৩৬. নীল পাখি
শিন ছি বুক বাজিয়ে বলে ছিলো সু ছনের দায়িত্ব নেবে। ওর এতো রকম লোকলস্কর, এতো রকমের ব্যবস্থা দেখে মিন হুয়ে আনন্দে আটখানা হয়ে গেলো।
সু ছনের দেখাশোনা করতে গিয়ে মিন হুয়ে অনেক কাজে দেরি করে ফেলেছে, মিটিং-এ পৌঁছোতে পারে নি, অন্য শহরে ব্যবাসায়িক কাজে যেতে পারে নি। নিজের সমস্ত শক্তি ঢেলে দিয়ে ছিলো মূল প্রোডাক্টগুলোর ডিবাগিং-এ। দিনে মাত্র তিন ঘন্টা ঘুমিয়েছে। তবে ডেডলাইন মিস করা বন্ধ হয়েছে।
মিন হুয়ে থেকে থেকেই ছুটি চায়। তাই নিয়ে হে হাই শিয়াং নালিশ করে সাও মুয়ের কাছে থেকে থেকেই। ব্যাপারটা সুবিধের হয় না কখনোই যখন হে হাই শিয়াং আর মিন হুয়ে মুখোমুখি হয়।
কোম্পানিতে গুজব - হে হাই শিয়াং বেশি মাইনে দিয়ে মিন হুয়ের জায়গায় আনতে চাইছিলেন তিন বছর আগে কোম্পানি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া দিঁ য়িফঁকে।
নিতান্ত অসহায় দিঁ য়িফঁকে কাজ দিয়েছে গুয়ান ছাও ইন্টারন্যাশনাল। শোনা যায় যে সেখানে ওর কদর দারুণ এবং টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পদে মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে ও এই মূহুর্তে বেশ জনপ্রিয়ও বটে। যে সব লোকে ‘বড়ো বুদ্ধ’ দেখে ফেলেছে, তারা কি করে আর ছোটো খাটো মানুষজনদের মধ্যে ফিরে যায়? যদিও সাও মু পুরো দমে হে হাই শিয়াং-এর কাজটায় বাদ সাধ ছিলো, কিন্তু ও প্রথম কয়েক দিন আটকাতে পারে মিন হুয়ের কাজ চলে যাওয়া, কিন্তু অনিয়ম আর অনুপস্থিতি বারবার ঘটলে - -পনেরো কিংবা কুড়িবারে - কী করে আটকাবে? মিন হুয়ে জানতো যে এরকম করে চলতে থাকলে দায় স্বীকার করে ওকে কাজ ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু শিন ছি যদি সু ছনের দায়িত্ব নেয় তাহলে ও এখন কাজে আরো বেশি করে মন আর সময় দিতে পারবে।
মিন হুয়ে বললো, “এ কদিন আমি অনেক কাজ বাদ দিয়েছি। আমি কাজে যাচ্ছি, একটু দেরি অবধি থাকতে পারি। আমি চলে যাবো এক্ষুণি যদি দরকার পরে আমাকে ফোন করে নিস।”
“কি ভাবে?” নাকের ভেতর দিয়ে বললো শিন ছি।
“ফোন নাম্বার ব্যবহার করে। মগজটা কাজে লাগা।” মিন হুয়ে একটা বিজনেস কার্ড বার করলো ব্যাগ থেকে, টেবিলে রাখলো, “এটাতে লেখা আছে।”
শিন ছি হাতে তুলে নিলো কার্ডটা। এক ঝলক দেখলো, ফের টেবিলে রেখে দিলো, “যা।”
মিন হুয়ে কথা বললো সু ছনের সাথেও। তবে পুরো ক্ষণ ছেলেটার মন পড়ে আছে হাতে ধরা গলার স্বরে সাড়া দেওয়া খেলনাটা নিয়ে নাড়াঘাঁটা করার দিকে। মিন হুয়ের দিকে মন দেবার মেজাজ ওর এক্কেবারেই নেই। মাথা না তুলেই বললো, “ঝেইজিয়া, মা।" বেশ দায়সারা ভাবে আর মাথা নিচু করে খেলাটা চালিয়ে গেলো।
এলিভেটর থেকে নেমে ওর সাথে আবার দেখা হয়ে গেলো ঝৌ রু জির। মিন হুয়ে বললো, “নি হাও।”
ঝৌ রু জি থামলো, হেসে বললো, “সকাল সকাল চলে যাচ্ছো? সু ছনকে কে দেখবে?”
