Showing posts with label Bengali Poem বাংলা পদ্য. Show all posts
Showing posts with label Bengali Poem বাংলা পদ্য. Show all posts

Friday, October 10, 2025

মিং-এর মোমো #sanhitamukherjeeoriginals #Retro



মিং-এর মোমো
~~~~~~~~~~
মিং নামে এক রিক্সাওয়ালা এই পাড়াতে থাকেন
রিক্সা টানার সময় মাথা হেলমেটেতে ঢাকেন।
দুপুর বেলা মুগুর ভাঁজেন, ঘাঘর বাজান সাঁঝে,
মোমো ভাজেন রাত্রিবেলা, দক্ষ প্রচুর কাজে।
সকালবেলায় কাঠির আগায় স্টিকি রাইস খেয়ে,
গুটি গুটি স্ট্যান্ডে আসেন রিক্সাখানা নিয়ে।

কমবেশী সব রিক্সাওয়ালা লাইন কিনে রাখে,
ভিনদেশী মিং একটু দূরে সংকুচিত থাকে।
শঙ্কাচিতে খাটেন ভাড়া, ট্যাকশো যদি কাটে,
কেমন করে খাবেন দাবেন, যাবেন বাজার হাটে?
হেলমেটটা চুলকে নিয়ে ভেবে আকুল মিং;
মনের ভুলে মোমোর গায়ে বানিয়ে ফেলেন শিং।

সিঙ্গাপুরেও এমন মোমো খায়নি কোনো বং,
মিং-এর মোমো দোকান এখন হালফ্যাশানী ঢং।
রংচঙে সব ছোকরাবাবু, দিদিমণির দল,
মোমো পাতে তিনপ্রহরই মিং-শপে কলকল।
চার প্রহরে রক্ষীবাবু মিং-হো বলে হাঁকেন,
চারটি মোমো সাজিয়ে পাতে মিং-ও রেডি থাকেন।

এমনি করে কাটছিল কাল ঘুপচি দোকান ঘরে
কাঁচা ভাজা ভাপা মোমো সাজিয়ে থরে থরে।
ঘরের সামনে লাগাত ভিড় যত খরিদ্দারে
হোঁচট খেলেন মন্ত্রীমশাই পথ ছাপানো ভিড়ে।
গেলেন তিনি ভীষণ রেগে, সবাই ভয়ে হিম;
তাঁর রক্ষী দেখতে গেলেন ভিড়ের কারণ কিম্‌।

ভিড়ের মূলে আটকে ছিলেন ভীষণ ব্যস্ত মিং
ব্যাপার বুঝে মোমোর পেটে দিলেন ঠেসে হিং
ডিমে ভরা হিঙের মোমো সাজিয়ে নিয়ে প্লেটে
মন্ত্রীমশায় যেথায় ছিলেন গেলেন সেথায় ছুটে
কুঁচকে ভুরু সেই মোমোতে কামড় দিলেন যেই
হারিয়ে গেল মন্ত্রীবাবুর আগুন রাগের খেই।

উলটে হলো সেই মোমোতে এমন ঘন লোভ
সন্ধেবেলায় মোমো না পেলে জাগে ভীষণ ক্ষোভ
মন্ত্রীমশায় হুকুম দিলেন সাঁঝে মোমোর ভোজ
মিং-এর ঘরে মন্ত্রী আসেন সন্ধেবেলা রোজ।
মিং-এর ঝুপড়ি বাঁশের সাজে ঝাঁ-চকচক হল
সকল রকম ট্যাকশো থেকে মিং-ও মুক্তি পেল।

শহর জুড়ে ছড়িয়ে গেল মিং-এর মোমোর নাম
বিজ্ঞাপণে রেডিও, টিভি, ট্যাক্সি, ব্যানার ট্রাম।
দুপুরবেলা টিভিতে মিং-এর মোমোশিক্ষার ক্লাস
এফএম চ্যালেন মিং-ক্যুইজে মাতিয়ে রাখে বাস।
