Showing posts with label Citizenship of India. Show all posts
Showing posts with label Citizenship of India. Show all posts

Tuesday, June 10, 2025

ICD - 5

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং ……… 

২০১৯-এর নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী ধর্মনিরপেক্ষতার বিচারে অসাংবিধানিক কিনা সেটা কেবলমাত্র সুপ্রিম কোর্ট নির্ধারণ করতে পারে। তবে বাংলাদেশের গবেষকের গবেষণাপত্রে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদনে, পাকিস্তানের স্বদেশত্যাগী অভিবাসীদের সংগঠনের মুখপত্রে এবং রাষ্ট্রসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে ভারতের প্রতিবেশী শরিয়া রাষ্ট্রগুলিতে (আফগানিস্তানে, পাকিস্তানে, বাংলাদেশে) কিভাবে অমুসলিম মানুষদের স্থাবরাস্থাবর সম্পত্তি ছিনিয়ে নেওয়া হয় রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে আইনসভায় আইন প্রণয়ন করে, বিচারব্যবস্থার রায়ে, কার্যনির্বাহী দপ্তরের উদ্যোগ ও তৎপরতায়। 

সেই হিসেবে ২০১৯-এর নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী প্রতিবেশী শরিয়া কিংবা ইসলামিক রাষ্ট্র থেকে ভারতে এসে পড়া অমুসলিম মানুষদের আইনি পদ্ধতিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে ২০০৩, ২০০৪ -এর সংশোধনে বাধা বেআইনি অনুপ্রবেশের সংজ্ঞার পরিসরকে সংকুচিত করেছে। কিন্তু এই সংজ্ঞার সীমার বাইরে রয়ে গেছেন আহ্‌মদিয়া গোষ্ঠীর মুসলিমরা। তাই ২০১৯-এর নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনীটিতে মুসলিমবিরোধী প্রবণতা প্রকাশ হচ্ছে বলে কেউ কেউ মনে করেছেন। এই যুক্তিতে নাগরিকত্ব আইনের ২০১৯এর সংশোধনীটি ইহুদীবিরোধী, বাহাইবিরোধী, সায়েন্টোলজিবিরোধী, তাওবিরোধী, কনফুসিয়াসিজমবিরোধী, শিন্তোবিরোধীও বটে।

তাছাড়া আহমদীয়রা শরিয়ৎ অনুসরণ করেই জীবন যাপণ করেন যদিও তাঁরা মাহ্‌দি মানে মহম্মদ পরবর্তী পয়গম্বরের উপাসনা করে সুন্নী সমাজে ব্রাত্য। শরিয়ৎ মেনে চলা আহমদীয় মানুষদের শরিয়া রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে বাঁচানোর চেষ্টাটা সেই মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতার পরিপন্থীও বটে। আবার সেই চেষ্টাটা জলের মাছকে ডাঙায় তুলে বাঁচানোর চেষ্টা করার করার মতো অবাস্তবিকও বটে।

কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে ২০১৯-এর নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী সংবিধানের ধারা ১৪-এর প্রতিশ্রুত সাম্যের অধিকার অবমাননা করেছে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি আর ক্রিশ্চানদের একদলে করে। ধর্মনিরপেক্ষতার প্রসঙ্গেই দেখা গেছে যে, সংবিধানের ধারা ২৫-এ হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন শিখদের একত্র করা হয়েছিল। তাছাড়া সংবিধানেই বলা আছে যে এই জাতীয় শ্রেণীবিন্যাস তৈরি করার দায়িত্ব এবং অধিকার দুইই সংসদের উপর ন্যস্ত আছে, সংবিধানের ১৪ নং ধারাতেই। আচার্য দূর্গা দাস বসু লিখেছিলেন যে, এই শ্রেণীবিন্যাসের প্রকৃতি, ব্যক্তি বিশেষের প্রয়োজন এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করে সংসদ নির্ধারণ করতে পারে। আচার্য বসু কলকাতা হাইকোর্টের এক রায়কে উল্লেখ করে ব্যাখ্যা করেছিলেন যে সাম্যের অর্থ হলো সম পরিস্থিতে সকলের উপর একই দায়িত্ব ও অধিকার বর্তানো। নাগরিকত্ব আইনের ২০১৯ সালের সংশোধনীতে যেভাবে নানান ধর্মের শ্রেণীবিন্যাস করা হয়েছে তাতে সম অধিকার ও দায়িত্ব অর্পণের সাংবিধানিক পদ্ধতির অবমাননা ঘটেছে কিনা তা আইনত কেবলমাত্র সুপ্রিমকোর্ট নির্ধারণ করতে পারে।

নাগরিকত্ব সংশোধন আইন, ২০১৯, লাগু হওয়ার পরে পরেই সংবাদে প্রকাশ পেয়েছিল যে অনধিক বত্রিশু হাজার মানুষ এই সংশোধনীর আওতায় নাগরিকত্ব পাবেন। ২০২১ সালের বাদল অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন যে এই সংশোধনী শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই ত্রিশ লাখের বেশি লোককে নাগরিকত্ব দেবে। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায় এই যে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন, ২০১৯ কতোটা অনুপ্রবেশকারী ভারতবাসীকে ধর্মান্ধ রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে উদ্ধার করার জন্য আর কতোটা ক্ষমতার দীর্ঘমেয়াদী অভিলাষায়?

