Saturday, August 17, 2024

JPDA - Chapter 11

১১. প্ল্যান-বি

 


ট্যাক্সিতে বসে, দুজনে অনেকক্ষণ কথা বললো না একটাও।

পরিবারের প্রতি, আপনজনেদের প্রতি ভালোবাসা চট করে নকল করা যায় না। সু তিয়াঁর অপূর্ণ ইচ্ছেগুলো পূরণ করার দায়িত্ব এখন মিন হুয়ের। সেই জন্যই মিন হুয়েকে এখন সু তিয়াঁর ভাইকে খুঁজে বার করতেই হবে। তার থেকে বেশি কিছু মিন হুয়ে ভাবছে না।

যাই হোক, সে তো আর সত্যি সত্যিই মায়ের পেটের বোন নয়। আর ব্যাপারটাও খুব সাধারণ পথে চলছে না। তং মিংহাও-এর বয়স এরমধ্যেই তেইশ হয়ে গেছে। সে যদি পড়াশোনা করে থাকে, তবে তার এতো দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকে গেছে আর সে কাজ করে। সে যদি পড়াশোনা না করে আর বহুদিন ধরে যা কাজ পায় তাই করে, তবে তার এতোদিনে নিশ্চয়ই নিজের পরিবার আছে। তেমন হলে তার আর বড়ো দিদিকে তেমন একটা দরকার নেই।

মুস্কিলে পড়লেই মিন হুয়ে মনে মনে একটা প্ল্যান-এ আর আরেকটা প্ল্যান-বি তৈরি করে নেয়। সব থেকে খারাপ অবস্থা হতে পারে যে ভাই-এর একদম পয়সাকড়ি নেই, নেই কোনো বন্ধু, ভাই একদম একলা, ভাইয়ের আর্থিক আর মানসিক অবস্থা দুয়েরই অবলম্বন লাগবে। সেক্ষেত্রে মিন হুয়ে ভাইয়ের কাছাকাছি থাকতে তৈরি, ভাইকে ভালোবাসা দিতে তৈরি আর পারিবারিক সাহচর্য দিতে তৈরি। মিন হুয়ে নিজে যদিও একমাত্র সন্তান আর তার নিজের কোনো অভিজ্ঞতা নেই বড়ো বোন হবার। কিন্তু তেইশ বছরের একটা ছেলে বাচ্চা তো আর নয়। তাই মিন হুয়ের মনে হয় নি যে সু তিয়াঁর ভাইয়ের ‘জিয়েজিয়ে’ হওয়াটা খুব বড়ো একটা সমস্যা হবে।

কিন্তু পরিস্থিতি আলাদা তেইশ বছর বয়সী মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীর।

হাইস্কুলে পড়ার সময়ে মিন হুয়ে একজন ফিজিক্স শিক্ষককে চিনতো। শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রী দুজনেই নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। যৌবনে দুজনেই অনেক শুনে ছিলেন যে তাঁরা সুন্দর ও প্রতিভাবান। অথচ তাঁদের মেয়ে হয়ে ছিলো জড়বুদ্ধি। 

প্রথম যখন মিন হুয়ে শিক্ষকের স্ত্রীকে দেখে ছিলো তখন তাঁর চুলে পাক ধরেছে, চামড়া কুঁচকে গেছে, আর মনে হয় যে তাঁর বয়স যেনো তাঁর আসল বয়সের থেকে দশ বছর বেশি। দম্পতির রোজগার কম ছিলো না। কিন্তু তাঁরা ভীষণ সাধারণ জীবন যাপণ করতেন। নতুন জামাকাপড় প্রায় কিনতেনই না। বাড়ির বাইরে কখনো খেতেন না, কোথাও বেড়াতে যেতেন না। 

বাচ্চাকে সুস্থ করার জন্য তাঁরা অনেক রকম চেষ্টা করে ছিলেন। কিন্তু মেয়ে কিছুতেই সুস্থ হয় নি। তাঁরা হাল ছেড়ে দিয়ে ছিলেন। পরে তাঁদের আরেকটা মেয়ে হয়ে ছিলো। ছোটো মেয়ে তাঁদের সুস্থ স্বাভাবিকই ছিলো। কিন্তু তাঁদের প্রথম জড়বুদ্ধি সন্তানের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে নিতে তাঁরা দ্বিতীয় সন্তানের দিকে খুব একটা নজর দিতে পারেন নি। মেয়েটা একটা সাদামাটা কলেজ থেকে পাশ করে একটা রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে মাঝারি ধরনের কাজ করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ছোটো মেয়েটার মন খুব বড়ো ছিলো।। সে বিয়ে করতে চাই ছিলো না শুধু এই কারণ দেখিয়ে যে তার মা-বাবার পরে তার দিদির দেখাশোনা করতে হবে বলে। এই সময়ে ফিজিক্সের শিক্ষক ব্যাঙ্কের একটা পাসবই বার করে দেখিয়ে ছিলেন যে তাঁদের এতো টাকা আছে যে তাঁদের বড়ো মেয়েকে তাঁরা একটা নার্সিং সেন্টারে রেখে দিতে পারবেন যখন তাঁরা থাকবেন না। ছোটো বোন শুধু মাঝে মাঝে বড়ো বোনকে দেখতে গেলেই চলবে।