খবরওলা তিন পাতাতে মিং-এর ছবি ছাপে
মিং বড় না মোমো ? তর্কে তুফান কফির কাপে।

ঘরে ফরমাশ পৌঁছে দিতে জনাদশেক ছেলে
বাইক চড়ে শহর চষে দিন রাত্রি ভুলে।
টেলিফোনে বলে কিংবা এসএমএসে লিখে
খরিদ্দারও নিশ্চিন্তে দামটা গুনে রাখে।
তাই বলে কি মায়ামিতে মিং-এর মোমো পাবে?
ভূগোল ভোলা হ্যাংলামিতে আগল দিতে হবে।

বিশ্বজোড়া পেঁচিয়ে আছে মেধাস্বত্ত্ব আইন,
মিং বেচারার আটকে গেছে মোমো-অন-লাইন।
বসবে পথে, ভাজবে মোমো, ঝামেলা কিছুই নেই,
বিশ্বজয়ের ছকটি কষে হারিয়ে গেল খেই।
রান্না না কি শিল্পকলা ?- তর্ক করো তুঙ্গে,
বং-এর সাথেই রয়ে যাবে মিং-এর মোমো বঙ্গে।

Sunday, June 22, 2025

Bhatmala - End

 শেষ ভাট



আবার সকাল হবে। তাপোত্তাপহীন। রয়ে যাবে সব ভাট

অহেতুক, নিরর্থক, আবহমান।

যেমন ছিল সব জন্মের আগে

তেমনই থাকবে সবই, চিরন্তন; কিছু অবয়ব তীব্র, কিছু নিরাবয়ব। 

কিছু কথা, কিছু শব্দ, উড়ে যাওয়া তুফান আর ভেঙে যাওয়া কাপ...... 


আমি আর আমার নিরস্তিত্ব ........

নিস্তরঙ্গ, 

............অবলিভিয়ন।



Saturday, June 21, 2025

Bhatnmala - 09

 ভাট ৯


সকাল সকাল ভুল ভেঙে গেল। গলাটা তেতো রয়ে গেল সারাদিন।

রক্তের নোনা স্বাদ বিনোদনমূলক। আনন্দ, তৃপ্তিতে মিলে মিশে

রতি রমনীয়...

গর্ভকাল পেরোয় না, চলতে থাকে, বলতে থাকে জিঘাংসা।

আর পাঁচটা রিকেটি, অপুষ্ট বাচ্চার মতো প্রত্যন্ত গ্রামের নিওন্যাটাল ডেথের

গুণতিতে আসে না। আসে না ধুঁকতে শহরের ফুটপাথে। থাকে না খালপাড়ে

সুদিনের অপেক্ষায়...

ভোর বেলা কড়া নাড়ে খবরের কাগজ। আঁতুড় থেকে

জিঘাংসা সিধে পৌঁছেছে রাজধানী। তার মুঠিতে নেই সদ্যজাতকের শূণ্যতা। 

বরং ফুলে ওঠা বাইসেপ্‌সে অহংকার। পাওয়ার পলিটিক্সের লাগাম যে তার।

.

.

.

গলাটা তেতোই রয়ে গেল সারাদিন। বিপক্ষ, প্রতিপক্ষ, কোনো কোনো পক্ষ

সংসারে সদস্য বাড়ার সুসংবাদ দিয়ে মিষ্টি খাওয়ালো অনেক যদিও –

মারকুটেরদের গলা কেটে দিলো মারকুটেরা, প্রসূতির স্তন ছিঁড়ে, পাঁজরে পা

রেখে করাল গর্ভপাত...

সঙ্গে সঙ্গে খবর পেলাম গর্ভাধানের... ট্যুইটে, আগের

থেকেও আগেভাগে। আসন্ন মিষ্টিমুখের সম্ভাবনাতেও গলাটা তেতোই রয়ে গেল।