সাধারণ মানুষের জন্য আইন একটা নিয়ম যেটা লাগু থাকে একটা দেশে একটা কালে সেই দেশের ঐ কালের বাসিন্দাদের ওপর। যেমন একটা মাঠে খেলার নিয়ম থাকে খেলোয়ারদের ওপর। দেশের কালের খেলাটাকে নারাণ সান্ডেল নাম দিয়েছিলেন “দু কুড়ি সাতের খেলা”। সেটা রক্তাক্ত যদিও, তবুও সে খেলার নিয়ম বাঁধা হয়েছিল ১৯৫০-এর ২৬শে জানুয়ারি সংবিধান প্রণয়ন করে। তারপর নাগরিকত্বের নিয়ম আসে ১৯৫৫ সালে। সেই নিয়ম পর্যায়ক্রমিক সংশোধনে যা দাঁড়িয়েছে তাতে কোথাও লালকার্ড দেখিয়ে খেলোয়ারকে মাঠের বাইরে বার করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। যা আছে তা মোটামুটি হলুদ কার্ড দেখানোর বন্দোবস্ত। সেই বন্দোবস্তের যৌক্তিকতা নিয়ে বিতর্ক চলতেই পারে। এই চলতে থাকা বিতর্কই গণতান্ত্রিক সমাজের জিয়নকাঠি।

লেখা : 2020

প্রকাশ : 2021, 2022

পুরো বই : https://www.amazon.com/dp/B09875SJF8 




Monday, June 9, 2025

ICD-4

 সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং ………


আবার নাম ধরে ধর্ম নিরূপণ করে নাগরিকত্ব খারিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজে যদি আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করা হয়, তাহলেও খুব দক্ষ ফলাফল হবে এমন আশা করা যায় না। সারাদিন ভারতীয় ভাষার নানান শব্দ আড়ি পেতে শুনে, যাচাই করে, ফেরাই করার পর  ভারতীয় ভাষার কিবোর্ড যা সব শব্দ বানিয়ে দেয়, তাতে রবিউর, মতিউর, আব্দুল, সরকার, সাত্তার হালদার, পাতিদার, মন্ডল, চৌধুরি, বিশ্বাস এসবের তফাত বোঝার মতো মেধা কৃত্রিম বোদ্ধার থাকবে এতোটা আশা করা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে।

তাছাড়াও অসমের কিছু মানুষের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে নাগরিকত্ব আইনের ২০১৯-এর সংশোধনী অসম অ্যাকর্ডকে লঙ্ঘন করছে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দিয়ে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের ধারায় আছে যে মূল আইনের ধারা ২-এর সংশোধনীতে আরোপিত শর্তের জেরে যাঁরা নাগরিকত্ব পাবেন তাঁরা অসম, ত্রিপুরা, মেঘালয় মিজোরামের নির্দিষ্ট উপজাতীয় এলাকাভুক্ত হতে পারবেন না [ধারা ৬খ, নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫ (সংশোধিত)]। এর পরেও কোনও আইনি স্খলন হয়েছে কিনা সেটা সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনার বিষয়।

নাগরিকত্ব আইনের ২০১৯-এর সংশোধনী নিয়ে বিতর্কের মূলত দুটো অঙ্গ। প্রথমত, এই সংশোধনী সংবিধান প্রতিশ্রুত ধর্মনিরপেক্ষতাকে লঙ্ঘন করেছে কিনা। দ্বিতীয়ত, এই সংশোধনী সংবিধান প্রতিশ্রুত সাম্যের প্রতিশ্রুতিকে ভেঙেছে কিনা। তবে যাঁরা দাবি করেছেন, এই সংশোধনী সংবিধানের মূলগত কাঠামোকে ভেঙে দিয়েছে, তাঁদের ভুল হচ্ছে যে, সংবিধানের মূলগত কাঠামো ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা আসে সংবিধান সংশোধন থেকে। নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী সংবিধানের কাঠামোতে আঁচ লাগাতে পারবে না। খুব বেশি হলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারে অসাংবিধানিক বলে বাতিল হয়ে যেতে পারে।

দূর্গা দাস বসু লিখেছিলেন যে সাংবিধানিক ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নটা আইনের, আবেগের নয়। সেকুলার শব্দের বিবর্তনগত অর্থ হলো অধার্মিক। ভারতীয় সংবিধানে নিহিত দর্শন হিসেবে সেকুলার শব্দের মানে দাঁড়ায় যে রাষ্ট্র কোনো বিশেষ ধর্মের পক্ষে বা বিপক্ষে নয়।

