাগলো য়িন শু। ঘুরে দাঁড়ালো দরজা খুলে একটা ঘোরের মধ্যে হেঁটে গেলো।
***
সে রাতে মিন হুয়ে কাজে বসলো আর কাজ চললো ভোর পাঁচটা অবধি। দিনের আলো ফুটতে মিন হুয়ে আর সইতে পারলো না, সোফায় শুয়েই ঘুমিয়ে পড়লো। ওর ঘুম ভাঙলো দরজায় টোকার শব্দে। দরজা খুললো একটা ঘোরের মধ্যে।
চেন জিয়া জুন দাঁড়িয়ে দরজায়। মুখে হাসি, হাতে প্লাস্টিক ব্যাগ, “জিয়ে, আমি জলখাবার নিয়ে এসেছি। মাংস দেওয়া বাওজি সঙ্গে সয় দুধ আর ভাজা আটার কাঠি ইয়োতিয়াও, তোমার আমেরিকানো।”
ইয়োতিয়াও |
এতোক্ষণে মিন হুয়ের মনে পড়লো যে সু ছনের খেয়াল রাখার জন্য জিয়া জুনকে দু দিনের জন্য ডেকেছে ও নিজেই। হাই তুলতে তুলতে ও জিয়া জুনকে দরজা ছেড়ে দিলো, “ছন ছন এখনো ঘুমোচ্ছে।”
“তুমি আগে খাও, তারপর কাজে যাও। বাকি সব আমার ওপর ছেড়ে দাও। আমি এগুলো ওর জন্য তাতিয়ে দেবো পরে।”
জিয়া জুন একটা ঝটাকা দিয়ে বসার ঘরের পর্দা টেনে সরিয়ে দিলো। চোখ ধাঁধানো রোদ ঝামড়ে পড়লো ঘরের মধ্যে। কফিতে একটা লম্বা চুমুক দিলো মিন হুয়ে, তবে ওর ঘুম যেনো অনেকটা কাটল।
“একটা কথা, দুপুরে শও ঝেন আসবে পড়াতে। আসলে আমাদের লাইব্রেরিতে বসার কথা ছিলো। ওখানে বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়া মানা। তাই আমরা জায়গাটা বদলে বাড়িতে পড়ার ব্যবস্থা করে নিয়েছি। তোমার আপত্তি নেই তো?”
মিন হুয়ে তাকিয়ে রইলো জিয়া জুনের দিকে অনেক ক্ষণ।
সেদিকে জিয়ে জুন মন দিলো না। দুটো প্লেটে ইয়োতিয়াও আর বাওজি ভাগ করে সাজাতে লাগলো। “পড়ার পরে রাতের খাওয়া অবধি ওকে থাকতে বলতে চাই আমি। আমি ভেটকি মাছ, শুয়োরের পাঁজরের মাংস আর গলদা চিংড়ি এনেছি। কখন ফিরবে তুমি কাজ থেকে, জিয়েজিয়ে, আমরা একসঙ্গে খাবো না হয়?”
বলার সময় জিয়া জুনের গালে রক্তিমা ছড়িয়ে যাচ্ছিলো। গলার স্বরে মিশে ছিলো ব্রীড়া, মিন হুয়ের দিকে তাকাতে সাহস করছিলো না, যেনো ও ওর প্রেমিকাকে নেমতন্ন করেছে। মিন হুয়ে আপন মনে ভাবলো, ঠিক সময়েই ঘটছে সব কিছু, মিন হুয়ে তো য়ে শও ঝেনের মুখোমুখি হবার কথাই ভাবছিলো। তাই বললো, “সাড়ে ছটা, ঠিক হবে তো?”