~~~~~~~~






Friday, June 20, 2025

Bhatmala - 08

 ৮ ভাট


আরেকটা সকাল। ঠিক আগেরটার মতই। দিশাহীন চিন্তামগ্ন;

অকারণ উচ্ছাসক্লান্ত; শূণ্যতাবদ্ধ অনির্দেশ প্রতীক্ষায় ......

...... দীর্ঘশ্বাস মথিত......

  জেগেই

শপথ নিই বীতকাম হবার। তারপর আনাজের মত বেঁচে

থাকি দুপুর বিকেল সন্ধেবেলা। সাফ করে যাই বেঁচে থাকার

জঞ্জাল, গঞ্জনা গুঞ্জনে, নিঃশব্দ অশ্রুপাতে, নির্বিকারেও।

        তবু ঘুমঘোরে

মেতে ওঠে সাধ – আসুক ভোরের স্বপ্ন, স্বপ্নে সন্ততি 

আলোকিত করুক স্বর্গবাস।





Thursday, June 19, 2025

Bhatmala - 07

 ৭ নং ভাট


আবার সকাল। রোদের হলকায় সাংসারিক বোধগুলো

আঠালো কুয়াশা জমাল অ্যাডামস্‌ অ্যাপেল ঘিরে। নোনা

ঢল নেমে এল চোখের কোণে ঘনীভূত বেদনাপ্লুত মেঘ থেকে।

নিরাশা নিমগ্ন অস্তিত্ব হালকা বাতাস কিংবা বাতাসে হালকা

হতে চেয়ে গুটিগুটি খিড়কির দিকে এগোয়

আর তখনই সেলফোনে

রিনরিনিয়ে রমনীয় স্বপ্ন গান গেয়ে ওঠে। জীবন আঁকড়ে ধরে বলে,

“ওপাড়ে তো সে; একটা মাত্র চুমুর অধিকারে, যে তোমার কোলে মাথা রেখে মরতেও পারে”।




Wednesday, June 18, 2025

Bhatmala - 06

 ৬ নং ভাট


আরও একটা অলস সকাল। রোদের হলকা এসে মুখে

লাগতেই পিঠ ফিরিয়ে বাঁচানো গেল দুচোখের পাতায়

বন্দী ঘুম। হলকাতে মোম গলানো ওম নেই; আছে তাত।

পিঠের জ্বলুনিতে উপে গেল উদ্বায়ী ঘুম।

শুরু হয়ে গেল কঠিন

কঠোর কর্মমুখর দিন। বিমুখের কান ধরে পাশ ফেরায় যাঁতার

দিকে; পিঠের জ্বালা চারিয়ে দেয় পেটের ভেতর। অমনি চালু হয়ে

যায় হাতপা।

  তারপর পারদ চড়ায়, আবার নামায়। জীবনটা শুষে

নিয়ে শরীরটা ফেলে দেয় বিছানায়। আর শরীরে গড়াতে থাকে রাত।

ক্লান্ত স্বপ্নে তবু ছেয়ে থাকে নরম ভোর! ছুটির ভোর!





Tuesday, June 17, 2025

Bhatmala - 05

 ৫ নং ভাট



আজও সকাল হলো; এবং-

কবিতাকে সর্বজনগ্রাহ্যি 

করার অভিপ্রায়ে লিস্টারিনে জল মেশালাম যেই অমনি

সে ব্রাত্য হয়ে গেল।


আর সে কবিতাও নেই; নেই সেই সব আন্তরিক বিকেল

সন্ধে। ঠাঁইঠাই ঠনঠন আবহে হিসেবের আভাস।


ভ-য়ের অধিষ্ঠান সেখানেই; বাকি সবই লো; ভেঙে পড়ে,

উড়ে যায় ঝড়ে, কিংবা ক্যাম্পে ছড়ায় বাসাটুকু।


Monday, June 16, 2025

Bhatmala - 04

  ৪নং ভাট



এটাও একটা সকাল। ঘুম থেকে উঠে শুনেছিলাম

আমি বাঙালি; আর ওরা বাংলাদেশি। তারপর

উঠোনের বেড়াটা করোটিকে চিরে দিয়েছে – অনেকবার

আমি মুখু্য্যে, ওরা মুসলমান; কিংবা আমি নাগা

ওরা মিজো; আমি শিয়া, ওরা সুন্নি; আমি নর্ডিক

ওরা ইহুদী; ...... আমি আছের দলে, 

ওরা নেইয়ের অথবা উল্টোটা; 