ভারতীয় সংবিধান ১৯৫০-এ সেকুলার ছিল না। ধর্মের প্রতি ভারত রাষ্ট্রের অবস্থান নাগরিকের মূলগত অধিকারগুলির মধ্যে স্বধর্ম উদযাপণের স্বাধীনতায় ও পরধর্ম সহিষ্ণুতার নির্দেশের মধ্যে নিহিত ছিল আর্টিক্ল ১৪, ১৫, ১৬ এবং আর্টিক্ল ২৫ থেকে ২৮-এ। সেকুলার শব্দারোপ ১৯৭৬-এর বিয়াল্লিশতম সংবিধান সংশোধনের ফল। 

ভারতীয় সংবিধান শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিক নয়, ভারতের বাসিন্দা সমস্ত মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা সুরক্ষিত করে (আর্টিক্ল ২৫)। একই সঙ্গে সংবিধান জানিয়ে দেয় যে এক ধর্মের স্বাধীনতার উদ্‌যাপণ অন্য ধর্মের স্বাধীনতা হরণের কারণ হতে পারবে না। ধর্মীয় সংগঠনের, আয়, ব্যয় এবং রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের ওপরও রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। সংবিধান রাষ্ট্রকে অধিকার দেয় হিন্দু মন্দিরের বিভিন্ন অংশে অহিন্দু শিখ, জৈন, বৌদ্ধদের প্রবেশ অবাধ করে দেওয়ার জন্য। অর্থাৎ সংবিধানের ধারা ২৫-এই হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন - ভারতে উদ্ভুত চারটি - ধর্মকে এক শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। 

সংবিধানের ধারা ২৬ সমস্ত ধর্মীয় সংগঠনকে স্থাবরাস্থাবর সম্পত্তি রাখার এবং বাড়ানোর অধিকার দিয়েছে। ধারা ২৭ রাষ্ট্রকে নিষেধ করেছে এক ধর্মের প্রতিষ্ঠানে করের বোঝা চাপিয়ে সেই করজাত রাজস্ব থেকে অন্য ধর্মের প্রতিষ্ঠানকে পুষ্ট করতে। এই ব্যবস্থা সংবিধানের সূচনায় সেকুলার শব্দ জোড়ার ছাব্বিশ বছর আগে থেকেই ছিল। 

ধারা ২৮ রাষ্ট্রকে নিষেধ করেছে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্ম প্রচার করতে। একই ধারা ধর্মীয় প্রতিষ্টানকে অনুমতি দিয়েছে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মপ্রচার করার। আবার এই ধারা জানায় যে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্র অধিগ্রহণ করার আগে যদি তার পরিচালক মণ্ডলী সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মানুচারণের ব্যবস্থা করে থাকেন তাহলে সেই ব্যবস্থা রাষ্ট্র অধিগ্রহণ করলেও চলতে পারে। এই ধারা আরও জানায় যে, ধর্মীয় সংগঠন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্ররা (বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্ররা তাদের অভিভাবকের সিদ্ধান্ত অনুসারে)  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধর্মানুষ্ঠানে নাও অংশ নিতে পারেন। এই ভাবে, প্রতিষ্ঠানের ও ব্যক্তির উভয়ের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত করা হয়েছে ভারতীয় সংবিধানে।

(চলবে)

লেখা : 2020

প্রকাশ : 2021, 2022

পুরো বই : https://www.amazon.com/dp/B09875SJF8


Sunday, June 8, 2025

ICD- 3

 সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং ………


১৯৮৫-এর সংশোধনী আইনে কিন্তু বিদেশী বলে চিহ্নিত,  ১৯৬৬ সালের ১ লা জানুয়ারি থেকে ২৫ মার্চ ১৯৭১ -এর মধ্যে ভারতে অনুপ্রবেশকারী, ব্যক্তিদের কাউকে ভারত থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয় নি। বরং বলা হয়েছিল যে  তাঁদের নাম নির্বাচক তালিকা থেকে মুছে দেওয়া হবে দশ বছরের জন্য। নাম মোছার আগে তাঁরা নাগরিকত্ব আইনের ধারা ১৮ অনুসারে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্ধারিত নিয়মে নিজেদের বিদেশী হিসেবে নথিভুক্ত করাবেন। এইভাবে নথিভুক্ত হওয়ার দশ বছর পরে তাঁরা যথাযথ প্রক্রিয়ায় ভারতের নাগরিকত্ব অর্জন করে নির্বাচক তালিকায় আবার নিজেদের নাম লেখাতে পারেন। ঐ দশ বছরে তাঁদের ভারতীয় পাসপোর্ট থাকতে পারে, তাঁরা ভারতের মধ্যে বিদেশী হলেও, বিদেশে ভারতীয় হিসেবে পরিচিত হতে পারেন।