“ওকে।”
সকালে একটা নিয়মিত মিটিং থাকে। ঝটপট পরিষ্কার হয়ে নিয়ে মিন হুয়ে দৌড়োলো কোম্পানিতে। দেখতে পেলো সাও মুকে, একটা বারবেরি ট্রেঞ্চকোট আর আট সেন্টিমিটার হিল পরে। কথা বলছে ইয়াং বেই বেই -এর সাথে, করিডরে, যেমন অন্যদিনে বলে। মিন হুয়েকে দেখতে পেয়ে আটকালো, “আমার অফিসে যাও। তোমাকে আমার কিছু বলার আছে।”
বারবেরি ট্রেঞ্চকোট |
আট সেন্টিমিটার হিল |
মিন হুয়ের বুক ধড়ফড় করে উঠলো। ভাবছিলো য়িন শু বুঝি স্বীকার করেছি তার দোষ। সাও মু বুঝি মিন হুয়কে ডাকছে সত্যাসত্য যাচাই করার জন্য। আগের রাতটা বড়ো অস্থিরতায় কেটেছে মিন হুয়ের। কেবল ভেবেছে আর ভেবেছে দিনের বেলায় যা ঘটেছে সে কথা, আর ও কী বলেছে। ও ভেবে ছিলো য়িন শু মোটেই মানবে না তার নিজের দোষ। কিন্তু মিন হুয়ে মোটেই আশা করে নি যে একবার বলতেই সব কিছু য়িন শু বলে দেবে সাও মুকে। মনে হচ্ছে যেনো য়িন শু প্রথমবার দোষ করেছে, যেনো ও আর শও ঝেনের ব্যাপারটা যেনো মোটেই গুরুত্বপূর্ণ নয় যে ওরা একসাথে শোবে, পালাবে তারপর বিয়ে ভাঙার ষড়যন্ত্র করবে।
সাও মু যদি রেগে যায় ভেবে মিন হুয়ে তৈরি হচ্ছিলো কী করে সাও মুকে বোঝাবে, যদি দরকার পড়ে, ও য়িন শু সম্পর্কে ভালো ভালো কথা কী বলতে পারে।
যেহেতু য়িন শু অনুতপ্ত হৃদয়ে সব কথা বলেছে সাও মুকে, সেহেতু সাও মুয়ের উচিৎ ওকে আরেকটা সুযোগ দেওয়া। দশ বছরের বেশি সময় ধরে তিলে তিলে গড়ে তোলা একটা সুন্দর পরিবার, কী দুঃখের কথা।
দূর্বল মনে আফিসে ঢুকে, সাও মু দরজাটা বন্ধ করে দিলো। নিচু গলায় বললো, “কাল রাতে দুম করে দং লি গ্রুপের ফ্যাঁ জঁ আমাকে রাতের খাবার নেমতন্ন করে ছিলেন। মনে হচ্ছে যে হেড কোয়ার্টার যে বা’অ্যান বেচে দিতে চাইছে সে খবরটা পাকা।”
“ফ্যাঁ জঁ? ফ্যাঁ দংখুই?’
“হ্যাঁ।”
ফ্যাঁ দংখুই দং লি গ্রুপের সিইও। এমআইটি থেকে পাশ করে বেরিয়ে তিনি চোঙ্গুয়োতে ফিরে একটা ব্যবসা শুরু করে ছিলেন। ওঁর সাথে অনেকবার মিন হুয়ের দেখা হয়েছে কিন্তু কখনোই খুব গভীর কোনো আলোচনা হয় নি। শিল্পক্ষেত্রে গুজব যে লোকটা উদ্ধত, তবে প্রতিভার কদর করেন খুবই। যাঁদেরকে তাঁর পছন্দ, সেই সব লোকেদের নিজের কোম্পানিতে আনার জন্য খরচ করতে দ্বিধা করেন না। দং লি গ্রুপও ইন্টারনেট থেকে শুরু করে ছিলো গুয়ান ছাও ইন্টারন্যাশন্যালের মতো। আর এখন কিছু কিছু বিনিয়োগ করছে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলেজেন্সের কয়েকটা ক্ষেত্রেও। ওদের লক্ষ্য তিনটে এলাকা - স্মার্ট চিকিৎসা পরিষেবা, স্মার্ট গাড়ি আর নতুন খুচরো ব্যবসা। ফ্যাঁ দংখুইয়ের যা স্বভাব সেই অনুযায়ী খবর পাকা না হলে উনি সাও মুকে সহজে ডাকতেনও না আর সন্ধি প্রস্তাবও দিতেন না।
“দং লি নিতে চায় বা’অ্যান। আমার সাথে কথা বলে রাস্তাটা বুঝে নিতে চেষ্টা করছে।”
মিন হুয়ে নিশ্চিন্তির শ্বাস ফেললো, সাও মু যে য়িন শুয়ের অসভ্যতা নিয়ে কোনো কথা বলে নি সেটা ভেবে, “তাহলে কী সম্ভাবনা আছে যে দং লি আমাদের নিয়ে নেবে?”