মিন হুয়ে কেঁদে ফেলবে আর দশ মিনিট ওখানে দাঁড়িয়ে থাকলে। সেই জন্য মিন হুয়ে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এসেছে, “সু ছনের সাথে সু ছনের বাবা আছে।”
“নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে? ওদের তো সবে গত কাল প্রথমবার দেখা হয়েছে।”
“আমি নিশ্চিন্ত।” আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে হাসলো মিন হুয়ে, “শিন ছির ওপরে নিশ্চয়ই ভরসা করা যায়। আমি তো কাল রাতেই ফিরে গিয়ে ছিলাম। বাড়িতে ছিলাম, খুব ঘুমিয়েছি কাল রাতে।”
“তাই তোমার চোখ মুখ ঝকঝক করছে এমন।” ঝৌ রু জি বললো চোখে একটা অনুসন্ধানের তীক্ষ্ণতা নিয়ে, মিন হুয়ের মুখের ওপরে, “সকালে রাউন্ডে গিয়ে ছিলাম। তখন ওর সাথে কথা হয়েছে, খানিক ক্ষণ। বেশ মনোযোগী। ও আমাকে আর ওয়াং ইশোকে অনেক প্রশ্ন করলো ছেলের স্বাস্থ্য নিয়ে। পরে আমরা একটা সময়ও স্থির করেছি, গল্ফ খেলতে যাবার।”
মিন হুয়ে কল্পনাই পারে না শিন ছি অমন ‘বন্ধুর মতো’ আচরণ করতে পারে, “অসম্ভব, ও বোধ হয় বিনচেং-এ থাকে না।”
“ও তো আমাকে এ কথাও জিজ্ঞেস করলেন যে তোমার বাড়ির পুরো ঠিকানাটা কী, রাস্তার নাম-টাম সমেত, যাতে উনি কাছাকাছি কোথাও থাকার জায়গা নিতে পারেন, তাতে ছেলেটার কাছাকাছি থাকা হবে।”
“তুমি ওকে বলেছো নাকি?”
“না। আমি শুনেছি কাল রাতে তোমরা ঝগড়া করেছো খুব। আমি জানি না তোমার ইচ্ছেটা কী।”
“ও তো এখানে ছেলের জন্য আসে নি। একটা পার্টিতে কাকতালীয়ভাবে আমাদের দেখা হয়ে গেছে। আমি ওকে বলি নি আগে যে আমার ছেলে হয়েছে, আবার ছেলের কথা শুনেও আমার ওপরে রাগ করলো …”
কথা বলার সময় ভারী শ্বাস ফেলতে লাগলো মিন হুয়ে।
“বোঝা যাচ্ছে।” দু পকেটে হাত ঢুকিয়ে বললো ঝৌ রু জি। মাথা নিচু করে খানিক ভেবে জানতে চাইলো, “তাহলে তুমি … বিয়ে করবে ভাবছো?””
বিয়ে? সু তিয়াঁর বাধা পেরিয়ে? মিন হুয়ের ভাগ্য ভালো যে মিন হুয়ের মাথাটা ফাটিয়ে শিন ছি দু ফাঁক করে দেয় নি। মাথা ঝাঁকিয়ে মিন হুয়ে বললো, “কোনো পরিকল্পনা নেই। বাচ্চাটা একটা দূর্ঘটনা, আমার দোষ।”
কথা কটা বলার সময়ে মিন হুয়ের গলা বুজে আসছিলো, শরীরের সব রক্ত এসে যেনো জমা হচ্ছিলো মুখে।
ঝৌ রু জি অনেক ক্ষণ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো, তারপর বললো, “তুমি ওকে পছন্দ করো। তাই না?”
উদার ভঙ্গিমায় মাথা নেড়ে মিন হুয়ে স্বীকার করে নিলো, “হ্যাঁ।”
“তাহলে দেখা যাচ্ছে যে ওঁকে ঘন ঘন গলফ্ খেলার নেমতন্ন দিতে হবে আমাকে।”
“কেনো?”
“যাতে তোমার সুবিধে হয়।”
“কোনো দরকার নেই। বরং তুমি ঝি ঝুয়ের যত্ন নাও ভালো করে।”
চার বছর স্বামী-স্ত্রীর জীবন যাপণ করার পরেও, মিন হুয়ে সহজে ঝৌ রু জির সাথে অনুভূতির কথা বলতে পারে না। ব্যাপারটা এখনো খুবই অস্বস্তিকর, “ঝি ঝুয়ের কথায় মনে পড়লো, এখন কেমন আছে ও?”