২৫ মার্চ ১৯৭১ -এর পরে ভারতে বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশকারীদের ভারতের নাগরিকদের থেকে আলাদা করার চেষ্টায় অসমে ২০১৯ সালে ন্যাশনাল সিটিজেনশিপ রেজিস্টার তৈরি করা হয়। এর ভিত্তি ছিল ১৯৫১-এর নির্বাচক তালিকা এবং পরবর্তী তিনটি নির্বাচক তালিকা যার শেষটি প্রকাশিত হয়েছিল ২৫ শে মার্চ ১৯৭১। এই সব নির্বাচক তালিকাভুক্ত নির্বাচকদের এবং তাঁদের বংশধরদের ভারতের নাগরিক হিসাবে স্বীকার করা হয়।  এর ফলে ১৯৬৬ সালের ১ লা জানুয়ারি থেকে ২৫ মার্চ ১৯৭১ -এর মধ্যে ভারতের অসমে ঢুকে পড়া বেআইনি যে অনুপ্রবেশকারীরা বিদেশী বলে চিহ্নিত হয়ে ছিলেন ১৯৮৫ সালে অসম অ্যাকর্ডে, তাঁরা ১৯৯৫ সালের পরে ন্যাচারালাইজেশনের (ধারা ৬) দ্বারা নাগরিকত্ব অর্জন না করে থাকলে তাঁরা এবং তাঁদের বংশধরেরা ভারতের নাগরিক নন বলেই বিবেচিত হবেন। সে কথা ২০০৯ সালের নাগরিকত্ব নিয়ম (সিটিজেনশিপ রুল, ২০০৩)-এর  সংশোধনীতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তবে অসম অ্যাকর্ডে যেমন স্পষ্ট করে বলা হয়েছিল যে বিদেশী বলে চিহ্নিত হওয়ার পর বিদেশীদের কী করতে হবে তেমন করে স্পষ্ট কোনো নির্দেশ নাগরিকত্ব নিয়মে নেই। এই বিষয়টি নির্ধারণের ক্ষমতা ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন কেবলমাত্র ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকেই দিয়েছে।

২০১৯-এ অসমের এনআরসি আর সেই বছরের নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী নিয়ে তুলকালাম হয়ে গেলেও,.২০০৩-এর নাগরিকত্ব আইন সংশোধন নিয়ে কোনও হট্টগোল হয় নি। অথচ এনআরসির শুরু এই ২০০৩ সালের সংশোধনীতেই, সিটিজেন শিপ রুল এবং রাষ্ট্রীয় নাগরিক পঞ্জি ও নাগরিক পরিচয়পত্র প্রণয়নের নির্দেশের মধ্যে দিয়ে। অসম অ্যাকর্ডের মতো স্পষ্ট করে নির্ধারিত না থাকলেও, সিটিজেনশিপ রুল এখনও অনাগরিকদের ভারত থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেয় নি।

এছাড়াও একটা সন্দেহের কথা শোনা যায় যে বেছে বেছে মুসলিমদের ভারত থেকে বের করে দেওয়ার জন্যই এনআরসি করার ফিকির। অসমে ২০১৯-এ হয়ে যাওয়ার এনআরসির ফর্ম ছিল সব মিলিয়ে চার পাতার। কোনও পাতাতেই ধর্ম বলার জায়গা ছিল না। 

২০১১-এর আদম শুমারির নথিতে গণ্য ব্যাক্তির ধর্ম কী হতে পারে সেটা নানান ধর্মের নামের মধ্যে থেকে বেছে নেওয়ার জায়গায় নাস্তিকতার উল্লেখ ছিল না। তখন নামের ভিত্তিতে ধর্ম নির্ধারণ করা হয়েছে ভারতের বাসিন্দাদের এবং নাস্তিকের সংখ্যা শূণ্য (০) দেখানো হয়েছে। একইভাবে মানুষের নামের ভিত্তিতে তার আচরিত ধর্ম কী তা বুঝে নিয়ে ঐ মানুষদের নাগরিকত্ব খারিজ করতে পারে এনআরসি। কিন্তু তাতে এক একজন সরকারি কর্মীকে দপ্তরের কাজে দৈনিক তিনঘন্টার থেকে অনেক বেশি সময় দিতে হবে। এদিকে সরকারি কর্মীদের পঁচানব্বই শতাংশ শোনা যায় ‘ (খুব অল্প সময়ের জন্য দপ্তরে) যান, আসেন, মাইনে পান’; কাজ করেন না। তাদের সকলকে কোনও বিশেষ শাস্তির জুজু দেখিয়ে যদি কাজে বাধ্যও করা যায়, তাহলেও তাঁরা রাতারাতি দক্ষ হয়ে উঠে মেশিনের মতো নাম দেখে ধর্ম নির্ধারণ করে মানুষের নাগরিকত্ব খারিজ করবেন এতোটা বাস্তবাতীত। তার ওপর থাকবে তাঁদের মগজ নির্গত ব্যক্তিগত (রাজনৈতক আদর্শগত) মতামতের ও বিবেচনার বোঝা।