এসব কথা ভেবে মিন হুয়ে আরো ধাঁধায় পড়ে গেলো। ব্যাপারখানা দাঁড়ালো যে ভাইকে খুঁজে বার করার জন্য উৎসাহই যথেষ্টই নয়। ভবিষ্যতে তার চিকিৎসা চলবে কিভাবে, ভবিষ্যতে ভাইয়ের যত্ন কিভাবে নেওয়া হবে, এখন কিভাবে তার দেখাশোনা চলবে এসব খুব ভালো করে ভেবে নিতে হবে। মিন হুয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে একবার দেখে নিলো পাশে বসা শিন ছিকে। শিন ছি জানলা দিয়ে বাইরে দেখছে হতবুদ্ধি যেনো। মিন হুয়ে বুঝতে পারছে না যে শিন ছি কী ভাবছে।

অনিমেষ রাতে চুপচাপ চলেছে ট্যাক্সি।

মিন হুয়ে সামান্য নড়ে বসলো। শিন ছি টের পেলো সেটা তক্ষুণি। কোনো কথা না বলে শিন ছি মিন হুয়ের হাত ধরে ঝাঁকুনি দিলো খুব জোরে জোরে। তার হাতের তালুটা শুকনো খসখসে, আঙুলগুলো ঠান্ডা। কোনো কারণে শিন ছির ছোঁয়ার যাদুতে মিন হুয়ে তখনই শান্ত হয়ে গেলো। 

মিন হুয়ে জানতে চাইলো, “কী ভাবছিস?”

শিন ছিও প্রশ্ন করলো, “তোর মনে আছে, যখনই তুই ইস্কুল থেকে ঘরে ফিরতিস, তখনই তুই আমাকে এরকম করে ধরে থাকতিস, হারিয়ে যাবার ভয়ে। আমার হাত যদি একটু আলগা হতো তো তুই খুব অখুশি হতিস?”

মিন হুয়ে আবার প্রশ্ন করলো, “ছেলে ধরার ভয়ে?”

মিন হুয়ের চোখে চোখ রেখে শিন ছি বললো, “নাহ্‌।”

তারপর জানতে চাইলো, “মানসিক রোগীদের সম্পর্কে তোর কোনো ধারণা আছে?”

মিন হুয়ে বললো, “না।”

শিন ছি আবার প্রশ্ন করলো, “তোর ‘এ বিউটিফুল মাইন্ড’-এর মূল চরিত্রটাকে ভালো লেগেছে?”

শিন ছি থামতে মিন হুয়ে জিজ্ঞেস করলো, “- ‘এ বিউটিফুল মাইন্ড’? সেটা আবার কী?”

শিন ছি বললো, “একটা বিখ্যাত মুভি, একজন অঙ্কের প্রোফেসরকে নিয়ে যাঁর স্কিসোফ্রেনিয়া ছিলো …… মুভিটা অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড পেয়ে ছিলো।”

মিন হুয়ে আওড়ালো, “এ বিউটিফুল মাইন্ড।”

নিশ্চয়ই জানে মিন হুয়ে ‘এ বিউটিফুল মাইন্ড’ কী। মিন হুয়ে ইংরেজিও জানে। কিন্তু সু তিয়াঁ ইংরেজি বোঝে না। মিন হুয়ে ভাবছে মূল চরিত্রের কাছাকাছি থাকাই ভালো।

শিন ছি ধীরে ধীরে বলতে লাগলো, “ঠিক, ‘এ বিউটিফুল মাইন্ড’। এই ছবিতে দেখা যায় প্রোফেসরের মনের অসুখটা অনেকটাই মনের ভুল। পরে তাঁর অসুখ প্রায় সম্পূর্ণ সেরেও যায়।”

মিন হুয়ে প্রশ্ন রাখে গলায় অবিশ্বাস নিয়ে, “সত্যি?”

শিন ছি বলে চলে, “সুস্থ হবার পরেও তিনি গবেষণা চালিয়ে চান। পরে একটা অ্যাবেল প্রাইজও পেয়ে ছিলেন।”

মিন হুয়ে জানতে চায়, “অ্যাবেল প্রাইজ কী?”