কাঁটাতারের দুপাড়ে আঙুলে

আঙুল ছুঁইয়ে তরঙ্গিত ঋতুচক্রময় যাপন সৃষ্টি সম্মোহন

নিয়মিত নামতা পড়ি সেই ধারাপাত ধরে, গুণিতকে

অমেয় গুণ-মান 

শস্ত্রবান তারারা ঝরে পড়ে অমোঘ 

ঘাসবনে ফুল হয়ে ফোটে। জং ধরা কাঁটাতার আর

আমি দেখি। আমি ধারাপাতে খুঁজি তুল্যতম ব্যাখ্যা,

তারের মুচকি হাসিতে মিশে যায় দীর্ঘশ্বাস। সন্ত্রস্ত 

দুই অস্তিস্ব নিঃস্বর সচেতন এড়িয়ে যাই ক্লিশে সীতোবাচ


মাটির গভীরে মিলিয়ে যাই আমি, ওরা, আমরা, রেখে দিয়ে যাই কাঁটাতার।




Sunday, June 15, 2025

Bhatmala -03

 ৩ নং ভাট


আরেকটা অলস সকাল, আনন্দজ দায়ের দুশ্চিন্তাহীন।

বীর্যমথিত চাদরও নিদাগ। কদমগাছে কাক দোল খাচ্ছে

রোদের তাত বাড়লে হাসনাহানা শুকিয়ে যাবে, কিন্তু

ফের আসবে শেষ বিকেলের বৃষ্টি, রাতে খিলখিলিয়ে

হাসবে হাসনুহানা।

বাকি দিনটা দলে পিষে দিতে

এমনই আশ্বাস চাই। মধ্যপথের পূরীষ কিংবা প্রস্রাবস্নাত

গ্রাফিটিও সহ্য হয়ে যায়। 

মোড়ের মাথার ঝাপসা 

কুণ্ডলী পাঁজরে আঙুল চালায়, নেমে আসে গলায়। 

শেষ-মেষ 

বেঁচকাঁটার ঘেরে মোরামে-পাথরে খোল-গোবরের ঘোল

ঢেলে ধুলো ছাঁকা ছাতিম বসানো হয়। 

নিঃশব্দ নিরালা

নিশ্চিন্ত মুনলাইট সোনাটায়।







Saturday, June 14, 2025

Bhaatmala - 02

২ নং ভাট



এক গা আলসেমি মেখে সকাল এসেছে।

জিমের ফ্যাশান পাসে হয়ে যেতে কিছু বাকি আছে;

তবু বাসিমুখে ধোঁয়াকাঠি চুমু না দিলে পৈটিক প্রক্রিয়ায় 

অসঙ্গতির অস্বস্তি বয়ে বেড়াতে হয় সারাদিন

মন প্রাণ কাঁদতে থাকে কৈশোর কৈশোর নিষ্পাপ সরল দিন

আর খেয়ে বেড়ে ওঠার হেলথ্‌ ড্রিঙ্কজ আশ্বাস


কাটা আঙ্গুলের ফাঁকে পঞ্চু আগুন বাড়িয়ে দেয় 

দিনের প্রথম পাফ শূণ্যে মিলিয়ে দিতে দিতে চোখে পড়ে

আগুন পোড়া নজরে এলাকা জরিপে সজাগ গজা 

কাটা হাতটা ঢাকে কিন্তু ঢাকে না

বিপন্ন গন্ধ নাকে নিয়ে অস্তিত্ব আকাশে

আশ্রয় খোঁজে। কে কার লোক, কার কাছে কার ঝুঁটি বাঁধা জ্ঞানে

বাধা বড়ে জান। মন প্রাণ ডাকতে থাকে কৈশোর কৈশোর

নিষ্পাপ সরল দিন, উঁচু আরও উচুঁ হোক প্লিন্থ, নিচ 

দিয়ে বয়ে যাক বেনোজল, কলুষ। সাদা হাত সাদা জামা গায়ে

অরকুটে লেখা হয়ে যাক, “কনেকটিং পরলোক”।


উন্নাসিক নাস্তিক্য নাক ভেঙে দেয় ষড়যন্ত্রে সংকুল দিন, রাত

তবু দেওয়ালের ওপিঠ জুড়ে কি স্ট্রোক ধরে ধরে ফুটে ওঠে

অক্ষর অক্ষর আকুতি, কৈশোর কৈশোর নিষ্পাপ সরল দিন.........




Sunday, September 6, 2015

অসীম, অপরিমেয়

অসীম পরজীবিতায়
সকালে, সন্ধেবেলায়
অপরিমিত চায়ে চুমুক
এখানে ওখানে রক্ত ঝরুক
তাকে ডাকুক বসন্ত
অস্তিত্ব জিহ্বান্ত
এই, ওই, সেই রাজনীতিক
ডাকুক ঐতিহাসিক
ঠিক কিংবা ভুল
তর্ক তর্জা চটুল
কেবল কথাকারি
ভাবলোকবিহারী
অবশ্য নিরুপায়
ভিড়ে মিশে যায়
মিছিলে, বাদুড় ঝোলায়
অসীম পরজীবিতায়
সকালে, সন্ধেবেলায়
অপরিমিত দায়ে দমিত
উথলোনো আবেগ অশমিত
তাকে ডাকুক বিক্ষোভ
অবশ জিহ্বাশোভ
আগন্ডা রাজনীতিক
ডাকুক ঐতিহাসিক
ঠিক কিংবা ভুল
তর্ক তর্জা চটুল
কেবল কথাকারি
ভাবলোকবিহারী
অবশ্য নিরুপায়
ভিড়ে মিশে যায়
মিছিলে, বাদুড় ঝোলায়
অসীম পরজীবিতায়
সকালে, সন্ধেবেলায়
অপরিমিত সায়ে ন্যুব্জ
বহনের ভারে কুব্জ
তাকে ডাকুক শোষিত
শ্রেষ্ঠত্ব স্বঘোষিত
স্বনামমত্ত রাজনীতিক
ডাকুক ঐতিহাসিক
ঠিক কিংবা ভুল
তর্ক তর্জা চটুল
কেবল কথাকারি
ভাবলোকবিহারী
অবশ্য নিরুপায়
ভিড়ে মিশে যায়
মিছিলে, বাদুড় ঝোলায়
অসীম পরজীবিতায়
সকালে, সন্ধেবেলায়

অপরিমিত

Readers Loved