“ঠিক আছে এখন। ও তো অসুস্থ বলে ছুটি নিয়ে বাড়িতে বসে থাকতে পারে না। ওর শরীরের এখন যা হাল, ওর আর পেশাদার নৃত্যশিল্পী হবার মতো জোর নেই। ও ভাবছে একটা নাচের ইস্কুল খুলবে। ভাবছে এখনো, হয়তো বাড়িতেই খুলবে।”
“ঠিক আছে। আমি বাড়ি ফিরে গরম খাবার পাই। গরম খাবার খাচ্ছি।”
মোবাইল ফোনে উইচ্যাট মেসেজ অবিরাম ঝাঁকিয়ে চলেছে ফোনটা। মিন হুয়ে বেশিক্ষণ কথা বলতে সাহস পেলো না। দৌড় লাগালো কোম্পানির দিকে। কোম্পানিতে পৌঁছে তিরিশটা জরুরি ইমেলের জবাব দিলো। তারপর দুটো নৈমিত্তিক মিটিং-ও করলো।
নিজের ভাবমূর্তি ধরে রাখার তাগিদে, মিটিং-এ স্বতস্ফূর্ত ভাবে কথাও বললো অনেক। বেশ বাগ্মিতার সাথে কথা বললো। ওর নিজেরই মনে হতে লাগলো যেনো ওর উপস্থিতি বেশ টের পাওয়া যাচ্ছে। তবে ও আশা করে নি যে মিটিং শেষ হওয়া মাত্রই হে হাই শিয়াং-এর সহায়ক ওকে ডেকে পাঠাবে হে হাই শিয়াং-এর সাথে দেখা করার জন্য।
সারা মুখে অন্ধকার ছড়িয়ে হে হাই শিয়াং জানতে চাইলেন, “মিন হুয়ে, আজ হঠাৎ তোমার কাজে আসার সময় হলো যে?”
“বাচ্চার খেয়াল রাখার একটা ব্যবস্থা হয়েছে। তাই আমি কাজে এলাম যতো তাড়াতাড়ি আসতে পারলাম, ততো তাড়াতাড়ি।”
“তুমি কী ঝিজিন ক্লাবে রিসেপসনে গিয়েছিলে?” প্রসঙ্গ বদলালেন হে হাই শিয়াং।
জঘন্য, মিন হুয়ের হৃদস্পন্দন বন্ধ হলো যেনো একবার, অস্বস্তি নিয়ে মাথা নাড়লো মিন হুয়ে।
“আমি শুনেছি যে তুমি প্রচুর লোকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছো, আর নিজেকে ইন্ডাস্ট্রির খবরের হেডলাইনে জায়গা করে দিয়েছো।”
“...”
“মিন হুয়ে, মিন হুয়ে, তুমি বা’অ্যান টেকনোলজির রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ডিরেক্টর, কোম্পনির মুখ রক্ষা করবে কী করে?
হে হাই শিয়াং বিদ্রুপ করতে ছাড়লেন না, “তোমার আর চেং ছিরাং-এর পুরোনো হিসাব কী একান্তে বোঝাপড়া করে নেওয়া যেতো না? তুমি কী জানো দুজন ফু শংসাই গতকাল হেড কোয়ার্টার্স থেকে গিয়ে ছিলেন? গত সপ্তাহে আমি তাঁদের সামনে তোমার প্রচুর প্রশংসা করে ছিলাম। কিন্তু এই সপ্তাহে তুমি নিজের নির্বুদ্ধিতা এমন করে দেখালে … তোমার কী সাধারণ নীতিবোধ আছে?”
“বু হাইসা, হে জঁ। আমার মাথার ঠিক ছিলো না। আমি প্রচুর মদ খেয়ে ছিলাম …।”
“তুমি হাসপাতালে থেকে ছেলের দেখাশোনা না করে, রিসেপসনে পাগলামি করতে গেলে কেনো? তোমার যদি যথেষ্ট সময় আর শক্তি থাকে তবে প্রজেক্টের কাজটা উদ্ধার করো। ওকে?”
“হে জঁ, যে কাজটা যেমন। আমার দায়িত্বে থাকা সব প্রজেক্টের কাজ তো যেমন চলার কথা তেমনই চলছে। কোনোটাতেই ডেডলাইন মিস হয় নি।”
“এখনো একগুঁয়ে! ডেডলাইন আবার কী? ডেডলাইনের জন্য কী শেষ মূহুর্ত অবধি অপেক্ষা করতে হবে? তার থেকে আগে শেষ করা যায় না কাজটা?”