শিন ছি বুঝিয়ে দেয়, “অ্যাবেল প্রাইজ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গণিত গবেষণার একটা খুব সম্মানজনক স্বীকৃতি। অঙ্কের জগতের গবেষকদের মধ্যে এই পুরস্কারের খুব কদর।”

মিন হুয়ে বলে ওঠে, “তাহলে মনে হচ্ছে যে আমার দিদি সেরে উঠবে। এই রোগটা তো আর জন্মগত নয়। এটা জড়বুদ্ধির থেকে আলাদা। স্বাভাভিক কথাবার্তা নিশ্চয়ই বলা যাবে।”

শিন ছি উৎসাহ দেয়, “তাই তো মনে হচ্ছে। তবে এও ঠিক যে তোর দিদি যদি স্বাভাবিক কথাবার্তা নাও বলতে পারে তো ওকে কেউ ঘাঁটাবে না যতোক্ষণ আমরা ওর সঙ্গে আছি।”

এমন সময় ব্যাপক ঝাঁকুনি শুরু হলো গাড়িটাতে। যে ড্রাইভার এতোক্ষণ মুখ বন্ধ করে গাড়ি চালাচ্ছিলো তার ভাবগতিক যেনো বদলে গেলো। গাড়ির গতি কমাতে কমাতে, গাড়িটাকে রাস্তার ধারে নিয়ে যেতে যেতে, নিজের পেটটা খামচে ধরে সে বললো, “বলতে খারাপ লাগছে … গাড়িটাকে আমাকে থামাতে হবে … আমি বোধ হয় এমন কিছু খেয়েছি …”

একটা জঙ্গল পেরিয়ে গেলো। তাই দেখে সে দৌড় লাগালো। জ্বালানি বাঁচাতে সে গাড়ির এয়ারকন্ডিশনারটা বন্ধ করে দিয়ে গেলো। শুরুতে গাড়ির ভেতরটা ঠান্ডাই ছিলো। কিন্তু চোখের পলকে অসহ্য গরম লাগতে শুরু করলো। মিন হুয়ে আর শিন ছি দুজনের পরনেই সাদা টি-শার্ট, দুজনেই ঝরঝর করে ঘামতে লাগলো।


গরম কমাতে গাড়ির দরজাটা একটু খুলে দেওয়া হলো। অমনি ঝাঁকে ঝাঁকে মশা ঢুকে পড়লো বাইরে থেকে গাড়ির ভেতরে। অনেকক্ষণ ধরে গাড়ির ভেতরের তোয়ালে নেড়ে নেড়ে মশা তাড়ানো চললো। সব বেরিয়ে যেতে তাড়াতাড়ি জানলার কাঁচ তুলে দেওয়া হলো। তার মধ্যেই দুজনেরই গায়ে পাঁচ ছ জায়গায় বড়ো বড়ো ঢিবি হয়ে গেছে।

শিন ছি মিনারেল ওয়াটারের বোতলের ছিপি খুলে মিন হুয়ের দিকে বাড়িয়ে দিলো, “একটু জল খাবি?”

মিন হুয়ে তড়বড় করে মাথা নেড়ে জানালো, “না, জল খেলে ভয় আছে যে আমাকে গাড়ি থামিয়ে বাথরুমে যেতে হবে। ড্রাইভার বলে দিয়েছে যে এই রাস্তায় কোনো গ্যাস স্টেশন নেই। আর – –”

ঘুরে তাকিয়ে দেখলো যে শিন ছি ওর দিকেই তাকিয়ে আছে, চোখ ফেরাতে পারছে না। ঘামে ভিজে সাদা টি-শার্ট স্বচ্ছ হয়ে গেছে। শিন ছির কন্ঠমণি নড়ে উঠলো, “তাহলে খানিকক্ষণ বাইরে দাঁড়া না হয়।”

শিন ছি বসেছে রাস্তার থেকে দূরে, ঘাসে ঢাকা নয়ানজুলির দিকে, মিন হুয়ে রাস্তার দিকে, যেখান দিয়ে জোরে গাড়ি ছুটে চলেছে। রাস্তার দিকে নামার চেষ্টা করাটা বিপজ্জনক। তাই মিন হুয়ে ঠিক করলো যে ও শিন ছিকে ডিঙিয়ে ঘাসের দিকে নামবে।

মিন হুয়ে এগোলো, “দেখি রে, সর একটু -”

 শিন ছি একপাশে একটু সরে গেলো যাতে মিন হুয়ে এক পা বাড়িয়ে দিতে পারে। একভাবে অনেক ক্ষণ বসে থাকার কারণে কিনা কে জানে মিন হুয়ের পা দুটো অবশ হয়ে গেছে। টালসামলাতে না পেরে মিন হুয়ে গিয়ে পড়লো শিন ছির ওপর। অচেতন প্রতিবর্তে শিন ছি মিন হুয়ের হাতদুটো ধরে ফেললো। একজনের ঠোঁটে অপরের ঠোঁটের আলতো ছোঁয়া লাগলো।