“খুব বড়ো কোম্পানি। দং লিকে ধরে নেওয়া হয় ইন্ডাস্ট্রির মহীরুহ বলে। ওদের পয়সারও অভাব নেই। ওরা জিততে চাইলে প্রতিযোগিতায়, অন্য কোম্পানি হয়তো ওদের সাথে পেরে উঠবে না।”
বা’অ্যানের ভবিষ্যতের কথা যে মিন হুয়ে একদম ভাবে নি তা নয়। দং লির সাথে বা’অ্যান মিলে গেলে বেশ ভালোই হবে। একটাই কারণ যদি বেছে বার করা যায় তো সেটা হলো দং লি মেডিক্যাল এআইতেই কাজ করে। ইন্টারনেটে পাওয়া তথ্যের ওপরে নির্ভর করে, কিন্তু ওরা মূলত একটা ক্লাউড ভিত্তিক রোগ নির্ণয়ের আর চিকিৎসার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে। অনেকগুলো আলাদা আলাদা প্রোডাক্ট আছে ওদের এমন নয়। এই খামতিটাই পূরণ করতে পারে বা’অ্যান। তার মানে হলো যে পুরো টিম আর প্রজেক্টগুলো রাখা যাবে। কোনো কর্মী ছাঁটাই বা টিম ভাঙার প্রশ্ন নেই।
দ্বিতীয়ত, দংলির পুঁজির যোগান অনেক, লেগে থাকার জোর আছে, ঝটপট বিনিয়োগের টাকা ভাঙিয়ে ফেলার তাগিদ নেই। এতে টেকনিক্যাল কাজটা করার জন্য অনেক বড়ো জায়গা আর আরামে গবেষণা আর উন্নয়নের কাজ করার মতো সুযোগ পাওয়া যাবে।
“হেড কোয়ার্টার্সের মেজাজ মর্জি কেমন? কতগুলো খদ্দের আছে?” মিন হুয়ে আবার এও জিজ্ঞেস করলো, “হে হাই শিয়াং জানে বলে মনে হচ্ছে না, আর ও এ ব্যাপারে কিছুই করছে না।”
“আমাদের জোর করে জিএস১.০ যতো শিগগির সম্ভব ততো শিগগির বাজারে এনে ফেলাটা ওর সব থেকে বড়ো চাল। এতে বা’অ্যানের দাম হু হু করে বেড়ে যাবে।”
“দং লি যদি আমাদের নিয়ে নেয়, তাহলে হে হাই শিয়াং কী আমাদের সাথে যাবে? নাকি হেড কোয়ার্টার্সে থেকে যাবে?”
“সবটাই নির্ভর করছে দং লি ওঁকে কী শর্ত দেয় তার ওপরে। বা’অ্যান যদি দং লির অংশ হয়ে যায়, তবে হে হাই শিয়াং আর সিইও থাকবে না। দং লির মাপটা য়ুআঁলাই-এর থেকে অনেক বড়ো। ওদের বিভাগও অনেকগুলো। সেই সময়ে ওঁকে আর উঁচু তলার কর্মকর্তা বলে মনে নাও করতে পারে ওরা। আর ম্যানেজার হিসেবে ওর কাজ করার অন্য অনেক লোক আছে।” সাও মুকে চিন্তিত দেখালো, “আমি যদি ওঁর জায়গায় থাকতাম, তো আমি অনেক দূরে থাকাটাই পছন্দ করতাম।”
যদিও মিন হুয়ে বা সাও মু কেউই হে হাই শিয়াং-কে পছন্দ করে না, কিন্তু দুজনে জানে যে অন্য কোম্পানিতে বা’অ্যান মিশে যাবার বিষয়টাতে হে হিয়া শিয়াং-এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। হেড কোয়ার্টার্সের সাথে ওঁর বিশদ যোগাযোগ আর সম্পর্কের কারণে, উনি হয়তো হেড কোয়ার্টার্সের মতামত আর সিদ্ধান্তকে খানিক প্রভাবিতও করতে পারবেন।
সাও মু হয়তো মিন হুয়ের উদ্বেগটা বুঝতে পারলো, তাই মুখে হাসি রেখে বললো, “হেড কোয়ার্টার্সের একটা বিশেষ বিভাগ আছে যারা কেবলমাত্র মার্জার আর অ্যাকুজিসনের ব্যাপারটাই দেখে। আবার হে হাই শিয়াং তো আর বোঝাপড়ায় অংশ নেবেন না। মূল দরকারটা পয়সারই। তাই একটাই নীতি কাজ করবে এখানে, সব চাইতে বেশি দাম যে দেবে কোম্পানি তার।”
“আমার কেমন যেনো মনে হচ্ছে যে এক্ষুণি বুঝি বৃষ্টি নামবে।”
মিন হুয়ে জানলার বাইরের সাদা মেঘগুলোতে চোখ রাখলো।
“ভয় পেয়ো না। আমি আছি তো।” সাও মু হাসলো, মিন হুয়ের মুখে একটা হালকা চিমটি দিলো, “অ্যাই, কী মাস্ক ব্যবহার করছো আজকাল, তোমার মুখটা এতো চকচকে আর নরম?”