(চলবে)

লেখা : 2020

প্রকাশ : 2021, 2022

পুরো বই : https://www.amazon.com/dp/B09875SJF8 




Saturday, June 7, 2025

ICD -2

 সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং ………




২০০৩ ও ২০০৪ সালের নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী স্পষ্টত পাকিস্তানবিরোধী, তবুও ২০১৬-তে ভূতপূর্ব পাকিস্তানি নাগরিক সঙ্গীত শিল্পী আদনান সামি ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন ধারা ৬ অনুসারে ন্যাচারালাইজেশনের মাধ্যমে। এসব নিয়ে কোনও হল্লা হয় নি। 

২০০৩ এবং ২০০৪ সালের সংশোধনে নাগরিকত্ব আইন বেশ কিছু প্রথম পদক্ষেপ নেয়। যেমন জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার সংজ্ঞায় শর্ত দেওয়া হয় যে জাতকের পিতা বা মাতার অন্তত একজনকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে এবং জাতকের জন্মের সময় অনাগরিক জনক বা জননীর বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হওয়া চলবে না। আবার এও স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয় যে পাকিস্তানে (অবিভক্ত পাকিস্তানে এবং এখনকার পাকিস্তানে) এবং বাংলাদেশে জন্মানো জনক জননীর সন্তান ভারতীয় বংশোদ্ভুত বলে গণ্য হবেন না। ভারতীয় বংশোদ্ভুত বলে পরিচিতি পাওয়ার নিয়মে কিছু পরিবর্তন ২০১৫ সালেও এসেছিল। ২০১৯-এও এসেছে। দুই ক্ষেত্রেই ভারতীয় বংশোদ্ভুতের প্রাপ্য অধিকার ও সুবিধা কমেছে।

২০১৫-এর সংশোধন অনুসারে ভারতীয় বংশোদ্ভুত বলে পরিচিত কেউ যদি সেই পরিচিতি নিজে ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে রদ করে দেন কিংবা আইনি স্খলনে হারান, তবে তাঁর বিবাহিত দোসর এবং সন্তান তাঁর সাথেই সেই পরিচিতি হারাবেন। তাছাড়াও এই সংশোধনী খারিজ করে দেয় ভারতীয় বংশোদ্ভুতদের ভারতের রাষ্ট্রপতিত্ব, উপরাষ্ট্রপতিত্ব, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিত্বের অধিকার এবং সংবিধানের ধারা ১৬ অনুসারে সরকারী পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সমান সুযোগের অধিকার। 

২০১৯-এর সংশোধনী অনুসারে ভারতীয় বংশোদ্ভুতের ওভারসিস সিটিজেন অফ ইন্ডিয়া কার্ড খারিজ হয়ে যাবে যদি এই কার্ডের অধিকারী কেউ কোনো আইন ভাঙেন। আইন এখানে শুধু নাগরিকত্ব আইন বা ভারতের আইন নয়, যে কোনো আইন। তবে ঐ মানুষটির ভারতীয় বংশোদ্ভুত হওয়ার পরিচয়পত্র খারিজ হয়ে যাওয়ার আগে তাঁকে স্বপক্ষ সমর্থনের যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হবে।

নাগরিকত্ব আইনের ২০১৯-এর সংশোধন নিয়ে প্রতিবাদের খ্যাতনামা মুখ যেগুলো, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে, তার অনেকগুলিই আজকের তারিখে সম্ভবত ভারতীয় নাগরিকের নয়, ভারতীয় বংশোদ্ভুতদের। ২০১৯-এর নাগরিকত্ব আইনের সংশোধন সম্পূর্ণ খারিজ হয়ে গেলে, ভারতীয় বংশোদ্ভুতদের যে অধিকার ও সুবিধা খর্ব হয়েছে, সেগুলোও বাতিল হয়ে যাবে।

. ২০০৩, ২০০৪, ২০০৫ সালের আগে, বেআইনি অনুপ্রবেশ নিয়ে ও অনুপ্রবেশকারীর সন্তানের নাগরিকত্বের শর্ত নিয়ে সংশোধনী ১৯৮৫ সালেও এসেছিল। ১৯৮৫ সালের সংশোধনী নাগরিকত্ব আইনের সবচেয়ে বড়ো সংশোধনী। এই সংশোধনী ১৯৫৫-এর মূল আইনে জুড়ে দেওয়া ধারা ৬ক। এই ধারা প্রণোয়নের আগে মারদাঙ্গা হয়েছিল কিছু, কিন্তু সে শুধু অসমে। অসম অ্যাকর্ড নামে পরিচিত ধারা ৬ক অনুসারে অসম রাজ্যের চিহ্নিত সীমায় বসবাসকারীদের মধ্যে কে নাগরিক আর কে বিদেশী সেই বিষয়টি নির্দিষ্ট হয়।