দুজনেই চমকে উঠলো।

মিন হুয়ে শরীরের ভারসাম্য সামলে নিয়ে উঠে পড়ার চেষ্টা করলো। টের পেলো যে ওর কোমরে জড়িয়ে আছে শিন ছির শক্ত দু হাত। শিন ছি হাত ছাড়াতে রাজি নয়।

দুজনের মুখ খুব কাছাকাছি। শিন ছির শ্বাস পড়ছে দ্রুত। মিন হুয়ের শ্বাস বয়ে যাচ্ছে শিন ছির ঘাড় ছুঁয়ে। কোনো অদম্য বল যেনো দুজনকে বেধে রেখেছে আষ্টেপৃষ্ঠে। বাঁধন যেনো কেবলই কঠিন হচ্ছে। যেনো সমুদ্রের অতলের এক নোঙরের টানে ধরে রাখা আছে। 

মিন হুয়ে জিজ্ঞেস করলো, “ভাবছিস?”

শিন ছি ঘাড় নাড়লো। মিন হুয়ের দুচোখে সম্মতি জেগে ওঠা মাত্র শিন ছি মিন হুয়ের ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো। 

মিন হুয়ে বাধা দিলো না। শরীরের উত্তাপ বেড়ে গেছে, যেনো আগুন লেগে গেছে। মিন হুয়ের বুকের ওপরের খরগোশজোড়া লাফিয়ে উঠলো। শিন ছি লুফে নিলো তাদের নরম মুঠিতে, লাগালো আলতো চাপ। মিন হুয়ের এক হাত জড়িয়ে নিলো শিন ছির গলা, আরেক হাতের মুঠিতে শিন ছির চুল। চুমু দিলো শিন ছিকে যেমন খুশি, কখনো নরম, কখনো তীব্র, কখনো তীক্ষ্ণ কামড়ে ভরা।

দুজনের শরীর গেলো জট পাকিয়ে। ঘামে অল্প নোনা গন্ধ ছিলো। যতো বুভুক্ষা নিয়ে ওরা দুজনে শুষে নিচ্ছিলো পরস্পরকে ততো উষ্ণ ভাপ উঠে আসছিলো গলা থেকে। 

শিন ছি ঠেলে দিলো মিন হুয়েকে সিটের ওপরে। শিন ছির গলা থেকে খসে গেলো সাদা টি-শার্ট। 

একটা গাড়ি চলে গেলো পাশ দিয়ে। তার হেডলাইটের আলো ভেদ করলো দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির জানলা। মিন হুয়ের চোখে পড়লো শিন ছির বুকের মাঝামাঝি লম্বাটে ক্ষত দাগটা, উঠছে আর পড়ছে, শ্বাসের তালে তালে, যেনো একটা দরজা যেটা খুলে যাবে যে কোনো মূহুর্তে। দরজার ওপারেই আছে স্পন্দিত হৃৎপিণ্ড। মিন হুয়ে তাড়াহুড়ো করে ঢাকা দিলো ক্ষতটাকে।

মিন হুয়ে আতঙ্কিত।

মিন হুয়ে টের পাচ্ছিলো শিন ছির শরীরের পরিবর্তন, জেগে ওঠা, তীক্ষ্ণ হয়ে ওঠা। শিন ছি ঝুঁকে শুরু করতে গেলো, কিন্তু মুখ দিয়ে বেরোল গালি, “Fuক।”

মিন হুয়ে অবাক, “হুঁ!”

শিন ছি বললো, “ড্রাইভার ফিরে এসেছে।”



দুজনে জামাকাপড় পড়ে নিলো ঝটপট। নিজেদের বসার ভঙ্গি ঠিক করে নিলো। একটা একটা মিনারেল ওয়াটারের বোতল খুলে নিয়ে চুমুক লাগালো দুজনেই, যেনো কিছুই হয় নি। 

ড্রাইভার ক্ষমা চাইলো, “অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো আপনাদের। বু হাইসা।”

চটপট দরজা খুলে বসে পড়লো ড্রাইভারের সিটে। চালিয়ে দিলো গাড়ির ইঞ্জিন। চালু করে দিলো এয়ারকন্ডিশনার। বললো, “খুব গরম, না?”

মিন হুয়ে জানালো, “ঠিক আছে।”

শিন ছি কুশল প্রশ্ন করলো, “আপনার খবর কি? ঠিকঠাক?”

ড্রাইভার যা বললো তা ভয়ানক, “আমি জানি না, কী যে উল্টোপাল্টা খেয়েছি। আমার পেট গোলাচ্ছে। পায়েও জোর নেই।”

মিন হুয়ে জানতে চাইলো, “আপনি ঠিক আছেন তো? কেমন বুঝছেন?”