“আপনি ঠিক বলেছেন। আমি এই ব্যাপারটা ভেবে দেখবো।”
মিন হুয়ে যেনো নিজের মুখে নিজেই থুথু ফেললো। সময় স্বাভাবিক হলে ও জোর তর্ক করতো। ওর মনে হচ্ছে যে আগের রাতে ও যা করেছে, তাতে কোম্পানির মুখেও খুব খানিক চুনকালি পড়েছে। তাই ঠিক করেছে মাথা নিচু করে দোষ স্বীকার করে নেবে।
“আমি ফিনান্স ডিপার্টমেন্টে জানিয়ে দিয়েছি। আগামী তিন মাস তুমি কোনো বোনাস পাবে না।”
যেই টাকা কাটা যাবে শুনলো মিন হুয়ে, অমনি ও নিজের মত আর পথ বদলাল, “হে জঁ, রিসেপসন তো আর কাজের সময়ে হয় নি। এভাবে টাকা কাটবেন কী করে?”
"কেনো কাজের সময় বলে ধরা হবে না? ওখানে খানিক টাকা বাকি পড়েছে জানো? ক্লাবের মেম্বারশিপ ফি তো কোম্পানির দেওয়া। আমি কী তোমাকে রসিদ দেখাবো?”
“ওকে।”
“আজ রাতে আর অ্যান্ড ডি ইপার্টমেন্টের প্রোডাক্ট টেস্টে তোমাকে থাকতে হবে। কেটে পোড়ো না যেনো।”
“না।”
“যাও।”
মন খারাপ করে হে হাই শিয়াং-এর অফিস থেকে বেরোলো মিন হুয়ে। দেখলো সাও মু যাচ্ছে, এক গোছা কাগজপত্র নিয়ে। মিন হুয়েকে ধরে নিয়ে গেলো নিজের অফিসে, ব্যাপারখানা কী সেটা মিন হিয়ে বুঝতে পারার আগেই।
“কাল রাতের জমে ওঠা গল্পগুজবটা কী আসলে?”
কান এঁটো করা হাসি নিয়ে সাও মু তাকালো মিন হুয়ের দিকে, “আমি বুঝতে পারছি না। তুমি আর চেং ছিরাং তোমাদের বচসাটকে বন্ধুত্বে বদলে নিয়েছো? তোমরা শত্রু না বন্ধু?”
“শত্রু।” দাঁত কিড়মিড় করে বললো মিন হুয়ে।
“শত্রু!”
“সারা আকাশ ছেয়ে আছে গুজবে। একটু স্পষ্ট করতে চাও কি?”
“না। আমি বড্ডো বেশি মদ খেয়ে ছিলাম। আমি এখন সু ছনের শরীরের অবস্থা ছাড়া আর কিছুই ভাবছি না। আর কিছুই আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
কথাগুলো বলা মাত্রই মিন হুয়ে নিজে অবাক হয়ে গেলো। যদি আগে এরকম কিছু ঘটতো তাহলে ও কিছুতেই ঘুমোতে পারতো না রাগে, না দিনে, না রাতে। ওর মনে হতো যে ও কারুর মুখ দেখবে না আর। কিন্তু এখন …
সাও মু এক চোখ টিপে ইশারা করলো মিন হুয়েকে, “আমি শুনলাম যে এক দৃশ্যে এক হোয়াইট নাইট উদয় হয়ে ছিলো? তোমার সম্মান রক্ষা করতে, ল্যান নিয়াও গ্রুপের ফু শংসাই চিংড়ির খোসা ছাড়িয়ে দিয়েছেন তোমার জন্য?”
“ল্যান নিয়াও গ্রুপ?”
“সে কী, তুমি জানোও না সে কে?” অবাক হয়ে মিন হুয়েকে দেখতে লাগলো সাও মু, “তোমরা একে অপরকে চেনো, তাই না?”
“উনি কখনো আমাকে নিজের পরিচয় দেন নি।” একটা গভীর শ্বাস নিয়ে বললো মিন হুয়ে, “তুমি চেনো ওঁকে?”