এই ধারা সংজ্ঞাত করে যে বিদেশী মানে সেই সব মানুষ যাঁরা ১৯৪৬ সালের ফরেনার্স অ্যাক্টের সংজ্ঞানুসারে চিহ্নিত বিদেশী এবং/ অথবা যাঁরা ১৯৬৪ সালের ফরেনার্স ট্রাইবুন্যাল অর্ডার অনুসারে গঠিত ট্রাইব্যুনালের রায়ে নির্ধারিত বিদেশী। এই ধারা ভারতীয় নাগরিকের সংজ্ঞায় শর্ত দেয় -

  • যে ব্যক্তি ১৯৮৫ সালের ধারা ৬ক প্রণয়নের আগেই ভারতীয় নাগরিক ছিলেন এবং এই ধারা প্রণয়নের ষাট দিনের মধ্যে ভারতের নাগরিকত্ব (যথাযথ পদ্ধতি মেনে) ত্যাগ করেন নি

  • যে ব্যক্তির পিতা/মাতা কিংবা পিতামহ/পিতামহী কিংবা মাতামহ/মাতামহীর একজন অন্তত অবিভক্ত ভারতে জন্মেছেন

  • যে ব্যক্তি ১৯৬৬ সালের ১লা জানুয়ারির আগে “নির্দিষ্ট এলাকা” থেকে আসামে এসেছেন, (তাঁর নাম ১৯৬৭ সালের লোকসভা নির্বাচন পর্বে নির্বাচক তালিকা অন্তর্ভুক্ত করা হলেও)

“নির্দিষ্ট এলাকা”-র অর্থ কোথাও স্পষ্ট করে বলা নেই। ১৯৮৫ সালে ধারাটি প্রণয়নের সময় বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র, কিন্তু ধারার বিভিন্ন সংজ্ঞার কালের সময়সীমা যেমন ১৯৬৬ সালের ১ লা জানুয়ারি থেকে ২৫ মার্চ ১৯৭১ -এর আগে অবধি বাংলাদেশের অস্তিত্ব ছিল না। ছিল পূর্ব পাকিস্তান বা পাকিস্তান। সেই জন্য, হয়তো, ১৯৬৬ সালের ১ লা জানুয়ারি থেকে ২৫ মার্চ ১৯৭১ -এর মধ্যে ভারতের বাইরে থেকে অসমে অনুপ্রবেশের ভৌগোলিক উৎসগুলিকে  “নির্দিষ্ট এলাকা” বলা হয়।

(চলবে)

লেখা : 2020

প্রকাশ : 2021, 2022

পুরো বই : https://www.amazon.com/dp/B09875SJF8


Friday, June 6, 2025

ICD


 সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং ………


কলকাতাকে করোনা গ্রাস করার আগে কলকাতা ছিল কাগ্রস্ত। এই কা কিন্তু রুডইয়ার্ড কিপলিং-এর কালজয়ী সৃষ্টি জাঙ্গল বুকের অজগর ‘কা’ নয়। এই কা হলো অত্যাধুনিক সংক্ষেপণ প্রক্রিয়ায় উল্লেখিত নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন, ২০১৯।
সাবেকি বা কা-এর আগে চলতি নিয়মে যে কোনও আইনকে লিখতে হয় “আইনের (সংশোধন) নাম” “সংশোধনের সাল” [উদাহরণ: Citizenship (Amendment) Act, 2019] এই ছকে। কিংবা “আইনের নাম” “আইনটি প্রথম প্রণয়ণের সাল” (সংশোধিত) [উদাহরণ: Citizenship Act, 1955 (amended)] এই চালে। অথবা, “আইনের নাম” “আইনটি প্রথম প্রণয়ণের সাল” “এযাবৎ সংশোধিত” [উদাহরণ: Citizenship Act, 1955 as amended / as amended upto date] এই বয়ানে। অনেক কিছু বদলে যাওয়ার মতো কা এসে বদলে গেছে আইন উল্লেখের চলতি পদ্ধতিটা।



সারা ভারতবর্ষ কাগ্রস্ত ছিল ২০১৯-এর শেষার্ধে এবং ২০২০-এর মার্চ অবধি। সেই থেকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রসঙ্গটা গুলিয়েও যাচ্ছে ক্রমশ। এর সাথে জুড়ে গেছে নাগরিকত্বের রাষ্ট্রীয় খাতা (যাকে এনআরসি বললে চেনা সহজ) সংক্রান্ত নানান কথা। রাজনীতিকরা চেঁচামেচিতে জুড়েছেন জনসংখ্যার রাষ্ট্রীয় খাতাকেও। অর্থাৎ এনপিআরকে। এই সেদিন খবরের কাগজের উৎসাহে এনআরসির সঙ্গে জুড়ে গেল ফরেনার্স ট্রাইবুন্যাল। তা বাদে সাম্য ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নও ছিল নাগরিকত্ব আইনের ২০১৯ সালের সংশোধন ঘিরে। আর আছে ভারত থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার ভয়।
[ভাবতে অবশ্য ভালো লাগে যে ব্রিটিশরা থাকলে নাকি যে দেশটা এমন উচ্ছন্নে যেত না সেই উচ্ছন্নে যাওয়া দেশের নাগরিকত্ব চলে যেতে পারে বলে এতোগুলো মানুষ ভীষণ বিচলিত।]