শিন ছি সমবেদনায় বললো, “আপনি আবার যেতে চান? …… চিন্তা করবেন না, আমাদের হাতে সময় আছে, আমরা আপনার জন্য অপেক্ষা করতে পারি।”

মিন হুয়ে চোখ দিয়ে ঝলসে দিলো শিন ছিকে। 

ড্রাইভার হেসে বললো, “ঠিক আছে। সিট বেল্ট বেধে নিন, আমরা রাস্তায় নামি আবার।”

মিন হুয়ে যখন আবার তাকালো শিন ছির দিকে, তখন শিন ছির চোখ একটু অন্যরকম। বললো, “আমার দিকে তাকাস না।”

বলেই মুখ ঘুরিয়ে নিলো। মিন হুয়ে একটু বিদ্রুপের স্বরে বললো, “কী হলো আবার তোর? তোর চোখ যেনো সবুজ রঙে জ্বলজ্বল করছে, নেকড়ের মতো।”

শিন ছি জবাবে বললো, “আমি ভাবলাম যে তুই বলবি আমার স্বভাব খারাপ।”

মিন হুয়ে মস্করা চালিয়ে গেলো, “সে তো লোকেরা বলেই থাকে।”

শিন ছি তাল দিলো, “তাই কী?”

নীরস আবহাওয়ায় একাকী পুরুষ আর নিঃসঙ্গ নারী, উদ্যোগ নিলো এবার মিন হুয়ে। মিন হুয়ের মনে প্রাণে বিজয়ের অনুরণন বয়ে চললো, যেনো এবার তার ইচ্ছের জোর জবরদস্তি চলছে, যেনো সে নিজে কারুর জবরদস্তির কবলে পড়ছে না, এটা যেনো একটা বিরাট বদল। শিন ছি খেয়াল করলো ব্যাপারটা। তবু মিন হুয়ের জোরই খাটল। উল্টোদিকে শিন ছি সংযমী, প্রত্যেকটা পা মেপে ফেলছে যেনো, মিন হুয়ের অনুমতি পেলে তবে।

শুধু দু চোখের চাহনিতে সমাধান হয়ে গেলো সবটা, খুব শিগগির, একটা কথাও খরচ না করে, একটা বোঝাপড়া সাঙ্গ হলো।



সিনিং হাসপাতাল একটা একানে পাহাড়ের নিচে, চারপাশে তার চাষের জমি। বাইরে থেকে দেখে মনে হয় যে হাসপাতালটা বেশ নতুন, ঝকঝকে রাস্তার আলো আর সীমানার সাদা দেওয়াল থেকেই যেনো নতুনের ভাবটা বেশি ঠিকরে পড়ছে।

মিন হুয়ে আর শিন ছি একেক জনে একেকটা স্যুটকেস টানতে টানতে দশ মিনিট মতো হাঁটলো শিজি রোড ধরে, তবে খুঁজে পেলো গেস্ট হাউসটা। ফ্রন্ট ডেস্কের কর্মীটি বেশ উৎসাহী প্রকৃতির। নিজের থেকেই জানালো যে রাতে কেউ দেখা করতে এলে রোগীরা তাদের সাথে দেখা করে না আর ইনপেশেন্ট বিভাগ সকাল আটটার আগে খোলে না। তাই মিন হুয়ে আর শিন ছি প্রথম রাতটা থাকতে পারে।

চেক-ইন-এর কাজ সারার পরে ফ্রন্ট ডেস্কের কর্মী জানালো যে দুটো ঘর সবে মাত্র খালি হয়েছে। সেগুলো সাফাই করা হচ্ছে। কর্মী মিন হুয়ে আর শিন ছিকে অনুরোধ করলো লবিতেই অপেক্ষা করার জন্য। 

মিন হুয়ে জানতে চাইলো, “এখানে অনেক লোক আসে?”

কর্মী জানালো, “না, অনেক আর কোথায়! তবে গেস্ট হাউসে মাত্র কুড়িটা মতো থাকার ঘর আছে। তাই সব সময়ে সেগুলো ভর্তিই থাকে।”

কর্মী এবার জানতে চাইলো, “আপনারা কোথা থেকে আসছেন?”

মিন হুয়ে জানালো, “ইয়াংছেনজেন থেকে।”

কর্মী মন্তব্য করলো, “সে তো এখান থেকে বেশি দুরে নয়।”

মিন হুয়ে এক কথায় সারলো, “তা বটে।”

মিন হুয়ে ঘুরে প্রশ্ন করলো, “বলুন দেখি, রোগীকে কী ঘুরে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে? নাকি বাড়ির লোক তাকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারে সেরে ওঠার জন্য, যদি রোগীর অবস্থা মোটের ওপর একই রকম থাকে?”