“এতো সেই বাক্সটা যেটা তুমি আমাকে আগেরবার দিয়ে ছিলে - এক্স-বয়ফ্রেন্ড মাস্ক - আমি এখনো মেখে শেষ করতে পারি নি।”
মিন হুয়ে নিজের রূপের যত্ন করে। অনেক সময় কম্পিউটার প্রোগ্রাম লেখার সময়েও মুখে মাস্ক মেখে রাখে। সাও মুয়েরও একই রকম সব ব্যাপারে উৎসাহ। প্রায়ই দুজনে ত্বকের যত্নের বিষয়ে অভিজ্ঞতার আদানপ্রদান করে।
“চলো, মিটিং-এর সময় হয়ে গেলো।”
মিন হুয়ে মনে মনে ভাবলো যেহেতু য়িন শু স্বীকার করেন নি তার দোষ, মিন হুয়েও আর জোর করবে না ওকে। বা’অ্যানের ভবিষ্যত অজানা, টিম টিকিয়ে রাখার জন্য ওকে আর সাও মুকে একটা যুদ্ধ লড়তে হবে। এই মূহুর্তে মাথা ঘামানোর জন্য আরো একটা ঝামেলায় জড়ানোর থেকে ভালো আরেকটা ঝামেলার বিষয় ঝেড়ে ফেলা।
***
নিয়মিত মিটিং-এই হে হাই শিয়াং ঘোষণা করলেন যে বা’অ্যান বিক্রি হয়ে যাবে। সমস্ত কর্মীদের মনোবল ধরে রাখার জন্য উনি বার বার বলতে লাগলেন যে উনি বিক্রির ব্যাপারটায় নজর রাখবেন, সকলকে ভরসা দিতে লাগলেন যে উনি দেখবেন বা’অ্যান যেনো উপযুক্ত হাতে পড়ে।
একই সঙ্গে উনি এই আশাও প্রকাশ করলেন যে সবাই হেড কোয়ার্টেয়ার্সের সঙ্গে সহযোগিতাও করবে মার্জারের আগে কয়েকটা ব্যাপারে যার মধ্যে পড়বে মূল্য নির্ধারণ আর মূল্যের সপক্ষে প্রমাণ সংগ্রহ, আন্তরিক অধ্যাবসায় ও পরিশ্রম, ইত্যাদি।
কোম্পানির মধ্যে আবহাওয়াটা আতঙ্ক আর উত্তেজনায় ভরপুর। এর কোনোটাই মিন হুয়ের ওপরে কোনো প্রভাব ফেলে নি। ডেডলাইনের দিকে তাকিয়ে ও প্রায় উন্মত্ত হয়ে প্রোগ্রাম লিখে চললো।
দুপুরে খাবার সময়ে একটা অপ্রত্যাশিত ফোন কল এলো দেঁ চেনের কাছ থেকে, “তোমার সাথে দেখা করতে চাই। পারবে?" বললেন দেঁ চেন, “তোমার থেকে মাত্র দশ মিনিট নেবো।”
“কী ব্যাপার? ফোনে বলা যাবে না?”