নাগরিকত্ব আইনের সংশোধন এই প্রথম হলো এমন নয়। ১৯৬০, ১৯৮৫, ১৯৮৬, ১৯৯২, ২০০৩, ২০০৪, ২০০৫, ২০১৫ সালেও নাগরিকত্ব আইনের সংশোধন হয়েছে। কিন্তু কখনই সেই সব সংশোধন নিয়ে এমন হট্টগোল বাধে নি যেমনটা বেধেছে ২০১৯-এর সংশোধন নিয়ে।



১৯৬০-এর সংশোধনে মুছে দেওয়া হয় মূল আইনের অর্থাৎ ১৯৫৫ সালের আইনের ধারা ১৯। এই ধারা জড়িত ছিল ধারা ২-এর বিভিন্ন সংজ্ঞা এবং প্রথম তপশিলের সঙ্গে।
প্রথম তপশিল ছিল একটা ফর্দ যাতে ব্রিটিশ কমনওয়েলথ-এর এগারটি দেশের নাম ছিল, আর ছিল আয়ারল্যান্ডের প্রজাতন্ত্র। এই এগারটা দেশের মধ্যে পাকিস্তানও ছিল। মূল আইনের ধারা ১১ এবং ১২ অনুযায়ী ব্রিটিশ কমনওয়েলথভুক্ত যে কোনো দেশের নাগরিক ভারতীয় নাগরিক বলে স্বীকৃত হতে পারতেন। অর্থাৎ পাকিস্তানের নাগরিকও ভারতীয় নাগরিক বলে গণ্য হতে পারতেন।
এদিকে মূল আইন মানে ১৯৫৫-এর নাগরিকত্ব আইনের ধারা ১০ (উপধারা ১, ক্লজ ৩)-এই বলা ছিল যে পাকিস্তান থেকে আসা মানুষদের নাগরিকত্ব খারিজ হয়ে যাবে যদি না তাঁদের পিতা-মাতা কিংবা পিতামহ-পিতামহী/ মাতামহ-মাতামহী কিংবা পিতামাতার পিতামহ-পিতামহী/, মাতামহ-মাতামহীদের অন্তত একজন ভারতে জন্মে থাকেন যে ভারতের সংজ্ঞা দেওয়া আছে ১৯৩৫ সালের ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গৃহীত ভারত সরকার আইনে এবং যদি না তাঁরা পাকিস্তান থেকে ভারতে এসে থাকেন -
  • ১৯শে জুলাই ১৯৪৮-এর আগে এবং তারপর ভারতের বাইরে না গিয়ে থাকেন এবং
  • ১৯শে জুলাই ১৯৪৮ থেকে ২৬শে জানুয়ারি ১৯৫০-এর মধ্যে এবং ভারত সরকারের নির্দিষ্ট আধিকারিকের কাছে নাগরিকত্বের আবেদন করে থাকেন এবং এই আবেদন করার আগের ছ মাসে ভারতে সাধারণভাবে বসবাস করে থাকেন ।
১৯৫৫ সাল থেকে আজ অবধি ধারা ১০ কখনও সংশোধন করা হয় নি। অর্থাৎ ১৯৫৫ সালে গৃহীত ধারা ১০ এখনও পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। তাই এই ধারার সাথে ধারা ১১ এবং ১২-এর বিরোধ রয়ে গিয়েছিল ২০০৩ এবং ২০০৪ সালের সংশোধনে ধারা ১১ এবং ১২ এবং প্রথম তপশীল মুছে দেওয়া পর্যন্ত। এই নিয়ে ১৯৬০-এ কিংবা ২০০৩/২০০৪ সালে কোনো বিতর্ক হয় নি।



(চলবে)
লেখা : 2020
প্রকাশ : 2021, 2022



Wednesday, March 27, 2024

Misinterpretation OR Misinformation

 This is in reaction to a news article I read yesterday. The article claimed several violations of the law, viz. Citizenship Act, 1955 while rules wee framed under Citizenship Amendment Act, 2019 (CAA, 2019).

I took my time to read the provisions of the law and the rules. I have found that the claim of the article about illegal immigrants was outrageous as the law has clearly spoken if the targeted beneficiaries could be called illegal immigrants. 