উত্তর তৈরিই ছিলো, “সেটা নির্ভর করে ডাক্তারের ওপর। ইনপেশেন্ট ওয়ার্ডের রোগীদের সবার অবস্থা মোটের ওপর একই রকম। অবস্থ গুরুতর হলে রোগী নিজেকে বা অন্য কাউকে আহত করতে পারে। বাড়ির লোকের পক্ষে এমন রোগীর খেয়াল রাখা সম্ভব নয়। এসব রোগী দিনরাত আমাদের নজরদারিতেই থাকে। দীর্ঘদিন ধরে যারা থাকে এখানে তাদের দেখাশোনা করা তো হয়ই, সঙ্গে সঙ্গে তাদের বসবাসের একটা ব্যবস্থাও করা হয়। বন্দোবস্তটা খুব ধরাবাধা কিছু নয়। দিনের বেলা রোগী আসে চিকিৎসার জন্য, তারপর রাতেও থেকে যেতে পারে, আর কি। না হলে, বাড়িও চলে যেতে পারে। এখন আমাদের এখানে জায়গার একটু অভাব আছে। এমন অনেক রোগী আছে যেদের হাসপাতালে রাখতেই হবে, কিন্তু তাদের এখানে দেবার মতো জায়গা নেই।”

কর্মীটির কথা বলায় কোনো ক্লান্তি নেই, “আমদের এখানে কদিন আগে বেশ একটা সাড়া জাগানো খবর হয়ে ছিলো। শুনেছেন নাকি?”

মিন হুয়ে ঘাড় নেড়ে জানালো যে সে খবরের কথা কিছুই জানে না।

কর্মীটি উৎসাহের সাথে জানালো, “একজন রোগী, পুরষ মানুষ। তার না ভীষণ বিভ্রম হতো। কয়েকমাস আগেই তিনি সেরে উঠে ছিলেন। আবেগ থিতু হয়ে ছিলো, চিকিৎসাতেও বাধা দিচ্ছিলেন না। তিনিই তাঁর পরিবারের একমাত্র রোজগেরে লোক। তাঁর পুরো পরিবার চাইছিলো খুব যে তিনি শিগগির বাড়ি ফিরুন। একজন এসে তাঁকে ডিসচার্জ করে নিয়েও গেলো এই বলে যে তাঁর ছেলের জন্মদিন আর ছেলে বাবাকে খুব দেখতে চাইছে। হাসপাতালের কর্তৃপক্ষও রাজি হয়ে ছিলেন। কেউ জানবে কী করে যে এখান থেকে যাবার পরের দিনই কিছু ঘটবে। মাঝরাতে হঠাৎ রোগ চাড়া দিয়ে ওঠে আর রোগী পরিবারের চারজন সদস্যকেই মেরে ফেলেন। যখন জানতে চাওয়া হয় যে তিনি এমন করলেন কেনো,তিনি কেবল বলতে পারলেন যে ঘরে খুব গরম লাগছিলো, তিনি তরমুজ খাবার জন্য ছটফট করছিলেন, সারা বাড়িতে তন্ন তন্ন করে খুঁজে কোথাও তরমুজ পাচ্ছিলেন না …”

কর্মীটি হয় তো অনেক এমন ঘটনা দেখেছেন, তাই তিনি দিব্যি শান্তস্বরে বলে চলে ছিলেন। মিন হুয়ের চেহারা আতঙ্কে ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছিলো। তিনি বলে উঠলেন, “ঘর তৈরি হয়ে গেছে। আপনারা এখন ঘরে থাকতে পারেন।”

বলার সময় তাঁর মুখে একটা হাসির ভাব খেলে গেলো। তার মাথার ওপরের সাদা আলোটা তাঁর মুখেও পড়ছে, তবে আলোটা যেনো বিষন্নতা ঢেলে দিচ্ছে।

ঘরদুটো পাশাপাশি, লাগোয়া। শিন ছি একটা ঘরে মিন হুয়েকে ঠেলে দিয়ে বললো, “শুভ রাত্রি।”

মিন হুয়ে স্নান সেরে, বাইরের চাদরখানা বিছিয়ে নিলো বিছানায়। তারপর শুয়েও পড়লো। শিন ছির সাথে কথা বলার ইচ্ছে ছিলো ওর। কিন্তু বড়ো ক্লান্ত ছিলো ও। শোয়ার মিনিট খানেকের মধ্যে ঘুমিয়েও পড়লো।

পরদিন সকালে পাখির গানে ঘুম ভাঙলো মিন হুয়ের। ফোনটা হাতে নিতে দেখলো শিন ছির মেসেজ, “দাবা খেলবি কী?”