“আমি তোমাকে একটা জিনিস দেবো। আমি দু তলার কফির দোকানে আছি। নেমে আসবে?”
মিন হুয়ের মনে পড়ে গেলো যে ওর একটা শাখা অফিস আছে বিনচেং-এ। হতে পারে যে ও প্রায়ই আসে বিনচেং-এ। তাই মিন হুয়ে বললো, “ওকে।”
এর আগে দেঁ চেনকে ও একবারই দেখেছে। এই বারে দ্বিতীয় বার দেখা হলো। দেখে মনে হলো না যে লোকটা বিশেষ বদলেছে, শুধু একটু টাক পড়ে গেছে। এখনো একটা কালো তাং স্যুট পরে আছে। আর বয়ে বেড়াচ্ছে একটা কালো স্যুটকেস। রিপাবলিক অফ চায়নার কালের সিনেমার পর্দা থেকে একজন চর উঠে এলেন যেনো।
“হাওজিউ বুজিয়াঁ” ওঁর মুখে সেই রহস্যজনক অভিব্যক্তি। “কেমন আছো?”
“খুব ভালো। আপনার খবর কী?”
“আমারও খুব ভালো।”
শুভেচ্ছা দেওয়া নেওয়া হয়ে যেতে দেঁ চেন একটু কাশলেন, “শিন ছি আমাকে আসতে বললো কয়েকটা জিনিসের জন্য। ওর ছেলের ব্যাপারে কথা বলা যাক।”
মিন হুয়ে ভ্রূ তুললো, “ও নিজে কেনো আসতে পারলো না এখানে?”
“ও বেজিং-এ ফিরে গেছে।”
মিন হুয়ে ভাবলো, দেঁ চেন হয়তো এখানে এসেছে তদবির করতে, বাজে কথা বাদ দিয়ে সোজাসুজি কাজের কথা বলে নিলেই সহজ সমাধানে পৌঁছোনো যাবে, “আমি আবারও বলছি, সু ছন বিনচেং ছেড়ে যাবে না।”
“আমি জানি। আমি জানি।”
বাঁকা হাসি হেসে দেঁ চেন বললেন, “ঘাবড়ে যেও না। শিন ছি তোমাকে কিচ্ছু করবে না। তুমি একলাই বাচ্চার খেয়লা রেখে চলেছো, কাজে ব্যস্ত থাকো, ও শুধু একটু সাহায্য করতে চায়।”
“আমার কোনো আপত্তি নেই।”
মিন হুয়ে কফিতে একটা চুমুক লাগালো, ভাবছিলো বা’অ্যান শিগিগির বিক্রি হয়ে যাবে, অনেক কিছু ঘটতে থাকবে। ঘরেবাইরে ঝঞ্ঝাটের এরকম একটা সময়ে সু ছন আবার অসুস্থ। মিন হুয়ে খুবই ক্লান্ত আর অগোছালো হয়ে আছে। এরকম একটা সময়ে শিন ছি সাহায্য করলে ভালোই হয়।
“যে অ্যাপার্টমেন্টটায় এখন আছো, শিন ছি মনে করে যে সেটা নিরাপদ কিংবা আরামদায় কোনোটাই নয়।”
ভ্রূ কুঁচকে মিন হুয়ে বললো, “বেশ নিরাপদ।”
“আমি কিছু খোঁজখবর করেছি। মিংসেন কমিউনিটিতে অপরাধের হার বেশ বেশি, পাশেই ছ্যুনতাং গার্ডেনের তুলনায় দু পয়েন্ট বেশি। আশে পাশে গুন্ডা বদমাস প্রচুর। মাঝে মাঝেই লুঠ আর চুরির কথা শোনা যায়। সু ছনের অসুস্থতার এটাও একটা কারণ বটে। তোমার অ্যাপার্টমেন্টের দরজা জানলাগুলো ভেঙে দিয়ে ছিলো না একবার …”
“...”