“আমি একবার দেখা করেছি ওঁর সাথে। বিনিয়োগের দুনিয়াতে বেশ বিখ্যাত মানুষ।”
“ল্যান নিয়াও গ্রুপ, আমি বোধ হয় একটু জানি …”
মিন হুয়ের মনে হলো নামটা যেনো কোথায় শুনেছে। কিন্তু ও কিছুতেই মনে করতে পারলো না যদিও খুব মন দিয়ে ভাবার চেষ্টা করলো যে কোথায় শুনেছে নামটা।
“একটা বিদেশি কোম্পানি। হেড কোয়ার্টার্স নিউ ইয়র্কে, সাধারণত বিবিজি বলে কোম্পানিটাকে। ল্যান নিয়াও কাজ শুরু করে ছিলো রিটেল ইন্ডাস্ট্রিতে। সিইও এরিক ব্রাউন, শিন ছির বড়ো ভাই। কয়েক বছর আগে রিটেল ইন্ডাস্ট্রি পড়তির দিকে গিয়ে ছিলো না আর ব্লু বার্ড গ্রুপও তার সাথে একটা খাদে পড়ে ছিলো? ভাগ্যের জোরে, তখন ব্লু বার্ড গ্রুপ অনেক জমি কিনে ছিলো শপিং মল বানাবে বলে। সেগুলো সবই শহরের কেন্দ্রে, জমজমাট এলাকাতে। এখন আবার জমির দাম আকাশ ছোঁয়া, ব্লু বার্ড জমিটাকে ভাড়াও দিতে পারে, বেচেও দিতে পারে, এর থেকেই এরা অনেক পয়সাও করেছে। তোমার হাতে যদি পয়সা থাকে তো তা লাগাতে শুরু করো বাজারে। ইথান এসিয়া-প্যাসিফিক এলাকার দায়িত্বে আছে। গত কয়েক বছরে ও মন দিয়েছে মেইনল্যান্ড চায়নাতে। ওর নজরে রয়েছে টেলিকমিউনিকেশন, মিডিয়া, হেলথ্ কেয়ার, টেকনোলজি অ্যান্ড বিজনেস সার্ভিসেস। ওর উৎসাহ আছে মেডিক্যাল এআইতে। দঁ চেং টেকনোলজির রাউন্ড এ-তে ও বিনিয়োগ করেছে। জিং মেডিকেলের বি রাউন্ড ওকে প্রস্তাব দিয়েছে। আর আমি শুনেছি যে ওরা গুয়ান ছাও আর দং লি গ্রুপের বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সবে সবে। আমি জানি না কী ধরনের সহযোগিতার কথা ওরা ভাবছে …”
মিন হুয়ে ওপর ওপর শান্ত ছিলো, গোপণে অবাক হয়ে যাচ্ছিলো, “যখন তোমাদের দেখা হয়ে ছিলো, তখন মূলত কী নিয়ে তোমাদের কথা হয়ে ছিলো?”
“আমার মনে পড়ছে না, তবে হতে পারে পৃথিবীর অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে কথা হয়ে ছিলো।” সাও মু বলে যাচ্ছিলো, “আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ক্লাসে ওর মেজর ছিলো ফিনান্স। গ্র্যাজুয়েশনের পর দু বছর গোল্ডম্যান সাসে কাজ করেছে। তারপর ও ব্লুবার্ডে যোগ দিয়েছে। আমি শুনেছি যে ও ব্লুবার্ডের জন্য অনেক টাকা করেছে, বিশেষত এসিয়া-প্যাসিফিক এলাকা থেকে। পরিমাণটা গত দু বছরে উত্তর আমেরিকার হেড কোয়ার্টার্সের ব্যবসাকে ছাড়িয়ে গেছে। ওর বড়ো ভাই কিচ্ছু পরোয়া করে না, ওকে যা খুশি তাই করতে দেয়।”
মিন হুয়ে আরো প্রশ্ন করতে চায়, আর মনে করে যে প্রশ্ন করার কারণটা বেশ স্পষ্ট। আর ও কিছুতেই এই সময়ে সু ছনকে এ সবের মধ্যে টেনে আনতে চায় না। সেই জন্য ও প্রসঙ্গ বদলালো, “আমি একটা গুজব শুনলাম যে আমাদের হেডকোয়ার্টার্সের অবস্থা বিশেষ ভালো নয়। ওরা নাকি সাবসিডিয়ারিগুলোকে বেচে দেবার কথা ভাবছে? বা’অ্যান কী তাদের মধ্যে আছে নাকি?”
~~~~~~~~~~~~
সম্পূর্ণ বই বিনামূল্যে : https://dl.bookfunnel.com/lcj5vznt96
Link to Previous Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-35.html
Link to following Post in the Series : https://projectionofnaught.blogspot.com/2024/09/jpda-chapter-37.html