মেসেজের সময় আগের রাতে এগারোটা বেজে চল্লিশ মিনিট। মিন হুয়ে ঘুমিয়ে পড়ার ঠিক পরে।

মিন হুয়ে শব্দ তিনটের দিকে তাকিয়ে অনেকক্ষণ হাসলো। কল্পনা করলো শিন ছি জেগে ছিলো তার উত্তরের অপেক্ষায়, হয়তো সারারাত, আর তাকে তাড়া করছিলো তরমুজের গল্পটা। 

মিন হুয়ে রেস্টুরেন্টে গিয়ে এক কাপ ইন্সট্যান্ট কফি বানিয়ে নিলো। ঘুরে দাঁড়াতেই দেখলো যে শিন ছি গেটের দিক থেকে আসছে, তার হাতে একটা প্লাস্টিক ব্যাগ। একটা সাদা লিনেন শার্ট পরেছে আর একটা রয়্যাল ব্লু শর্টস্‌। শর্টসে এক সারি ছোট্টো ছোট্টো মাছ ছাপা আছে। দেখে মিন হুয়ের মনে পড়ে গেলো তার কোলগেট টুথপেস্টের কথা, রোজকার ব্যবহারে চেনা, ঝকঝকে পরিস্কার, হালকা পুদিনার গন্ধে চনমনে করে তোলা। 

শিন ছি বললো, “সাও।”

হাতের ফোনটা নেড়ে মিন হুয়ে জানালো, “কাল রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে ছিলাম।”

শিন ছি সুর মেলাল, “আমিও।”

বলে চললো, “সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম ভাঙলো। হাঁটতে গিয়ে ছিলাম।”

মিন হুয়ে জানতে চাইলো, “আশপাশটা কেমন?”

শিন ছি বেশ খুশি, “পরিবেশ ভালো। প্রচুর অক্সিজেন। ফুটির খেতো দেখলাম। খেতটা বেশ বড়ো।”

মিন হুয়ের মুখের সামনে হাতের ব্যাগটা তুলে ধরে বললো, “দ্যাখ, আমি তিনটে ফুটি কিনেছি।”

মিন হুয়ে হেসে বললো, “কী কাণ্ড!”

শিন ছি ফের বললো, “আমি অনেকক্ষণ ধরে দেখে দেখে বেছে বেছে এনেছি। একটা তোর জন্য, একটা আমার অন্য, আর অন্যটা তোর ভাইয়ের জন্য।”

মিন হুয়ে বললো, “বেশ, পরে একসাথে খাওয়া যাবে না হয়।”

শিন ছি এবার অন্য প্রসঙ্গে, “সে যা হোক, কাল রাতে ইউনাইটেড স্টেটসে এক বন্ধুর সাথে কথা বলেছি, বন্ধু আমার ডাক্তার। ও-ও বললো যে তোর ভাইকে নিউইয়র্কে নিয়ে যাওয়াই ভালো। অন্য পরিবেশে, বাড়িতে আরেকটা লোকের সঙ্গে থেকে ওর অবস্থার উন্নতি হতে পারে।”

শিন ছির হাতে চাপড় দিয়ে বললো মিন হুয়ে, “অ্যাই, এতো ভাবিস না। ডিএনএ রেজাল্ট এখনো আসতে বাকি। যদি এ আমার ভাই না হয়?”

শিন ছি জোর দিয়ে বললো, “আমি শুরুতে খুব নিশ্চিত ছিলাম না। তবে কাল রাতে ছবি দেখে মনে হলো যে তোদের একদম একরকম দেখতে। তোর মুখের আদল, তোর চোখ, তোর নাক … যেনো এক ছাঁচে ঢালা …”

মিন হুয়ে হাসবে না কাঁদবে ঠিক করে উঠতে পারলো না। আপন মনে ভাবতে লাগলো এই যে সে যদি আমার মতো দেখতে হয়, তবে সে কোনো ভাবেই সু তিয়াঁর ভাই নয়।

ঠিক আটটার সময়ে দুজনে দেখা করতে গেলো সেই ডাক্তারের সাথে যিনি সম্ভাব্য ভাইয়ের চিকিৎসা করছিলেন। মিন হুয়ে ডাক্তারকে বুঝিয়ে বললো যে সে কেনো এসেছে, ডাক্তারও সংক্ষেপে জানালেন তং মিংহাও-এর অবস্থা এবং কেমন উন্নতি হয়েছে তার অবস্থার। ডাক্তারের কথায় অনেক ডাক্তারি শব্দ ছিলো, যার বিন্দুবিসর্গ দু জনের কেউই বুঝতে পারলো না, তবে সারার্থ বুঝলো এই যে হালেই তং মিংহাও-এর অবস্থার বেশ উন্নতি হয়েছে তাকে দীর্ঘস্থায়ী রোগীদের ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে, তবে তার রোগের লক্ষণ মাঝেমধ্যেই জেগে ওঠে। ওষুধের প্রভাবে তার অবস্থা কখনোই গুরুতর হয়ে ওঠে না।

“কী হবে যদি লক্ষণ হঠাৎ দেখা দেয়?”