“শিন ছি তোমার জন্য একটা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়েছে। ছ্যুনতাং গার্ডেনের ব্লক ‘এ’-তে। এই হলো চাবি। ভেতরটা পরিষ্কার করা আছে। তুমি যে কোনো দিনই চলে যেতে পারো থাকার জন্য। ওখানে গিয়ে থাকার জন্য তোমার যদি কোনো সাহায্য লাগে তার জন্যও লোক আছে।”
উনি স্যুটকেসটা খুললেন। হাতের তালুর মাপের একটা ঝুলি বার করলেন। দিলেন মিন হুয়ের হাতে।
“ভাড়া কী খুব বেশি? আমি খানিকটা দিতে পারি।”
“ভাড়া ঐ দেবে। আর তাছাড়া -” উনি একটা ব্যাঙ্ক কার্ড দিলেন মিন হুয়ের হাতে, “এটা সু ছনের খরচ-খরচার জন্য দিয়েছে। এর সবটাই শুধু ওর জন্য - ওর টিউসন, গাড়ি ভাড়া, চিকিৎসার খরচ, ওর দেখাশোনা যারা করবেন তাঁদের খরচ, খেলনার খরচ, খাবার খরচ … সবই এর থেকে দেওয়া যাবে, কেবলমাত্র যা বললাম সে সবের জন্যই খরচ করা যাবে, আর সিক্রেট কোড ০০৬০২৭। বড়ো মাপের কোনো খরচ করতে হলে ওর সম্মতি দরকার।”
“বড়ো খরচ? কতো বড়ো?” মিন হুয়ে জানতে চাইলো, “তিন হাজার? পাঁচ হাজার?”
“পঞ্চাশ লাখ”
“...”
“ও আমাকে বলেছে দুজন পুরো সময়ের ন্যানি খুঁজতে তোমাকে যেনো সাহায্য করি। দুজনেই কাজ চলে যাওয়া নার্স যাঁদের বাচ্চা দেখাশোনা করার অভিজ্ঞতা আছে। অবশ্যই তুমি অন্য কাউকে খুঁজে নিতে পারো। কিন্তু পরামর্শ হলো যে তুমি এঁদেরই কাজে বহাল করো। কারণ এঁদের ব্যাপারে সব রকম খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে, তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারো এঁদের চরিত্র, কাজের মান আর দক্ষতা নিয়ে।”
“একটা ন্যানিই যথেষ্ট।” বললো মিন হুয়ে।
“দুজন হলে আরো ভালো হয়। একজন যদি ক্লান্ত থাকে, তবে বাচ্চার প্রতি আচরণে তার প্রভাব পড়বে। একজন বিশ্রাম করবে যখন তখন অন্যজন কাজ করবে, ইয়ুন লু।”
“ইয়ুন লু?” মিন হুয়ে অবাক হলো, “রান্নার লোক?”
“হ্যাঁ। তোমাদের দিনের তিনটে ভরপেট খাবারের দায়িত্ব ইয়ুন লুয়ের। যখন সময় হবে, ও আসবে রান্না করতে। ও নিজেই চলে যাবে, যখন কাজ হয়ে যাবে।”
লাও জু তাঁর ছেলেকে বলে ছিলেন, “পয়সা থাকলে কার্পণ্য কোরো না, আবার এক মূহুর্তে সব উড়িয়েও দিও না।” কিন্তু মিন হুয়ে খুব বেশি সুবিধেও নিতে চায় না, “ঠিক আছে। আমার তিন বেলার খাবারের কথা ভাবতে হবে না, ও শুধু সু ছনের খাবার রান্না করলেই হবে।”
“ওর জন্য, একজনের রান্না করাও যা দুজনেরও তাই। তুমি যদি, যদি তুমি বাড়িতে না খাও তবে ওকে আগে থেকে জানিয়ে দিলেই চলবে।”
“ওকে, শিয়া শিয়া।”
“আরো আছে। শিন ছি চার জন টিউটর ঠিক করেছে বাচ্চার জন্য, পিয়ানো শেখাবেন একজন, ছবি আঁকা আরেকজন, ইংরেজি একজন আর হাতের কাজ আরেকজন। আমি এরও ব্যবস্থা করে ফেলেছি। তুমি শুধু সময়গুলো ঠিক করে আমাকে বললেই হবে।”
“ওকে।”
“যে কোনো সময়ে যাতে বাচ্চাকে দেখতে পারে সেই জন্যই সু ছনের বেড রুমে নানান জায়গায় অনেকগুলো হাই ডেফিনিসন ক্যামেরা লাগানো আছে। আশা করি তুমি কিছু মনে করবে না।”
“আমি একদম কিছু মনে করছি না।”
“ওর আশা যে ও ঘন ঘন ভিডিও কলে কথা বলতে পারবে বাচ্চার সঙ্গে। ও যদি কখনো অনুরোধ করে আর যদি তোমার সময় থাকে তো বারণ কোরো না দয়া করে।”
“না, না।”
“ও মাঝেমধ্যে আসবে বিনচেং-এ ছেলের সাথে দেখা করতে। ও তখন গেস্টরুমে থাকবে, কিছু মনে করবে না তো তুমি?”