Before going into the details, I better share the link to the news article: 

https://indianexpress.com/article/opinion/columns/caa-will-not-help-persecuted-hindus-sikhs-from-neighbouring-countries-9222168/


In a long video I have explained my reasons why I think the claims in the news article is outrageous. Those are as follows:

  • Legislatures (Parliament/ State Assemblies through its members) make laws

  • .Judiciary (the judges in the courts of law) interprets the laws (through verdicts/ rulings/ guidelines/ observations),

  • Executive (departments of Union and State Governments) implement the law by deriving rules from the laws.
Thus rules which are framed under a law, to implement the law have no scope of violating the law itself.
 
Also, Citizenship Act, 1955, as amended in 2019, never promises Citizenship to illegal immigrants of any religion from any country. RATHER, IT SPELLED OUT A BLANKET WAIVER ON ILLEGAL IMMIGRATION OF THE PEOPLE OF HINDU, SIKH, BUDDHIST, JAIN, CHRISTIAN AND PARSI COMMUNITIES COMING FROM AFGHANISTAN, PAKISTAN AND BANGLADESH TO INDIA BEFORE DECEMBER 31, 2014. Thus rules, under citizenship amendment act 2019, cannot be made to grant Citizenship to illegal immigrants.

Here is my long video:




Let me share with you some useful information:

Amended_Citizenship_Rule-dt[1]._10.9.07.doc: https://www.mha.gov.in/PDF_Other/Citi_Rule-2009.pdf

Order: https://indiancitizenshiponline.nic.in/Documents/UserGuide/ordersection6B_rule_11A.pdf

Guidelines for Applicants : https://indiancitizenshiponline.nic.in/Documents/Annexure.pdf


FOR COMPLETE INFORMATION IN THE MATTER OF INDIAN CITIZENSHIP, YOU CAN READ MY BOOK, INDIAN CITIZENSHIP DECODED. IT IS AVAILABLE FOR PURCHASE AT:  https://www.amazon.in/dp/B09875SJF8



#CAA #CAARules #CAANotification #CAANews #CAA2019 #CAAImplementation #CAAProtests

Saturday, March 16, 2024

Thursday, March 14, 2024

The Truth about CAA 2019

 



Too much noise covers the truth. Would you like to know about the truth of the Citizenship Amendment Act, 2019 of India?

The Citizenship Amendment Act, 2019 is controversial. The amendments made to the Citizenship Act, 1955 in 2019 has made the matter of citizenship of India more valuable than ever. The act has been put to trial.

The trial made the implementation of the law almost impossible. The noise of arguments if the law has violated the constitutional provisions, has been clouded with opinions and uninformed opinions. Can Citizenship Amendment Act, 2019 withstand the trial at court of law as well as the trials of opinion?

If you are looking forward to dazzle in current affairs papers in the civil services examinations, if you are caught in between citizenship of India and another country, if you are looking forward to get back your Indian Citizenship, if you are curious to know how to find your ancestors in legacy data, if you are trying to fathom what is CAA, 2019 and refusing to stay confused by the brouhaha in the media, then this books is a must read for you. 

BUY NOW to get into the details of citizenship laws in India.

https://www.amazon.in/dp/B09875SJF8


Wednesday, March 13, 2024

What Is in My Book about CAA 2019?

 Too many confusing questions around 2019 amendments of the Citizenship Act? Find simple and straight answers in this one stop answer bank.



The objective of this book is to help readers understand the law on Indian Citizenship by untangling complex phrases of bare acts. Understanding the law may further help in distinguishing between information and misinformation in an environment which is clouded with uninformed opinion.
It can also help build informed opinions.

  • This Book can come in handy for the aspirants of examinations for different public services.

  • It can also be helpful to those who are in between citizenships of India and other countries and looking forward to obtaining an Overseas Citizen of India Card.

  • It can also be a guiding material to those who have somehow lost citizenship of India and seeking a way to acquire it.

  • It can also be a guide to finding one’s ancestor in the Legacy Data if Nationwide NRC is ever notified.

  • It can be entertaining to the curious souls who have an urge to understand what citizenship of India is beyond brouhaha in the media.

It is a multipurpose book. It aspires to cater to multitudes of needs and various interests.

This book is a quest to find the definition of Indian Citizen through the statutes.

  1. It has started with the Constitution of India.

  2. It has searched through the provisions of the Citizenship Act, 1955, as amended.

  3. It has studied the Citizenship (Registration of Citizens and Issue of National Identity Cards) Rules, 2003.

  4. It has apprised the processes of National Register for Indian Citizens followed in Assam.

  5. In the end, it has looked into the debate over the Citizenship (Amendment) Act, 2019.

  6. In due course it has made observations about the history of amendments of the Citizenship Act, 1955.

It has noted the points of debate over the latest amendments of the aforementioned act. Yet, it abstained from expressing any opinion.

Why be littered with a plethora of uninformed opinions? Get your facts straight. Make informed decisions.
Buy Now: https://www.amazon.in/dp/B09875SJF8





Readers Loved