“রোগীর বিভ্রম হবে যে তাকে কেউ মারতে চাইছে, বা তার বিভ্রম হবে সে সাংঘাতিক কেউকেটা মানুষ, যেমন হয় প্যারানয়েড অবস্থায়। যেমন সে ভাবতে পারে যে সে একটা গুপ্ত ঘাতক আর তার মাথায় একটা ইলেকট্রনিক চিপ আছে। যারা চিপ থেকে তার অবস্থান দেখছে, সমানে তাকে মারতে লোক পাঠাচ্ছে আর সে তাড়া খেয়ে যাচ্ছে।”

মিন হুয়ে আর শিন ছি পরস্পরের দিকে হতাশ চোখে চাইলো, “গুপ্ত সংস্থা?”

“গুপ্ত সংস্থার নেতা তার নিজের বাবা। ডাক নাম, ‘বড়দা’। বলে গ্যগ্য ধরতে পারলে অন্ধকুটুরিতে আটকে রাখবে। এন্তার অত্যাচার করবে।”

“ছেলেটার কল্পনাশক্তি বেশ তীক্ষ্ণ। অথছ যখন শান্ত থাকে তখন ও এটাও জানে যে ওর কল্পনাটা অর্থহীন। যখন অসুস্থ তখন ও অচেনা লোক দেখলেই ভয় পাবে, পালিয়ে যাবার চেষ্টা করবে, দৌড় দেবে, লুকিয়ে পড়বে। যদি তখন ওকে ধরার চেষ্টা করো তো ও খুব লড়বে, খুব মারকুটে ব্যবহার করবে।”

থ হয়ে যাওয়া মুখ দুটো দেখে ডাক্তার চট করে সামলে নিলেন, “খুব দুশ্চিন্তার কিছু নেই। অনেক দিন যাবত ছেলেটা বেশ ভালোই আছে। মেজাজও ভালো বেশ। রোজ রিকভারি রুমে গিয়ে পিং পং ছো-ইয় খেলে। জোর দেয় সকালে জগিং করাতে। দেখতে শুনতে বেশ ভালো হয়েছে। বুকের পেশি জেগে উঠেছে। আমাদের মনে হয়েছে যে ওকে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে হাসপাতাল থেকে যদি ও ওর ওষুধগুলো মনে করে খেতে পারে। হাসপাতাল থেকে ওর বাবাকে অনেকবার ডাকা হয়েছে ওকে নিয়ে যাবার জন্য। এখানে বেডের সংখ্যা তো গোণাগুণতি। কিন্তু ওর বাবা রাজি হয় নি। যদি ওর অসুখ ফিরে দেখা দেয় সেই ভয়ে। তাই রোগী এখানে পড়ে আছে। আমরাও অপ্রস্তুত। কাল রাতে ওর বাবা আমামকে হঠাৎ ফোন করে বললো যে ওর জিয়েজিয়ে আসছে ওকে নিয়ে যেতে। তবে তার আগে হাসপাতালের পাওনাটা আপনাদের মিটিয়ে দিতে হবে।”

কম্পিউটারে কয়েকটা চাবি টিপে জানালেন ডাক্তার, “সব মিলিয়ে সাতাশ হাজার।”

মিন হুয়ে বললো, “ঠিক আছে।”

“ওর সাথে দেখা হলে, চেনা পরিচয় করে নিন প্রথমে। আমি ওর বাবাকে আর নার্সদের বুঝিয়েই রেখেছি যে আপনি ওর দূরসম্পর্কীয় আত্মীয়। ওর জীবনের অভিজ্ঞতার কথা মানে এতো দিন কী করছিলো সে সব দুম করে জানতে যাবেন না যেনো। ডিএনএ পরীক্ষার ফল এখনো আসে নি। যদি ফল অন্যকিছু হয় তো পুরো আলাপটাই অর্থহীন হয়ে যাবে। তাতে রোগীর মেজাজ বিগড়ে যেতে পারে। সেটা ভালো হবে না মোটেই। আমরা যতদূর জানি, ওর অসুস্থতার জন্য ওর বাবা ওকে বেশ মারধোর করতো ওর কিশোর বয়সে। ফলে ছেলেটা আমাদের সমানে বলে যে ওর সন্দেহ যে ও বাবার সঙ্গে ওর রক্তের সম্পর্ক নেই, ওকে দেখতেও ওর বাবার থেকে একদম আলাদা, বাবা ওকে খুব মারতো, কিন্তু কোনো প্রমাণও নেই। তবে আমাদের খুবই আনন্দ হচ্ছে ওর জন্য যে আপনারা ওকে নিয়ে যাবেন।”

ডাক্তারের কথা শুনে মনে হলো যে তিনি তঁ তিয়াঁ হাইকে মোটেই ভালো চোখে দেখেন না।

কিছু প্রতিশ্রুতি দেবার পরে, ডাক্তার আর নার্সরা ওদের সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে দেখালেন যে তং মিংহাও খেলাধুলোর ঘরে টেব্ল টেনিস খেলছে।





~~~~~~~~~~~~

সম্পূর্ণ বই বিনামূল্যে : https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96

Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-10.html

Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/08/jpda-chapter-12.html

No comments:

Post a Comment

Readers Loved