“সব সময়ে আসতে পারে।”
“এসব ছাড়া, তোমার আর কী আছে? অসুবিধে, প্রয়োজন?”
“এই মূহুর্তে কিছু নেই।”
“যদি কিছু থাকে, আমাকে জানিও যে কোনো সময়ে, আমি তোমার জন্য সমাধান করে দেবো।”
“ওকে।”
“তাছাড়া, তোমার একজন ড্রাইভার আছে। এই তার বিজনেস কার্ড।” দেঁ চেন একট কার্ড দিলেন মিন হুয়েকে।
মিন হুয়ে এক ঝলক দেখে বললো, “আমি খুব একটা গাড়ি ব্যবহার করি না। আমি সাধারণত একটা ই-ডঙ্কি চড়ে কাজে আসি। কোনো তাড়া থাকলে, গাড়ি ডেকে নি।”
“ও যে কোনো সময়ে তৈরি থাকবে। তুমি গাড়িও ডাকতে পারো। একেও ডাকতে পারো, তোমার ব্যাপার।”
***
দেঁ চেন চলে যাবার পরে, মিন হুয়ে খুশি না হয়ে পারলো না। সু ছনের জন্মের সময়কার কুড়িটা ছবি খুঁজে বার করলো মোবাইল ফোনে, আর সেগুলো শিন ছিকে পাঠিয়ে দিলো। সঙ্গে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখল, “এই মাত্র দেঁ চেন-এর সঙ্গে দেখা করলাম, ফেছং গাংশিয়ে। ব্যবস্থাটা খুবই সময় মতো হয়েছে। তুই যে কোনো সময়ে বিনচেং-এ এসে ছন ছনের সাথে দেখা করতে পারিস।”
সারা দুপুর অপেক্ষা করলো। শিন ছির থেকে কোনো উত্তর পেলো না।
এমন কি একটা ইমোজিও নয়।
কাজ শেষ করে বেরোনোর পরে একটা মেক আপের দোকানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো। হঠাৎ মিন হুয়ের ইচ্ছে হলো ব্যাঙ্ক কার্ডটা কাজ করে কিনা সেটা দেখতে। ও সতেরো য়ুআঁ খরচ করে একটা ছ কোনা ভ্রু আঁকা পেন্সিল কিনলো।
ছ কোনা ভ্রু আঁকা পেন্সিল |
তক্ষুণি ফোনে একটা মেসেজ এলো শিন ছির থেকে, “একটা তিন বছরের ছেলের কী কাজে লাগবে ভ্রূ আঁকা পেন্সিল?”
মিন হুয়ে চটপট উত্তর দিলো, “ওটা আমি আমার জন্য কিনেছি।”
শিন ছি অমনি মনে করিয়ে দিলো, “ওটা আমার ছেলের খরচ চালানোর জন্য। দয়া করে ওটাকে নিজের ইচ্ছে মতো ব্যবহার করিস না।”
মিন হুয়ে ক্ষমা চাইলো, “দ্যুইবুচি, আমি এখনই ফেরত দিচ্ছি। উইচ্যাট পে?”
মিন হুয়ে বিরক্তির সঙ্গে একটা অতিরিক্ত শূণ্য দিয়ে একশো সত্তর য়ুআঁ দিয়ে ফেললো। শিন ছিও অমনি একশো তিপান্ন য়ুআঁ ফেরত দিলো।
মিন হুয়ের হৃদয় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। দেখা যাচ্ছে যে ওর ছেলের থেকেও খুব সহজে ও ধার পেতে পারে না …
~~~~~~~~~~~~
সম্পূর্ণ বই বিনামূল্যে : https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96
Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-41.html
Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-43.html
No comments:
Post a Comment